বুধবার, ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২০

ত্রাসের নাম আমপান

 

ত্রাসের নাম আমপান

 

          এইচ বি ও –তে স্টিফেন স্পিলবার্গের ঘূর্ণিঝড় নিয়ে ছবি ‘টুইস্টার’ বহুবার দেখা । উপভোগ্য ছবি । দুর্দান্ত স্পেশাল এফেক্টের কাজ । কিন্তু স্বচক্ষে ২০-০৫-২০ তারিখে নিজেদের বাড়ির উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া ঘূর্ণিঝড় ‘আমপান’-এর যে ভয়াবহ রূপ প্রত্যক্ষ করলাম, তারপর ঠিক করেছি আর কোনও দিন ‘টুইস্টার’ দেখব না ! প্রকৃতি রুষ্ট হলে , তার চেহারা যে কী অকল্পনীয় বিভীষিকাময় হতে পারে , তার কিছুটা আঁচ পেয়ে মনে হয়েছে , ‘টুইস্টার’-এ গরু – গাড়ি উড়ে যাওয়ার দৃশ্য এর কাছে নস্যি । এই বুধবার বিকেল তিনটে থেকেই বৃষ্টির সাথে হাওয়ার দাপট বাড়ছিল । সেটা চরমে পৌঁছল সন্ধে সাতটা নাগাদ । কাগজে আগে পড়েছিলাম ‘আমপান’(নামকরণ করেছিল তাইল্যান্ড । অর্থ-- আকাশ)-এর সম্ভাব্য গতিবেগ ১১০-১৩০ কিমি/ঘণ্টা এবং দক্ষিণবঙ্গে শেষ বিধ্বংসী ঝড় ‘আয়লা’র গতিবেগ ছিল ৭০ কিমি/ঘণ্টা । ঝড় থামার পরে জানা গেল, পশ্চিমবঙ্গের উপকূল অঞ্চল ও দক্ষিণ এবং উত্তর চব্বিশ পরগনার কিছু জায়গার উপর দিয়ে বয়ে যাওয়ার সময় ‘আমপান’ –এর গতিবেগ ১৪৫ কিমি/ঘণ্টা হয়েছিল , যার নজির গত আড়াই শতকে নেই । এই ঝড়ের গতিবেগ যে ‘আয়লা’র দ্বিগুণ তা সন্ধে ঘনাতেই মালুম হচ্ছিল । এক নাগাড়ে চলছিল প্রচণ্ড বৃষ্টি আর তীব্র হাওয়া । হাওয়ার এত কান ফাটানো – বুক কাঁপানো শব্দ আমি আগে কখনও শুনিনি । বাইরে বারান্দায় দাঁড়িয়েছিলাম , হাওয়ার প্রচণ্ড বেগে তাতেই শরীর নড়ে যাচ্ছিল । ঘরে এসে দরজা বন্ধ করলাম । হরর ফিল্মে যেভাবে অদৃশ্য শক্তির ধাক্কায় দরজা কাঁপতে দেখা যায় , একদম সেইভাবে মুহুর্মুহু দরজা –জানলা থরথর করে কাঁপতে লাগল ঘূর্ণি হাওয়ার আঘাতে । লোডশেডিং হয়েছিল বিকেল চারটেতেই । রাত আটটা নাগাদ মনে হচ্ছিল , প্রকৃতি নামক এক বিরাট কালো দৈত্য যেন ভীষণ রাগে ফুঁসছে । ন’টা নাগাদ লাগাতার হাওয়ার ঝাপটা একটু স্তিমিত হল, কিন্তু কিছুক্ষণ পরপর আগের চেয়েও পাঁচ গুণ বেশি বেগে হঠাৎ হঠাৎ দমকা হাওয়া বওয়া শুরু হল । আর তার সাথেই চলতে লাগল আমাদের বাড়ির আশপাশ থেকে ঝড়-বৃষ্টির শব্দকেও ম্লান করে দিয়ে বিভিন্ন বাড়ির টিনের চাল আছড়ে পড়ার পিলে চমকানো শব্দ । সাড়ে এগারোটা নাগাদ যখন ঘুমে চোখ বুজে এল , তখনও অবিরাম এই প্রলয় নাচন চলছে । বিকট শব্দে বারবার ঘুম ভেঙে যাচ্ছে । নটরাজের মূর্তি অনেকবার দেখেছি , এই রাতে তাণ্ডব কাকে বলে তা কিছুটা দেখলাম , বেশিরভাগটাই শুনলাম ।

