"ফিচার" লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান
"ফিচার" লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান

বুধবার, ১৩ নভেম্বর, ২০২৪

কেরালার বৃহত্তম জিপলাইন adventure sport

 ### কেরালার বৃহত্তম জিপলাইন


ভারতের দক্ষিণাঞ্চলের রাজ্য কেরালা, যার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও বৈচিত্র্যময় পরিবেশ পর্যটকদের আকর্ষণ করে, সেখানে এক অভিনব অ্যাডভেঞ্চার স্পোর্টসের সংযোজন ঘটেছে। কেরালার বৃহত্তম জিপলাইনটি এখন পর্যটকদের জন্য একটি জনপ্রিয় গন্তব্য। এটি শুধু কেরালার সবচেয়ে বড় জিপলাইন নয়, বরং একটি সাহসিকতার এক নতুন অভিজ্ঞতা প্রদান করে যা সমস্ত বয়সী অ্যাডভেঞ্চার লাভারদের মুগ্ধ করবে।

### জিপলাইন কী?

জিপলাইন হল একটি উত্তেজনাপূর্ণ অ্যাডভেঞ্চার স্পোর্টস, যেখানে একটি দড়ির উপর একটি বিশেষ ব্যবস্থা দিয়ে একটি প্ল্যাটফর্ম বা ক্যাবলকে স্লাইড করে নিচে নামা হয়। এটি সাধারণত পাহাড় বা বনভূমির মাঝ দিয়ে নির্মিত হয়, যাতে পর্যটকরা উচ্চতা থেকে প্রাকৃতিক দৃশ্য উপভোগ করতে পারেন। জিপলাইন স্পোর্টস বিশ্বের বিভিন্ন দেশে জনপ্রিয় এবং এটির মাধ্যমে একদিকে যেমন অ্যাডভেঞ্চারের সঙ্গী হওয়া যায়, তেমনি অন্যদিকে প্রকৃতির সৌন্দর্যও উপভোগ করা যায়।

### কেরালার বৃহত্তম জিপলাইন

কেরালার বৃহত্তম জিপলাইনটি সাস্পেনশন ব্রিজ এবং পাহাড়ের মধ্যে দিয়ে একটি দীর্ঘ দড়ি পদ্ধতির মাধ্যমে নির্মিত হয়েছে। এটি কেরালার কোঝিকোড় জেলার মালাপ্পুরমে অবস্থিত। এই জিপলাইনটি ২০০০ ফুট দীর্ঘ, যা কেরালার জিপলাইনের ইতিহাসে সবচেয়ে বড়। উচ্চতা প্রায় ৩০০ ফুট পর্যন্ত, যা এটি এমন একটি অভিজ্ঞতা তৈরি করে, যেখানে আপনি আকাশে উড়ে যেতে পারেন এবং নিচে ছড়িয়ে থাকা বনভূমি ও নদী উপভোগ করতে পারেন।

এই জিপলাইনটি একে অপরের সাথে যুক্ত দুটি টাওয়ার বা পোস্টের মধ্যে তৈরি করা হয়েছে। পর্যটকরা একটি টাওয়ার থেকে শুরু করে আরেকটি টাওয়ার পর্যন্ত দ্রুতগতিতে স্লাইড করেন। গতি এমনভাবে ডিজাইন করা হয়েছে, যাতে এটি নিরাপদ এবং উত্তেজনাপূর্ণ। অতিরিক্তভাবে, প্রতিটি যাত্রীর জন্য সুরক্ষার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে, যা তাদের নিরাপদে এই দুঃসাহসিক যাত্রা সম্পন্ন করতে সহায়ক।

### আকর্ষণীয় বৈশিষ্ট্য

1. **দৃশ্যমান প্রাকৃতিক সৌন্দর্য**: জিপলাইনটি এমন স্থানে তৈরি করা হয়েছে, যেখানে আপনি পাহাড়, বনভূমি, এবং নদীর মনোরম দৃশ্য উপভোগ করতে পারবেন। এটি কেরালার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের একটি নতুন দিক তুলে ধরেছে।

2. **অ্যাডভেঞ্চারপ্রেমীদের জন্য আদর্শ**: যারা সাহসিক কাজের প্রতি আগ্রহী, তাদের জন্য এটি একটি নিখুঁত অভিজ্ঞতা। এখানে আপনার সমস্ত সাহসিকতা ও অ্যাডভেঞ্চারের ইচ্ছা পূর্ণ হবে।

3. **নিরাপত্তা ব্যবস্থা**: কেরালার বৃহত্তম জিপলাইনে সমস্ত ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়েছে। হেলমেট, সেফটি হ্যারনেস, এবং প্রশিক্ষিত কর্মীদের দ্বারা পর্যবেক্ষণ এটি আরও নিরাপদ করে তোলে।

4. **পর্যটনের বিকাশ**: এই জিপলাইনটি কেরালায় পর্যটন শিল্পে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে। এটি কেরালার সৌন্দর্যকে আন্তর্জাতিক পরিসরে তুলে ধরেছে এবং স্থানীয় অর্থনীতিতেও ইতিবাচক প্রভাব ফেলছে।

### কেরালার পর্যটন শিল্পে ভূমিকা

কেরালা তার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, ঐতিহ্য এবং সংস্কৃতির জন্য বিখ্যাত। তবে, সাম্প্রতিক সময়ে অ্যাডভেঞ্চার ট্যুরিজমও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। কেরালার বৃহত্তম জিপলাইনটি এই ধরণের পর্যটনকে আরও এগিয়ে নিয়ে গেছে। এই ধরনের অ্যাডভেঞ্চার স্পোর্টস কেবল পর্যটকদের আকর্ষণ করেই থামেনি, বরং স্থানীয় যুবকদের জন্য কর্মসংস্থানও সৃষ্টি করেছে। এছাড়াও, জিপলাইনের মাধ্যমে সারা বিশ্বের পর্যটকদের কেরালার প্রাকৃতিক বৈচিত্র্য ও সৌন্দর্য উপভোগ করার সুযোগ মিলছে।

### উপসংহার

কেরালার বৃহত্তম জিপলাইনটি একটি আকর্ষণীয় এবং উত্তেজনাপূর্ণ অ্যাডভেঞ্চারের সুযোগ প্রদান করে যা একদিকে যেমন সাহসিকতার অভিজ্ঞতা সঞ্চারিত করে, তেমনি অন্যদিকে কেরালার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগের এক নতুন দিগন্ত খুলে দেয়। এই জিপলাইনটি কেরালার পর্যটন শিল্পে একটি নতুন মাত্রা যোগ করেছে এবং ভবিষ্যতে আরও অনেক অ্যাডভেঞ্চারপ্রেমীকে আকৃষ্ট করবে, যাদের জন্য এটি একটি স্বপ্নের মতো অভিজ্ঞতা হতে চলেছে।

মঙ্গলবার, ১২ নভেম্বর, ২০২৪

মস্কোর মেট্রো ২ সম্পর্কে কাহিনী

 **মস্কোর মেট্রো ২ সম্পর্কে কাহিনী**


মস্কোর মেট্রো একটি বিশ্বের অন্যতম উন্নত এবং পরিচিত মেট্রো সিস্টেম হিসেবে পরিচিত। তবে, মস্কো মেট্রো ২ বা "সিক্রেট মেট্রো" নামের যে কথাটি শোনা যায়, তা একটি রহস্যময় এবং অস্বাভাবিক বিষয়। এই মেট্রোটি সম্পর্কে বহু গুজব, কল্পকাহিনী এবং রহস্যপূর্ণ গল্প প্রচলিত রয়েছে। বাস্তবে মস্কো মেট্রো ২-এর অস্তিত্ব নিয়ে এখনও নানা মতভেদ রয়েছে, তবে এর সঙ্গে জড়িত গল্পগুলো মস্কোর ইতিহাস এবং শীতল যুদ্ধকালীন ঘটনা গুলির সঙ্গে নিবিড়ভাবে সম্পর্কিত।


