শুক্রবার, ১১ ফেব্রুয়ারি, ২০২২

চৌকিদার । রোমিলা গঙ্গোপাধ্যায় । ভূতের গল্প

 চৌকিদার

কিছু ঘটনা এমন থাকে যা ঘটার সময় পারিপার্শ্বিক পরিবেশ অনুযায়ী এক অন্যধরনের পরাবাস্তব অনুভূতি সৃষ্টি করে, কিন্তু সেই একই ঘটনা পরিস্থিতি প্রকারান্তরে অন্যরকম হয়ে যায়।
ঘটনাটি ঘটেছিল বেশ কিছু বছর আগে। সবে কলেজ এর ফাইনাল পরীক্ষা শেষ হয়েছে। সামনে কিছুদিন অবসরসময়।
সদ্য যৌবনপ্রাপ্ত আমরা কোথাও একটা পরিবার বা গুরুজন ছাড়া ঘুরতে যেতে চাইছিলাম। যেখানে আমাদের ওপর আর কেউ থাকবেনা। আসলে বড়ো হচ্ছিলাম তাই স্বাধীনতা বোধ ও বাড়ছিল, সেখান থেকেই এই প্রবণতা।
তা, আমাদের তৎকালীন বন্ধুদের গ্রুপটি ছিল চমৎকার। ছেলে মেয়ে সহ জমজমাট গ্রুপ। আমরা বাড়িতে জানানোর পর, তারা অনেক ভেবে, একটা শর্ত দিলেন, সেটা হলো, আমরা প্রথমবার বাড়িতে জানিয়ে বাইরে নিজেদের মত করে ঘুরতে যাচ্ছি। কেউ থাকবে না, আমরা কি করবো তা দেখার জন্য, আর তাই গ্রুপ এ শুধু মাত্র বন্ধুরাই থাকবে। সেক্ষেত্রে আমাদের ই একটা দায়িত্ব নিতে হবে।
কোনও প্রেমিক-প্রেমিকা জুটি এইবার যেতে পারবে না।
এই শুনে তো আমাদের মাথায় হাত!!
তার একটা কারণ হলো, বেশিরভাগ প্রেমের গল্পই কারোর না কারোর বাড়িতে জানা আর সেকারণে আমরা কখনো না কখনো নাকানি - চোবানি ও খেয়েছি। তাই লুকিয়ে যাওয়া যাবে না। এই যে আমরা যাচ্ছি তার জন্য অভিভাবকরা রাজি হলেও এইটাই তাদের শর্ত যে কোনরকম ঝুট ঝামেলা তারাও চান না।
অগত্যা শেষমেষ ১২ জনের গ্রুপ থেকে আমরা মাত্র ৫ জন জোগাড় হলাম ঘুরতে যাওয়ার জন্য ।
নেই মামার চেয়ে কানা মামা ভালো!!
অনেক চিন্তা ভাবনা হিসেব করে আমরা জায়গা ঠিক করলাম, পুরুলিয়ার অন্তর্গত এক নামকরা টুরিষ্ট স্পট। কলকাতার অফিস থেকেই বুক করে নিলাম কটেজ।
এইবার নির্দিষ্ট দিনে ট্রেন এ চেপে ঘণ্টা তিনেক তারপর ওখান থেকে লোকাল ভ্যান এ চেপে গন্তব্য এমন কিছু দূরে নয়।
আমাদের যাওয়ার দিন ঠিক হলো কোনও এক রবিবার। ভোর ৬টায় ট্রেন হাওড়া থেকে। বেলা ১১টায় পৌঁছে যাবে গন্তব্যে। খুব দেরি হলে বেলা ১২টায়। মানে দুপুরের খাওয়া ওখানেই। সেই বুঝে ভালোমত খাবার অর্ডার আমরা কলকাতা থেকেই করে দিলাম। সব মিলিয়ে দু রাত্রি তিন দিনের সম্পূর্ণ সফর।
নির্দিষ্ট দিন যত এগিয়ে আসতে থাকলো উত্তেজনায় আমাদের ঘুম কমে যেতে লাগলো। শেষে এমন হলো আমরা কেউ কেউ বার পাঁচেক আমাদের ছোটো ব্যাগ টা গুছিয়ে ফেললাম। প্রায় রোজ ই ভোরবেলায় ওঠার মহড়া চলতে লাগলো। তবে আসল ঘটনা টা ঘটল যাওয়ার দিন।
