শুক্রবার, ৮ মে, ২০২০

২৫ বৈশাখ । হে নূতন...


"এই যে ঊনসত্তরের " ----- বিশ্ব জুড়ে মানব ইতিহাসের বৃহত্তম লকডাউন চলাকালীন মনে পড়ছে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের 'রক্তকরবী' এই সম্বোধনটি সারা বিশ্ব থেকে রাজ্য , অষ্টপ্রহর করোনা ভাইরাসের ব্যাপ্তি এবং মোকাবিলা সম্পর্কে কতগুলো সংখ্যা নাচছে চোখের সামনে পেট্রোল পাম্পে তেল ভরার সময় যেমন মনিটরে চোখের পলকে কতগুলো সংখ্যা বদলে যায় , ব্যাপারটা দাঁড়িয়েছে একদম সেরকম মোট করোনা আক্রান্ত - করোনার প্রকোপে মৃত এবং সর্বোপরি অতিমারির আবহেও করোনাজয়ী --- এই তিন ধরণের পরিসংখ্যানের মধ্যে সর্বক্ষণ থাকতে থাকতে কেন যেন মনে হচ্ছে , আসলে ওই সম্বোধনের মতই আমাদের আদতে কোনও ব্যক্তিপরিচয় নেই , নাম -পদবি নেই , আমরা এখন শুধুমাত্র কতগুলো সংখ্যা সবার অলক্ষ্যে কেউ যেন যোগীন্দ্রনাথ সরকারের ছড়াটি আবৃত্তি করে চলেছে ---- হারাধনের দশটি ছেলে , রইল বাকি... ... ...! 
    পাশাপাশি এ কথাটাও মনে করলে বুকে বল পাওয়া যায়, যে গোটা বিশ্বের নিরিখে করোনায় মোট মৃতের সংখ্যার দশগুণ এবং আমাদের দেশে ছ’গুণ রোগী সুস্থ হয়ে উঠছেন । সঙ্কটের সময় বলেই বোধহয় --- “আকাশ ভরা সূর্য তারা , বিশ্ব ভরা প্রাণ / তাহারই মাঝখানে আমি পেয়েছি , পেয়েছি মোর স্থান / বিস্ময়ে তাই জাগে , জাগে আমার গান” ---- এই লাইনগুলোকে খুব প্রাসঙ্গিক মনে হয় । এই যে আমার কল্পনাতীত বিরাট একটা ব্যাপার আমি প্রত্যক্ষ করার সুযোগ পাচ্ছি , এটাই তো একটা দারুণ অভিজ্ঞতা । কবিগুরুর পদাঙ্ক অনুসরণ করে তাই আমি আশাবাদী । আশাবাদী নন্দিনী এই মৃত্যুপুরীতে প্রাণের জোয়ার আনবেই । সাথে পাবে রঞ্জন , বিশু পাগল আর কিশোরকে ।