         পরদিন সকালে উঠে দেখলাম বৃষ্টি থেমেছে । কিন্তু বাড়ির গেটের সামনে একহাঁটু জল , যা আগে কোনওদিন হয়নি । বেলা একটু গড়াতে সকলে বালতি নিয়ে পাড়ার নলকূপ থেকে জল আনতে ছুটলেন সেই জল ডিঙিয়ে , কারণ গতকাল বিকেল থেকে পুরসভার জল আসছে না । কারণ পাম্প চালাবার উপায় নেই । দেখলাম , বাড়ির সামনের রাস্তার জলে দিব্যি খেলা করছে তেলাপিয়া – পুঁটি মাছ ! আমাদের বাড়ির কাছেই একটা বিরাট দীঘি আছে । অনেকে বললেন, উপচে পড়া সেই দীঘি থেকেই মাছ আসছে । সাধারণত ভারী বৃষ্টি হলে , ঘণ্টা দু’য়েকের মধ্যেই আমাদের পাড়ার জল নেমে যায় রাস্তা থেকে । কিন্তু এ যাত্রায় গেল না । কারণটা ব্যাখ্যা করলেন পাড়ার প্রবীণেরা । গঙ্গার জল শহরে ঢুকে পড়েছে , তাই জল বেরনোর সব পথ বন্ধ । একটা গোটা দিনেরও বেশি সময় লাগল এবার জল নামতে । ছাদে উঠে দেখলাম , বেশকিছু বটপাতা পড়ে রয়েছে । অথচ আমাদের বাড়ির ত্রিসীমানায় বটগাছ নেই ! আমাদের আশপাশের প্রায় প্রতিটি বাড়িতে, গ্রীষ্মের প্রকোপ থেকে বাঁচতে , লোহার কাঠামোর ওপরে করোগেটেড টিনের ছাউনি দেওয়া, বাড়ির ছাদে । দেখলাম , চারপাশের বেশ কয়েকটা বাড়ির ছাদে , লোহার খাঁচা থেকে উপড়ে টিনের বিরাট বড় বড় আচ্ছাদনগুলো বিলকুল উধাও ! কাছেপিঠে কোনও জায়গায় তার টিকিটিও দেখা যাচ্ছে না । নির্মীয়মাণ বিভিন্ন বাড়ির ছাদে – সিঁড়িতে ইতস্তত পড়ে রয়েছে দূরের কোনও বাড়ির টিনের চাল । দুমড়ে – মুচড়ে যাওয়া মাথার ছাদের খোঁজে হাঁকডাক চলছে ।

