রবিবার, ৩০ আগস্ট, ২০২০

পিছুটান

নিয়তি বোধহয় একেই বলে । আজ যেন সৌগতর সঙ্গে দেখা হওয়ারই ছিল , দার্জিলিং মেলের বার্থে বসে ভাবছিলেন ষাটোর্ধ্ব  সুরঙ্গনা । সেই কলেজ জীবনের মত এখনও সৌগতকে দেখলেই বুকের রক্ত চলকে ওঠে , স্থির রাখতে পারেননা নিজেকে । আজই যেমন ভরা কামরায় সৌগতকে দেখে অষ্টাদশীর মত আনন্দে নেচে উঠেছিলেন , কী করবেন ভেবে উঠতে পারছিলেন না । সৌগতর সঙ্গে আছে অনিন্দ্য , বাবার সাথে কলকাতার বড় কলেজে যাচ্ছে প্রবেশিকা পরীক্ষা দিতে । আজকালকার ছেলেগুলো বড্ড ডেঁপো , কেমন সব বুঝে গেছি টাইপের হাসি ঠোঁটে টেনে রেখেছিল সুরঙ্গনার ছটফটানি দেখে । ও কি কিছু জানে ? কারও কাছ থেকে কিছু শুনেছে ? হতেও পারে । বড় হয়েছে , জানতেও পারে সৌগত- সুরঙ্গনার উথালপাথাল প্রেমের কথা । এই বয়েসে চিত্তদৌর্বল্য কী ভীমরতির লক্ষণ ? না । মানুষের মন স্বাভাবিক ভাবেই বহুগামী হয় , জানেন সুরঙ্গনা । ক'টা প্রণয়ের সম্পর্ক আর পরিণয়ের দিকে এগিয়ে যায় ! আজ থেকে দুই কুড়ি বছর আগেও ওঁদের কলেজের সহপাঠীরা জানত যে সৌগত আর সুরঙ্গনার বিয়েটা শুধু সময়ের অপেক্ষা । বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় ওদের দু'জনেরই বন্ধু বিজয় গিয়েছিল আনুষ্ঠানিকভাবে সৌগতর মায়ের কাছে ওদের বিয়ের কথাটা পাড়তে । সম্ভাবনাটাকে এককথায় নাকচ করে দিয়েছিলেন কাকীমা , জাতপাতের কথা তুলে । এদিকে সৌগত মাতৃঅন্তপ্রাণ , কিছুতেই মায়ের বিরুদ্ধাচরণ করবে না । ফলে সুরঙ্গনার আর সৌগতর ঘরণী হওয়া হল না , কিন্তু দুর্বলতাটা রয়ে গেল । বিজয় আগে থেকেই সুরঙ্গনার প্রতি অনুরক্ত ছিল । এই ঘটনার পর , বিয়ের প্রস্তাব দিতে দেরী করেনি । বিজয় - সুরঙ্গনার একমাত্র মেয়ে নবনীতা এখন পড়ছে যাদবপুরে । 

সৌগতর সঙ্গে আর দেখা না হলেই ভাল হত , পুরনো ক্ষত খুঁচিয়ে তুলে কী লাভ ? কিন্তু, এই যে জীবনসায়াহ্নে অন্যরূপে , পরিণত রূপে দেখা হওয়া , জীবনে সঞ্চয়ের খাতায় এইটুকু লিখে রাখলেই বা ক্ষতি কী ?  

https://sankhamanigoswami.blogspot.com/2020/09/%20pub-9792609886530610_25.html







কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Don't forget to like, comment, share and subscribe to my Blog. Thank you.

কেরালার বৃহত্তম জিপলাইন adventure sport

  ### কেরালার বৃহত্তম জিপলাইন ভারতের দক্ষিণাঞ্চলের রাজ্য কেরালা, যার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও বৈচিত্র্যময় পরিবেশ পর্যটকদের আকর্ষণ করে, সেখানে এ...