"রম্যরচনা" লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান
"রম্যরচনা" লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান

বৃহস্পতিবার, ২ সেপ্টেম্বর, ২০২১

ফেঁক দো ! রম্যরচনা ।

 #ফেঁক_দো


ঘটনাটা বাবার কাছ থেকে শোনা । বাবা ঠাকুরদার পিণ্ডদান করতে গয়ায় যাচ্ছেন । ওই কামরায় , একই কাজে গয়া যাচ্ছেন , এমন কিছু বাঙালিও আছেন , কিন্তু বয়সে সকলেই বাবার থেকে অনেক বড় । তাই ওঁদের নিজেদের মধ্যেই দীর্ঘ ট্রেন যাত্রায় আড্ডা জমে উঠেছে । কামরা প্রায় ফাঁকা , সবাই শুয়ে-বসে-গড়িয়ে যাচ্ছে । ওই কুপেতে একজন শুধু আপাদমস্তক চাদর ঢাকা দিয়ে নীচের বার্থে শুয়ে আছে দীর্ঘক্ষণ ধরে , উঠছেও না , কোনও কথাও বলছে না । নাই কাজ , তো খই ভাজ । কিছুক্ষণ পরে বাঙালিদের দলটি পড়ল ওই না-দেখা লোকটিকে নিয়ে । নানারকম মন্তব্য ছুঁড়তে লাগল , কিন্তু তাতেও কোনও হেলদোল নেই । এবার শুরু হল চরম পন্থা -- ওই লোকটির উদ্দেশ্যে যেসব মন্তব্য ধেয়ে যেতে লাগল , তার কয়েকটা এরকম --- "ইয়ে আদমি মরা হুয়া হ্যায় , নাকি রে বাবা !" তার উত্তরে আরেকজন বলল -- "পুলিশকে ডাকলেই তো হয় ।" অপেক্ষাকৃত কমবয়সী এক ভদ্রলোক হঠাৎ করে বসলেন চরম সাহসী মন্তব্য --- "আরে , পুলিশ-টুলিশ ডাকার কী দরকার , উঠাকে ফেঁক দিলেই তো হয় !" এবার চাদর সরিয়ে উঠে বসলেন এক সর্দারজি , যাঁর পুরোটা শরীর শয্যায় আঁটছিল না । তিনি যে এতক্ষণ ধরে সব বাগাড়ম্বর শুনছিলেন তাঁর প্রমাণ দিয়ে খুউউব শান্তভাবে বললেন --- "উঠাকে ফেঁক দো !" কামরায় যেন বাজ পড়ল ! কারণ , ওই গল্পে মাতোয়ারা বাঙালি দলটির কোনও একজনের পক্ষে পাঁইয়াজিকে 'উঠাকে' ট্রেন থেকে 'ফেঁক' দেওয়া সম্ভব নয় !