          ২০ – ০৫ -২০ , বুধবার রাত সাড়ে ন’টা – পোনে দশটা পর্যন্ত ফোন করেছি । তারপর থেকে যেন গন গনা গন সেই যে গন , নেভার রিটার্ন – এর গল্প । আমরা তখন নেই-রাজ্যে । বিদ্যুৎ নেই , নিত্য ব্যবহার্য জল নেই , মোবাইল সংযোগ নেই , ইন্টারনেট নেই এবং সর্বোপরি ২১-০৫-২০ তারিখের বিপর্যস্ত শহরে খবরের কাগজও নেই । যিনি কাগজ দেন , তাঁর আসার পথই তো উপড়ে পড়া বড় বড় গাছ , বিদ্যুতের ছেঁড়া তার , ধরাশায়ী বিদ্যুতের খুঁটি ও জল জমে বন্ধ । এককথায় , তখন সভ্য জগতের সাথে আমাদের সমস্ত যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন । ২২-০৫-২০ তে এই লেখা যখন লিখছি , তখন হাতের কাছে শুধু খবরের কাগজ । বাইরের জগতের সাথে ওইটুকু যোগাযোগই স্থাপন করা গেছে । রাস্তার জল এখন পুরোপুরি নেমে গেছে । কয়েকজন ঘুরে এসে জানালেন যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কাজ করছেন পুরসভা ও বিদ্যুৎ দফতরের কর্মীরা । বেলা এগারোটা বাজে এখন । বৃষ্টি থামায় রোদের তাপ বাড়ছে । আজকে কারেন্ট চলে এলে বড্ড ভাল হয় । আরেকটা হলিউডি ছবির কথাও মনে পড়ছে এখন --- ‘স্ট্র্যান্ডেড’ ।

       শুক্রবার রাত সাড়ে আটটায় কলে জল এল । রাত পর্যন্ত মোবাইলের টাওয়ার আসছে – যাচ্ছে । কোনও কাজ করা যাচ্ছে না । শনিবার রাত দু’টো নাগাদ বিদ্যুৎ এল । মনে হচ্ছে এবার ধীরে ধীরে জীবনের ছন্দে ফিরব আমরা । কিন্তু শহরেরই যদি এইরকম বিষম অবস্থা হয় , তবে এই মহাপ্রলয়ের পরে, ক্ষতিগ্রস্ত প্রত্যন্ত অঞ্চলের দৈনন্দিন জীবন কবে স্বাভাবিক হবে , আদৌ হবে কি না, তা নটরাজই জানেন ।  










আমফান


আমফান ঘূর্ণিঝড়

আমফান ঘূর্ণিঝড় রচনা

আমফান ঘূর্ণিঝড় প্রতিবেদন আনন্দবাজার পত্রিকা

আমফান ঘূর্ণিঝড় প্রতিবেদন রচনা

আমফান ঝড়ের রচনা

আমফান অর্থ কি


আমফানের গতিবেগ


আমফান ঘূর্ণিঝড় গতিবেগ

শনিবার, ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২০

পরিবর্তন

            পুজো আসলেই মনটা কেমন কেমন করে ওঠে অজয়ের । সারা বছরের মূল রোজগারটা যে এই সময়েই হত । দেবীপক্ষ শুরু হয়ে গেলে নাওয়াখাওয়ার সময় থাকত না । বিচিত্রানুষ্ঠানের উদ্যোক্তারা অনেক আগে থেকে বরাত দিয়ে যেতেন । বিশেষ কদর ছিল অজয়ের বাইশ মিনিটের একটি অনুষ্ঠানের । একদল দামাল ছেলের ট্রেনে চড়ে বরযাত্রী হিসেবে গ্রামের এক বিয়ে বাড়িতে যাওয়া নিয়ে মঞ্চে দাঁড়িয়ে একা গল্প বলত অজয় । ছবির মত একেকটা দৃশ্য ফুটে উঠত দর্শকদের চোখের সামনে । কীভাবে ? মুখ দিয়ে বের হওয়া নানারকম ধ্বনিতে । এককালে পেশাদার হরবোলা ছিল অজয় । ট্রেনের শব্দ , বরযাত্রীদের গলার আওয়াজ , বিয়ে বাড়ির ব্যস্ততা , পঙক্তিভোজনের হাঁকডাক, সব একা গলার স্বরে ফুটিয়ে তোলার মধ্যে একটা আলাদা চ্যালেঞ্জ ছিল । এ কাজে টাকার চেয়েও বড় পুরস্কার ছিল দর্শকদের মুগ্ধ হয়ে হাততালি দিয়ে ওঠা । একটা দলও ছিল অজয়দের । ওরা তিনজন একসঙ্গে অনুষ্ঠান করতে যেত । এক বন্ধু হাতের কারসাজিতে জাদু দেখাত , আর একজন কথা বলাতো পুতুলকে । পুতুল নয় , আসলে গলা পাল্টে বন্ধুই ঠোঁট-মুখ না নাড়িয়ে মজার মজার কথা বলত , লোকে ধরতে পারত না । ইংরেজিতে নাকি , এই কাজটার একটা গালভরা নাম আছে --- ভেন্ট্রিলোকুইজম । একবার সত্যজিৎ রায়ের একটা গল্প পড়ে শিখেছিল অজয় । ভাল লেগেছিল গল্পটা । এটা তো তাদেরই জীবনের গল্প । 

