শুক্রবার, ২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২১

কিছুটা ঘটে । ভূতের গল্প বাংলায় ।

রোমানিয়ার হোয়া বাচু অরণ্যের নাম শুনেছেন নিশ্চয়ই । এটিকে পৃথিবীর সবচেয়ে ভৌতিক অরণ্য বলা হয় । গভীর অরণ্যের মাঝখানে একটি ফাঁকা জায়গা আছে , যেখানে ঘাসও জন্মায় না । গাছ লাগালেও মরে যায় । বারমুডা ট্রায়াঙ্গেলের মত, এই রহস্য উন্মোচন করতেও বহু অভিযান করা হয়েছে । কিন্তু ভৌতিক-অলৌকিক ঘটনাগুলি কেন ঘটে , এই প্রশ্নের কোনও সদুত্তর পাওয়া যায়নি । রোমানিয়া যেতে সময় লাগবে । আপাতত , খুব নিকটজনেদের কাছে শোনা তিনটি ঘটনা বলি । 

     রবীন্দ্রনাথ সত্যিই প্ল্যানচেট করতেন কিনা জানা নেই , তবে কয়েক দশক আগে পর্যন্ত প্ল্যানচেট করার খুব চল ছিল । আমার এক নিকটাত্মীয়ের এতে খুব আগ্রহ ছিল । ঠাকুরদার এ ব্যাপারে কড়া নিষেধ ছিল বলে , তাঁর অজ্ঞাতে গ্রামের বাড়ির একটা অংশে বোর্ড বসেছিল । সেই ঘটনার আগে আমাদের এক জ্ঞাতি মারা যান । ঠিক করা হয়, তাঁকেই ডাকা হবে । পরিকল্পনামাফিকই সব এগোচ্ছিল । হঠাৎ মিডিয়াম হয়েছিলেন যিনি , তিনি কাগজে পেনসিল দিয়ে খসখস করে ঝড়ের বেগে কিছু লিখে দেন । সবাই দেখেন , তাতে লেখা --- "এভাবে ডেকো না , বড্ড কষ্ট হয় ।" এর অব্যবহিত পরেই গোটা বাড়ি মড়া পোড়ার গন্ধে ভরে ওঠে । ঠাকুরদা ছুটে আসেন । সবাই ভীষণ বকা খান । 

     দ্বিতীয় ঘটনাটা আমার এক বন্ধুর স্বর্গত বাবার মুখ থেকে শোনা । কাকু উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ সংস্থায় কাজ করতেন । চাকরিজীবনের প্রথম দিকের ঘটনা , তখন কাকুর পোস্টিং কোচবিহারে । বয়স কম , বিয়ে করেননি , রক্তে অ্যাডভেঞ্চারের নেশা । যা হয় , ইচ্ছে করেই একটা পাণ্ডববর্জিত জায়গায় ঘর ভাড়া নিয়েছেন । একাই থাকেন । বাড়ির চারপাশে ফাঁকা মাঠ । তখন শীতকাল । এটা সেই সময়ের কথা বলছি , যখন উত্তরবঙ্গে সত্যিই মাঘের শীতে বাঘ পালাত । একদিন কাকু ডিউটি করে এসে , রাতের খাওয়া সেরে শুয়ে পড়েছেন । ঘণ্টা দুয়েক কাটার পর , কাকুর আচমকা ঘুম ভাঙল, দরজা আর জানলাগুলোয় একসঙ্গে প্রচণ্ড কাঁপুনির শব্দে । কালবৈশাখী ঝড় এলে যেমনটা হয় । অথচ শীতকাল । মেঘমুক্ত আকাশ , ঝড়ের আভাসটুকুও নেই । কাকু প্রথম ভাবলেন পাড়ায় নতুন অতিথির সাথে বোধহয় পাড়ার ছেলেরা মশকরা করছে ! "অ্যাই , কে রে" -- হাঁক ছেড়ে দরজা খুলে বাইরে বেরিয়ে এসে দেখলেন কেউ নেই । চক্ষু-কর্ণের বিবাদভঞ্জন করতে গোটা বাড়ি বড় টর্চ হাতে পাক খেলেন । নাহ , কেউ কোথাও নেই । ভাবলেন ভয় পেয়ে সবাই লুকিয়ে পড়েছে । নিশ্চিন্ত হয়ে ঘরে ফিরে শুতেই একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি । এবার কাকু দৌড়ে বাইরে বেরোলেন । চারিদিকে ফাঁকা মাঠ , একপাশে জঙ্গল । লুকোতেও তো সময় লাগবে । হাতেনাতে পাকড়াও করবেন সবাইকে , এমন একটা ভাব নিয়ে বাইরে বেরোতেই আবারও একই অভিজ্ঞতা হল । সে রাতে আরও কয়েকবার দরজা-জানলা কেঁপেছিল , কাকু আর দরজা খোলেননি । এই ঘটনার কোনও ব্যাখ্যাও স্থানীয় মানুষদের থেকে না পেয়ে বাড়ি পাল্টে নিয়েছিলেন । 