রবীন্দ্রজয়ন্তী 
২৫ শে বৈশাখ

ফিচার প্রতিবেদন


ফিচার সংবাদ

ফিচার নিউজ


ফিচার পাতা

ফিচার লেখা


news feature article


news feature story


news feature example



বুধবার, ৬ মে, ২০২০

গ্রাফিতি । মিডল রোড , ব্যারাকপুর । graffiti art







Graffiti

Visual art genre

https://g.co/kgs/2181h1



graffiti art


graffiti art drawings


graffiti drawings

graffiti artist

Barrackpore

City in West Bengal





মঙ্গলবার, ৫ মে, ২০২০

ইন্টিগ্রেটেড সার্কিট । ছোটগল্প


ইন্টিগ্রেটেড সার্কিট


        দুর্গা পুজোয় হেঁটে ঘুরতে বেরিয়ে কুড়ি – পঁচিশ জন বন্ধু মিলে , দল বেঁধে রুবি বোর্ডিঙে খাওয়াটা বাঁধা ছিল প্রতিবার । কী একটা কথায় সেবার আমি খুব হেসে উঠে দু’হাত ছড়িয়ে দিতেই ঘটে গেল বিপত্তি । উল্টোদিকে এক ভদ্রমহিলা ছেলেকে পাশে নিয়ে বসে খাচ্ছিলেন । জলের গেলাস আমার উচ্ছ্বসিত হাতের ধাক্কায় গিয়ে পড়ল তাঁর খাবার প্লেটে ! বলা বাহুল্য খাওয়ার দফারফা ! আর হাসি আচমকা থেমে গিয়ে আমি যথারীতি কিংকর্তব্যবিমূঢ় । ততক্ষণে বেয়ারাকে ডেকে ওর ওই খাবারটাই আরেক প্লেট অর্ডার দেওয়া হয়ে গেছে মা – ছেলের জন্য । সবার হতভম্ব ভাবটা কাটার আগেই ফিরে এসে , কাঠের চেয়ার টেনে বসতে বসতে ও শুধু ভদ্রমহিলাকে বিনয়াবতার পাপোশ হয়ে বলল – “প্লিজ, কিছু মনে করবেন না । ব্যাপারটা অ্যাক্সিডেন্টালি হয়ে গেছে । উই বেগ ইওর পারডন । আপনাদের খাবার আসছে ।“ ভদ্রমহিলার ভীষণ ভাবে কুঞ্চিত ভ্রূ এতে খানিকটা সোজা হল । একটা বড় গোলমাল দানা বেঁধে ওঠার আগেই মিটে গেল । আর আমি অল্পের জন্য সবার ঝাড় খাওয়ার হাত থেকে বেঁচে গেলাম সে যাত্রায় । আমাদের বন্ধু অচ্যুত এমনই , প্রত্যুৎপন্নমতি ।     
        র‍্যাঞ্চো যেন কী বলত ? এক্সেলেন্স । উৎকর্ষে মন দাও , সাফল্য আপ সে আপ আসবে । এ গল্প অবশ্য তার অনেক আগের , নয়ের দশকের শেষের দিকের । অচ্যুতদের বাড়িতে আমাদের একটা সান্ধ্য আড্ডা , থুড়ি ঠেক ছিল । বাইরের ঘরে, এম. টিভিতে ভেঙ্গা বয়েজের লাস্য কিংবা শুভা মুদ্গলের – ‘আব কে সাওন এয়সে বরসে’ চলতো , আর আমরা পঙ্গপালের ঝাঁকের মত সামনের খাটে বসে গোগ্রাসে সেসব গিলতাম । আর খাটেরই আরেক প্রান্তে , বুকের কাছে বালিশ নিয়ে আধশোয়া হয়ে, অচ্যুত সার্কিট