          লোককে আমোদিত করে বেশ কাটছিল দিনগুলো । হঠাৎ টিভিতে একগাদা চ্যানেল এসে আস্তে আস্তে দর্শকদের চাহিদা পাল্টে দিল । হরবোলা-জাদুকর-কথা বলা পুতুল নয় , লোকে এখন সারা বছরই সপ্তাহভর সন্ধে থেকে বাড়িতে বসে টিভি সিরিয়াল দেখে , আই পি এল , আই সি এল দেখে । পুজোর ক'টা দিনও এই রুটিনের অন্যথা হয়না । বিনোদনের সংজ্ঞাটা কী পাল্টে গেছে ? অজয়দের দিন শেষ ? না বোধহয় । অজয় টিভিতেই দেখেছে বিভিন্ন ক্ষেত্রের বিরল প্রতিভাদের জনসমক্ষে তুলে আনার অনুষ্ঠান করছে কিছু চ্যানেল , সেইসব অনুষ্ঠানের গালভরা নামও আছে একটা --- ট্যালেন্ট হান্ট শো । সেইসব অনুষ্ঠানে যেতে গেলে অডিশন দিতে হয় । এরপরেরবার যখন ব্যারাকপুরে অডিশন নেবে ওই চ্যানেল , তখন সেখানে নাম দেবে অজয় হরবোলা । দুনিয়াকে বুড়ো হাড়ে ভেল্কি দেখিয়ে দেবে , ঠিক করেই রেখেছে অজয় । 

           অজয় তাই আজকাল নিয়ম করে প্রতিদিন আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে তার সেই বাইশ মিনিটের জনপ্রিয় অনুষ্ঠানের মহড়া দেয় , আর পেট চালাতে একটা বৈদ্যুতিন যন্ত্র সারাইয়ের দোকান চালায় । বুভুক্ষুর মত যে কোনও কাজ পেলেই হাতে নেয় না সে । যে ইন্ডাকশন , মিক্সি , টিভি সারাই করতে গিয়ে আর পাঁচজন হাল ছেড়ে দিয়েছে , বেছে বেছে সেই কঠিন কাজগুলো হাতে নেয় অজয় । যে কাজে মাথা খাটিয়ে সফল হতে হয় , সেই কাজগুলোই অজয়কে মানসিক তৃপ্তি দেয় । সে অজয় হরবোলা । বাঘ থেকে বিড়ালের ডাক নিখুঁতভাবে অনুকরণ করে লোককে একসময়ে সে মুগ্ধ করেছে । অজয় মিস্ত্রির কাজেও যেন সবার তাক লেগে যায় । তারিফ করে সবাই সেই আগের মতই যেন বলে --- "নাহ , এলেম আছে আপনার !"

