#ফেঁক_দো
বৃহস্পতিবার, ২ সেপ্টেম্বর, ২০২১
ফেঁক দো ! রম্যরচনা ।
বুধবার, ২৫ আগস্ট, ২০২১
রিসেপশন । রম্যরচনা
রিসেপশন
এক প্রাইভেট হাসপাতালের রিসেপশন । এক বৃদ্ধাকে ডিসচার্জ করে দেওয়া হয়েছে । ছেলে মাকে নিতে এসেছেন । বাইরে গাড়ি দাঁড়িয়ে । বার দুই কাউন্টারে জিজ্ঞেস করলেন , আর কি কোনও কাগজপত্র নেওয়ার আছে ? রিসেপশন সুন্দরী বললেন , না স্যর , সবই আপনাকে দিয়ে দেওয়া হয়েছে । তবু ভদ্রলোক বসলেন আমার বাঁ পাশে । আমার ডানপাশ থেকে ওনার মা বললেন , চল , একবারে গাড়িতেই উঠে বসি । ভদ্রলোক দাঁত-মুখ খিঁচিয়ে উঠলেন । আগেই মনে হয়েছিল , এবার গন্ধে বুঝলাম , দুই হাতে-ঘাড়ে ট্যাটু করা ভদ্রলোক আকণ্ঠ পান করে এসেছেন । ওনার মা একটু থম মেরে বসে আস্তে আস্তে একাই বেরিয়ে বাইরে গাড়িতে উঠে বসলেন । প্রবল গরম , রিসেপশনে পুরোমাত্রায় এ সি চলছে । ভদ্রলোক কিছুক্ষণ ঢুলতে ঢুলতে মিনিট পনেরো পরে গভীর নিদ্রায় তলিয়ে গেলেন । ওনাকে ড্রাইভার ডাকতে এলো , ডাকতে ডাকতে , ডাকতে ডাকতে স্বাভাবিকভাবেই সাড়া পেলনা । প্রথমে রিসেপশনে গুঞ্জন , যেন জীবনে কেউ মাতাল দেখেনি ! তারপর ডাক পড়ল নিরাপত্তা কর্মীদের । ভদ্রলোকের তখন শরীর ছেড়ে দিয়েছে । জাগাও পথিককে , ও সে ঘুমে অচেতন ! এরপর সুপারভাইজার এলেন , সব শুনে পাক্কা পেশাদারের মত বললেন , ট্রলি ডাকো , ভর্তি করে নাও । ড্রাইভার আমতা আমতা করে কী যেন বলতে বলতে ওনার পিছনে দৌড়ল । আমার ফোনে ঠিক তখনই একটা মেসেজ ঢুকল । ফোনে মেসেজ অ্যালার্ট টিউন বাজছে --- কতই রঙ্গ দেখি দুনিয়ায় , ও ভাইরে ... !
হাসপাতালের রিসেপশন হল এমন একটা জায়গা যেখানে সুস্থ লোকেদের কিছু করার থাকেনা ,
কিন্তু অনেকক্ষণ থাকতে হয় । আরেকদিন এক হাসপাতালের রিসেপশনে বসে আছি , সামনে এক মধ্যবয়স্ক
ভদ্রলোক এবং তাঁর স্ত্রী আমার দিকে পিছন ফিরে বসে । দু’জনের দু’দিকে মুখ , কথা হচ্ছে
না । কিছুক্ষণ পরে পরেই ভদ্রলোক ভদ্রমহিলার দিকে তাকাচ্ছেন , আর কনিষ্ঠা থুড়ি কেনি
আঙুলটা স্ত্রীর বাঁহাতে ছোঁয়াচ্ছেন । স্ত্রী রাগতভাবে তাকিয়ে বুড়ো আঙুলটা দিয়ে ওনার
কেনি আঙুলটাকে ঠেলে সরিয়ে দিচ্ছেন । এ জীবনে নীরব ভালবাসার ভাষা তেমনভাবে শেখা হয়ে
ওঠেনি । অনেক ভেবে মনে পড়ল ছোটবেলায় থুতনির নীচে বুড়ো আঙুল ঘষে যার ওপর রাগ হত, তাকে
আড়ি করতাম । আর প্রেমিক-প্রেমিকারা যে নিজেদের কনিষ্ঠা আঙুল জড়িয়ে পাশাপাশি হাঁটে সে
তো দেখিই । আমি ওনাদের সাইন লাঙ্গোয়েজ এইটুকুই ডি-কোড করতে পেরেছি ।
তৃতীয় ঘটনাটা
কলকাতার শিশুমঙ্গল হাসপাতালের । চারটে থেকে ছ’টা ভিজিটিং আওয়ার চলছে । আমাদের সামনের
বেডের ভদ্রলোকের পেটের পাশের দিকে একটা ফুটো দিয়ে নল ঢোকানো , সেখান দিয়ে পেটের ভিতরের
ফ্লুইড জমা হচ্ছে একটা প্লাস্টিকের ব্যাগে , ঠিক ক্যাথিটারের মত । ভদ্রলোকের স্ত্রী
