সোমবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২২

খোলা চিঠি

 ভাই সঞ্জীব প্রামাণিক ,

আগের আমলে , মানে বামপন্থীদের রাজত্বকালে এক বিরাট নেতা(কখনও নিজেকে ছোট মনে করতে নেই , অরণ্যের প্রাচীন প্রবাদ !) তাঁর বাড়িতে ঢোকার মুখে, দেওয়ালে একটি বাণী খোদাই করে রেখেছিলেন --- "সবার উপরে মানুষ সত্য / তাহার উপরে বিনয় দত্ত ।" কথাটা শুনে মনে হয় না , হাসব না কাঁদবো ? নিন্দুকদের দাবি আপনি বলেছেন, যাদবপুরের যে কোনও শিক্ষকের কলার ধরার ক্ষমতা আপনি রাখেন । ভালই করেন । সঞ্জীব প্রামাণিক হাসলেন , চাকরি পাবেন এই ভরসায় ! একটা ঘটনা বলি , চাইলে কিছু শিখতে পারবেন । আমি ব্যারাকপুরে থাকি । এখানকার খুব পুরনো বাসিন্দা এবং সর্বজনশ্রদ্ধেয় একজন বয়স্ক ডাক্তারবাবুর কাছে শুনেছি , নোনা চন্দনপুকুর এলাকায় এক সি পি এম নেতা এত ক্ষমতা ধরতেন, যে বলতেও ভয় লাগে ! পালাবদলের তিন দিনের মধ্যে সেই নেতা নোনা চন্দনপুকুর বাজার এলাকায় তাঁর দ্বিতল গৃহ জলের দরে বিক্রি করে নিরুদ্দেশ হয়ে যান , মানে কোথায় যাচ্ছেন বাড়ি বিক্রি করে প্রতিবেশীদেরও বলে যাওয়ার সময় পাননি আর কি ! একটা ছোট্ট অনুরোধ, পরামর্শও বলতে পারেন । বড় নেতার ভরসায় কোনও মন্তব্য করবেন না( আমি আপনার নামে প্রচারিত অডিও ক্লিপের সত্যতা যাচাই করিনি ! )। বড় নেতারা কতক্ষণ চিনবেন , গ্যারান্টি নাই । কিন্তু আপনার জীবনে সমস্যার মেঘ ঘনিয়ে আসার ফুল গ্যারান্টি আছে রাতারাতি নেতার অচেনা হয়ে গেলে । হাসিখুশি মুখে সর্বনাশ করতে বড় নেতাদের জুড়ি নেই ! তাই , সাবধানে থাকবেন । ভাল থাকবেন , সুস্থ থাকবেন ।

ইতি --- শঙ্খমণি গোস্বামী । নোনা চন্দনপুকুর , ব্যারাকপুর ।

বুধবার, ৬ এপ্রিল, ২০২২

খাওয়ার বয়স

সেদিন খানা-খাজানায় দেখলাম এক ষাটোর্ধ্ব ভদ্রলোক আমার সামনের চেয়ারে এই সপ্তাহের সাপ্তাহিক বর্তমানখানা খুলে বসলেন । ভাবলাম মালিকের পরিচিত , গরমে জিরিয়ে নিতে এসেছেন । একটু পরেই আমার ভুল ভেঙে দিয়ে দোকানের কর্মচারী ওনার সামনে এক প্লেট এগ-চাউ রেখে গেল । ওপরে বেশি করে চিলি এবং টম্যাটো সস , পেঁয়াজ আর শশা কুচনো । ভদ্রলোক একটু করে খাচ্ছেন , আর চিবাতে চিবাতে পড়ছেন । আহা , কী সুখ ! আমার একটা গল্প ভেবে নিতে ইচ্ছে হল । এনার শরীর ভর্তি রোগ । অনেক কিছু খাওয়া বারণ । বাড়ির লোক খুব শাসনে রাখে । তাই , দোকানে এসে ভালো করে সাঁটাচ্ছেন । গল্পটা ঠিক কিনা ভুল আমি জানিনা , কিন্তু সিনিয়র সিটিজেনদের ফুচকা , রোল , চাউ , কাটলেট , বিরিয়ানি খেতে দেখলে আপনাদের কী চোখ আটকে যায় ? আমার যায় । কিন্তু যাওয়া তো উচিত না । সত্তর বছর বয়সে ফুচকা খেতে ইচ্ছে করতে পারেনা ? আমি তো খাব । অল্প করে হলেও , খাব । খাওয়ার জন্যই তো বাঁচা !