দ্বিতীয় অভিজ্ঞতাটা আমার । স্কুলবেলার শেষ দিক । ছুটিতে এসেছিলাম মামাবাড়ি বোলপুরে , একা । ফেরার টিকিট পাইনি , দার্জিলিং মেলের জেনারেল বগিতে উঠেছি । তখন ট্রেনটা বোলপুরে আসত রাত দশটা নাগাদ । তো মামাতো দাদার কথা অমান্য করে , উঠে পড়ে দেখি ভেতরে তিলধারণের জায়গা নেই । শুধু বাথরুমটা ফাঁকা । সেটার সামনেই দাঁড়ালাম । অবস্থার বিস্তারিত বর্ণনায় যাচ্ছি না , অভিজ্ঞ জনে বুঝে নেবেন ! তো , ঘণ্টা দুই পরে প্রথম কুপেতে একটু ঢুকতে পারলাম । প্রায় সমবয়সী একটা পাঞ্জাবি ছেলে যেচে তার পাশে একটু বসার জায়গা দিল । বসলাম । ছেলেটা নিশ্চয়ই সিটটা কিনে শুয়ে যাচ্ছিল । বড়ই দয়ার মন তাঁর । নিজে থেকেই হিন্দিতে বলল , এন জে পি পর্যন্ত এভাবেই চলে যাওয়া যাবে , তারপর ও ঢুকবে শিলিগুড়িতে , আমি ধরব জলপাইগুড়ির ট্রেন । একটা রাতের তো ব্যাপার , দিব্যি কেটে যাবে , মনে করে একটু নিশ্চিন্ত হতেই কয়েকজন দাঁড়িয়ে থাকা যাত্রী আমার ওপর খেপে উঠলেন স্বাভাবিকভাবেই । আমি বসার জায়গা পেয়ে গেলাম , ওঁরা পেলেন না , রাগ হওয়া স্বাভাবিক । শুরু হল আমার উদ্দেশে কটূক্তি বর্ষণ । আমিও খোলা জানলা দিয়ে নিকষ কালো অন্ধকারে প্রাকৃতিক শোভা খুঁজতে লাগলাম ! কারণ , চশমাটা(যদিও তখন ছিলনা) খসে গেলে মুশকিলে পড়ি , দাদা আমি এখনও যে ইস্কুলে পড়ি , কব্জির জোরে আমি পারবো না ! আমি স্পিকটি নট হলেও , কিছুক্ষণ পর শিখ ছেলেটিকে উশখুশ করতে দেখলাম । তারপর হঠাৎ বাঁ হাত দিয়ে , ডান হাতের বালাটাকে কব্জির উপরে তুলতে তুলতে ছেলেটা উত্তেজিতভাবে লোকগুলোকে বলল --- "সিট ম্যায়নে খরিদা হ্যায় । ইস ভাইকো হামনে বইঠনে দিয়া হ্যায় । আপ লোগোঁকো কোয়ি তকলিফ হ্যায় কেয়া ?" ব্যস , এক ডোজেই কটূক্তি বন্ধ ! ছেলেটা তার মানে বাংলা বোঝে ! একই প্রশ্ন আমি দিল্লিতে ঘুরতে গিয়ে এক গাড়ির ড্রাইভারকে করেছিলাম । তাঁর উত্তরটা খাসা ছিল ---- "যব বাংলা মে আপলোগ গালিয়াঁ দেতে হো , তব সমঝমে আতা হ্যায় !"

sankhamanigoswami.blogspot.com


রম্যরচনা

রম্য অর্থ

রম্য সাহিত্য কি

রম্য রচনা বৈশিষ্ট্য

রম্যরচনা উদাহরণ

রম্যরচনা কাকে বলে

রম্যরচনা অর্থ

রম্যরচনা meaning


বুধবার, ২৫ আগস্ট, ২০২১

রিসেপশন । রম্যরচনা

 রিসেপশন



           এক প্রাইভেট হাসপাতালের রিসেপশন এক বৃদ্ধাকে ডিসচার্জ করে দেওয়া হয়েছে ছেলে মাকে নিতে এসেছেন বাইরে গাড়ি দাঁড়িয়ে বার দুই কাউন্টারে জিজ্ঞেস করলেন , আর কি কোনও কাগজপত্র নেওয়ার আছে ? রিসেপশন সুন্দরী বললেন , না স্যর , সবই আপনাকে দিয়ে দেওয়া হয়েছে তবু ভদ্রলোক বসলেন আমার বাঁ পাশে আমার ডানপাশ থেকে ওনার মা বললেন , চল , একবারে গাড়িতেই উঠে বসি ভদ্রলোক দাঁত-মুখ খিঁচিয়ে উঠলেন আগেই মনে হয়েছিল , এবার গন্ধে বুঝলাম , দুই হাতে-ঘাড়ে ট্যাটু করা ভদ্রলোক আকণ্ঠ পান করে এসেছেন ওনার মা একটু থম মেরে বসে আস্তে আস্তে একাই বেরিয়ে বাইরে গাড়িতে উঠে বসলেন প্রবল গরম , রিসেপশনে পুরোমাত্রায় সি চলছে ভদ্রলোক কিছুক্ষণ ঢুলতে ঢুলতে মিনিট পনেরো পরে গভীর নিদ্রায় তলিয়ে গেলেন ওনাকে ড্রাইভার ডাকতে এলো , ডাকতে ডাকতে , ডাকতে ডাকতে স্বাভাবিকভাবেই সাড়া পেলনা প্রথমে রিসেপশনে গুঞ্জন , যেন জীবনে কেউ মাতাল দেখেনি ! তারপর ডাক পড়ল নিরাপত্তা কর্মীদের ভদ্রলোকের তখন শরীর ছেড়ে দিয়েছে জাগাও পথিককে , সে ঘুমে অচেতন ! এরপর সুপারভাইজার এলেন , সব শুনে পাক্কা পেশাদারের মত বললেন , ট্রলি ডাকো , ভর্তি করে নাও ড্রাইভার আমতা আমতা করে কী যেন বলতে বলতে ওনার পিছনে দৌড়ল আমার ফোনে ঠিক তখনই একটা মেসেজ ঢুকল ফোনে মেসেজ অ্যালার্ট টিউন বাজছে --- কতই রঙ্গ দেখি দুনিয়ায় , ভাইরে ... !