ওনাকে দেখতে এসেছেন । কথা থামিয়ে ভদ্রলোক হঠাৎ বলে উঠলেন – এনেছো । স্ত্রী ঘাড় নাড়লেন
। ভদ্রলোক বললেন – দাও । তারপর ওঁর স্ত্রীর ভ্যানিটি ব্যাগ থেকে যেটা বেরোল , তা দেখে
আমাদের চক্ষু চড়কগাছ । তেল চুপচুপে ঠোঙায় চারটে শিঙাড়া ! ভদ্রমহিলা ওয়ার্ডের দরজায়
গিয়ে দাঁড়ালেন, নার্সরা কেউ টহল দিতে আসছেন কিনা খেয়াল রাখতে । আমরা বুভুক্ষুর মত ভদ্রলোকের
শিঙাড়া খাওয়া দেখে হাসব না কাঁদবো বুঝতে পারছিলাম না । আমার তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের
লেখা , বিকাশ রায় অভিনীত ‘আরোগ্য নিকেতন’ ছবিটির একটি মজাদার অথচ মর্মস্পর্শী দৃশ্য
মনে পড়ছিল । মশায়বাবার চিকিৎসাধীন এক রোগীর জটিল পেটের ব্যামো কিন্তু ভীষণ খাওয়ার লোভ
। মশায় বারবার করে তাকে বলে দিয়েছেন ওষুধ-পথ্যের বাইরে কিচ্ছু না খেতে । শেষে দেখেন
তাঁরই বাড়িতে পুজো উপলক্ষে যে ভিয়েন বসেছে , তার পাশে , একটু আড়ালে গিয়ে গাণ্ডেপিণ্ডে
গিলছে সেই রোগী । মশায় তাকে দেখতে পেয়ে ভীষণ রেগে বলে ওঠেন --- তোর এত লোভ , বারবার
বারণ করা সত্ত্বেও তুই আমার কথা শুনলি না ! তোর মৃত্যু কেউ আটকাতে পারবেনা । স্থানীয়
লোকে বিশ্বাস করতো , মশায়ের নিদান কখনও মিথ্যে হয়না । সেদিন এতটা না হলেও কোনও ডাক্তারবাবু
নিশ্চয়ই ওই ভদ্রলোককে শিঙাড়া খেতে দেখলে বলতেন—মিছিমিছি একটা বেড আটকে রাখছেন কেন
? বাড়ি চলে যান । আর মনে মনে হয়ত বলতেন , আপনার রিজার্ভেশন কনফার্মড !
রবিবার, ৪ এপ্রিল, ২০২১
উত্তরবঙ্গ সংবাদ ০৪-০৪-২০২১ । বাঙালির ভ্রমণ । রম্যরচনা ।
বৃহস্পতিবার, ৫ নভেম্বর, ২০২০
বাঙালির ভ্রমণ
বাঙালির ভ্রমণ
বাঙালি ঘুরতে ভালবাসে । ঘোরাতেও ভালবাসে অবশ্য । মাস পয়লায় মাইনে
না পেয়ে ঘুরতে হলে মুখ ব্যাজার নয়ত কোম্পানি বা সরকারের গুষ্ঠির ষষ্ঠীপুজো করা । আর
হোম ডেলিভারির টাকা , মুদির দোকানের খাতায় বাকি থাকা টাকার বেলায় আজ নয় কাল , কাল নয়
পরশু । পাড়ায় চাঁদা দেওয়ার বেলায় পকেটখালির জমিদার আর বেড়াতে গিয়ে খরচা দেদার । সারা
বছর বাঙালি ভ্রমণ-সাহিত্য পড়বে , ভ্রমণ বিষয়ক লেখার পাতা উল্টাবে আর বেড়াতে গিয়ে ছানাপোনার
সাধারণ জ্ঞানের প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে ল্যাজেগোবরে হবে , নয়ত পূর্ণ আত্মবিশ্বাসে
ভুলভাল বকবে ।
কিছু বাঙালি বেড়ানোর প্ল্যান করলে আগে
খোঁজ নেবে কোথায় ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের অতিথিশালা আছে । পাঁচ মাস আগে থেকে ঠিক অনুমতি
ম্যানেজ করবে । ঠিক সময়ে গিয়ে, চিঠি নিয়ে সেই আশ্রমে হাজির হবে সপরিবারে । আশ্রমের
বাইরে প্রচুর ফুর্তি করবে , খাবেদাবে , কেনাকাটা করবে , খরচ করবে খোলা হাতে । আর বিদায়