বোর্ডের বই ঘাঁটত । প্র্যাক্টিকাল খাতার মত দেখতে এমন এক একটা বই ওর হাতে ঘুরত , যার পাতার পর পাতা জুড়ে রয়েছে শুধু বিভিন্ন  বৈদ্যুতিন যন্ত্রের সার্কিট বোর্ডের ছবি । আমার সেগুলোকে একেবারে মানচিত্রের মত লাগত দেখতে । আর ওর অখণ্ড মনোযোগী তর্জনী এঁকে বেঁকে ঘোরাফেরা করত পাতার মধ্যে । এরকম অপূর্ব একাকে কি সহ্য হয় সে বয়সে ! আমরা যারপরনাই বিরক্ত হয়ে বলতাম --- “কী ছাইপাঁশ গিলছিস ? আব্বে, এদিকে তাকা । ব্ল্যাক মাম্বা আর সাম্বা দেখ !“ ও স্মিত হেসে টিভির দিকে এক পলক তাকিয়েই ফের বইয়ে ডুবে যেত অনায়াসে , কোনও কথা বলত না ।
           “তখন তোমার একুশ বছর বোধহয় / আমি তখন অষ্টাদশী ছোঁয়ায় ।“ প্রেম , উচ্চ মাধ্যমিকে বায়ো সায়েন্স , এবং তারপর কলেজে বিজ্ঞান বিভাগে পাস গ্র্যাজুয়েট । আর, এসবের ফাঁকে ফাঁকে যুব কল্যাণ বিভাগের কম্পিউটার প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে একের পর এক কোর্স করা --- অচ্যুতের জীবনটা তখনও সমবয়সী আর পাঁচজনের থেকে খুব একটা আলাদা ছিল না । ও পড়াশোনায় ভাল ছিল , কিন্তু আহামরি নয় । আরও কিছুদিন পরের কথা । আমরা তখন ম্যারাথন আড্ডা মারছি , নাটক করছি , লিটল ম্যাগ বের করছি , কিংবা নিখাদ সমাজসেবা করছি পরম উৎসাহে । আর ও, বাড়ির ভিতরে উঠোনের দিকে এক কোণায়, নিজের মত করে একখানা টিনের চাল দেওয়া বেড়ার ঘর বানিয়ে নিয়েছে স্বোপার্জিত অর্থে । সে ঘরে বেড়ার দরজা ঠেলে ঢুকতে হয় । ওদের একতলা পাকা বাড়ির বাকি সদস্যদের সেখানে খুব প্রয়োজন ছাড়া , অলিখিত ভাবে প্রবেশ নিষেধ । সেখানে তখন ও বাড়ির ভিতর থেকে টেনে নিয়েছে বিদ্যুৎ সংযোগ । ওই ছাপরা ঘরটাই হয়ে উঠল ওর কর্মশালা । ঘরে ঢুকলেই চোখে পড়ত এলোমেলো চেয়ার – টেবিল , ঘরময় ছড়ান-ছিটান বিভিন্ন যন্ত্রাংশ , টিভি , টেপ রেকর্ডার , মিউজিক সিস্টেম ইত্যাদি । ও লোকের কাছ থেকে চেয়ে চেয়ে এনে ওগুলো ঠিক করে দিত । যেচে উপকার করতে গেলে যা হয় , অনেক ক্ষেত্রে  সেটাই হত । বহু লোক আপাতদৃষ্টিতে ওর ভালোমানুষির সুযোগ নিত । কাজের উপযুক্ত পারিশ্রমিক ও হয় একেবারেই পেত না , নয়ত পেত নামমাত্র । এ নিয়ে আমরা ওকে খুব প্যাক দিতাম । তখন আমাদের ‘বিভিন্ন’ প্রয়োজনে বেশ খানিকটা পকেট মানি লাগার শুরুর বয়স । ও তার ব্যতিক্রম ছিল না , বলা বাহুল্য । আমরা প্রায়ই বিরক্ত হয়ে ওকে খোঁচাতাম --- “কী গর্দভ রে তুই । লোকে তোকে দিয়ে বিনে পয়সায় খাটিয়ে নেয় , আর তুইও বোকার মত বেগার খেটে মরিস , কিচ্ছু বলিস না । তোর দ্বারা কিস্যু হবে না ।