নির্দিষ্ট দিনে, বেড়াতে যাওয়ার উত্তেজনায় কেউ ভোরবেলা উঠে shampoo করতে লাগলো তো কেউ শেষ মুহূর্তে জামা ইস্ত্রি। কেউ আবার ভোর ৬টায় কি বাস এ যাবে ভাবতে ভাবতেই সময় পার করে দিলো, তারফল যেটা হলো যখন আমরা সবাই দৌড়াদৌড়ি করে বড়ো ঘড়ির নিচে জড়ো হলাম ঠিক তখন আমাদের নাকের ডগা দিয়ে আমাদের ট্রেনটি আমাদের ছাড়াই নাচতে নাচতে বেরিয়ে গেলো।
খানিক হতভম্বের মত দাড়িয়ে যখন হুশ ফিরল, একে আমি মারি,তো ও আমায় মারে অবস্থা। কাউন্টার এ খোঁজ নিয়ে শুনলাম, রবিবার আর কোনো সরাসরি যাওয়ার ট্রেন নেই। একটি প্যাসেঞ্জার ট্রেন আছে সেটা দুপুর ১২ টায় খড়গপুর থেকে ছাড়বে!
কপালের লিখন খন্ডায় কে!!
যাহোক থাকে কপালে বলে সেই প্যাসেঞ্জার ট্রেন এই চেপে বসলাম আমরা, কিন্তু দুর্ভোগ এর শেষ তখনও হয়নি। বরঞ্চ বলা যায় যে শুরু।
খড়গপুর পৌঁছালে জানা গেলো সেখান থেকে যে ট্রেনটি আমাদের গন্তব্যে নিয়ে যাবে সেটি রাস্তায় বিকল হয়েছে । তার কেটে গেছে(আমাদের ই মত আর কি!) কখন আসবে তার ঠিক নেই।
-আজ আমাদের দিনটাই খারাপ, ধুস!
এইভাবে কখন পৌঁছাবে বলতো!
-তোদের ও বলিহারি যাই সাত সকালে শ্যাম্পু করে কি লাভ হলো, হ্যাঁ??
রাগে গজগজ করতে থাকে উৎসব। ওই একমাত্র ট্রেন ছাড়ার আগে এসে পৌঁছেছিল আর আমরা না আসায় ট্রেন এ উঠেও নেমে এসেছে।
রাগ যে আমার ও হচ্ছিল না তা নয় কিন্তু এখন আগে প্রয়োজন গন্তব্যে পৌঁছনো।
পেটে ছুচোয় ডন মারছে। প্রায় বিকেল ৪ টে নাগাদ বিকল হয়ে যাওয়া ট্রেন এর পরিবর্তে অন্য ট্রেন এলো। ট্রেন তো এলো কিন্তু
তাতে বেজায় ভীড়। আর হবে নাই না কেনো, অনেকেই কাজ কর্ম শেষে বাড়ি ফিরছে। প্রায় সমস্ত স্টেশন থেকে লোক তুলে ও নামিয়ে আমাদের ট্রেন এগিয়ে চললো পুরুলিয়ার দিকে।
অনেক বাধা বিপত্তি কাটিয়ে (ঠায় ৩ঘণ্টা দাড়ানো তাও তো একরকম বিপত্তি!, যদিও শেষের দিকে একজন বসতে দিয়েছিলেন তবে তার মেয়াদ ১০মিনিটের বেশি ছিল না, একেকজনের জন্য। মানে একটা সিট আমরা ভাগাভাগি করে বসছিলাম) শেষ মেষ যখন স্টেশন এ এসে নামলাম তখন আমরা ছাড়া আর দু চার জন মুটে জাতীয় লোক নামলো ওই স্টেশন এ।
পুরো স্টেশন টাই কুশায়ার চাদর জড়িয়ে বসে আছে। একটাও দোকান খোলা নেই।
বাইরে এসে যা বুঝলাম, শুধু স্টেশন এর ভেতরেই নয় বাইরেও লোক সংখ্যা ভীষণরকম কম। যে দু একজন ছিল তাদের থেকে জানা গেলো, এসব অঞ্চলে খুব মাওবাদীদের উৎপাত(তখন ছিল) তাই রাত্রে কেউ বাইরে থাকেনা, এছাড়া রবিবার এমনিও তাড়াতাড়ি সব বন্ধ হয়ে যায়। সাথে এও জানলাম যে আমরা যেখানে যাবো সেখানে আজ রাত্রে পৌঁছনো প্রায় অসম্ভব। রাস্তা জঙ্গলের মধ্যে আর এই অন্ধকারে সেখানে কেউ যাবে না। জঙ্গলে এ গাড়ি দাঁড় করিয়ে লুটপাট হয় , তারপর ফেলে রেখে চলে যায়। এক্ষেত্রে, সাথে আবার দু- দু'খান মেয়ে!!
গোদের ওপর বিষফোঁড়ার মতো আরো যুক্ত হলো যে কোনও থাকার জায়গা, হোম স্টে/হোটেল কিচ্ছু নেই আশেপাশে।