নেওয়ার বেলায় যা ডোনেশন দেবে , তাতে একবেলায় হোটেলে দু’জনের ভাত খাওয়ার খরচও ওঠে না
! ঘুরতে বেরিয়ে বাঙালিরা ট্রেনে যাতায়াতের সময় রাত আড়াইটেয় চা খাবে আর বাথরুমে গিয়ে
সিগারেট টানবে । কন্ডাক্টেড ট্যুরে ঘুরতে বেরিয়ে বাসে সামনের দিকেই বসবে জানলার পাশে
, কোনও আপস করবে না । দার্জিলিং বেড়াতে গেলেও কে জানে কেন শুদ্ধ হিন্দিতে কথা বলবে
! যেমন – “আপনাদের এখানে কী ভাত, মানে রাইস পাওয়া যাতা হ্যায় ?” যেখানেই বেড়াতে যাক
বাঙালি , খড়ের গাদায় সূচ খোঁজার মত করে বাংলা খবরের কাগজ খুঁজবে , আর সেটা হাতে পেলেই
--- আহা , কী আনন্দ ! পেট পাতলা বলে খ্যাত বং-দের বেড়াতে গেলে পেট ছাড়বেই জানা কথা
। সেই কারণেই বাঙালিরা নিজেদের সাথে মুঠো মুঠো এন্টেরোকুইনল আর অ্যান্টাসিড ট্যাবলেট
রাখবে । আর হ্যাঁ , টিসু পেপার সঙ্গে নেবেই ! দক্ষিণ এবং বাম হস্তের কাজ সারাদিন পরপর
চলতেই থাকবে কিনা !
বেড়াতে বেরিয়ে ডিজিটাল ক্যামেরা ও মোবাইলে স্ফীতোদর বাঙালি বাবু ও বিবি পটাপট
ছবি তুলবেন আনাড়ি হাতে , যেগুলির অধিকাংশেরই ভাগ্যে অনতিবিলম্বে ডিলিট প্রাপ্তি ঘটবে
। কোন মহাপুরুষ যেন এই জাতটাকে শিখিয়ে গিয়েছিলেন যে , ঘুরতে বেরিয়ে মন খারাপ (প্রকাশ)
করতে নেই , সেই থেকে বেড়ানোর অ্যালবামে সব বাঙালি প্রাণপণে হাসিমুখ । তিনটে ব্যাগ নিয়ে
বেরোলে বাড়ি ফিরবে আরও তিনটে ভর্তি করে । তিন মাস আগে টিকিট কাটলেও অধিকাংশই কাটবে
এজেন্টদের কাছ থেকে , লাইনে দাঁড়াবে না কষ্ট করে । দক্ষিণ ভারত গেলে পাউরুটি খেতে গেলেও
বাঙালি বলবে – এঃ , বড্ড নারকেল তেলের গন্ধ ! পুরীতে গিয়ে চিংড়ির মালাইকারি চেটেপুটে
খেয়ে বলবে , নারকেলটা দু’দিন আগে বাটা , খুঁত ধরতে হবে না ! প্রাকৃতিক দৃশ্য দেখে মোহিত
হলে , রবি ঠাকুরের গান গাইবে গুনে গুনে ঠিক দু’লাইন , কারণ তারপর আর মনে নেই !
বাঙালি ঘুরতে গেলেই অন্যের সাথে গায়ে
পড়ে আলাপ জমাবে , টিপে টিপে টুথপেস্ট বের করার মত হাঁড়ির খবর জানবে । জানাবে কম কিংবা
বানিয়ে বানিয়ে , ফুলিয়ে-ফাঁপিয়ে নিজেদের কথা বলবে । তারপর হঠাৎ কোনও বিপদে পড়লে , সদ্য
পরিচিত মানুষটিকে ছেড়ে সবার আগে মানে মানে কেটে পড়বে । ঢেঁকি স্বর্গে গেলেও ধান ভানে
আর বাঙালি ঘুরতে গেলেও রাজনীতি চর্চা আর পদে পদে রাজনীতি করার বদভ্যাস ছাড়তে পারে না
। এ রাজ্যের বাইরের রাজনীতি সম্পর্কে আগ্রহ আর জ্ঞানগম্যি দু’টোই কম , আর আন্তর্জাতিক
হওয়ার তো প্রশ্নই নেই । ফলে বি জে পি হলে তৃণমূলের মুণ্ডপাত , না হলে উল্টোটা ! যে
লোক এমনিতে অফিসে বেলা বারোটায় ঢুকে তিনটেতেই টা টা গুডবাই , সেও ঘুরতে বেরিয়ে ওয়ার্ক
কালচার নিয়ে লম্বা-চওড়া বক্তৃতা দেবে । আর দু’মিনিট পরপর ছবি-সহ স্ট্যাটাস আপডেট দেবে
ফেসবুকে --- ফিলিং ওয়ান্ডারফুল অ্যাট অমুক প্লেস উইথ থাউজেন্ড আদার্স !