https://sankhamanigoswami.blogspot.com/2020/09/%20pub-9792609886530610_25.html






শুক্রবার, ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২০

স্যর । লেখক : ঁশঙ্করদেব গোস্বামী ।

               কিছুদিন আগে টিভিতে একটা খবর দেখে আমি হতবাক । খবরটা দেখামাত্রই আমার ষাট বছর আগেকার একটা ঘটনার কথা মনে পড়ে গেল । টিভিতে কী দেখেছি , পরে বলছি । আগে ষাট বছর আগেকার ঘটনাটার কথা বলে নিই । বুড়ো হলে, পুরনো দিনের স্মৃতিচারণায় মন বড় আনন্দ পায় । তখন আমি সবে কর্মজীবনে প্রবেশ করেছি । আমার এক সহপাঠীর বাবা সদ্য বড় অপারেশন করিয়ে বাড়ি ফিরেছেন । আমি তাঁকে দেখতে গেছি । তাঁর ঘরে ঢুকতেই হাসিমুখে অভ্যর্থনা জানালেন । তাঁর সঙ্গে কিছুক্ষণ কথাবার্তা বলে ,তিনি বেশ ভাল আছেন দেখে , বন্ধুর ঘরে এসে জমিয়ে গল্প করছি । ওই বয়সে যা হয় , সমকালীন রাজনীতি নিয়ে আলোচনায় বেশ মেতে উঠেছি দু'জন । এমন সময়ে একটা ফোন এল । তর্ক থামিয়ে , ফোন ধরার ইচ্ছে না থাকলেও , বন্ধুটি রিসিভার তুলে কিছুটা বিরক্তির সঙ্গেই গম্ভীরভাবে বলে উঠল --- "হ্যালো !" ওপার থেকে কী কথা ভেসে এল শুনতে পেলাম না । হঠাৎ দেখি রিসিভার হাতেই বন্ধুটি তড়াক করে উঠে দাঁড়িয়ে বলছে --- "হ্যাঁ স্যর , ভাল আছেন স্যর । পরশুদিন বাড়ি এসেছেন । ঘরের মধ্যেই একটু একটু করে হাঁটানো হচ্ছে । আপনি আসবেন স্যর ! খুব ভাল হবে । বাবার তো ভাল লাগবেই , আমিও খুব আনন্দ পাব । আপনার শরীর ভাল আছে স্যর ? আপনি আসবেন , আমার কী যে আনন্দ হচ্ছে !" তারপর আরও কয়েকবার হ্যাঁ স্যর , হ্যাঁ স্যর , আচ্ছা স্যর বলে রিসিভার নামিয়ে রাখল । এই যে এতগুলি কথা হল , এতক্ষণ কিন্তু বন্ধুটি ঠায় দাঁড়িয়ে । এত সবিনয়ে স্যর - স্যর করা ভাল লাগল না । বিরক্তি চাপতে পারলাম না । একটু কটাক্ষের সুরে বললাম --- "এত স্যর -স্যর করছিলি , অফিসের বস বুঝি !" এতক্ষণে বন্ধুটি একগাল হেসে বলল --- "না রে , আমাদের হেডস্যর কথা বলছিলেন । কারও কাছ থেকে বাবার অসুখের খবর পেয়েছেন । বাবাকে দেখতে আসবেন বললেন । চিন্তা কর , ক-বে রিটায়ার করেছেন স্যর । এখনও , এই বয়সেও , বাবাকে দেখতে আসবেন বলছেন । ভাবা যায় !" আমি বললাম --- "তা , ফোন ধরে হঠাৎ দাঁড়িয়ে পড়লি কেন ?" ও বলল --- "স্যরের গলা পেয়ে আমার খেয়ালই নাই যে ফোনে কথা বলছি । মনে হচ্ছিল , আমি স্যরের সামনে দাঁড়িয়ে । স্যরের সামনে আমরা কখনও বসে কথা বলার কথা ভাবতে পেরেছি, বল !" 