      তৃতীয় ঘটনাটা ব্যারাকপুরে আমাদের এক প্রতিবেশীর কাছ থেকে শোনা । অভিজ্ঞতাটা লোকাল ট্রেনে তাঁর সহযাত্রীর । এখানে সাইকেল-স্কুটার গ্যারেজগুলো রাত এগারোটা , বড়জোর সাড়ে এগারোটার পর সব বন্ধ হয়ে যায় । ট্রেন বিভ্রাটে সেদিন কাকুর সহযাত্রী সেই ভদ্রলোকের ফিরতে সাড়ে বারোটা হয়ে গেছে । গ্যারেজ বন্ধ হয়ে গেছে বলে বাইক নিতে পারেননি , হেঁটেই বাড়ি ফিরছেন । ওনার বাড়ি যাওয়ার পথে তেরো নব্বর রেল গেট পড়ে । অভ্যেসবশত দু'দিক দেখতে দেখতে লেভেল ক্রসিং পার হওয়ার সময়, হঠাৎ ভদ্রলোক রেল লাইন ধরে সালোয়ার-কামিজ পড়া এক ভদ্রমহিলাকে হেঁটে আসতে দেখেন । এই সময় ট্রেন চলাচল প্রায় বন্ধ হয়ে আসে বলে অনেকেই রেল লাইন ধরে হেঁটে আসেন , সময় বাঁচাতে । কিন্তু অত রাতে একজন মহিলাকে লাইন ধরে অন্ধকারের মধ্যে এগিয়ে আসতে দেখে ভদ্রলোক স্বাভাবিকভাবেই একটু অবাক হন । চেনা কেউ কিনা দেখতে দাঁড়িয়ে যান । ততক্ষণে মহিলা অনেকটা কাছে চলে এসেছেন । তারপর ভদ্রলোক যা দেখেন তা রীতিমত রোমহর্ষক । ওঁর নিজের কথায় -- "সবই ঠিক আছে , শুধু ধড়ের ওপর মাথাটা নেই ।" চেতনার শেষ পর্যায়ে গিয়েও কোনওমতে নিজেকে সামলে ভদ্রলোক দৌড়তে দৌড়তে বাড়ি পৌঁছন সেদিন । আজব ব্যাপার , এই ঘটনার কিন্তু পুনরাবৃত্তি হয়নি ।

      বিশ্বাসে মিলায় বস্তু , তর্কে বহুদূর ।   

কিছুটা ঘটে । ভূতের গল্প ।




ভয়ঙ্কর ভূতের গল্প

সত্য ভূতের গল্প

ভয়ঙ্কর ভূতের গল্প বলো

ভয়াবহ ভূতের গল্প

একটি ভূতের গল্প

একটা ভূতের গল্প বলো

একটি ভূতের গল্প শোনাও

ভূতের গল্প pdf




কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Don't forget to like, comment, share and subscribe to my Blog. Thank you.

কেরালার বৃহত্তম জিপলাইন adventure sport

  ### কেরালার বৃহত্তম জিপলাইন ভারতের দক্ষিণাঞ্চলের রাজ্য কেরালা, যার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও বৈচিত্র্যময় পরিবেশ পর্যটকদের আকর্ষণ করে, সেখানে এ...