“ শেষের বাক্যটা আমাদেরকে বাধ্যতামূলক ভাবে প্রতিনিয়ত শুনতে হত । তাই নিজেরাও অন্যেকে শুনিয়ে দিতাম একটু সুযোগ পেলেই । ও কিন্তু উত্তরে যথারীতি শুধু হাসত , ভাল – মন্দ কিছুই বলত না ।
          আড্ডার সময়টা প্রায় বাদ দিয়ে ইতিমধ্যে অচ্যুত আরেকটা কাজ নিয়মিত করা শুরু করেছিল । বিভিন্ন বৈদ্যুতিন যন্ত্রের যন্ত্রাংশ পাওয়া যায় যে সব দোকানে , সেই দোকানের মালিকেরা তখন অধিকাংশ সময়েই , হয় দিল্লি , নয়ত কলকাতার চাঁদনি মার্কেট থেকে দল বেঁধে , ট্রেনের কামরা বোঝাই করে, সেইসব মালপত্র নিয়ে আসতেন আমাদের মফসসল শহরে, জলপাইগুড়িতে । কিন্তু তারপর, অত জিনিসের মধ্যে থেকে তো দেখে নিতে হবে , কোনটা ঠিক আছে , কোনটা নেই । ধরেই রাখতে হয়, যাতায়াতের পথে অতি স্পর্শকাতর যন্ত্রগুলির অন্তত দশ শতাংশ ভোগে যাবে , থুড়ি খারাপ বেরোবে । আর খারাপ জিনিস লোকে কিনে নিয়ে গেলে দোকানের সুনামের বারোটা বেজে যাবে । এত্ত জিনিসের মধ্যে এই ঝাড়াই-বাছাইয়ের কাজটা , --- ইংরেজিতে যাকে বলে একটা ‘ম্যামথ টাস্ক’ । যারা করেন তারা বিলক্ষণ জানেন এটা কতখানি ধৈর্যের কাজ , সময়সাপেক্ষ কাজ , এবং সর্বোপরি ঠাণ্ডা মাথার কাজ । এই বিরাট দায়িত্বপূর্ণ কাজটা অচ্যুত যেচে বিভিন্ন যন্ত্রাংশের দোকানে ঘুরে ঘুরে করা শুরু করল । অল্প পয়সায় এ কাজ করার লোক আর কে পায় ! ফলে অচিরেই ওর কদর বাড়ল এবং ও কাজটার মধ্যে একেবারে ডুবে গেল । বাড়িতে থাকলে অচ্যুত তখন নিজের ঘুপচি কাজের ঘরে , আর বাড়ির বাইরে থাকলে, দোকান ঘরের মেঝেতে , মাথা গুঁজে যন্ত্রাংশে মগ্ন । আমরা সেখানে গিয়েই হানা দিয়েছি কয়েকবার , কিন্তু  হু –হাঁ-এর বেশি উত্তর পাইনি । স্বাভাবিকভাবেই ওর জমে ক্ষীর হয়ে ওঠা প্রেমটা কেটে গেল । তারপর আস্তে আস্তে আমাদের সাথে যোগাযোগটাও । আমাদের রাস্তা যে আলাদা হয়ে গেছে, সেটা বেশ অনুভব করতে পারছিলাম । বুঝতে পারছিলাম, জীবন নামে আমাদের সামনের বিরাট সমুদ্রটায় পাড়ি দেওয়ার জন্য নিজেকে তৈরি করতে উঠেপড়ে লেগেছে অচ্যুত । ওর হাতে কম্পাস , লক্ষ্য স্থির । ঝড় আসবে , কিন্তু ও দিকভ্রষ্ট হবে না ।