কলকাতায় বেড়ে ওঠা আমরা তখন এমনিই ঠান্ডায় কাবু। তায় থাকার জায়গার এমন অবস্থা শুনে সবাই একেবারে চুপসে গেলাম।
প্রায় এক ঘন্টা চেষ্টা করে কালু(ভালো নাম এক খানা ছিল কিন্তু সেটা ভুলে গেছি)আর উৎসব আমাদের দলের দুজন একটা অটো জাতীয় গাড়ি নিয়ে এলো।
বললো, ওই লোকটা ৫০০টাকার বিনিময়ে আমাদের সরকারি বাংলো তে পৌঁছে দেবে।
৫০০ টাকা!!
প্রায় ৯-১০বছর আগে ৫০০টাকা মানে আমাদের একদিনের পুরো ঘোরার ও খাবার টাকা। দিনের আলোয় ওই রাস্তা যেতে ৫ জনের ৫০টাকা লাগে।
শুনেই তো আমি আর জুনা বসে পড়লাম। বলে কি!!
মানে একেকজনের ১০০!! তবে কিছুক্ষনেই বুঝলাম, রাজি না হয়ে উপায় নেই। এইভাবে বসে থেকে তো রাত কাটানো যাবে না।
তারপর ওই শীতেও কিন্তু মশা রা ছুটি নেয়নি
উল্টে কলকাতার রক্ত দেখে ফিস্টি বসিয়ে দিয়েছে। আমি মশা তাড়াতে তাড়াতে ভাবছিলাম ঠান্ডায় কি ম্যালেরিয়া হয়!!
এইসব ভাবতে ভাবতেই অটো মতো গাড়িতে চেপে বসলাম আমরা। উঠেই দেখে নিলাম,আমাদের কারও ফোনে পর্যাপ্ত ব্যাটারী নেই। থাকবে কি করে, সেই সকালে বেরিয়েছিল তারপর যে ট্রেন এ এসেছি তাতে চার্জিং পয়েন্ট আশা করাই অন্যায়।
অন্ধকার রাত্রির সৌন্দর্য্য চিরদিন ই অন্যরকম। আবেদনময়ী। আর তখন বয়স কম, সবকিছুর মধ্যেই আমরা রোমান্টিসিজমের ব্যাপার খুঁজে পাই।কিন্তু সে রাত্রি ছিল আলাদা, পরবর্তীকালে অন্ধকার অনেক দেখেছি কিন্তু এমন ঘুটঘুটে নিকষ কালো রাত্রি আমি অন্তত খুবএকটা দেখিনি জীবনে। বস্তুতঃ, সেইবার প্রথম দেখেছিলাম। সেরাত্রে, চাঁদ উঠে থাকলেও তার দেখা পাইনি আমরা।
কিছুক্ষণের মধ্যেই লোকালয় ছাড়িয়ে বাদার(একধরনের জলাভূমি) পথ ধরল অটো। যা রাস্তা তাতে লাফাতে লাফাতে যাচ্ছিল, অন্ধকারে তো গর্ত দেখা যায়না, তাই লাফানোর পরিমাণ ও কমছিল না। কিছুদূর যাওয়ার পর অটোচালক নানা কথা বলতে আরম্ভ করলো। মানে ওখানে কি কি হয়, কেমন করে খুন করে, রাহাজানি করে এইসব।
বিষয়টা আমাদের ঠিক ভালো না ঠেকলেও কিছু করার নেই। জয় বলার চেষ্টা করলো যে ওর পিসেমশাই পুলিশ তবে সেটা চালক এর কানে গেলো কিনা বুঝলাম না। এদিকে অটো চলছে তো চলছেই।
আমরা ভাবছি, অন্ধকারে রাস্তা কি বেশি মনে হয়। এত সময় তো লাগার কথা নয়।
প্রায় ৩০মিনিট বেশ জোরে চলার পর সামনে একদম হটাৎ করেই একটা লাইট দেখা গেলো। দুপাশে ঘনও জঙ্গল।আমরা সবাই হাত ধরাধরি করে বসে রয়েছি। যাই হয়ে যাক কেউ কাউকে ছেড়ে যাব না।
তখন বয়সটাই অন্যরকম, সম্পর্ক ভেজাল বিহীন, আত্মকেন্দ্রিকতা আমাদের গ্রাস করতে পারেনি।
তা কাছে আসতে বোঝা গেলো একটা লোক হাতে আলো নিয়ে দাড়িয়ে আছে। গাড়ি থামাতে বলছে। চালকের খুব একটা ইচ্ছা ছিল না কিন্তু লোকটা একেবারে মাঝ রাস্তায় দাঁড়িয়ে তাই থামতেই হলো।
