মঙ্গলবার, ২৫ আগস্ট, ২০২০

অসংরক্ষিত

  এই ফেসবুক - হোয়াটস অ্যাপের যুগে আমি অনেক স্মার্ট হয়ে গেছি ! টুক করে ছবি তুলে টাক করে ফেসবুকে তুলে দিই , অনেক লোক দেখতে পায় । পছন্দ এবং অপছন্দ করে । লকডাউন চলাকালীন এই প্রবণতা বেড়েছে । অনেক প্রতিভার স্ফুরণ হচ্ছে । জানতে পারছি গোমড়াথেরিয়াম দাদাটি দুর্দান্ত স্ট্যান্ড আপ কমেডিয়ান । যে মেয়ে জিন্স-টপ ছাড়া পরে না , সে দারুণ রবীন্দ্রসঙ্গীত গায় ওই পোশাকেই । কিন্তু এমনও তো সময় ছিল যখন খ্যাতি(এবং কুখ্যাতি) পাওয়া এত সহজ ছিল না । কেউ হয়ত ভাল সেতার বাজাতেন , কেউ সুন্দর গান করতেন , কিন্তু নিজেকে প্রকাশ করবার উপযুক্ত মঞ্চ পাননি । এমন অনেকেই আছেন আমাদের পরিবারে । স্মৃতি থেকে আমি সেই সময়ে দু'টি ঘটনা বলি । সুহৃদ লেন কালীবাড়ির পাশে , আমাদের খেলার মাঠে সরস্বতী পুজো হত । সেবার মূর্তি গড়ার দায়িত্ব পেলেন শিল্পী অশোকদা (সমাদ্দার) । মূর্তি তৈরি হবে কাগজের মণ্ড দিয়ে , এবং মূর্তি তৈরি হবে আমাদের সামনেই । এই কথাটা গুরুত্বপূর্ণ , কারণ খুব ছোটতে দুরন্তপনার জন্য আমাদের মাটির মূর্তি তৈরির স্টুডিওয় ঢুকতে দেওয়া হত না । অশোকদা সকাল - বিকেলে সুবিধেমত আসতেন আর আমাদের মত কচিকাঁচাদের নির্দেশ দিতেন যার বাড়িতে যত খবরের কাগজ আছে , সব নিয়ে আসতে । তখন জলপাইগুড়িতে কাগজ আসত পরের দিন । অতিউৎসাহে দু'একদিন সেদিনের কাগজও অশোকদার হাতে তুলে দিয়ে বাড়িতে বকা খেয়েছি । আমি - ভোলা এবং অন্যান্যরা সেইসব কাগজ কুচি কুচি করে ছিঁড়ে জলভরা বালতির মধ্যে চুবিয়ে রাখতাম । এক-দু'দিনের সেই নরম কাগজের সাথে ফেভিকল মিশিয়ে অশোকদা মণ্ড তৈরি করতেন । আসল কাজ তার পরে । বেশি দেরী করলে মণ্ড আঠায় শক্ত হয়ে যাবে বলে অশোকদা দ্রুত , দক্ষ হাতে বাঁশের কাঠামোর ওপর পরতে পরতে মণ্ড চড়াতেন । হাতের নিখুঁত চাপে তৈরি হত অবয়ব । এইভাবে শুধু মণ্ড দিয়ে আমাদের চোখের সামনে এক দুর্দান্ত সরস্বতী মূর্তি তৈরি হল । একেবারে জ্যান্ত যেন । মৃন্ময়ী(?) দেবীকে চিন্ময়ী করে তুলতে অশোকদা মূর্তিতে সোনালি রঙ করলেন । সবমিলিয়ে সে এক দেখার মত ভাস্কর্য তৈরি হল । খুব সকাল আর সন্ধ্যা নামার আগে হালকা কুয়াশার মধ্যে সে অনুপম সৃষ্টির সাক্ষী হতে পারা আমার জীবনের এক অবিস্মরণীয় অভিজ্ঞতা । গোটা পাড়া টিউবলাইট দিয়ে সাজানো হয়েছিল , শহর ভেঙে পড়েছিল আমাদের পাড়ার ঠাকুর দেখতে । ছোট ছিলাম , তাই সেই মূর্তির কী হল , জানিনা এখনও । কিন্তু বারবার মনে হয় , আর দশজনকে যদি ডেকে দেখাতে পারতাম । এ জিনিস দেখাও বিরাট সৌভাগ্যের ব্যাপার । 


যদি খুব ভুল না করি , সে বছরই মুক্তি পেয়েছে শ্যাম বেনেগালের ছবি ---- 'সুরজ কে সাতওয়াঁ ঘোড়া' । সম্ভবত সে কথা মাথায় রেখেই বাবার সহকর্মী , আমার আঁকার শিক্ষক অখিল স্যার প্লাস্টার অব প্যারিস দিয়ে তৈরি করলেন সূর্যের সাতটি ঘোড়া । একেবারে জীবন্ত । যেন চোখের সামনে সূর্যের রথ টেনে নিয়ে চলেছে সাতটি সাদা ঘোড়া । দিশারী ক্লাবের দুর্গা পুজোর সেবার মূল আকর্ষণই হল সেই ভাস্কর্য । 

https://sankhamanigoswami.blogspot.com/2020/08/%20pub-9792609886530610_44.html



picture courtesy: ANANDABAZAR PATRIKA 






ফিচার প্রতিবেদন


ফিচার সংবাদ

ফিচার নিউজ


ফিচার পাতা

ফিচার লেখা


news feature article


news feature story


news feature example


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Don't forget to like, comment, share and subscribe to my Blog. Thank you.

কেরালার বৃহত্তম জিপলাইন adventure sport

  ### কেরালার বৃহত্তম জিপলাইন ভারতের দক্ষিণাঞ্চলের রাজ্য কেরালা, যার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও বৈচিত্র্যময় পরিবেশ পর্যটকদের আকর্ষণ করে, সেখানে এ...