### মস্কো মেট্রো ২: রহস্যের জন্ম


মস্কো মেট্রো ২ এর কথা প্রথম উঠে আসে ১৯৯০ সালের দিকে, যখন একটি রুশ সংবাদপত্র এই সিস্টেমের অস্তিত্ব নিয়ে আলোচনা শুরু করে। মেট্রো ২-কে মূলত মস্কোর সুরক্ষা ব্যবস্থা এবং শীতল যুদ্ধের সময়কার এক গোপন সাবওয়ে হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এই মেট্রোটি শুধুমাত্র গুরুত্বপূর্ণ সরকারি কর্মকর্তা, মিলিটারি অফিসার এবং কিছু নির্দিষ্ট জনগণের জন্য তৈরি করা হয়েছিল। এটি মস্কোর অধীনে একাধিক গভীর স্তরের টানেল এবং স্টেশন নিয়ে গঠিত, যেগুলি শহরের সাধারণ মেট্রো সিস্টেমের বাইরে এবং অনেকটাই গোপন।


### মেট্রো ২ এর উদ্দেশ্য


মস্কো মেট্রো ২ এর মূল উদ্দেশ্য ছিল রাশিয়ার সরকার এবং সেনাবাহিনীর সুরক্ষা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা। এটি একটি অত্যন্ত গোপনীয় প্রকল্প ছিল, যার মাধ্যমে শীতল যুদ্ধের সময়, বিশেষ করে পারমাণবিক হামলার ক্ষেত্রে, দেশের শাসকরা নিরাপদে আশ্রয় নিতে পারতেন। ধারণা করা হয় যে, এই মেট্রোটি সরাসরি ক্রেমলিন এবং মস্কোর প্রধান সরকারি অফিসগুলির সাথে যুক্ত ছিল। মেট্রো ২ এ এমন সব সুরক্ষিত পথ রয়েছে যা সাধারণ জনগণের কাছে একদম অজ্ঞাত ছিল।


### কাহিনীগুলির মধ্যে বাস্তবতা এবং কল্পনা


মস্কো মেট্রো ২ সম্পর্কে প্রচলিত কাহিনীগুলির মধ্যে কিছু হয়তো বাস্তবতার সাথে সম্পর্কিত, আবার কিছু পুরোটাই কল্পনাপ্রসূত। গুজব রয়েছে যে মেট্রো ২ তে এমন কিছু স্থান রয়েছে যা সম্পূর্ণভাবে ভিন্ন ধরনের প্রযুক্তি দ্বারা সজ্জিত, যা সাধারণ মেট্রো সিস্টেমের থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। কিছু রুশ সাংবাদিক এবং লেখক দাবি করেছেন যে, তারা মেট্রো ২-এর গোপন স্টেশনগুলি দেখতে পেয়েছেন, যেখানে বিজ্ঞানীদের জন্য বিশেষ গবেষণাগার, শীতল যুদ্ধের সময়কার অস্ত্রাগার এবং অন্য অনেক গোপন স্থাপন রয়েছে।


অন্যদিকে, কিছু ইতিহাসবিদ এবং গবেষক মনে করেন যে মেট্রো ২ আসলে সম্পূর্ণ বাস্তব নয়। তাদের মতে, এটি শুধুমাত্র এক ধরনের পৌরাণিক কাহিনী যা শীতল যুদ্ধকালীন সময়ের ভয় এবং অশান্তির পরিবেশ থেকে সৃষ্টি হয়েছে। তাছাড়া, মস্কো মেট্রোর প্রকৃত নির্মাণ ও পরিকল্পনার জন্য উপযুক্ত নথি এবং প্রমাণের অভাবও অনেক সন্দেহ উত্থাপন করেছে।


### মস্কো মেট্রো ২ এবং সমালোচনা


মস্কো মেট্রো ২-এর প্রকল্প অনেক সময় রাশিয়ার সরকারের প্রতি এক ধরনের সমালোচনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। কিছু সমালোচক বলছেন যে, দেশের জনগণের প্রতি অবিশ্বাস এবং নিরাপত্তা উদ্বেগের কারণে রাষ্ট্রীয় স্তরে এমন একটি সিস্টেম তৈরি করা হয়েছে, যা মূলত জনগণের সুবিধার পরিবর্তে শাসকদের জন্য। এই ধরনের সুরক্ষিত এবং গোপন প্রকল্পগুলো রাষ্ট্রীয় খরচে পরিচালিত হওয়ায় অনেক সময় সাধারণ মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে।


### উপসংহার


মস্কো মেট্রো ২ একটি রহস্যময় এবং ইতিহাসের অন্ধকার দিকের অংশ। এটি আধুনিক রুশ ইতিহাসের এক অবিশ্বাস্য অধ্যায় যা বহু কল্পকাহিনী এবং গুজবের জন্ম দিয়েছে। যদিও এর প্রকৃত অস্তিত্ব এবং কার্যক্রম সম্পর্কে নিশ্চিত কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি, তবুও এটি মস্কোর মানুষের মধ্যে একটি পৌরাণিক চরিত্র হয়ে উঠেছে। মেট্রো ২-এর গল্প, রাশিয়ার শীতল যুদ্ধকালীন ভয়ের সাথে মিশে গিয়ে আজও রহস্যময় এবং আকর্ষণীয় বিষয় হয়ে রয়ে গেছে।


Publisher ID: pub-9792609886530610

চন্দননগর: এক ঐতিহাসিক এবং সাংস্কৃতিক পর্যটন কেন্দ্র

 **চন্দননগর: এক ঐতিহাসিক এবং সাংস্কৃতিক পর্যটন কেন্দ্র**


বাংলাদেশ এবং পশ্চিমবঙ্গের সীমান্তে নদী ঘেঁষে অবস্থিত চন্দননগর, ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের হুগলি জেলার একটি সুন্দর শহর। এটি কলকাতা থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এবং হুগলি নদীর তীরে দাঁড়িয়ে রয়েছে। চন্দননগরের ইতিহাস, সংস্কৃতি এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্য একে একটি আকর্ষণীয় পর্যটন কেন্দ্র করে তুলেছে। এই শহরের ইতিহাস বিশেষত ফরাসি উপনিবেশ এবং ঐতিহাসিক স্থাপত্যের জন্য প্রসিদ্ধ। 


### ইতিহাস ও ঐতিহ্য


চন্দননগরের ইতিহাস প্রায় পাঁচশত বছর পুরানো। এই শহরটি এক সময় ছিল ফরাসি উপনিবেশ, যা ১৭৫৭ সালে শুরু হয়েছিল এবং ১৯৫০ সালে ভারতের অন্তর্গত হয়। ফরাসি শাসনকালে চন্দননগর একটি গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক কেন্দ্র এবং প্রশাসনিক শহর ছিল। ফরাসিরা এখানে বেশ কিছু ঐতিহাসিক স্থাপত্য নির্মাণ করেছিল, যেগুলি আজও শহরের ঐতিহ্যের অংশ হিসেবে টিকে আছে। তাদের তৈরি করা পুরোনো বাড়িঘর, গির্জা, এবং অন্যান্য নির্মাণশৈলী এখনো পর্যটকদের আকর্ষণ করে।


