মঙ্গলবার, ৩১ আগস্ট, ২০২১

কাবুলিওয়ালার দেশের কথা

           কাবুলিওয়ালার দেশের কথা

 

          আফগানিস্তান -সভ্য তালিবান জঙ্গিদের হাতে চলে গেছে খুবই দুঃখের কথা প্রতিবেশী দেশে ভারত কোন একটা বন্দর তৈরি করে দিয়েছিল শুনেছিলাম ইরান থেকে আফগানিস্তান হয়ে ভারতে গ্যাসের পাইপলাইন আসার একটা খবরও পড়েছিলাম সেই সম্ভাবনাগুলোও শেষ মন্দির পুড়লে দেবালয় রক্ষা পায়না , প্রতিবেশী দেশের জল-জমি-আকাশ জঙ্গিদের দখলে চলে গেলে ভারতের চিন্তার যথেষ্ট কারণ আছে ইমরান খান এই ঘটনাটিকে আফগানিস্তানের মুক্তি পাওয়ার সাথে তুলনা করেছেন ! একজন প্রথমসারির প্রাক্তন ক্রিকেট খেলোয়াড়ের মুখে এমন অখেলোয়াড়োচিত মন্তব্য হতবাক করে দেয়

 

           পৃথিবীর প্রতিটি জঙ্গি সংগঠনই কোনও না কোনও ভাবে বৃহৎ শক্তির দ্বারা মদতপুষ্ট , সরাসরি বললে স্পনসরড । আইসিস হোক বা তালিবান – কোনও মহাশক্তির পৃষ্ঠপোষকতা ছাড়া এত শক্তিশালী হয়ে উঠতে পারেনা । পারেনা আফগানিস্তানের মত একটা গোটা দেশ দখল করতে । আমেরিকা দু’দশক আফগানিস্তানকে রক্ষা করে এসেছে এমনি এমনি নয় , সে সময়ে এ গ্রহের দাদা ছিল আমেরিকা । হালে খুব সূক্ষ্ম ভাবে পৃথিবীর দাদা যে পাল্টাচ্ছে, সেটা মোটের ওপর আমাদের সবার কাছে স্পষ্ট । আমেরিকার কাছেও । তাই তারা হাত গুটিয়ে নিচ্ছে । এদিকে তালিবানরা আফগানিস্তানের দখল নেওয়ায় উল্লসিত পাকিস্তানের সর্বাধিনায়ক ইমরান খান । সাম্প্রতিককালে পাকিস্তানের খুব বন্ধু রাষ্ট্র চিন , এ গ্রহের নয়া দাদা । তালিবানরা যে চিনের পূর্ণ পৃষ্ঠপোষকতা পাচ্ছে এই কথাটা বুঝতে খুব বেশি বুদ্ধি খরচ করতে হয়না । এই মুহূর্তে চিন একমাত্র রাষ্ট্র যে , তার সীমানার কাছাকাছি থাকা প্রত্যেকটি দেশের সাথে পায়ে পা লাগিয়ে ঝগড়া শুরু করেছে গত কয়েক মাসে । একটা নির্বাচিত সরকারকে অঙ্গুলিহেলনে নাচানোর চেয়ে তালিবানদের সাহায্য করার কাজটা অনেক সহজ চিনের পক্ষে , দাদাগিরি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ।   