            এবার বলি টিভিতে কী দেখে আমি অবাক হয়েছিলাম । টিভিতে দেখাচ্ছিল , কোনও এক গ্রামের প্রাথমিক স্কুলের প্রধান শিক্ষক , যুবা বয়সের হলেও স্কুলের প্রবেশপথে নালায় পড়ে , ছোট ছোট ছেলেদের দিকে হাত বাড়িয়ে তাঁকে তুলে দিতে বলছেন জড়ানো গলায় । কয়েকটি বাচ্চা ছেলে তাঁকে তোলার বৃথা চেষ্টা করছে । বাকিরা আশপাশে হেসে গড়িয়ে যাচ্ছে । বাচ্চাদের চেঁচামেচি শুনে মুহূর্তে পথচারী ও সংলগ্ন গ্রামবাসীরা ছুটে এসেই মাস্টারমশাইকে এলোপাথাড়ি চড়-চাপড় মারছে , সঙ্গে গালাগাল । সংবাদ পাঠকের কণ্ঠে জানা গেল , ওই ব্যক্তি মদ্যপ ছিলেন । প্রতিদিনই তিনি নেশাগ্রস্ত অবস্থায় স্কুলে আসেন । সংবাদ পাঠক আরও কী কী সব বলছিলেন রসিয়ে রসিয়ে । আমার আর শুনতে ভাল লাগল না , টিভি বন্ধ করে দিলাম । ষাট বছর আগের ঘটনাটি যখন প্রত্যক্ষ করি , তখন প্রতি বাড়িতে টিভি ছিল না , ফ্রিজ ছিল না , টেলিফোনও পল্লীতে দু'টো-একটা বাড়িতে । এখন প্রতি বাড়িতেই টিভি - ফ্রিজ , ফোন তো একাধিক । স্বাধীনতার পরে আমরা দিনকে দিন ক-ত সভ্য হয়ে উঠছি বলুন ! মাস্টারমশাইরা মদ খেয়ে স্কুলে আসছেন , ডাক্তারবাবুরা কিডনি কিংবা শিশু পাচার চক্রে জড়িয়ে পড়ছেন , ইঞ্জিনিয়ারেরা কোটি কোটি টাকা বালিশ-তোশক, এমনকি কমোডের ভিতরেও গুছিয়ে রাখার দক্ষতা অর্জন করছেন কেউ কেউ ! সভ্যতা বিকাশের আর কী প্রমাণ চাই ?    

https://sankhamanigoswami.blogspot.com/2020/09/%20pub-9792609886530610_26.html


          





বুধবার, ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২০

ইতিহাসের স্বপ্নভঙ্গ

 