### চন্দননগরের পর্যটন কেন্দ্র


1. **চন্দননগর রিভারফ্রন্ট (Chandannagar Riverside):**

   চন্দননগরের প্রধান আকর্ষণ হল হুগলি নদীর তীরে অবস্থিত রিভারফ্রন্ট। এখানে পর্যটকরা সন্ধ্যা বেলায় হাঁটতে এসে নদীর শান্ত প্রকৃতি উপভোগ করতে পারেন। নদী পাড়ে বসে সূর্যাস্তের সৌন্দর্য অনেকেই মুগ্ধ হয়ে দেখে। এই স্থানটি খুবই জনপ্রিয় সাঁতার কাটাও, বিশেষ করে গ্রীষ্মকালে।


2. **ফরাসি গির্জা (French Church):**

   চন্দননগরের ফরাসি গির্জা, যেটি ১৮৫৫ সালে নির্মিত, এখানকার অন্যতম প্রধান স্থাপনা। এর স্থাপত্যশৈলী অত্যন্ত সুন্দর এবং দর্শনীয়। গির্জার ভেতরকার পেইন্টিং, প্রতিমা এবং স্থাপত্য পর্যটকদের আকর্ষণ করে।


3. **দেবী কালী মন্দির (Dakshineswar Kali Temple):**

   চন্দননগরের কাছেই দেবী কালী মন্দির, যা পর্যটকদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় স্থান। এটি শহরের প্রাচীন মন্দিরগুলির একটি এবং এখানকার শান্তিপূর্ণ পরিবেশ দর্শনীয়।


4. **চন্দননগর মিউজিয়াম (Chandannagar Museum):**

   চন্দননগরের মিউজিয়াম একটি ঐতিহাসিক স্থান, যেখানে শহরের পুরনো যুগের অনেক স্মৃতিচিহ্ন এবং ফরাসি শাসনকালের সংগ্রহ রাখা হয়েছে। মিউজিয়ামের বিভিন্ন প্রদর্শনী চন্দননগরের ইতিহাস এবং সংস্কৃতি সম্পর্কে বিশদ ধারণা দেয়।


5. **ওল্ড কোর্ট বিল্ডিং (Old Court Building):**

   এই বিল্ডিংটি ফরাসি শাসনের সময় তৈরি হয়েছিল এবং এটি এক সময় চন্দননগরের প্রশাসনিক কার্যক্রমের কেন্দ্র ছিল। আজও এর স্থাপত্যশৈলী দর্শনার্থীদের আকর্ষণ করে।


### সাংস্কৃতিক উৎসব এবং অনুষ্ঠান


চন্দননগরের সাংস্কৃতিক জীবন অত্যন্ত সমৃদ্ধ। এখানে বিভিন্ন ধরনের মেলা, উৎসব এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। বিশেষ করে চন্দননগর মেলা, যা প্রতিবারে আয়োজিত হয়, স্থানীয় হস্তশিল্প, খাদ্য এবং সংস্কৃতির এক অভূতপূর্ব প্রদর্শনী। এছাড়াও, বাংলা নববর্ষ, দুর্গাপূজা, এবং অন্যান্য স্থানীয় উৎসবগুলিতে শহরের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য এবং ধর্মীয় গুরুত্ব ফুটে ওঠে।


### চন্দননগরের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য


প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের দিক থেকেও চন্দননগর একেবারে বিশেষ। শহরের চারপাশে বিস্তীর্ণ বাগান, পার্ক এবং নদী অঞ্চলের শান্ত পরিবেশ পর্যটকদের মনকে আনন্দিত করে। শহরের নদী তীরবর্তী অঞ্চল এবং প্রাকৃতিক দৃশ্য দর্শনার্থীদের ভ্রমণের অভিজ্ঞতাকে আরো বিশেষ করে তোলে। গ্রীষ্মকালে, চন্দননগরে একটি আরামদায়ক ছুটির দিন কাটানোর জন্য এটি আদর্শ স্থান।


### উপসংহার


চন্দননগর এক ভিন্ন ধরনের পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত, যেখানে ইতিহাস, সংস্কৃতি এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের এক সুন্দর মিশ্রণ দেখা যায়। ফরাসি উপনিবেশের যুগের স্মৃতি, নদী তীরের সৌন্দর্য, এবং স্থানীয় মন্দির ও গির্জা চন্দননগরকে একটি অনন্য পর্যটন গন্তব্য হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে। তাই যারা ইতিহাস, সংস্কৃতি এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে চান, চন্দননগর তাদের জন্য একটি আদর্শ স্থান।

বৃহস্পতিবার, ৪ নভেম্বর, ২০২১

প্রশ্ন রয়ে যায়...

 #প্রশ্ন_রয়ে_যায়


"There are more things in heaven and earth Horatio, than are dreamt of in your philosophy." ---হ্যামলেট , উইলিয়াম শেক্সপীয়র ।