        এরপর দীর্ঘদিন কোনও দেখা – সাক্ষাৎ নেই । ওর কথা প্রায় ভুলেই গেছি এবং সোশ্যাল মিডিয়া আমাদের জীবনে হামাগুড়ি দিয়ে ঢুকে পড়ছে একটু একটু করে , এমন একটা সময়ে, হঠাৎ আমাকে এবং আরও অনেককে একইসাথে ভীষণ চমকে দিয়ে ফেসবুকে একটা ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট এল ওর নামে , সঙ্গের ছবিটার সাথেও ওর মিল আছে । গড়নটা একই আছে , কিন্তু জেল্লা বেড়েছে । শুধু মোম মসৃণ অচ্যুতের মুখে সেই চেনা গোঁফটা হাওয়া । দিব্যি অনুমান করা যায়, খাসা আছে । একসেপ্ট করার পর স্মাইলির সাথে একটা ছোট্ট মেসেজ ঢুকল – “কেমন আছিস ?” যথোচিত সম্ভাষণ পর্বের খানিকক্ষণ পরে জানা গেল, বাবু এখন আমেরিকায় থাকেন ! সে এখন এক বহুজাতিক সফটওয়্যার – হার্ডওয়্যার প্রস্তুতকারী সংস্থার মস্ত বড় চাকুরে । ওখানকার মেয়ে বিয়ে করে নাগরিকত্ব পেয়েছে । ও বছরে দু’বার করে দেশে এলে আমরা , পুরনো বন্ধুরা মিলে ঘুরতে বেরোই , সঙ্গিনী- পোলাপান ছাড়া । বেশিরভাগ সময়তেই ট্রেক করতে যাই কোথাও । আমাদের মত প্রতি মুহূর্তে কী করছি, কোথায় করছি , কাদের সাথে করছি এবং কী করছিনা , সেসব লিখে বা ছবি দিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় স্ট্যাটাস আপডেট দেওয়ার ব্যাপারে ওর কোম্পানির কড়া নিষেধাজ্ঞা রয়েছে । ওতে নাকি প্রতিদ্বন্দ্বী সংস্থার লোকেরা সমস্ত গোপন ব্যবসায়িক খবর আগাম পেয়ে যায় লোক লাগিয়ে , যাতে ব্যবসার বিরাট ক্ষতি । এ তো ব্যক্তিস্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ । যাক গে যাক , আমাদের তো আর সেসবের বালাই নেই ! তাই আমরা ছবি- সহ সবিস্তারে ভ্রমণ বৃত্তান্ত লিখে ওকে ট্যাগ করে ঘোরার গ্রুপে পোস্ট করে দিই । ভ্রমণবৃত্তান্তের এখন হেব্বি ডিম্যান্ড । পকেটে পয়সা থাকলেই এখন উঠল ঝোলা , চলল ভোলা । আর না থাকলে, ঘরে বসে মানসভ্রমণই সই , দুধের স্বাদ ঘোলে মেটানো যাকে বলে । টু কে , থ্রি কে লাইক , কমেন্ট আসে আমাদের পোস্টে । আমাদের বন্ধুত্বের গল্প হাতে হাতে শেয়ার হয় । খারাপ কী । কিন্তু এমন গল্পেরও আগের একটা গল্প তো থাকে সবার জীবনে । সেটা সবাই জানেন না । জানতেও চান না । জীবনটা যে একটা উদযাপনের মাঝখান থেকে শুরু হয়না , সেটা তাঁদের জানাতেই এই গৌরচন্দ্রিকা ।