লোকটা আঞ্চলিক ভাষায় বললো, ও গেস্ট হাউসের চৌকিদার। বিকেলে সাইকেল নিয়ে বেরিয়েছিল বন্ধুর বাড়ি। কিন্তু পথে সেটা বিগরেছে। বেশ কিছুক্ষণ অপেক্ষা করছে, একা যেতে সাহস পাচ্ছিলেন না।এখন এই রাস্তায় গাড়ি যেতে দেখে থামালো। এই কথোপকথন আঞ্চলিক ভাষায় হলেও যেহেতু বাংলা জাতীয় তাই আমরা বুঝতে পারছিলাম।
তারপরই নিজেই উঠে বসলো চালকের পাশে আর আমাদের থেকে জেনে নিল কোথায় যাবো।
তারপর চালক কে যা বললো, সেটা বুঝতে পেরে আমাদের আরও ঠাণ্ডা লাগতে লাগলো।
যা বুঝলাম তা হলো, আমাদের বাংলো যাওয়ার রাস্তা অন্যদিকে,এইদিকে অনেক বেশি জঙ্গল আর এখানে দিনের আলোতেও লোক বেশি আসেনা।
চালক জেনে বুঝেই আমাদের এই রাস্তায় এনেছে।
ওদের নিজেদের মধ্যে বচসা হতে হতেই ধমকে চৌকিদার গাড়ির দিক নির্দেশ করতে লাগলো। কথা বলার ভঙ্গিমা শুনে বুঝতে পারলাম লোকটির যথেষ্ট জানাশোনা আছে। যদিও এই অটোর চালক চৌকিদার কে চেনে না তবে তাদের অনেক কমন কানেকশন আছে বলেই মনে হোল।
আরও বেশ কিছুটা চলার পর আসতে আস্তে জঙ্গলে ফাকা হতে লাগলো। শেষ অবধি একটা বিশাল গেট ওয়ালা কম্পাউন্ড এর সামনে অটো এসে দাড়ালো ।
ফলক এ নাম দেখে বুঝলাম যে এই সেই জায়গা!
ভাড়া মিটিয়ে এ ভীষণ ক্লান্ত আমরা চৌকিদারকে আসতে বলে তার অপেক্ষা না করেই ভিতরে ঢুকে গেলাম। তারপর রিসেপশন থেকে নির্দিষ্ট কটেজ এর চাবি নিয়ে পৌঁছানোর সময় ও আর কোথাও তাকে দেখলাম না।
রাত্রে আর দেরি না করে খেতে চলে গেছিলাম আমরা। দুর্দান্ত রান্না । এসে স্নান করে, তারপর খেয়ে কিন্তু ক্লান্তি দুর হয়ে গেছিলো আমাদের।
খেয়েদেয়ে অনেক রাত্রে প্রায় ১১ টায়, চৌকিদার কে খুঁজতে গেলাম।
যারা ঘুরতে গেছেন তারা একমত হবেন যে সাধারণত শুক্রবার যেকোনো ঘোরার জায়গায় ভীড় হয় বেশি। রবিবার সেরোম ভীড় থাকেনা। বেশিরভাগ মানুষই ফিরে চলে যান, সোমবার থেকে কাজের জগতে ফিরতে হয় তাদের। তাই এইসময় স্টাফ এর সংখ্যা কম ই থাকে।
আমরা যেখানে ছিলাম সেখানে অনেক বিঘা জায়গা নিয়ে ছোটো জঙ্গলে, পার্ক, কটেজ ছড়িয়ে রয়েছে। তো, রিসেপশন অফিস এ গিয়ে যিনি ছিলেন তাকে বলতে তিনি বুঝতেই পারলেন না কার কথা বলছি।
দেখা হলে আমরা অনেক ধন্যবাদ দিতাম ওনাকে। বুঝতে পারছিলাম কি ভীষণ বিপদ থেকে বাঁচলাম, ওনার জন্য। ফেরার পথে চারপাশ টা ভালো করে দেখতে দেখতে এলাম, যদি দেখা পাই কিন্তু অনেক কোথাও দেখা গেলো না। ওইসময় আমাদের ওনার নাম জিজ্ঞেস করার কথা মনে হয়নি। রীতিমত ভয় পেয়ে গেছিলাম আমরা। সেই নিয়েও আফসোস হচ্ছিল।
সেইরাত্রে আমরা বেশ কিছুক্ষন আড্ডা মেরে রাত ১২টায় সম্ভবত শুতে গেলাম। সারা রাত এ আমার আর ঘুম ভাঙ্গেনি।
একটু বেলার দিকে বেরোনোর সময় অফিস গেলাম আর তখন ই শুনলাম অন্য একটি ঘটনা।