নিশির ডাকের ব্যাপারটা পড়েছি অনেক , শুনেছি আরও বেশি । সেই ডাকেই কিনা , আজও জানিনা , আমার জীবনে একটা অদ্ভুত ঘটনা ঘটেছিল জলপাইগুড়িতে থাকতে , ২০০০ কিংবা ২০০১ সালে । পাশের বাড়ির বড়দা জ্যেঠু মারা গেছেন রাত ন'টা নাগাদ , আচমকা হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে । আমাদের মাষকলাইবাড়ি শ্মশানে ঢুকতে ঢুকতে রাত একটা বাজলো । তখনও ইলেকট্রিক চুল্লি চালু হয়নি । কাঠের ঘরের লোককে ডেকে এনে সৎকারের সব আয়োজন শেষ হতে হতে দু'টো হয়ে গেল । শ্মশানে শুতে নেই , তাই পাড়ার সবাই গল্পগুজবে ডুবে গেলাম । একটু 'বাইরে' যাওয়ার প্রয়োজন ছিল । কাঠের ঘরটার পিছনে এলাম । এটা বসার ছাউনিটা থেকে একটু দূরে , এবং বলা বাহুল্য এদিকে আলো নেই । শুনেছি , এখান থেকে কবরখানা শুরু , শেষ অনেকটা দূরে । এই জায়গাটায় নাকি মূলত সদ্যোজাতদের সমাধিস্থ করা হয় । তো , কাজ মিটে গেলে ভাবলাম একটু ঘুরে আসি । আকাশে তো চাঁদ আছে , যদিও মেঘের সাথে মাঝেমধ্যেই লুকোচুরি খেলছে , তবুও একেবারে অন্ধকার নয় চারপাশটা । এদিকটায় সাপখোপের ভয়ে দিনের বেলাতেও কেউ বড় একটা আসেনা । আমিও যে কেন এলাম তার উত্তর নেই আমার কাছে । বাবা কতগুলো বিষয়ে অনুমতি দেওয়ার ক্ষেত্রে ছোটবেলায় খুব কড়া ছিলেন । আঠারো বছর বয়সের আগে আমি শ্মশান যাওয়ার অনুমতি পাইনি । একবার , পাড়ার একজন গত হওয়ার পর বায়না করার মত করে বলেছিলাম --- সবাই তো যাচ্ছে । আমিও যাই না ! বাবা খুব বিরক্ত হয়ে উত্তর দিয়েছিলেন --- এটা কোনও উৎসব নয় , যে লাফাতে লাফাতে যোগ দিতে যেতে হবে । সময় হোক , তারপর যাবি । খুব , দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমি প্রথমবার শ্মশানে যাওয়ার অনুমতি পেলাম আমার এক ক্লাসমেট আত্মহত্যা করার পর । সেই অভিজ্ঞতা বড় মর্মান্তিক । তিন-চার দিন খেতে-ঘুমোতে পারিনি । ঘুমের মধ্যে থেকে থেকেই ভয় পেয়ে জেগে উঠে বাবাকে জাপটে ধরতাম । কাজেই , বলা বাহুল্য আমি খুব সাহসী মানুষ নই । কিন্তু সেদিন যে কী হল !
আমি হাঁটছি তো হাঁটছিই । পাশেই কুলকুল করে বয়ে চলেছে করলা নদী । উঁচু নীচু ঢিবি , মানে কবর পেরিয়ে , ভালই লাগছিল হাঁটতে । মোটেও ভয় করছিল না । কেমন যেন একটা ঘোর লেগে গিয়েছিল । মাথাটা পালকের মত হালকা লাগছিল , যেন কারও হাতছানিতে আরও আরও দূরে চলে যাচ্ছিলাম । একটা আকর্ষণ কাজ করছিল , সেটা কিসের বুঝিনি । হঠাৎ কয়েকটা কুকুর চিৎকার করে তেড়ে আসায় যেন আমার হুঁশ ফিরল । নিজেই খুব অবাক হয়ে দেখলাম , শ্মশান ছাড়িয়ে বহু দূরে চলে এসেছি । চারদিকে , যতদূর চোখ যায় , কেউ নেই , অন্ধকারে দূরে দাঁড়িয়ে থাকা গাছগুলো ছাড়া । সত্যি বলতে কী , এবার বেশ ভয় লাগলো । যতটা সম্ভব পা চালিয়ে ফিরে এসে দেখি , আমাকে কোত্থাও খুঁজে না পেয়ে পাড়ার সবার একেবারে উৎকণ্ঠায় শেষ অবস্থা ! একে শ্মশান , তার উপরে রাতদুপুরে হঠাৎ গায়েব ! চুপচাপ ছাউনির নীচে এসে বসার পরেই শুরু হল প্রশ্নবাণ । একটু পরে আমাদের তখনকার বাড়ির সামনের টুটুলদা ঝাড়া আধঘণ্টা ধরে , কুড়ি-পঁচিশ জনের সামনেই , ওই ভোর রাতেই, আমাকে তুমুল ঝাড়ল(আজ দীপাবলির দিনে দাদার বাড়িতে কালীপুজো হচ্ছে , কাল সকালে প্রতিবারের মত পাড়ার সকলে সুস্বাদু খিচুড়ি ভোগ খেতে যাবেন ।) ! সবার বিরক্ত চোখ তখন আমার দিকে ! রাগ হয়নি , খুব ভাল লেগেছিল । এখানে আমাকে অত আন্তরিকভাবে বকা দেওয়ার মত লোক নেই । আমি নিজেও বুঝিনি আর কাউকে বোঝাতেও পারিনি , সেদিন আমি কিসের টানে , কোথায় , কেনই বা যাচ্ছিলাম । শুধু টুটুলদা সবটা শুনে খুব গম্ভীর হয়ে গিয়েছিল , কিন্তু কেন , তা বলেনি ।

সেদিন আরও একটা অদ্ভুত কাণ্ড ঘটেছিল । তখন তিনটে-সওয়া তিনটে হবে । আমরা শ্মশানের সামনের রাস্তায় বসে আছি । হঠাৎ দেখি শুনশান রাস্তায় জগা মামার মত একটা লোক আমাদের বাড়ির দিক থেকে এদিকেই আসছে । পাশ থেকে বাবানদা বলল --- এ কী রে ! কে আসতেসে রে ! ভূত না জগা মামা ! কথাটা বলার সঙ্গত কারণ আছে । জগা মামা , জ্যেঠুর প্রিয় শ্যালক থাকেন ডালখোলায় । তাঁকে মৃত্যু সংবাদ দেওয়া হয়েছে রাত দশটা নাগাদ । কয়েক ঘণ্টার মধ্যে জলপাইগুড়ি এসে পড়া প্রায় অসম্ভব । কিন্তু ওই যে বলেনা , ইচ্ছে থাকলেই উপায় হয় । জগা মামার কাছ থেকে আমরা যে গল্প শুনলাম, তা-ও কম রোমহর্ষক নয় । খবর পেয়েই জগা মামা হাতের কাছে যা টাকা পয়সা ছিল , নিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে এসেছিলেন । সৌভাগ্যবশত বড় রাস্তায় এসে একটা ট্রাক পেয়ে যান , যেটি গোশালা মোড় হয়ে যাবে । উনি সেখানে নেমেছেন , তারপর সুহৃদ লেনের বাড়ি হয়ে আলো ফুটবার আগেই শ্মশানে । জ্যেঠুর নশ্বর শরীরটা বোধহয় সেদিন জগা মামার হাতের নিম আর চন্দন কাঠের অঞ্জলির জন্যই অপেক্ষা করছিল । সব অঙ্ক মেলানো যায়না , সব অঙ্ক মেলাতে নেই ।



www.httpssankhamanigoswami.xyz
#httpssankhamanigoswami


বুদ্ধিতে যার ব্যাখ্যা চলে না

অলৌকিক ঘটনা

অলৌকিক ঘটনা বাংলা
অদ্ভুত ঘটনা

অলৌকিক ঘটনাবলি

অদ্ভুত কিছু ঘটনা

অদ্ভুত যত ঘটনা

অদ্ভুত ঘটনাবলী
অদ্ভুত রহস্যময় ঘটনা

অদ্ভুতুড়ে ঘটনা







শুক্রবার, ৯ এপ্রিল, ২০২১

অতিথি সৎকার

নেমন্তন্ন বাড়িতে লোকে খেতে যায়, না সামাজিকতা করতে যায় ? আমার মনে হয় দ্বিতীয়টাই ঠিক । শুধু খাওয়াদাওয়া করতে হলে তো পয়সা ফেলে হোটেল-রেস্তরাঁতেই যাওয়া যায় । কয়েক বছর আগে আমাদের এক আত্মীয়ের বিয়ের কথা বলি । বিয়ের দিন হঠাৎ ক্যাটারার মেয়ের বাবার সাথে জরুরি কথা বলতে চায় । এই দিনে মেয়ের বাবাদের 'জরুরি' কাজের শেষ থাকে না , তাই আরও 'জরুরি' কী কথা থাকতে পারে , সে কথাই চিন্তা করতে করতে ভদ্রলোক ক্যাটারারের সঙ্গে আলোচনায় বসেন । শহরের নামকরা ক্যাটারার , নিজে দায়িত্ব নিয়ে সব কাজ করেন , বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া এরকম জরুরি তলব যে করবেন না সেটা বোঝাই যায় । তো , আলোচনা শেষে মূল সমস্যাটি যা বোঝা গেল , তা এইরকম --- বেশ কিছু আমন্ত্রিত ভদ্রমহোদয় এবং ভদ্রমহোদয়া খাওয়ার শেষে কর্মীদের বলছেন তাঁদের বাড়ির লোকের জন্য , মানে যাঁরা আসতে পারেননি , তাঁদের জন্য খাবার পার্সেল করে দিতে । এক-দু'জন হলে সামলাবার ব্যবস্থা ছিল , কিন্তু এখন সেই সীমা ছাড়িয়ে গেছে । এখন কী কর্তব্য ? যাঁরা আমন্ত্রিত , তাঁদের তো আর বলা যাবে না , খাবার পার্সেল হবে না , এটা রেস্তরাঁ নয় , বিয়েবাড়ি । কারণ তাতে তাঁরা অপমানিত বোধ করবেন । কাজে কাজেই , আর কী করা ? নতুন করে সব ব্যবস্থা করতে হল । ক্যাটারারের কর্মীরা বাড়তি কাজে যারপরনাই বিরক্ত হল । আর প্রায় মোট দু'শো অতিরিক্ত প্লেট পার্সেল হল !


