বৃহস্পতিবার, ৪ নভেম্বর, ২০২১

প্রশ্ন রয়ে যায়...

 #প্রশ্ন_রয়ে_যায়


"There are more things in heaven and earth Horatio, than are dreamt of in your philosophy." ---হ্যামলেট , উইলিয়াম শেক্সপীয়র ।

নিশির ডাকের ব্যাপারটা পড়েছি অনেক , শুনেছি আরও বেশি । সেই ডাকেই কিনা , আজও জানিনা , আমার জীবনে একটা অদ্ভুত ঘটনা ঘটেছিল জলপাইগুড়িতে থাকতে , ২০০০ কিংবা ২০০১ সালে । পাশের বাড়ির বড়দা জ্যেঠু মারা গেছেন রাত ন'টা নাগাদ , আচমকা হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে । আমাদের মাষকলাইবাড়ি শ্মশানে ঢুকতে ঢুকতে রাত একটা বাজলো । তখনও ইলেকট্রিক চুল্লি চালু হয়নি । কাঠের ঘরের লোককে ডেকে এনে সৎকারের সব আয়োজন শেষ হতে হতে দু'টো হয়ে গেল । শ্মশানে শুতে নেই , তাই পাড়ার সবাই গল্পগুজবে ডুবে গেলাম । একটু 'বাইরে' যাওয়ার প্রয়োজন ছিল । কাঠের ঘরটার পিছনে এলাম । এটা বসার ছাউনিটা থেকে একটু দূরে , এবং বলা বাহুল্য এদিকে আলো নেই । শুনেছি , এখান থেকে কবরখানা শুরু , শেষ অনেকটা দূরে । এই জায়গাটায় নাকি মূলত সদ্যোজাতদের সমাধিস্থ করা হয় । তো , কাজ মিটে গেলে ভাবলাম একটু ঘুরে আসি । আকাশে তো চাঁদ আছে , যদিও মেঘের সাথে মাঝেমধ্যেই লুকোচুরি খেলছে , তবুও একেবারে অন্ধকার নয় চারপাশটা । এদিকটায় সাপখোপের ভয়ে দিনের বেলাতেও কেউ বড় একটা আসেনা । আমিও যে কেন এলাম তার উত্তর নেই আমার কাছে । বাবা কতগুলো বিষয়ে অনুমতি দেওয়ার ক্ষেত্রে ছোটবেলায় খুব কড়া ছিলেন । আঠারো বছর বয়সের আগে আমি শ্মশান যাওয়ার অনুমতি পাইনি । একবার , পাড়ার একজন গত হওয়ার পর বায়না করার মত করে বলেছিলাম --- সবাই তো যাচ্ছে । আমিও যাই না ! বাবা খুব বিরক্ত হয়ে উত্তর দিয়েছিলেন --- এটা কোনও উৎসব নয় , যে লাফাতে লাফাতে যোগ দিতে যেতে হবে । সময় হোক , তারপর যাবি । খুব , দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমি প্রথমবার শ্মশানে যাওয়ার অনুমতি পেলাম আমার এক ক্লাসমেট আত্মহত্যা করার পর । সেই অভিজ্ঞতা বড় মর্মান্তিক । তিন-চার দিন খেতে-ঘুমোতে পারিনি । ঘুমের মধ্যে থেকে থেকেই ভয় পেয়ে জেগে উঠে বাবাকে জাপটে ধরতাম । কাজেই , বলা বাহুল্য আমি খুব সাহসী মানুষ নই । কিন্তু সেদিন যে কী হল !
আমি হাঁটছি তো হাঁটছিই । পাশেই কুলকুল করে বয়ে চলেছে করলা নদী । উঁচু নীচু ঢিবি , মানে কবর পেরিয়ে , ভালই লাগছিল হাঁটতে । মোটেও ভয় করছিল না । কেমন যেন একটা ঘোর লেগে গিয়েছিল । মাথাটা পালকের মত হালকা লাগছিল , যেন কারও হাতছানিতে আরও আরও দূরে চলে যাচ্ছিলাম । একটা আকর্ষণ কাজ করছিল , সেটা কিসের বুঝিনি । হঠাৎ কয়েকটা কুকুর চিৎকার করে তেড়ে আসায় যেন আমার হুঁশ ফিরল । নিজেই খুব অবাক হয়ে দেখলাম , শ্মশান ছাড়িয়ে বহু দূরে চলে এসেছি । চারদিকে , যতদূর চোখ যায় , কেউ নেই , অন্ধকারে দূরে দাঁড়িয়ে থাকা গাছগুলো ছাড়া । সত্যি বলতে কী , এবার বেশ ভয় লাগলো । যতটা সম্ভব পা চালিয়ে ফিরে এসে দেখি , আমাকে কোত্থাও খুঁজে না পেয়ে পাড়ার সবার একেবারে উৎকণ্ঠায় শেষ অবস্থা ! একে শ্মশান , তার উপরে রাতদুপুরে হঠাৎ গায়েব ! চুপচাপ ছাউনির নীচে এসে বসার পরেই শুরু হল প্রশ্নবাণ । একটু পরে আমাদের তখনকার বাড়ির সামনের টুটুলদা ঝাড়া আধঘণ্টা ধরে , কুড়ি-পঁচিশ জনের সামনেই , ওই ভোর রাতেই, আমাকে তুমুল ঝাড়ল(আজ দীপাবলির দিনে দাদার বাড়িতে কালীপুজো হচ্ছে , কাল সকালে প্রতিবারের মত পাড়ার সকলে সুস্বাদু খিচুড়ি ভোগ খেতে যাবেন ।) ! সবার বিরক্ত চোখ তখন আমার দিকে ! রাগ হয়নি , খুব ভাল লেগেছিল । এখানে আমাকে অত আন্তরিকভাবে বকা দেওয়ার মত লোক নেই । আমি নিজেও বুঝিনি আর কাউকে বোঝাতেও পারিনি , সেদিন আমি কিসের টানে , কোথায় , কেনই বা যাচ্ছিলাম । শুধু টুটুলদা সবটা শুনে খুব গম্ভীর হয়ে গিয়েছিল , কিন্তু কেন , তা বলেনি ।