          যেটা হচ্ছে খুব খারাপ হচ্ছে, সন্দেহ নেই বামিয়ানের বুদ্ধমূর্তির ধ্বংস হওয়ার মত আরও কিছু বর্বরতার ছবি আমরা আগামী দিনে যে দেখব তাতেও সংশয় নেই প্রতিবেশী দেশের বিপদ নিয়ে চিন্তা খুবই ভাল , আরও ভাল নিজেদের দেশ নিয়ে আগে চিন্তা করা বামিয়ানের বুদ্ধ মূর্তির মত অত প্রাচীন না হলেও লুটিয়েন্স দিল্লির স্থাপত্যের একটা সমৃদ্ধ ইতিহাস আছে , শোভা আছে সেটাকে বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে মোদীর শাসনকালের প্রতীকস্বরূপ সেন্ট্রাল ভিস্টার কাজ চলার মধ্যে তালিবানিজম নেই ? মোগলসরাই স্টেশনের নাম পরিবর্তনের মধ্যে তালিবানি চিন্তা-ভাবনার ছাপ নেই ? পশ্চিমবঙ্গের মত বরাবর পরমতসহিষ্ণু রাজ্যে সশস্ত্র রামনবমীর মিছিল করার মধ্যে তালিবান জঙ্গিদের ছায়া নেই ? রামনবমীর মিছিলে বাচ্চাদের হাতে তরোয়াল ধরিয়ে দেওয়ার মধ্যে সেই একই জঙ্গিপনা নেই ? প্রতিবাদ অনেকেই করেন , কিন্তু কেউ তো বলেন না ----রাজা তোর কাপড় কোথায় , কেউ তো স্পষ্ট ভাষায় বলেন না , যারা বাচ্চাদের হাতে তরোয়াল ধরিয়ে দেয় ,তারা কখনও সমাজের হিতাকাঙ্ক্ষী হতে পারেনা



          দিল্লি - মোগলসরাই অনেক দূর , ঘরের কাছে মুর্শিদাবাদ আছে মোগল আমলের চিত্তাকর্ষক ইতিহাসের বেশ কিছু স্মৃতিচিহ্ন এখনও সেখানে অটুট মুর্শিদ কুলি খাঁ- নামে মুর্শিদাবাদ আগামিদিনে যদি মুর্শিদাবাদের নাম বদল হয় , তখন প্রতিবাদ করার মত জোর পাবেন তো তাঁরা , যাঁরা আফগানিস্তানের পরিস্থিতি নিয়ে খুবই চিন্তিত ? বামিয়ানের বুদ্ধ মূর্তি আমি চোখে দেখিনি , কিন্তু তার অনেক গল্প শুনেছি , গল্প শুনে আর ভিডিও দেখে আমি তাকে ভীষণ ভালবেসে ফেলেছি খুব ভাল কথা কিন্তু আমরা প্রায় সবাই যে স্বচক্ষে খোসবাগে সিরাজের সমাধি দেখেছি , মুর্শিদ কুলি খাঁ' সমাধি দেখেছি আগামিদিনে যদি ভারতে মুসলিম শাসনের স্মৃতিচিহ্ন হিসেবে এগুলি ভেঙে ফেলা হয় , গুঁড়িয়ে দেওয়া হয় , মুর্শিদাবাদের নাম পাল্টে দেওয়া হয় , তবে আমার অন্তত বামিয়ানের বুদ্ধ মূর্তি ধ্বংস হতে দেখার চেয়েও বেশি কষ্ট হবে । আর ভবিষ্যৎ কাল কেন , ঘটমান বর্তমানে আসি । তালিবানরা ঐতিহাসিক কাবুল গেট ভেঙেছে , আর আমাদের দেশে জালিয়ানওয়ালাবাগ জেনারেল ডায়ারের কুখ্যাত হত্যাকাণ্ডের ঐতিহাসিক স্মৃতির ক্ষত বয়ে চলার বদলে হয়ে উঠছে ঝাঁ চকচকে লাইট অ্যান্ড সাউন্ড শো । এখন আর দেওয়ালে বুলেটের ক্ষত নয় , কৃষ্ণনগরের মাটির পুতুল আরও বেশি দ্রষ্টব্য হয়ে উঠবে বলে খবর । বিশিষ্ট ইতিহাসবিদেরা বলছেন , কুখ্যাত হত্যাকাণ্ডের স্মারক হিসেবে বিষণ্ণতা নয় , নবনির্মিত জালিয়ানওয়ালাবাগ দর্শক-শ্রোতাদের মনে আনন্দ ও ফুর্তি জোগাবে । ছোটবেলায় ইতিহাস বইয়ে আমরা পড়েছি , রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এই হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে 'নাইটহুড' ত্যাগ করেছিলেন । খুব আনন্দে কাজটা করেছিলেন কি ? একটা ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা বলি । আমরা আগ্রা দুর্গ দেখতে গিয়ে দেওয়ান-ই-আম এবং দেওয়ান-ই-খাসের দেওয়ালে , দুর্গের আনাচকানাচে অমুক প্লাস অমুক , তমুক প্লাস তমুক দেখেছিলাম ২০০৩ সালে । তখনও দিল্লির মসনদে এন ডি এ , থুড়ি বিজেপি সরকার । খুব কষ্ট হয়েছিল ঐতিহাসিক একটি স্থাপত্য রক্ষায় সরকারের অসীম উদাসীনতা দেখে । ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে হিন্ধু মহাসভার ভূমিকা খুব ইতিবাচক নয় বলেই কি এই ঔদাসীন্য ?  