সোমবার, ৪ এপ্রিল, ২০২২

সমান্তরাল প্রশাসন

বেশ কয়েকবছর আগেকার কথা । রবিবার সকালে বসে টিভিতে আমির খানের 'সত্যমেব জয়তে' দেখছি মন দিয়ে । খুব পছন্দের শো আমার । এক ছোটবেলার বন্ধুর ফোন এল । ভলিউম মিউট করেছি ঠিকই , কিন্তু চোখ এবং মন টিভির পর্দায় । সেদিনের বিষয়টাও ছিল খুব মনোগ্রাহী , 'গো বলয়ের খাপ পঞ্চায়েত' । আমির খানের টিম প্রাণনাশের হুমকি পাওয়া হিন্দু ও মুসলিম প্রেমিক-প্রেমিকা এবং খাপ পঞ্চায়েত সদস্যদের মুখোমুখি বসিয়েছে । উদ্দেশ্য কপোত-কপোতীকে বাঁচানো । ফলে আমি স্বাভাবিকভাবেই কথা বলতে বলতে অন্যমনস্ক হয়ে পড়ছিলাম । ছোটবেলার বন্ধুটি ঠিক ধরে ফেললো --- "মনটা কোথায় ? অ্যাঁ অ্যাঁ করছিস কেন ?" ফলে সবটা খুলে বলতেই হল । শুনেই তাঁর পত্রপাঠ প্রতিক্রিয়া --- "ওসব ফালতু শো ছাড় , অন্য কিছু দেখ , কাজে দেবে ।" শুনেই দুম করে মেজাজ গেল গরম হয়ে , বললাম --- "আমির খানের শো-এ দু'পক্ষকে মুখোমুখি বসিয়েছে , ১৩০ কোটি মধ্যে অন্তত বেশ কয়েক কোটি লোক শো-টা দেখছে । এর ইমপ্যাক্ট কী হবে, তোর কোনও ধারণা আছে ?" বন্ধুটি শান্ত গলায় বলল --- "আছে । হওয়ার যেটা সেটাই হবে । সে যত বড়, প্রভাবশালী লোকের শো-ই হোক না কেন ।" আরও বিরক্ত হয়ে বললাম -- "ফোনটা রাখতো এখন । আমি এটা দেখবো । পরে তোকে ফোন করছি ।"


এই ঘটনার পরে একমাসও বোধহয় কাটেনি । প্রথম পাতার বাঁ দিকে ছোট্ট খবর - ওই তরুণ-তরুণীকে খুন করা হয়েছে । সঙ্গে এটাও লেখা 'সত্যমেব জয়তে'-তে ওরা এসেছিলেন । আমি হতবাক ! বুঝলাম সনাতন ভারতীয় সমাজকে বুঝতে আমার ঢের দেরী আছে । কিন্তু সেদিনের কথা আজকে আবার বলছি কেন ? কারণ খবরে দেখলাম মহিষাদলে , মানে আমাদের রাজ্যে , "ঘর হতে শুধু দুই পা ফেলিয়া" পৌঁছনো যায় , এমন এক গ্রাম পঞ্চায়েত শিলমোহর-সহ বারো দফা নির্দেশিকা জারি করেছে ঠিক খাপ পঞ্চায়েতের মতন । সেসব প্রলাপের চর্বিতচর্বণে আর নাই-ই বা গেলাম ! পশ্চিমবঙ্গে অনেক কিছু হয়না বলে গর্ব ছিল , সেই গর্ব আস্তে আস্তে ভেঙে যাচ্ছে । প্রশাসন নিশ্চয়ই পদক্ষেপ করবে , পঞ্চায়েত বকা খাবে । কিন্তু তারপর সব কিছু কী ঠিক হয়ে যাবে ? আমার মনে হয়, লিখিত আদেশগুলি, শুধু অলিখিত আদেশে পরিণত হবে । পঞ্চায়েতের নির্দেশিকা ওপরমহলের চাপে পাল্টাতে পারে , গ্রামের মাতব্বরদের মন নয় ।

কেরালার বৃহত্তম জিপলাইন adventure sport

  ### কেরালার বৃহত্তম জিপলাইন ভারতের দক্ষিণাঞ্চলের রাজ্য কেরালা, যার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও বৈচিত্র্যময় পরিবেশ পর্যটকদের আকর্ষণ করে, সেখানে এ...