               হাসপাতালের রিসেপশন হল এমন একটা জায়গা যেখানে সুস্থ লোকেদের কিছু করার থাকেনা , কিন্তু অনেকক্ষণ থাকতে হয় । আরেকদিন এক হাসপাতালের রিসেপশনে বসে আছি , সামনে এক মধ্যবয়স্ক ভদ্রলোক এবং তাঁর স্ত্রী আমার দিকে পিছন ফিরে বসে । দু’জনের দু’দিকে মুখ , কথা হচ্ছে না । কিছুক্ষণ পরে পরেই ভদ্রলোক ভদ্রমহিলার দিকে তাকাচ্ছেন , আর কনিষ্ঠা থুড়ি কেনি আঙুলটা স্ত্রীর বাঁহাতে ছোঁয়াচ্ছেন । স্ত্রী রাগতভাবে তাকিয়ে বুড়ো আঙুলটা দিয়ে ওনার কেনি আঙুলটাকে ঠেলে সরিয়ে দিচ্ছেন । এ জীবনে নীরব ভালবাসার ভাষা তেমনভাবে শেখা হয়ে ওঠেনি । অনেক ভেবে মনে পড়ল ছোটবেলায় থুতনির নীচে বুড়ো আঙুল ঘষে যার ওপর রাগ হত, তাকে আড়ি করতাম । আর প্রেমিক-প্রেমিকারা যে নিজেদের কনিষ্ঠা আঙুল জড়িয়ে পাশাপাশি হাঁটে সে তো দেখিই । আমি ওনাদের সাইন লাঙ্গোয়েজ এইটুকুই ডি-কোড করতে পেরেছি ।

            তৃতীয় ঘটনাটা কলকাতার শিশুমঙ্গল হাসপাতালের । চারটে থেকে ছ’টা ভিজিটিং আওয়ার চলছে । আমাদের সামনের বেডের ভদ্রলোকের পেটের পাশের দিকে একটা ফুটো দিয়ে নল ঢোকানো , সেখান দিয়ে পেটের ভিতরের ফ্লুইড জমা হচ্ছে একটা প্লাস্টিকের ব্যাগে , ঠিক ক্যাথিটারের মত । ভদ্রলোকের স্ত্রী ওনাকে দেখতে এসেছেন । কথা থামিয়ে ভদ্রলোক হঠাৎ বলে উঠলেন – এনেছো । স্ত্রী ঘাড় নাড়লেন । ভদ্রলোক বললেন – দাও । তারপর ওঁর স্ত্রীর ভ্যানিটি ব্যাগ থেকে যেটা বেরোল , তা দেখে আমাদের চক্ষু চড়কগাছ । তেল চুপচুপে ঠোঙায় চারটে শিঙাড়া ! ভদ্রমহিলা ওয়ার্ডের দরজায় গিয়ে দাঁড়ালেন, নার্সরা কেউ টহল দিতে আসছেন কিনা খেয়াল রাখতে । আমরা বুভুক্ষুর মত ভদ্রলোকের শিঙাড়া খাওয়া দেখে হাসব না কাঁদবো বুঝতে পারছিলাম না । আমার তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা , বিকাশ রায় অভিনীত ‘আরোগ্য নিকেতন’ ছবিটির একটি মজাদার অথচ মর্মস্পর্শী দৃশ্য মনে পড়ছিল । মশায়বাবার চিকিৎসাধীন এক রোগীর জটিল পেটের ব্যামো কিন্তু ভীষণ খাওয়ার লোভ । মশায় বারবার করে তাকে বলে দিয়েছেন ওষুধ-পথ্যের বাইরে কিচ্ছু না খেতে । শেষে দেখেন তাঁরই বাড়িতে পুজো উপলক্ষে যে ভিয়েন বসেছে , তার পাশে , একটু আড়ালে গিয়ে গাণ্ডেপিণ্ডে গিলছে সেই রোগী । মশায় তাকে দেখতে পেয়ে ভীষণ রেগে বলে ওঠেন --- তোর এত লোভ , বারবার বারণ করা সত্ত্বেও তুই আমার কথা শুনলি না ! তোর মৃত্যু কেউ আটকাতে পারবেনা । স্থানীয় লোকে বিশ্বাস করতো , মশায়ের নিদান কখনও মিথ্যে হয়না । সেদিন এতটা না হলেও কোনও ডাক্তারবাবু নিশ্চয়ই ওই ভদ্রলোককে শিঙাড়া খেতে দেখলে বলতেন—মিছিমিছি একটা বেড আটকে রাখছেন কেন ? বাড়ি চলে যান । আর মনে মনে হয়ত বলতেন , আপনার রিজার্ভেশন কনফার্মড ! 