ঘটনাটা শুনে আমি খানিক উদাস হয়ে গিয়েছিলাম । বছর কুড়ি আগের কথা , এক বান্ধবীর বিয়ে হচ্ছে । অথচ আমি আমন্ত্রিত নই , আমন্ত্রণ শুধু বাবার । বাবাকে দেখেই বান্ধবী আমার কথা জিজ্ঞেস করে । বাবা চুপ করে আছেন দেখে মেয়েটি সরাসরি তাঁর বাবাকে জিজ্ঞেস করে --- শঙ্খকে নেমন্তন্ন করোনি ? বাবার কাছে ঘটনাটা শুনে ভাল লেগেছিল , মজাও লেগেছিল ! আর এলাহি খাওয়ার বন্দোবস্তের কথা শুনে মন খারাপ হয়ে গিয়েছিল । দিনকাল পাল্টেছে , সেটা আমাদের মতো মানুষদের পক্ষে এককথায় ভালই । যাই না যাই , খাবার মিস হবে না !




photo : collected.


ফিচার প্রতিবেদন


ফিচার সংবাদ

ফিচার নিউজ


ফিচার পাতা

ফিচার লেখা


news feature article


news feature story


news feature example


বৃহস্পতিবার, ২৮ জানুয়ারি, ২০২১

নটী বিনোদিনীর বাড়ি

হাতিবাগানে স্টার থিয়েটারের অদূরে নটী বিনোদিনীর বাড়ি । কর্পোরেশনের বোর্ড ছাড়া আলাদা করে চোখে পড়ার মত , চিনে নেওয়ার মত কিছু নয় । শুধু একটা জিনিস ছাড়া -- খড়খড়ি দেওয়া জানলাগুলো খুব ছোট , সেকালের অধিকাংশ বাড়ির মত পেল্লায় মাপের নয় । প্রায় দরজার মত লম্বা নয় । আর বাড়িতে কোনও কারুকাজ , এমনকি কার্নিসেরও বালাই নেই । মাটি থেকে সোজা দোতলা বাড়ির দেওয়াল উঠে গেছে । মাঝখানে যেন কেউ গর্ত করে জানলা বসিয়ে দিয়েছে । দেহপসারিণী বিনোদিনী দাসী, গিরীশ ঘোষের সংস্পর্শে এসে কলকাতা শহরের অভিজাত থিয়েটারের জগতে নটী বিনোদিনী হয়ে উঠেছিলেন , অভিনয়ের গুণে পরমহংস রামকৃষ্ণের আশীর্বাদধন্যা ছিলেন, কিন্তু তাঁর সামাজিক গ্রহণযোগ্যতা সেকালে খুব একটা বাড়েনি বোধহয় । সে যুগের নামী অভিনেত্রী , এ যুগের পরিভাষায় বললে -- শো স্টপারের বাড়ি তৈরির মধ্যে কেমন যেন হেলাফেলা ভাব । ইতিহাস যে তাঁকে মনে রাখবে , এ কথাটা শিক্ষিতা নটী বিনোদিনী বোঝেননি , এটা মেনে নেওয়া কঠিন । সেই সময়ে দাঁড়িয়ে গিরীশ ঘোষ - নটী বিনোদিনীর কাজকর্ম তো বৈপ্লবিক বললেও কম বলা হয় । কিন্তু গুরু -শিষ্যার ভদ্রাসনের ফারাকটা চোখে পড়ার মত । বাগবাজারে গিরীশ ঘোষের বাড়ি আলাদা করে না চিনলেও যেকেউ বুঝবে , এটা কোনও নামী এবং মানী মানুষের বাড়ি । বিনোদিনীর বাড়ি দেখে কিন্তু তেমনটা মনে হয়না । বিনোদিনী মানি পেয়েছিলেন অনেক , মান বোধহয় তেমন পাননি । তাই সামাজিক সঙ্কোচটুকুও বাড়ি তৈরির সময়ে কাটিয়ে উঠতে পারেননি বলে মনে হয় ।


সাহিত্যিক মণিশঙ্কর মুখোপাধ্যায় লিখেছেন --- গঙ্গার ধারের জমিতে মাটি ফেলে উঁচু করে বেলুড় মঠ তৈরির জমি তৈরি হচ্ছে যখন , যখন ভগিনী নিবেদিতা এবং তাঁর সহযোগীরা যাতায়াত শুরু করেছেন মঠে , তখন বালি পুরসভার পক্ষ থেকে নরেন্দ্রনাথ দত্তের বিরুদ্ধে বেলেল্লাপনার অভিযোগ এনে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা হয়েছিল । এই যখন অবস্থা , তখন বিনোদিনীর মত এককালের বারবনিতার সামাজিক অবস্থান কেমন ছিল, সহজেই অনুমেয় ।





ফিচার প্রতিবেদন


ফিচার সংবাদ

ফিচার নিউজ


ফিচার পাতা

ফিচার লেখা


news feature article


news feature story


news feature example



রবিবার, ২৪ জানুয়ারি, ২০২১

আস্থা

        আমার এক বান্ধবীর মায়ের আজ মৃত্যুবার্ষিকী , দেখলাম ফেসবুকে । কত তাড়াতাড়ি জীবনের দিনগুলো পিছনে চলে যায় ! কুড়ি-বাইশ বছর আগের একটা ঘটনা মনে পড়ল কাকীমাকে নিয়ে , ভাগ করে নিই । আমার, প্রায় স-ব বন্ধু এবং বান্ধবীদের বাবা-মায়ের সাথেই সহজ সম্পর্ক ছিল । কিছু ক্ষেত্রে বন্ধুর মতনও । আমার এক ঘনিষ্ঠ বন্ধুর বাবাকে ওদের বাড়িতে গেলে , আমি বহুদিন ইনসুলিন ইঞ্জেকশন দিয়ে দিয়েছি কোমরে , বাড়ির সবাই ব্যস্ত থাকলে । কাকীমার সাথে সম্পর্কটাও বন্ধুর মতই ছিল । কলেজের অনেক গল্প মায়ের মত কাকীমার সঙ্গেও ভাগ করে নিতাম । কাকীমা কোনও বক্তব্য থাকলে বলতেন । আমরা তখন খুব অ্যামেচার নাটক করতাম । কাকীমা আমাদের অভিনয় দেখতে যেতেন নিয়ম করে । ওঁর বিশ্লেষণী শক্তি ছিল অসাধারণ । কাকীমার মতামতের অপেক্ষায় থাকতাম আমরা ।   এক বিকেলে ওঁদের বাড়িতে গেছি একটা কাজে । কাকীমা বললেন , ও দোতলায় ঘুমোচ্ছে , চলে যা । খুব অবাক হয়েছিলাম । কারণ তখনও কিছু বান্ধবীর অভিভাবকেরা , আমরা ওদের বাড়িতে গেলে , হয় আড়াল থেকে আড়ি পাততেন , নয়ত সামনে থেকে নড়তেন না । দোলের দিন তো নয়ই ! 