সেদিন আরও একটা অদ্ভুত কাণ্ড ঘটেছিল । তখন তিনটে-সওয়া তিনটে হবে । আমরা শ্মশানের সামনের রাস্তায় বসে আছি । হঠাৎ দেখি শুনশান রাস্তায় জগা মামার মত একটা লোক আমাদের বাড়ির দিক থেকে এদিকেই আসছে । পাশ থেকে বাবানদা বলল --- এ কী রে ! কে আসতেসে রে ! ভূত না জগা মামা ! কথাটা বলার সঙ্গত কারণ আছে । জগা মামা , জ্যেঠুর প্রিয় শ্যালক থাকেন ডালখোলায় । তাঁকে মৃত্যু সংবাদ দেওয়া হয়েছে রাত দশটা নাগাদ । কয়েক ঘণ্টার মধ্যে জলপাইগুড়ি এসে পড়া প্রায় অসম্ভব । কিন্তু ওই যে বলেনা , ইচ্ছে থাকলেই উপায় হয় । জগা মামার কাছ থেকে আমরা যে গল্প শুনলাম, তা-ও কম রোমহর্ষক নয় । খবর পেয়েই জগা মামা হাতের কাছে যা টাকা পয়সা ছিল , নিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে এসেছিলেন । সৌভাগ্যবশত বড় রাস্তায় এসে একটা ট্রাক পেয়ে যান , যেটি গোশালা মোড় হয়ে যাবে । উনি সেখানে নেমেছেন , তারপর সুহৃদ লেনের বাড়ি হয়ে আলো ফুটবার আগেই শ্মশানে । জ্যেঠুর নশ্বর শরীরটা বোধহয় সেদিন জগা মামার হাতের নিম আর চন্দন কাঠের অঞ্জলির জন্যই অপেক্ষা করছিল । সব অঙ্ক মেলানো যায়না , সব অঙ্ক মেলাতে নেই ।



www.httpssankhamanigoswami.xyz
#httpssankhamanigoswami


বুদ্ধিতে যার ব্যাখ্যা চলে না

অলৌকিক ঘটনা

অলৌকিক ঘটনা বাংলা
অদ্ভুত ঘটনা

অলৌকিক ঘটনাবলি

অদ্ভুত কিছু ঘটনা

অদ্ভুত যত ঘটনা

অদ্ভুত ঘটনাবলী
অদ্ভুত রহস্যময় ঘটনা

অদ্ভুতুড়ে ঘটনা







কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Don't forget to like, comment, share and subscribe to my Blog. Thank you.

কেরালার বৃহত্তম জিপলাইন adventure sport

  ### কেরালার বৃহত্তম জিপলাইন ভারতের দক্ষিণাঞ্চলের রাজ্য কেরালা, যার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও বৈচিত্র্যময় পরিবেশ পর্যটকদের আকর্ষণ করে, সেখানে এ...