www.httpssankhamanigoswami.xyz










রবিবার, ৪ এপ্রিল, ২০২১

উত্তরবঙ্গ সংবাদ ০৪-০৪-২০২১ । বাঙালির ভ্রমণ । রম্যরচনা ।

 


রম্যরচনা কাকে বলে


রম্যরচনা উদাহরণ


রম্যরচনা শব্দের অর্থ কি


রম্যরচনা অর্থ

রম্যরচনা meaning


বৃহস্পতিবার, ৫ নভেম্বর, ২০২০

বাঙালির ভ্রমণ

 

                        বাঙালির ভ্রমণ

 

             বাঙালি ঘুরতে ভালবাসে । ঘোরাতেও ভালবাসে অবশ্য । মাস পয়লায় মাইনে না পেয়ে ঘুরতে হলে মুখ ব্যাজার নয়ত কোম্পানি বা সরকারের গুষ্ঠির ষষ্ঠীপুজো করা । আর হোম ডেলিভারির টাকা , মুদির দোকানের খাতায় বাকি থাকা টাকার বেলায় আজ নয় কাল , কাল নয় পরশু । পাড়ায় চাঁদা দেওয়ার বেলায় পকেটখালির জমিদার আর বেড়াতে গিয়ে খরচা দেদার । সারা বছর বাঙালি ভ্রমণ-সাহিত্য পড়বে , ভ্রমণ বিষয়ক লেখার পাতা উল্টাবে আর বেড়াতে গিয়ে ছানাপোনার সাধারণ জ্ঞানের প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে ল্যাজেগোবরে হবে , নয়ত পূর্ণ আত্মবিশ্বাসে ভুলভাল বকবে ।

              কিছু বাঙালি বেড়ানোর প্ল্যান করলে আগে খোঁজ নেবে কোথায় ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের অতিথিশালা আছে । পাঁচ মাস আগে থেকে ঠিক অনুমতি ম্যানেজ করবে । ঠিক সময়ে গিয়ে, চিঠি নিয়ে সেই আশ্রমে হাজির হবে সপরিবারে । আশ্রমের বাইরে প্রচুর ফুর্তি করবে , খাবেদাবে , কেনাকাটা করবে , খরচ করবে খোলা হাতে । আর বিদায় নেওয়ার বেলায় যা ডোনেশন দেবে , তাতে একবেলায় হোটেলে দু’জনের ভাত খাওয়ার খরচও ওঠে না ! ঘুরতে বেরিয়ে বাঙালিরা ট্রেনে যাতায়াতের সময় রাত আড়াইটেয় চা খাবে আর বাথরুমে গিয়ে সিগারেট টানবে । কন্ডাক্টেড ট্যুরে ঘুরতে বেরিয়ে বাসে সামনের দিকেই বসবে জানলার পাশে , কোনও আপস করবে না । দার্জিলিং বেড়াতে গেলেও কে জানে কেন শুদ্ধ হিন্দিতে কথা বলবে ! যেমন – “আপনাদের এখানে কী ভাত, মানে রাইস পাওয়া যাতা হ্যায় ?” যেখানেই বেড়াতে যাক বাঙালি , খড়ের গাদায় সূচ খোঁজার মত করে বাংলা খবরের কাগজ খুঁজবে , আর সেটা হাতে পেলেই --- আহা , কী আনন্দ ! পেট পাতলা বলে খ্যাত বং-দের বেড়াতে গেলে পেট ছাড়বেই জানা কথা । সেই কারণেই বাঙালিরা নিজেদের সাথে মুঠো মুঠো এন্টেরোকুইনল আর অ্যান্টাসিড ট্যাবলেট রাখবে । আর হ্যাঁ , টিসু পেপার সঙ্গে নেবেই ! দক্ষিণ এবং বাম হস্তের কাজ সারাদিন পরপর চলতেই থাকবে কিনা !