Short story

https://g.co/kgs/vwjJTa


ছোটগল্প



অধ্যবসায়ের গল্প



স্বাধীনতা পরবর্তী বাংলা ছোটগল্প



রাষ্ট্রগুরু সারেন্ডার নট ব্যানার্জির বাড়ি ।


ব্যারাকপুর ধোবি ঘাটের কিছুটা আগে , সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় রোড দিয়ে যেতে যেতে একটা পোড়োবাড়ির আবছা হয়ে আসা নাম ফলকে হঠাৎ চোখ আটকে গেল ! মালকিনের নাম মিসেস ই সি সোয়ারিস , ঠিকানা --- ‘বেন্টিঙ্ক স্ট্রিট , ক্যালকাটা !’ এই রাস্তা দিয়ে সো-ও-জা গেলেই তো রাষ্ট্রগুরুর বাড়ি । ভাবলাম, একবার ঢুঁ মেরেই আসা যাক সেখানে । সেদিন যা  ছিল স্যর সুরেন্দ্রনাথের বাড়ি , আজ তা মহাদেবানন্দ মহাবিদ্যালয় । একজন আধিকারিককে আসার উদ্দেশ্য জানাতেই খুব আগ্রহ নিয়ে ঘুরিয়ে দেখালেন গোটা ক্যাম্পাস । বাড়ির এক কোণে , যেখানে তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়েছিল , তা – ও দেখালেন । একটি তালাবন্ধ ঘর খুলে দেখালেন সুরেন্দ্রনাথের বাবা – মা‘র বিবর্ণ হয়ে আসা ছবি , তাঁর ব্যবহৃত কেদারা , আবক্ষ মূর্তি ।
         রাষ্ট্রগুরু সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্ম ১০ নভেম্বর ১৮৪৮ সালে কলকাতার তালতলায় হলেও , তাঁর পৈতৃক ভিটে উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলার ব্যারাকপুরের মণিরামপুরে । গঙ্গার ধারে প্রাসাদোপম বাড়িটিতে তিনি ১৮৮০ সাল থেকে থাকতে শুরু করেন । ১৯২৫ সালের ৬ মে অসুস্থ সুরেন্দ্রনাথকে দেখতে এই বাড়িতে আসেন জাতির পিতা মোহনদাস করমচন্দ গান্ধী । পরের সপ্তাহেই ১৪ মে ‘ইয়ং ইন্ডিয়া’ কাগজে তিনি এই সাক্ষাতের অভিজ্ঞতা সবিস্তারে লেখেন । গান্ধী সুরেন্দ্রনাথকে কথা দিয়েছিলেন , সে যাত্রায়  বাংলা ছেড়ে যাওয়ার আগে , আবার দেখা  করতে আসবেন । কিন্তু সে সুযোগ আর মেলেনি । ১৯২৫ সালের ৬ অগাস্ট সুরেন্দ্রনাথ শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন । পরদিন ৭ অগাস্ট চার্লি অ্যানড্রুজকে সাথে নিয়ে মহাত্মা গান্ধী এ বাড়িতে আসেন তাঁকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে । ‘ইয়ং ইন্ডিয়া’র ১৩ অগাস্ট সংখ্যায় গান্ধী তাঁকে ‘বঙ্গ – কেশরী’ হিসেবে উল্লেখ করেন এবং আধুনিক ভারতের রূপকার রূপে তাঁর অবদানের কথা গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন । প্রসঙ্গত , তাঁর অনমনীয় মনোভাবের জন্য ব্রিটিশরা তাঁকে ডাকত ‘সারেন্ডার নট’ বলে !


