        যাইহোক গেলাম দোতলায় । গিয়ে দেখি উপরে আর কেউ নেই । ও একটা ঘরে অকাতরে ঘুমোচ্ছে , পোশাক স্বাভাবিকভাবেই কিছুটা অবিন্যস্ত । কয়েক মুহূর্ত ঠিক করতে সময় লেগেছিল , কী করব । শেষমেশ , ঘর থেকে বেরিয়ে ইচ্ছা করে যেন সিঁড়ির দিক থেকে এগিয়ে আসছি , এমন অভিনয় করে খুব জোরে ওর নাম ধরে ডাকতে ডাকতে এগোলাম । ও নিজেকে গুছিয়ে নেওয়ার সময় পেল , দু'জনের পক্ষেই একটা অস্বস্তিকর পরিস্থিতি এড়ানো গেল । জীবনে এমন কিছু মুহূর্ত বহু বার আসে , যখন অনেক কিছু করতে বা বলতে ইচ্ছে করে , কিন্তু শেষ পর্যন্ত ইচ্ছেয় রাশ টানতে হয় । সেদিন আমার জীবনে তেমন একটা মুহূর্ত এসেছিল । সুন্দরী মেয়েদের ঘুমোলে যে আরও সুন্দর লাগে , সেদিন জেনেছিলাম । 

        আর , সবচেয়ে ভাল লেগেছিল কাকীমা আমার উপরে আস্থা রাখেন বুঝে । সেদিনের পর থেকে কাকীমার প্রতি শ্রদ্ধাটা আরও বেড়ে গিয়েছিল । কালের নিয়মে কাকীমা আর ইহলোকে নেই , আমিও বুড়িয়ে গেছি , কিন্তু মনের ভেতরে একটা সুখস্মৃতি বেঁচে আছে । 

  






ফিচার প্রতিবেদন


ফিচার সংবাদ

ফিচার নিউজ


ফিচার পাতা

ফিচার লেখা


news feature article


news feature story


news feature example



শুক্রবার, ২২ জানুয়ারি, ২০২১

আ-দেখ-লে

 

                              তৃণে জন্ম পদ্মে পা

                              টিভিতে মুখ দেখাগে যা !

          বঙ্গ রাজনীতি বেশ কিছুদিন লিফট প্রসঙ্গ নিয়ে সরগরম থাকল ! কে লিফটে চড়ে রাজনীতির জগতে উপরে উঠেছেন আর কে সিঁড়ি ভেঙে উঠেছেন, সেই তর্কেও উত্তপ্ত হল খবরের চ্যানেলের আলোচনার প্যানেল । কিন্তু হঠাৎ সিঁড়ি-লিফট নিয়ে পড়লাম কেন , তার কারণটা বলি । ২০১৯-এর শেষের দিকে শিয়ালদা স্টেশনের মূল প্রবেশপথের সামনে ওই চত্বরেই বেড়ে ওঠা একটি রেস্তরাঁয় ঢোকার ব্যবস্থা দেখে পিত্তি জ্বলে গিয়েছিল । রেস্তরাঁটি একতলায় , সেখানে যাওয়ার জন্য ক্যাপসুল লিফটের ব্যবস্থা ! আলো দেওয়া একটা কাচের ঘর উঠছে আর নামছে , আর বুভুক্ষুদের অভ্যর্থনা জানাবার জন্য স্টেশন চত্বরে খিদমতগার দাঁড়িয়ে আছে । এই ধরণের ব্যবস্থা সিনেমায় বা পাঁচ তারা হোটেলে দেখা যায় , সেখানে এসব মানায় । কিন্তু, একতলা ওঠার জন্য রেল স্টেশনে লিফট ! মনে হয়েছিল, খাবারের মান-দাম না দেখে লোকে ওরকম হ্যাংলার মত লিফটে ঢুকছে কেন ? কেন বলছে না , যে – না , আমি সিঁড়ি দিয়েই উঠবো ? একটা কাগজের অফিস জানি , যেখানে রিসেপশন থেকেই বলে দেওয়া হয় , --- একতলায় গেলে , সিঁড়ি দিয়ে উঠবেন । আর সেই সিঁড়ি দিয়ে ওঠার সময় চোখে পড়ে, প্রতিষ্ঠানটির ব্লু কলার কর্মীদের ছবি । আক্ষরিক অর্থেই, যাঁদের ছবি দামী ফ্রেমে বাঁধানো ধাপে ধাপে , তাঁরা নীল পোশাক পরা কর্মী । ওঁরা হাত তুলে দিলে, পরের দিন কাগজ বেরোবে না । হাঁড়ির একটা ভাত টিপেই যেমন ভাত সেদ্ধ হয়েছে কিনা বোঝা যায় , তেমনি একটি বড় প্রতিষ্ঠান, কেন বড় , তার কিছুটা সিঁড়ি দিয়ে উঠতে গেলেই মালুম হয় ।   

           তো , এরপর আচমকা আমাদের গল্পে করোনা ভাইরাস ঢুকে পড়ল । মাসের পর মাস স-ব বন্ধ । একবছর হতে চলল মার্চ মাসের শেষের দিকের পর থেকে , এই ২২-০১-২০২১ তারিখ পর্যন্ত স্কুল-কলেজ খোলেনি । আদৌ কোনও দিন খুলবে কিনা সন্দেহ আছে , কারণ পশ্চিমবঙ্গ সরকারের শিক্ষা দফতর থেকে বাড়িতে আন্তর্জালে পড়াশোনার জন্য ট্যাব(লেট!) কেনার জন্য দশ হাজার করে টাকা দেওয়া হচ্ছে ছাত্রছাত্রীদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ।

             দশ মাস পরে সেদিন আবার শিয়ালদায় গেছিলাম । দেখলাম, ওই লিফট বন্ধ । কাচের দরজায় বিজ্ঞপ্তি ঝুলছে --- এখানে ৫৬ টাকায় ভাত পাওয়া যায় । দেখে , কেন জানিনা ভীষণ তৃপ্তি পেয়েছি । পথে এসো বাওয়া ! অতিমারির কিছু সুফলও আছে , এই কথাটা অস্বীকার করলে চলবে ? “বিপদে মোরে রক্ষা করো এ নহে মোর প্রার্থনা / বিপদে আমি না যেন করি ভয় / …  আমারে তুমি করিবে ত্রাণ এ নহে মোর প্রার্থনা / তরিতে পারি শকতি যেন রয় ।“ কী দারুণ কথা না ! এক্কেবারে যেন মনের কথাটি বলা । পকেটে এখন লিফট নয় , ছাপ্পান্ন টাকা সইতেও যে পাবলিকের বেজায় কষ্ট হচ্ছে , ওই বিজ্ঞপ্তিই তার জলজ্যান্ত প্রমাণ ।

             কাজেই , তৃণ হোক বা পদ্ম , এই অতিমারির বাজারে পকেট ও স্বাস্থ্যের জন্য সিঁড়িই ভাল ! কায়দা নেই , ফায়দা আছে ! আবদ্ধ স্থানেই তো করোনা ভাইরাসের ভয় বেশি , তাই না ?

https://sankhamanigoswami.blogspot.com/2021/01/pub-9792609886530610-18.html






suggestive image. not actual.



