মঙ্গলবার, ২৮ এপ্রিল, ২০২০

পুষ্পাঞ্জলি ট্র্যাভেলস


পুষ্পাঞ্জলি ট্র্যাভেলস


       ডুয়ার্সে এখন পর্যটকদের যে দলটা আসে কলকাতা থেকে, তাঁদেরকে নিয়ে ঘোরেন সৈকত । পরিভাষায় তিনি ট্যুর অপারেটর । অভিজ্ঞ মানুষ , মালিকের বিশ্বস্ত লোক । এদিককার ব্যবসা বকলমে তিনিই দেখেন । বকুল ওঁর শাগরেদ । নতুন ঢুকেছে , সঙ্গে থেকে কাজ শিখছে । ছেলেটার একটা ব্যাপার সৈকতের ভারী পছন্দ , শেখার ইচ্ছে । বয়স হচ্ছে বলে আজকাল মাঝেমাঝেই মেজাজ হারান সৈকত , কিন্তু কিছুই গায়ে মাখেনা ছেলেটা । তবে, খুব প্রশ্ন করে । বাজার করে নিয়ে এসে রান্নাঘরের দায়িত্ব বকুলকে বুঝিয়ে দিয়ে একটু জিরিয়ে নিচ্ছিলেন সৈকত । দুপুরে লোকে একটু গুছিয়ে খায় , বেশি খায় । তাই , ভ্রমণ কোম্পানির কিঞ্চিৎ মাথাব্যথা থাকে, এই পর্বটা নিয়ে । তায় আজ মুরগির মাংস হচ্ছে । কম – বেশি সিদ্ধ হলেই খুঁত খুঁত করবে কিছু লোক । ঠিক সময়ে তাঁদের চুপ করাতে না পারলে ব্যবসার ক্ষতি । তাই টেনশনে আছেন সৈকত , ক্লান্তিটা কিছুটা সেই কারণেই ।
         কথায় বলে , যেখানে বাঘের ভয় সেখানেই আগে সন্ধে হয় । ঘেমেনেয়ে হঠাৎ রান্নাঘর থেকে ছুটতে ছুটতে এলো বকুল । মুখ কালো করে বলল --- “দাদা মাংস সিদ্ধ হচ্ছে না ।“
--- “ক’টা সিটি দিয়েছিস ?” চোখ বন্ধ করেই প্রশ্ন করলেন সৈকত ।
--- “চব্বিশটা ।“
--- “বলিস কী রে ! আজ  ভোরে যে তোকে ফ্রিজ বন্ধ করে দিতে বলেছিলাম , করেছিলি ?” চোখ খুলে, ভ্রূ কুঁচকে, প্রশ্ন ছুঁড়ে দেন সৈকত ।
--- “হ্যাঁ তো । ঠিক সাড়ে তিনটের সময় ।“
--- “চল তো দেখি ।“ বকুলকে নিয়ে রান্নাঘরে এলেন সৈকত । বললেন, --- “চা পাতার কৌটোটা আর ছাঁকনি নিয়ে আয় । কেটলিতে জল গরম করতে বসা ।“
--- “অ্যাঁ !”
--- “যেটা বলছি সেটা কর ।“ বকুলের মাথার পিছনে আলতো চাঁটি মেরে বললেন সৈকত । তারপর স্থির দৃষ্টিতে চেয়ে রইলেন কিছুক্ষণ মাংসের ডেকচিটার দিকে । আর বকুল কথা না বাড়িয়ে চটপট সবকিছু গুছিয়ে নিয়ে এলো । সৈকত কিছুটা চা পাতা ঢাললেন ছাঁকনির মধ্যে , তারপর সেটা বকুলের হাতে দিয়ে , নির্দেশ দিলেন --- “এবার অল্প অল্প করে গরম জল ঢালতে থাক মাংসের ওপর । কোনও জায়গা যেন বাদ না যায় । আর তাড়াহুড়ো করবিনা বলে দিলাম ।“
এভাবে সবটা জল ঢালা হয়ে গেলে, সৈকত বললেন,
--- “আবার সিদ্ধ করতে বসা । আমি ঘরে যাচ্ছি , পাঁচ মিনিট পরে আমায় গিয়ে বলবি কী অবস্থা । ঠিক আছে ?” উত্তরে, বাধ্য ছেলের মত মাথা নাড়ল বকুল । এবং তারপর ঠিক তিন মিনিটের মাথায় একমুখ হাসি নিয়ে উপস্থিত হল সৈকতের ঘরে ।
--- “দাদা , মাংস তো গলে পুরো মাখন । কিন্তু এটা হল কী করে !”
--- “বেশিক্ষণ ফ্রিজে রাখাতে মাংসের পেশিতন্তুগুলো শক্ত হয়ে গিয়েছিল । তাই সিদ্ধ হচ্ছিলনা । চায়ে যে ট্যানিন থাকে , সেটা তন্তুগুলোকে নরম করে দিল । ব্যস , কেল্লা ফতে !” সৈকতের মুখে তৃপ্তির স্মিত হাসি ।
--- “আপনি এত জানলেন কী করে দাদা ?” অবাক হয়ে প্রশ্ন করল বকুল ।
--- “স্কুলে পড়ার সময় তথ্যটা জেনেছিলাম । বিপাকে পড়ে বুদ্ধিটা কাজে লাগালাম । লাগলে তুক , না লাগলে তাক ! যদি আদৌ মাংসটা সিদ্ধ না হত , তাহলে আজ দুপুরে কী কেলোটা হত ভাবতে পারছিস ? চাপের মুখে থাকলে মাথাটা আপনিই খুলে যায় । ওসব কিছু না । কাজ করতে করতে তুইও শিখে যাবি ।“ এক নিঃশ্বাসে কথাগুলো বলে আবার পরম নিশ্চিন্তে চোখ বুজলেন সৈকত ।
https://sankhamanigoswami.blogspot.com/2020/04/pub-9792609886530610_8.html


অণুগল্প pdf

গল্প কাকে বলে

অণুগল্পের ইতিহাস

অনুগল্প লেখার নিয়ম

২০ শব্দের অনুগল্প

অনুবাদ অনুগল্প

বনফুলের অণুগল্প

রহস্য অনুগল্প


১০০ শব্দের ছোট গল্প

অণুগল্প pdf

২০ শব্দের গল্প

অনুবাদ অনুগল্প

সামাজিক অনুগল্প

রোমান্টিক অনুগল্প

৫০ শব্দের গল্প

ছোট গল্পের বৈশিষ্ট্য



অণুগল্প

অণুগল্প কাকে বলে 







কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Don't forget to like, comment, share and subscribe to my Blog. Thank you.

কেরালার বৃহত্তম জিপলাইন adventure sport

  ### কেরালার বৃহত্তম জিপলাইন ভারতের দক্ষিণাঞ্চলের রাজ্য কেরালা, যার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও বৈচিত্র্যময় পরিবেশ পর্যটকদের আকর্ষণ করে, সেখানে এ...