Surendranath Banerjee

Indian political leader


https://g.co/kgs/UWqu2V


স্যার সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়


ফিচার প্রতিবেদন

ফিচার নিউজ



ফিচার পাতা


ফিচার সংবাদ


ফিচার রাইটিং


ফিচার লেখা




বকুনি


বকুনি


      গরমকালে শিয়ালদা মেন লাইনের লোকাল ট্রেনে এই ভিড়টা অসহ্য লাগে অনন্যর । আক্ষরিক অর্থেই ভিড় উপচে পড়া কামরায় মনুষ্যেতর প্রাণীদের মত যাতায়াত করতে করতে , মন আর শরীর , দু’টোই বিদ্রোহ করে । কিন্তু প্রতিদিন অ্যাপ ক্যাব ভাড়া করে ইছাপুর – শিয়ালদা নিত্যপাষণ্ডগিরি করাও তার মাসিক সাংসারিক বাজেটে পোষাবে না । তাই ট্রেনের চার নম্বর সিটে কোনও মতে বসার চেষ্টা করতে করতে পাশে দাঁড়িয়ে থাকা লোকটার কপাল থেকে ঝরে পড়া ঘাম , তার হাতের ওপর টুপ টুপ করে পড়তে থাকলেও বিরক্তি চেপে চুপচাপ বসে থাকে ।
       আবার এই অবস্থাতেও যাত্রীদের মধ্যে ঠাট্টা – মশকরা চলে । কেউ কেউ সবাইকে অবাক করে দরাজ গলায় গান ধরেন । এবং কিছু আশ্চর্যজনক ঘটনাও ঘটে , যা মনে স্থায়ী দাগ রেখে যায় । তেমনটাই ঘটল আজ । ত্রিশের কোঠার এক সম্ভ্রান্ত দম্পতি সদ্যোজাত সন্তানকে নিয়ে উঠেছেন কামরায় । কোনও মতে বসার জায়গা পেয়েছেন , কিন্তু অফিস ফেরত যাত্রীদের এই দমবন্ধ করা ভিড়ে তৈরি হওয়া গুমোট ভাব সহ্য করতে না পেরে বাচ্চাটা পরিত্রাহী কেঁদে চলেছে । ওর মা শত চেষ্টাতেও কোনওমতেই থামাতে পারছেন  না । কেউ কেউ আহা – উহু করছে , কেউ বা বিরক্তি প্রকাশ করছে । আশ্চর্যের ব্যাপার , বাচ্চাটার বাবাও সেই দলে । সমানে বিরক্তি প্রকাশ , আর দাঁত খিঁচিয়ে স্ত্রীকে বাচ্চাটাকে চুপ করাতে বলা ছাড়া আর কিচ্ছু করছেন না । ভদ্রলোকের স্ত্রী শুধু খ্যাঁকানি খেয়ে বারবার অসহায় চোখে তাকাচ্ছেন স্বামীর দিকে ।
        অনেকের কাছে প্রতিদিনের এই নাটক যখন বেশ জমে উঠেছে , তখন আচমকা অনন্যর ঠিক সামনে বসা মধ্যবয়স্ক মহিলা গর্জে উঠলেন । অনন্যর মনে হল উনি নিশ্চিতভাবে কোনও স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা ! গলা চড়িয়ে ওই ভদ্রমহিলার স্বামীকে বললেন --- “বাবা হয়ে বুঝতে পারছ না গরমে ওর কষ্ট হচ্ছে , খিদে পেয়েছে । ওকে নিয়ে ফ্যানের নীচে তো একটু দাঁড়াতেও পারো । তা না , সমানে খিট খিট করে যাচ্ছ । এই ভাই , হ্যাঁ তোমাকেই বলছি , জানলার ধারের সিটটা মেয়েটাকে ছেড়ে দাও তো ।“ যাকে উদ্দেশ্য করে কথাটা বলা , সে বিনা বাক্যব্যয়ে তড়াক করে উঠে দাঁড়াল বাধ্য ছেলের মত । যারা ই. এম. ইউ. লোকাল ট্রেনে যাতায়াত করেন , তাঁরা জানেন, এই সিটটা ছেড়ে দেওয়া খুব সহজ কাজ নয় । গরমকালে , যে দিকে ট্রেন যাচ্ছে , সেদিকের জানলার ধারের সিটটা দখল করতে হয় ট্রেন স্টেশনে ঢোকার সময় , ধাক্কাধাক্কির মধ্যে , চলন্ত ট্রেনে প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে লাফিয়ে উঠে । মাঝেমধ্যেই এটা করতে গিয়ে দুর্ঘটনা ঘটে । অঙ্গহানি বা প্রাণহানি হয় । তো, এবার সন্তানকে নিয়ে জানলার দিকে একটু ঘুরে বসলেন বাচ্চাটার মা । মায়ের দুধ খেয়ে আর ফুরফুরে ঠাণ্ডা হাওয়ায় বাচ্চাটা মিনিট পাঁচেকের মধ্যেই বিল্কুল চুপ করে গেল । মধ্যবয়স্কার মুখে তখন যুদ্ধ জয়ের তৃপ্তির হাসি । আর অনন্য – সহ আশেপাশের যাত্রীদের চোখে তখন খেলা করছে অচেনা ওই ভদ্রমহিলার প্রতি গভীর সমীহ । যার সাথে সম্ভবত আর কোনও দিন দেখা হবে না ।


















কেরালার বৃহত্তম জিপলাইন adventure sport

  ### কেরালার বৃহত্তম জিপলাইন ভারতের দক্ষিণাঞ্চলের রাজ্য কেরালা, যার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও বৈচিত্র্যময় পরিবেশ পর্যটকদের আকর্ষণ করে, সেখানে এ...