আমি আগাম ক্ষমাপ্রার্থনা করে নিয়ে বলতে বাধ্য হচ্ছি ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ(ARCHAEOLOGICAL SURVEY OF INDIA / A.S.I) সম্পর্কে আমার খুব একটা শ্রদ্ধামিশ্রিত ধারণা নেই । আমার মনে হয় এটি একটি সাইনবোর্ডসর্বস্ব সংস্থা । আগ্রা কেল্লা দেখতে গিয়ে দেওয়ান-ই-আম , দেওয়ান-ই-খাস এমনকি অন্দরমহলের দেওয়ালে পর্যন্ত অমুক প্লাস অমুক , তমুক প্লাস তমুক লেখা ইট দিয়ে । অথচ পর্যটকদের হাতে কিছু নিয়ে ভেতরে ঢুকতে দেওয়া হয়না , ভেতরে নজরদারিও করা হয় । প্রশ্ন হল , তাহলে এগুলো লেখে কে ? ওড়িশায় উদয়গিরি-খণ্ডগিরির গুহাতেও একই চিত্র । ঘরের কাছে , মায়াপুরে একটি পূতিগন্ধময় বস্তির পিছনে খুঁজতে খুঁজতে বল্লাল সেনের ঢিপি বা স্থানীয়দের ভাষায় বল্লাল ঢিপি খুঁজে পাওয়া যায় । সেখানে এ এস আই-এর একটি বড়সড় সাইনবোর্ড আছে বটে , কিন্তু রক্ষণাবেক্ষণ বলতে কিচ্ছু নেই । চোখের সামনে বহু পর্যটককে ভ্রমণের স্মৃতিচিহ্ন হিসেবে বল্লাল ঢিপির ইট বা ইটের টুকরো সংগ্রহ করতে দেখেছি । মুর্শিদাবাদে সিরাজের পারিবারিক সমাধিক্ষেত্র খোশবাগে গেলেও একই অভিজ্ঞতা হয় । জায়গাটি আগাছায় ভরা তো বটেই , কোনটি কার সমাধি , তা-ও আলাদাভাবে চিহ্নিত নেই । ব্যারাকপুরে বেশ কিছু পোড়োবাড়ির ভিতরের মন্দিরে পোড়ামাটির কারুকাজ ছিল । ভগ্নস্তূপ হলেও মন্দিরের গায়ের সূক্ষ্ম কাজ বোঝা যেত । বহু পোড়োবাড়িতে আমি নিজেই ইংরেজ মালিকের নামের ফলক দেখেছি , সে ছবিও আমার কাছে আছে । হঠাৎ কী কারণে কে জানে , দেখছি এই ধরণের স্মৃতিচিহ্ন গুলি ভেঙে , গুঁড়িয়ে দিয়ে এলাকাগুলি লোহার জাল দিয়ে ঘিরে দেওয়া হচ্ছে । হয়ত জবরদখল হওয়ার ভয়ে বা সমাজবিরোধীদের আনাগোনা বন্ধ করতেই এমন উদ্যোগ । কিন্তু এমন কাজে হাত দেওয়ার আগে সতর্ক থাকা দরকার , যাতে দেশের প্রাচীনতম ক্যান্টনমেন্ট এলাকার ঐতিহাসিক স্মারকগুলি মুছে না যায় । দৃষ্টান্ত হিসেবে এ তল্লাটের , সম্ভবত এই জেলারও প্রথম রেল স্টেশনটির কথা বলা যায় , যেখানে কলকাতা থেকে সরাসরি সেনা শিবিরে রসদ নিয়ে যাওয়া হত । সেই কাজ করতে গিয়ে প্রথম উত্তর চব্বিশ পরগনায় রেল লাইন পাতা হয় । ক্যান্টনমেন্টের একেবারে কোর এরিয়ায় সেই স্টেশনটি এখন পরিত্যক্ত হয়েও বহু ইতিহাসের সাক্ষী এবং সেই কারণেই স্টেশনটিকে বাঁচিয়ে রাখা দরকার । এখনকার ব্যারাকপুর স্টেশনের নির্মাণশৈলীই বলে দেয় , যে এটি হেরিটেজ স্টেশন । এই ঐতিহ্যবাহী নির্মাণটিও কিন্তু ওই পরিত্যক্ত স্টেশনটির অনেক পরে তৈরি । ক্যান্টনমেন্ট এলাকার ভিতরে ঘোরাফেরা – ছবি তোলায় এখন বজ্র আঁটুনি । তাই এ বিষয়ে স্থানীয় ইতিহাদবিদ এবং এ এস আই কর্তৃপক্ষের সরব হওয়া দরকার ।  












ফিচার প্রতিবেদন


ফিচার সংবাদ

ফিচার নিউজ


ফিচার পাতা

ফিচার লেখা


news feature article


news feature story


news feature example


বৃহস্পতিবার, ৩ সেপ্টেম্বর, ২০২০

ভিডিও গেম

দৃশ্য ১ : একটি পাড়ার মন্দিরের চাতালে বাবু হয়ে বসে সমবয়সী তিন কিশোর । তিনজনেরই দৃষ্টি হাতের স্মার্টফোনের দিকে । সেইদিকেই চোখ রেখে একে অপরকে নির্দেশ দিচ্ছে , এটা কর - সেটা কর , কিন্তু একবারের জন্যও কেউ পরস্পরের দিকে তাকাচ্ছে না । খেলা করা , খুনসুটি করা বা গল্প করা তো দূরস্থান । আমার ছোটবেলায় মোবাইল ছিল না , তাই গতকাল হাঁটতে হাঁটতে দেখা এই দৃশ্য আমার ভীষণরকম অস্বাভাবিক লেগেছে । 