ম্যানেজার ভদ্রলোক সকালে ছিলেন , আমাদের দেখে উনি কুশল জিজ্ঞাসা করে জানতে চাইলেন কাল কার খোঁজ করছিলাম।
সবিস্তারে বল্লাম ঘটনা টা।
সব শুনে উনি বললেন, গণেশ পূততুন্দু সাথে আমাদের বলা চৌকিদার এর মিল আছে। কিন্তু তিনি তো বেশ কিছুদিন নিখোঁজ। বন্ধুর বাড়ি যাবেন বলে বেরিয়েছিলেন তবে আর আসেন নি। পুলিশ ও খুঁজেছে, তা আজ প্রায় দেড় মাস - দু মাস হলো। ওনার সাইকেল পাওয়া যায় জঙ্গলে মধ্যে একটা রাস্তায় যেখানে লোকজন বড়ো একটা যায়না। কিন্তু ওনাকে পাওয়া যায়নি। তারপর, উনি একটা পুরনো ফটো দেখালেন,গ্রুপ ফটো।
তাতে যাকে গণেশ নামে দেখলেন তিনিই আমাদের দেখা কালকের চৌকিদার!
আমরা কিরম একটা ঘোরে চলে গেছিলোম এসব শুনে। উনি বলে যাচ্ছিলেন, এখানকার অনেক স্থানীয় মানুষ লুকিয়ে মাওবাদীদের সমর্থন করে। ওরা সাধারণ মানুষ বিশেষত টুরিষ্ট দের সুযোগ পেলে ধরেও নিয়ে যায়। পরে মুক্তিপণ হিসেবে ব্যবহার করে।
যদি সেসব কিছু নাও হয় তাও লুঠপাট বা অন্যধরনের অত্যাচার তো আছেই। কাল আমরা খুব বড়ো বিপদ এর হাত থেকে বেঁচে গেছি।"
মনে মনে ভাবছিলাম কাল যিনি আমাদের নিজে থেকে পৌঁছে দিলেন তিনি দরজা অবধি এসে, এইখানে কেনো আসবেন না!!!
নাহ ব্যাপারটা কিছুতেই মেলাতে পারা গেলো না।আর উনি তো কাল ও বলেছিলেন যে ওনার ফেরার পথে সাইকেল খারাপ হয়ে গেছিলো। বললাম সেটাও।
শুনে কিছুক্ষন চুপ করে থেকে ম্যানেজার শুধু বললেন, 'আপনারা শহরে থাকেন। বয়সে অনেক ছোট, আজ ও জঙ্গলে এ অনেক এমন ঘটনা ঘটে যার ব্যাখ্যা বাস্তবে দেওয়া মুশকিল।
আজ তো বেরোবেন দেখুন কোনোভাবেই আর যেনো ৬টার বেশি দেরি করবেন না।
গনেশদা কিন্তু রোজ রোজ বাঁচাতে আসবে না।'
আমরা আর যে দুদিন ছিলাম, ৬টার অনেক আগেই চলে এসেছি
তারপর ওই গ্রাউন্ড এর ভেতরেই ঘুরেছি। আজ ও যখন ই ঘটনাটা মনে পরে, এক অচেনা জগতে হারিয়ে যাওয়া গণেশ পুতুতুন্ড কে শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা জানাই ।

httpssankhamanigoswami.xyz







ভূতের গল্প ,

ভয়ঙ্কর ভূতের গল্প, বিখ্যাত ভূতের গল্প, ভয়ের গল্প, https://www.somewhereinblog.net/blog/s_rezowana/29465956, https://bengali.momspresso.com/parenting/rumaar-ddaayyeri/article/styi-bhuuter-glp, 

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Don't forget to like, comment, share and subscribe to my Blog. Thank you.

কেরালার বৃহত্তম জিপলাইন adventure sport

  ### কেরালার বৃহত্তম জিপলাইন ভারতের দক্ষিণাঞ্চলের রাজ্য কেরালা, যার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও বৈচিত্র্যময় পরিবেশ পর্যটকদের আকর্ষণ করে, সেখানে এ...