            বেড়াতে বেরিয়ে ডিজিটাল ক্যামেরা ও মোবাইলে স্ফীতোদর বাঙালি বাবু ও বিবি পটাপট ছবি তুলবেন আনাড়ি হাতে , যেগুলির অধিকাংশেরই ভাগ্যে অনতিবিলম্বে ডিলিট প্রাপ্তি ঘটবে । কোন মহাপুরুষ যেন এই জাতটাকে শিখিয়ে গিয়েছিলেন যে , ঘুরতে বেরিয়ে মন খারাপ (প্রকাশ) করতে নেই , সেই থেকে বেড়ানোর অ্যালবামে সব বাঙালি প্রাণপণে হাসিমুখ । তিনটে ব্যাগ নিয়ে বেরোলে বাড়ি ফিরবে আরও তিনটে ভর্তি করে । তিন মাস আগে টিকিট কাটলেও অধিকাংশই কাটবে এজেন্টদের কাছ থেকে , লাইনে দাঁড়াবে না কষ্ট করে । দক্ষিণ ভারত গেলে পাউরুটি খেতে গেলেও বাঙালি বলবে – এঃ , বড্ড নারকেল তেলের গন্ধ ! পুরীতে গিয়ে চিংড়ির মালাইকারি চেটেপুটে খেয়ে বলবে , নারকেলটা দু’দিন আগে বাটা , খুঁত ধরতে হবে না ! প্রাকৃতিক দৃশ্য দেখে মোহিত হলে , রবি ঠাকুরের গান গাইবে গুনে গুনে ঠিক দু’লাইন , কারণ তারপর আর মনে নেই !

             বাঙালি ঘুরতে গেলেই অন্যের সাথে গায়ে পড়ে আলাপ জমাবে , টিপে টিপে টুথপেস্ট বের করার মত হাঁড়ির খবর জানবে । জানাবে কম কিংবা বানিয়ে বানিয়ে , ফুলিয়ে-ফাঁপিয়ে নিজেদের কথা বলবে । তারপর হঠাৎ কোনও বিপদে পড়লে , সদ্য পরিচিত মানুষটিকে ছেড়ে সবার আগে মানে মানে কেটে পড়বে । ঢেঁকি স্বর্গে গেলেও ধান ভানে আর বাঙালি ঘুরতে গেলেও রাজনীতি চর্চা আর পদে পদে রাজনীতি করার বদভ্যাস ছাড়তে পারে না । এ রাজ্যের বাইরের রাজনীতি সম্পর্কে আগ্রহ আর জ্ঞানগম্যি দু’টোই কম , আর আন্তর্জাতিক হওয়ার তো প্রশ্নই নেই । ফলে বি জে পি হলে তৃণমূলের মুণ্ডপাত , না হলে উল্টোটা ! যে লোক এমনিতে অফিসে বেলা বারোটায় ঢুকে তিনটেতেই টা টা গুডবাই , সেও ঘুরতে বেরিয়ে ওয়ার্ক কালচার নিয়ে লম্বা-চওড়া বক্তৃতা দেবে । আর দু’মিনিট পরপর ছবি-সহ স্ট্যাটাস আপডেট দেবে ফেসবুকে --- ফিলিং ওয়ান্ডারফুল অ্যাট অমুক প্লেস উইথ থাউজেন্ড আদার্স !

          দেশ(কিংবা বিদেশ) দেখতে বেরিয়ে বাড়ির চৌকাঠের বাইরে পা রাখলেই কেন কে জানে বাঙালিবাবুরা নিজেদের হঠাৎ-রাজা ভাবতে শুরু করেন এবং চান প্রতি মুহূর্তেই আশপাশের লোকেরা যেন তাঁর সাথে করজোড়ে হেঁ হেঁ করে কথা বলেন । যেন বাবুটি সাক্ষাৎ পরিব্রাজক হিউ-এন-সাং-এর ব্রাদার-ইন-ল ! তবু এমনটাই চলছে , চলবে । কারণ ‘দুনিয়ার বাঙালি এক হও’ মঞ্চ যদি একদিন সকালে আচমকা ঘোষণা করে , যে এই করোনা-কালে ঘুরে-বেড়িয়ে পয়সা উড়িয়ে ক্ষতি বই লাভ নেই কোনও , কাল থেকে ভ্রমণ-বনধ --- তা হলে দেশ-বিদেশের পর্যটন ব্যবসা আরও কতটা মার খাবে , তা আগাম বলার জন্য নস্ট্রাডামুস হওয়ার কোনও প্রয়োজন নেই ।

https://sankhamanigoswami.blogspot.com/2020/11/pub-9792609886530610.html








কেরালার বৃহত্তম জিপলাইন adventure sport

  ### কেরালার বৃহত্তম জিপলাইন ভারতের দক্ষিণাঞ্চলের রাজ্য কেরালা, যার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও বৈচিত্র্যময় পরিবেশ পর্যটকদের আকর্ষণ করে, সেখানে এ...