দৃশ্য ২ : ডায়াগনস্টিক সেন্টারে এক মা এসেছেন পরীক্ষা করাতে , পাঁচ-ছ'বছরের পুত্র আর শাশুড়িকে নিয়ে । পুত্রের চোখে এই বয়সেই চশমা এবং শ্রীমান স্বাভাবিকভাবেই অতিশয় দুরন্ত । আক্ষরিক অর্থে এক মুহূর্ত স্থির হয়ে বসে থাকতে পারেনা । সঙ্গে মুখে কথার ফুলঝুরি , কোনও আড়ষ্টতা নেই । মা হঠাৎ ভ্যানিটি ব্যাগ থেকে স্মার্টফোন বার করলেন । সেটা চালু করে দিতেই যেন কোন জাদুমন্ত্রে দুরন্ত ছেলে এক্কেবারে চুপ , এবং ওই বয়সে যতটা শান্ত হওয়া যায় , ততটা শান্ত হয়ে গেল । রিসেপশনে বসা কর্মী এবার মজা করতে করতেই খুদেটিকে বললেন , "বাড়ি থেকে একটা বই নিয়ে এলিনা কেন ?" 

বিষয়টা পাবজি-সহ ১১৮ টি চিনা অ্যাপ নিষিদ্ধ করা নয় , সস্নেহ প্রশ্রয়ে হেসে উড়িয়ে দেওয়ার মতও নয় । সমস্যার সমাধান লুকিয়ে আছে ছোটদের স্বভাব পাল্টানোয় । ছোটরা ভিডিও গেম নয় , বই হাতে পেয়ে শান্ত হোক ।    

https://sankhamanigoswami.blogspot.com/2020/09/%20pub-9792609886530610_23.html







ফিচার প্রতিবেদন


ফিচার সংবাদ

ফিচার নিউজ


ফিচার পাতা

ফিচার লেখা


news feature article


news feature story


news feature example


মঙ্গলবার, ১ সেপ্টেম্বর, ২০২০

WINGS OF FIRE . DR. A. P. J. ABDUL KALAM

 EACH INDIVIDUAL CREATURE ON THE BEAUTIFUL PLANET IS CREATED BY GOD TO FULFILL A PARTICULAR ROLE. WHATEVER I HAVE ACHIEVED IN LIFE IS THROUGH HIS HELP, AND ON EXPRESSION OF HIS WILL. HE SHOWERED HIS GRACE ON ME THROUGH SOME OUTSTANDING TEACHERS AND COLLEAGUES , AND WHEN I PAY MY TRIBUTES TO THESE FINE PERSONS , I AM MERELY PRAISING HIS GLORY. ALL THESE ROCKETS AND MISSILES ARE HIS WORK THROUGH A SMALL PERSON CALLED KALAM, IN ORDER TO TELL THE SEVERAL MILLION MANS OF INDIA , TO NEVER FEEL SMALL OR HELPLESS. WE ARE ALL BORN WITH A DIVINE FIRE IN US. OUR EFFORTS SHOULD BE TO GIVE WINGS TO THIS FIRE AND FILL THE WORLD WITH THE GLOW OF IT'S GOODNESS.


PAGE NUMBER -- 15.


courtesy: economic times


Wings of Fire

Book by A. P. J. Abdul Kalam and Arun Tiwari

wings of fire autobiography

wings of fire book

https://g.co/kgs/UcegQP


wings of fire quotes


wings of fire written by

wings of fire online reading

wings of fire meaning



কেরালার বৃহত্তম জিপলাইন adventure sport

  ### কেরালার বৃহত্তম জিপলাইন ভারতের দক্ষিণাঞ্চলের রাজ্য কেরালা, যার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও বৈচিত্র্যময় পরিবেশ পর্যটকদের আকর্ষণ করে, সেখানে এ...