দেশ(কিংবা বিদেশ) দেখতে বেরিয়ে বাড়ির চৌকাঠের
বাইরে পা রাখলেই কেন কে জানে বাঙালিবাবুরা নিজেদের হঠাৎ-রাজা ভাবতে শুরু করেন এবং চান
প্রতি মুহূর্তেই আশপাশের লোকেরা যেন তাঁর সাথে করজোড়ে হেঁ হেঁ করে কথা বলেন । যেন বাবুটি
সাক্ষাৎ পরিব্রাজক হিউ-এন-সাং-এর ব্রাদার-ইন-ল ! তবু এমনটাই চলছে , চলবে । কারণ ‘দুনিয়ার
বাঙালি এক হও’ মঞ্চ যদি একদিন সকালে আচমকা ঘোষণা করে , যে এই করোনা-কালে ঘুরে-বেড়িয়ে
পয়সা উড়িয়ে ক্ষতি বই লাভ নেই কোনও , কাল থেকে ভ্রমণ-বনধ --- তা হলে দেশ-বিদেশের পর্যটন
ব্যবসা আরও কতটা মার খাবে , তা আগাম বলার জন্য নস্ট্রাডামুস হওয়ার কোনও প্রয়োজন নেই
।
https://sankhamanigoswami.blogspot.com/2020/11/pub-9792609886530610.html
কেরালার বৃহত্তম জিপলাইন adventure sport
### কেরালার বৃহত্তম জিপলাইন ভারতের দক্ষিণাঞ্চলের রাজ্য কেরালা, যার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও বৈচিত্র্যময় পরিবেশ পর্যটকদের আকর্ষণ করে, সেখানে এ...
-
" ভয়ঙ্কর ভূতের গল্প সে অনেকদিন আগের কথা ----- ১৯৫৫ - ৫৬ সাল হবে । আমি সে সময় কলেজের ছাত্র । তখন জলপাইগুড়ি বাবু পাড়া পাঠাগারের ...
-
তনয়ের জন্য পাত্রী দেখছেন তার বাবা । রোববার কাগজ এলে গোটা সকালবেলাটা তার কেটে যায় পুত্রের জন্য সম্ভাব্য পাত্রী নির্বাচনে ...
-
Thinking aloud --- উচ্চস্বরে ভাবা । কানে, প্রায় অদৃশ্য হেডফোন গুঁজে কথা বলতে বলতে রাস্তা দিয়ে অন্যমনস্ক হয়ে চলার কথা বা মোবাইলের পর্দায় নিমগ...
-
পুষ্পাঞ্জলি ট্র্যাভেলস ডুয়ার্সে এখন পর্যটকদের যে দলটা আসে কলকাতা থেকে, তাঁদেরকে নিয়ে ঘোরেন সৈকত । পরিভাষায় তিনি ট্যুর অপারেট...
-
ট্রিপল টি --- টি , টিম্বার আর টোব্যাকো জলপাইগুড়ি জেলা তথা সমগ্র উত্তরবঙ্গের ব্যবসায়িক সমৃদ্ধির অভিজ্ঞান ছিল একসময় । সে রাম নেই...
-
অফিস থেকে বেরোতে আজ বড্ড দেরী হয়ে গেছে রাপ্তীর । মেন লাইনে এই সময়ে , এত রাতে লেডিজ কম্পার্ট্মেন্ট প্রায় ফাঁকা হয়ে যায় ...
-
শিমুল ফুলের উপকারিতা,শিমুল গাছের ফুল,bombax ceiba,red cotton tree,cotton tree,shimul flower,shimul flower drawing,shimul flower in bengali,s...
-
আমি আগাম ক্ষমাপ্রার্থনা করে নিয়ে বলতে বাধ্য হচ্ছি ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ(ARCHAEOLOGICAL SURVEY OF INDIA / A.S.I) সম্পর্কে আমার খুব এক...
-
শতবর্ষে সত্যজিৎ ---- একটি জীবন , একটি প্রতিষ্ঠান সত্যজিৎ রায়ের জন্ম ২ মে ১৯২১ সালে এবং মৃত্যু ২৩ এপ্রিল ১৯৯২ – এ । ছ...
-
Graffiti Visual art genre https://g.co/kgs/2181h1 graffiti art graffiti art drawings graffiti drawings graffiti artist Barrackpor...