ফিচার প্রতিবেদন


ফিচার সংবাদ

ফিচার নিউজ


ফিচার পাতা

ফিচার লেখা


news feature article


news feature story


news feature example










রবিবার, ১৭ জানুয়ারি, ২০২১

মোহিত ঘোষ , রাষ্ট্রীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত ছড়াকারের নামফলকও নেই ! উত্তরবঙ্গ সংবাদ ১৭-০১-২০২১


https://www.uttarbangasambad.in/admin_epaper/uploadedfiles/2021-01-17_9.gif




ফিচার প্রতিবেদন


ফিচার সংবাদ

ফিচার নিউজ


ফিচার পাতা

ফিচার লেখা


news feature article


news feature story


news feature example

রবিবার, ৩ জানুয়ারি, ২০২১

অতিমারি

 এ দুনিয়ার সব কিছুই একটা কার্য – কারণ সম্পর্কে বাঁধা । লকডাউন চলাকালীন অনেকেই বলছেন, এই গ্রহ এখন রিস্টার্ট মোডে আছে । তাঁরা একদম ঠিক কথা বলছেন । ‘ইন্টারগভর্নমেন্টাল প্যানেল অন ক্লাইমেট চেঞ্জ’ বারবার বলেছে কিয়োটো প্রোটোকল মানো , কার্বন নিঃসরণের পরিমাণ কমাও , নইলে শেষ হয়ে যাব আমরা, কিন্তু সে কথায় কেউ কর্ণপাত করিনি । ষোড়শী গ্রেটা থুনবার্গ, নিজেকে সৃষ্টিকর্তার সমকক্ষ মনে করা রাষ্ট্রপ্রধানকে ধমকে বলেছেন --- “হাউ ডেয়ার ইউ ? তোমাদের সাহস হয় কী করে যাবতীয় পরিবেশবিধি তুড়ি মেরে উড়িয়ে দেওয়ার ।“ বড়দের দল তাঁর স্বাভাবিক ক্রোধকে ধর্তব্যের মধ্যেই আনেননি । পৃথিবীর ফুসফুস অ্যামাজন বৃষ্টিবনানী কেটে সাফ করে , সেখানকার জীববৈচিত্র্য ধ্বংস করে , বহুজাতিক সংস্থার হাতে তুলে দিয়েছেন রাষ্ট্রপ্রধান । চরম ঔদ্ধত্যে সে কাজের পক্ষে সওয়ালও করেছেন । উপগ্রহ চিত্রটি আমরা দেখেছি , সন্দর্ভ রচনা হয়েছে দিস্তে দিস্তে , কাজের কাজ কিস্যু হয়নি , অ্যামাজনকে বাঁচানো যায়নি । যে কয়েকজন পরিবেশবিদ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মানব সভ্যতার পায়ে কুড়ুল মারা প্রাণপণে আটকাতে গিয়েছিলেন , তাঁদের সৎ প্রচেষ্টাকে ফুৎকারে উড়িয়ে দিয়েছিলেন ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট বোলসোনারো । কোভিড’১৯ –এর রক্তচক্ষুতে ভয় পেয়ে উপায়ান্তর না দেখে তিনি এখন ভারতের কাছে হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন হাত পেতে চাইছেন । হয়ত অদূর ভবিষ্যতে এমন অনেক বরাত সরবরাহ হবে বি টি রোডের ওপর দাঁড়িয়ে থাকা বেঙ্গল কেমিক্যাল থেকে ! মন বলছে , যৌথ খামারের দিন এল বলে ! হিস্ট্রি ইজ নট কাইন্ড টু ম্যান হু প্লে গড --- কথাটা পুরোপুরি খেটে যায় ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্বন্ধে । যিনি নিজেকে প্রায় সুপারম্যান মনে করেন , তিনি আতান্তরে পড়ে গান পয়েন্টে একটা গরিব দেশকে বলছেন --- হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন দে , নইলে কিন্তু অনর্থ করবো ! হলিউডি ছবিতে এই গ্রহের যাবতীয় সমস্যা – সঙ্কটে ত্রাতার ভূমিকায় অবতীর্ণ হয় যে আমেরিকা , বিত্ত – বৈভব – ঐশ্বর্যের শেষ কথা ছিল যে রাষ্ট্র , সে এখন নিজেই ত্রাণ চাইছে । ভাগ্যের কী নির্মম পরিহাস !

কোভিড’১৯ আসলে পরিষ্কার রেড কার্ড । পৃথিবী এখন SEVERE ACUTE RESPIRATORY ILLNESS(SARI)—এ আক্রান্ত । এবার SURVIVAL OF THE FITTEST তত্ত্বটা নতুন করে মনে করার পালা । নোয়ার নৌকায় কে কে ঠাঁই পাবে কেউ জানেনা । এখন আবার নতুন করে শেখার সুযোগ এসেছে যে, খোদার ওপর খোদকারি করা যায় না । এভারেস্টের বেস ক্যাম্প পর্যন্ত গাড়ি যাওয়ার রাস্তা তৈরি করতে নেই , অতি সভ্য হতে নেই । ২১০০ সালে বিশ্বের বৃহত্তম অনলাইন সমাধিস্থল হতে চলেছে ফেসবুক, বলছে একটি সমীক্ষা । “যখন পড়বে না মোর পায়ের চিহ্ন এই বাটে / আমি বাইব না মোর খেয়ার তরী এই ঘাটে / চুকিয়ে দেব বেচাকেনা / মিটিয়ে দেব গো , মিটিয়ে দেব লেনা দেনা / বন্ধ হবে আনাগোনা এই হাটে , তখন” ---- আজি হতে শতবর্ষ পরে , কে তুমি পড়িছ বসে আমার পোস্টখানি ! আশায় বাঁচে চাষা ।





ফিচার প্রতিবেদন


ফিচার সংবাদ

ফিচার নিউজ


ফিচার পাতা

ফিচার লেখা


news feature article


news feature story


news feature example








সোমবার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০২০

প্রথম সারির ফুটবলে ব্যারাকপুরের খেলোয়াড়

 আমি অবশ্য ইস্টবেঙ্গল । কিন্তু তাতে কী !


"সব খেলার সেরা বাঙালির তুমি ফুটবল
কী জাদু আছে ওই তোমার নামেতে বাবা ফুটবল !"