           এককথায় বললে , কেপটাউনে জল জমলে লেক টাউনের কী ? তালিবান অনেক দূরে আছে , ঘাড়ের কাছে শ্বাস ফেলছে সাম্প্রদায়িক উগ্রতা , এবং ক্রমশ তা শক্তিশালী হয়ে উঠছে এই অপশক্তি নিয়ে আরও বেশি চিন্তিত হওয়ার যথেষ্ট কারণ আছে বলেই আমার মনে হয়



www.httpssankhamanigoswami.xyz


তালিবান শব্দের অর্থ

তালিবান আফগানিস্তান

তালিবান আফগানিস্তানের যুদ্ধ

তালিবান খবর


তালিবান নিউজ

তালিবান সংবাদ

তালিবান মিনিং ইন বাঙ্গালী


talibanism in india 2021

 

বৃহস্পতিবার, ২৬ আগস্ট, ২০২১

অ-সুবিধা

                           

   অ-সুবিধা

                    সঙ্গে ওটি কে ?—স্ত্রী, স্যর ।-- নিজের না পরের ?” না , কোনও চটুল রসিকতা নয় , উপরোক্ত কথোপকথনটি এক অসমবয়সী বন্ধু ও নিকটাত্মীয়ের ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা । স্বাভাবিকভাবেই ভদ্রলোকের স্ত্রী এই চটুল রসিকতাটি হাল্কাভাবে নিতে পারেননি । আজকাল কোনও বিষয়কে বিজ্ঞাপিত করার সবচেয়ে সহজ উপায় হল সমাজ মাধ্যমে সে বিষয়ে আলোচনার পরিসর তৈরি করা । আর বিষয়টি যদি আদিম রিপুকে সুড়সুড়ি দিতে পারে , তবে তো কথাই নেই , কেল্লা ফতে ! বিজ্ঞাপনের জগৎ সম্পর্কে বলা হয় – ইট ইজ আ সিলি ওয়ার্ল্ড । সেটা জেনেই এই জগতের শরিকেরা এর সঙ্গে যুক্ত হন । সপ্তাহখানেক আগে কাগজের প্রথম পাতায় মুচমুচে , কুড়মুড়ে পাঁপড়ের মত খবর হল টলিউডের এক নায়িকা সন্তানসম্ভবা । উঁহু , কাহানি মে টুইস্ট হ্যায় । যার সাথে নায়িকার বিয়ে হয়েছিল , নামীদামী মানুষেরা যাঁদের বিয়েতে বৌভাত খেতে গিয়েছিলেন, সন্তানটি তাঁর নয় । ওয়েব সিরিজের মত এই সিরিজের পরের এপিসোডে জানা গেল , বিদেশের মাটিতে হওয়া দামী ব্যবসায়ী আর নামী নায়িকার বিয়েটা নাকি আইনত বিয়েই নয় । ইনি বলেন ও আমার টাকা নিয়েছে , উনি বলেন ও আমার টাকা নিয়েছে । তার পরের এপিসোডে জানা গেল , সন্তানটি যার বলে জল্পনা , সেই নায়ক নাকি বলেছেন , তাঁর নাম-যশ এই জল্পনায় ক্ষুণ্ণ হচ্ছে , সন্তানটি তাঁরও না । যখন সমাজ মাধ্যমে সবাই ভাবছেন , এই রহস্য উদ্ঘাটনের একমাত্র রাস্তা ডি এন এ টেস্ট , যখন আদিরসাত্মক রসিকতায় সমাজ মাধ্যম পরিপূর্ণ , তখন একটি কাগজে নায়িকার ছবি দিয়ে একটি গর্ভনিরোধক বটিকা তৈরি করে , এমন কোম্পানির বিজ্ঞাপন প্রকাশিত হল । হা-হা , হি-হি , হো- হো হেসে সবাই বলল , এ তো জ্ঞানপাপী , বিজ্ঞাপন করেন , অথচ ব্যবহার করেন না ! এদিকে তখনও পর্যন্ত গল্পে একটা ‘কিন্তু’ রয়ে গেছে । যে যুগে সেলেব বিটিরা বেবি বাম্পের ছবি নিয়মিত সোশ্যাল মিডিয়ায় আপলোড করেন , সেই সময়ে দাঁড়িয়ে যাকে নিয়ে এত চর্চা , সেই নায়িকা সন্তানসম্ভবা হওয়া নিয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছেন । এখনকার ট্রেন্ড মেনে বলিউড – টলিউডের নায়িকারা সাধারণত বেবি বাম্পের ছবি সমাজ মাধ্যমে শেয়ার করার আগেই গর্ভনিরোধক বটিকার বিজ্ঞাপনের মুখ বনে যান । এক্ষেত্রেও পরে অঙ্কটা মিলে গেল । নায়িকা বিজ্ঞাপনের অন্তর্নিহিত সত্যটি স্বীকার করলেন । ব্যাপারটা কী মশাই ? কথায় বলে , যা নেই ভারতে , তা নেই মহাভারতে । তো মহাভারতে কুমারী মায়ের(এক্ষেত্রে তো ঘটনাটা তাইই দাঁড়াচ্ছে , তাই না ?) গল্প আছে তো , কর্ণ-কুন্তী সংবাদ জানেন না বঙ্গবাসী ? আর ওয়েব সিরিজের যুগে ওসব তো জলভাত , হতেই পারে , ছ্যা ছ্যা করার আগে ভাল করে মহাভারত পড়ুন বলা যায় !