ফিচার প্রতিবেদন


ফিচার সংবাদ

ফিচার নিউজ


ফিচার পাতা

ফিচার লেখা


news feature article


news feature story


news feature example






বৃহস্পতিবার, ২৬ নভেম্বর, ২০২০

দিয়োগো আর্মান্দো মারাদোনা

        অনেকদিন আগে 'আজকাল'-এর ক্রীড়া সাংবাদিক দেবাশিস দত্তের মুখে একটা গল্প শুনেছিলাম । স্মৃতি বিশ্বাসঘাতকতা করতে পারে , ভুল হলে বিদগ্ধ পাঠক ধরিয়ে দেবেন । দেবাশিসবাবু সেবার বিদেশের কোথাও ফুটবল বিশ্বকাপ কভার করতে গেছেন । রাতে, হোটেলে বসে খবর পেলেন , কাছের একটা স্টেডিয়ামে মারাদোনা একা প্র্যাকটিস করছেন । একজন সাংবাদিকের কাছে এমন মুহূর্ত একটা সুবর্ণ সুযোগ । দেবাশিসবাবু যথারীতি পৌঁছে দেখলেন স্টেডিয়ামের গেট বন্ধ । টপকালেন ! মারাদোনার কাছে তাঁকে যে যেতেই হবে । কাগজে, বিশ্বকাপ চলার সময় এক্সক্লুসিভ নিউজ করার সুযোগ কেউ ছাড়ে ! মারাদোনার কাছে কোনক্রমে পৌঁছনোর পর , ফুটবলের রাজপুত্র তাঁকে দেখে স্বাভাবিকভাবেই একটু অবাক হলেন । আরেকবার অবাক হলেন যখন এই বঙ্গসন্তান ওই মুহূর্তে তাঁর সাক্ষাৎকার নিতে চাইলেন ! কিমাশ্চর্যম অতঃপরম , মারাদোনা আধঘণ্টা সময় দিতে রাজি হলেন ! 'আজকাল'-এ পরদিন সেই সাক্ষাৎকার প্রকাশিত হল । 

        না , সেটা গল্প নয় । গল্প হল , এই আধঘণ্টায় বল মারাদোনার শরীর থেকে মাটিতে পড়েনি ! এই গোটা সময়টা জুড়ে, সারা শরীরে ফুটবলের এই বিস্ময় , বলটা খেলিয়ে গেছেন অবিরত । কয়েক বছর আগে কলকাতায় এসেছিলেন । তাঁর পায়ের ছাপ সংরক্ষণ করা হয়েছিল । নিখাদ জাদুতে বাঁধানো সেই পদচিহ্ন উদ্দেশ্য করে প্রণাম জানাই । 


দিয়োগো আর্মান্দো মারাদোনার স্মৃতিচারণ




ফিচার প্রতিবেদন


ফিচার সংবাদ

ফিচার নিউজ


ফিচার পাতা

ফিচার লেখা


news feature article


news feature story


news feature example





রবিবার, ২২ নভেম্বর, ২০২০

বাস্তবানুগ ?

 



            সত্যজিৎ রায়ের 'গণশত্রু' ছবির দৃশ্য । ছোটমুখে বড় কথা হবে , কিন্তু ছবির এই অংশটা আমার ভীষণ দুর্বল মনে হয় । ছবিতে এই দু'জন সহোদর । বড় ভাই সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় আর ছোট ধৃতিমান চট্টোপাধ্যায় । দু'জনেই একই শহরের কৃতী মানুষ । কিন্তু বড় ভাই আদর্শবাদী , আপসহীন মানুষ । আর ছোটভাই জীবনে চলার পথে নীতি-আদর্শের তোয়াক্কা করেন না । 'ঘরে-বাইরে' উপন্যাসে রবীন্দ্রনাথ লিখেছিলেন , পৃথিবীতে কিছু মানুষ আছে , যাঁদের স্বভাব জেতা । ছোটভাই ঠিক সেই ধরণের মানুষ । গল্প যে শহরকে ঘিরে আবর্তিত হয় , তিনি সেই শহরের পুরপিতা । শহরের সবচেয়ে জনপ্রিয় মন্দিরের পরিচালন সমিতির হোতা । সেই মন্দিরের চরণামৃতের জলে জীবাণু ধরে ফেলেন বিজ্ঞানমনস্ক , পেশায় শহরের নামকরা ডাক্তার বড়ভাই । অবিলম্বে মন্দির এবং চরণামৃতের তথা জলের উৎস বন্ধ করার এবং তা পরীক্ষা করে প্রয়োজনীয় মেরামত করার পক্ষে সওয়াল করে , উপযুক্ত তথ্য-প্রমাণসহ প্রবন্ধ লিখে পাঠান শহরের জনপ্রিয় দৈনিকে । পুরপিতা ভাই , শেষ মুহূর্তে কাগজের সম্পাদকের ওপর চাপ সৃষ্টি করে , সেই প্রবন্ধের প্রকাশ আটকে দেন । দাদার কাছে এই কাজের কারণ ব্যাখ্যা করে ধর্মের দোহাই দেন , মানুষের ভাবাবেগে আঘাত লাগার কথা বলেন । কিন্তু অচিরেই বেরিয়ে আসে প্রবন্ধ প্রকাশের বিরুদ্ধে আসল কারণটি --- মন্দিরের প্রণামী বাবদ আয় বন্ধ হয়ে যাওয়া । মানুষের জীবন বাঁচানো আগে , না মন্দির আগে , এই প্রশ্নে দুই ভাইয়ে সংঘাত বাধে । বিবাদ গড়ায় শহরের সবচেয়ে বড় দুর্গা মণ্ডপে আয়োজিত বিতর্কসভায় । সেই বিতর্ক সভারই দৃশ্য এটি । গল্পটা সবার জানা । তবু বললাম , এই দৃশ্যটি আমার ভাল না লাগার কারণ ব্যাখ্যা করার মুখবন্ধ হিসেবে । 

            সত্যজিৎ রায়কে আমরা বাস্তবানুগ ছবি নির্মাতা হিসেবে শ্রদ্ধা করি । কিন্তু ছবির এই অংশটি কী খুব বাস্তবসম্মত ? শহরের পুরপিতা , তাঁর প্রথিতযশা, ডাক্তার দাদার সঙ্গে দুর্গা মণ্ডপে দাঁড়িয়ে মাইক্রোফোন কেড়ে নিয়ে তর্ক করবেন সর্বসমক্ষে? তাঁর বক্তব্য রাখা বন্ধ করে দেবেন গায়ের জোরে ? বাস্তবের রাজনীতিকেরা এত বোকা নন আমাদের দেশেও । একটা দুগ্ধপোষ্য শিশুও বোঝে এভাবে কণ্ঠরোধ করতে গেলে বিপক্ষেরই সুবিধা হয় । যেমনটা আমরা দেখি এই ছবিতে । কিন্তু চিত্রনাট্যের অঙ্ক মেলাবার জন্য সত্যজিৎ রায় অবাস্তব দৃশ্যের অবতারণা করবেন কেন ? তিনি তো মিস্টার পারফেকশনিস্ট । বুদ্ধি তাঁর শানিয়ে নেওয়া , কিছুই দৃষ্টি এড়ায় না । তাহলে এত মোটা দাগের দৃশ্য কেন তাঁর ছবিতে ?

             সত্যজিৎ রায় যদি বেঁচে থাকতেন , অবশ্যই আমি তাঁকে নিজের বক্তব্য জানিয়ে চিঠি লিখে উত্তরের অপেক্ষায় উন্মুখ হয়ে বসে থাকতাম । তিনি যেমন মানুষ ছিলেন , আমার ধারণা , প্রশ্নগুলোর মুখোমুখি হলে তিনি খুশিই হতেন ।  


Ganashatru


https://g.co/kgs/Co8rWx



ফিচার প্রতিবেদন


ফিচার সংবাদ

ফিচার নিউজ


ফিচার পাতা

ফিচার লেখা


news feature article


news feature story


news feature example



কেরালার বৃহত্তম জিপলাইন adventure sport

  ### কেরালার বৃহত্তম জিপলাইন ভারতের দক্ষিণাঞ্চলের রাজ্য কেরালা, যার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও বৈচিত্র্যময় পরিবেশ পর্যটকদের আকর্ষণ করে, সেখানে এ...