           সেটা প্রশ্ন নয় , প্রশ্ন হল, এই জল্পনা ছড়ানো-কুমারী নায়িকার সন্তানসম্ভবা হওয়ার দাবি , পাল্টা দাবি এবং অবশেষে গর্ভনিরোধক বটিকার বিজ্ঞাপন হওয়া , সবটাই পরিভাষায় ‘স্ক্রিপ্টেড’ নয়ত ? ব্যক্তিগত আনন্দের মুহূর্তগুলিও স্পনসরড হওয়া শুরু হল নাকি ? ক্রিকেটারদের সারা গায়ে যেমন বিজ্ঞাপন লেপা থাকে , তেমনি এই সদ্য ভূমিষ্ঠ সন্তান এবং মায়ের গায়েও কী বিজ্ঞাপন থাকছে না , যে সন্তানধারণ থেকে শুরু করে জন্ম নেওয়া পর্যন্ত নায়িকার যাবতীয় খরচ বহন করেছে একটি নির্দিষ্ট গর্ভনিরোধক বটিকা বেচা সংস্থা ? কারণ গোটা ব্যাপারটাই তো হল, লাখ লাখ লোকের সামনে বিজ্ঞাপন দিয়ে । এটা  খুব খারাপ একটি দৃষ্টান্ত তৈরি হল বলতে হবে  । জনপ্রতিনিধি এবং নায়িকার ভক্তদের কাছে এবং নির্বাচনী এলাকায় কী বার্তা গেল ? এই চিত্রনাট্য কি খুব অনুসরণীয় এবং অনুকরণীয় ? বিয়েবাড়ির সামনে কী এরপর গেটের ওপর লেখা থাকবে , অমুক ওয়েডস তমুক , আর তার নীচে বড় বড় করে --- স্পনসরড বাই অমুক কোম্পানি(বিয়ের পর যে কোম্পানির, যে ওষুধ দরকার হয় , সেই সংস্থাই পৃষ্ঠপোষকতা করবে অনিবার্য ভাবে ! ) । এসব কী ? ‘ব্যক্তিগত’ বলে কোনও শব্দ আর অভিধানে থাকবে না ? মানুষ আর মনুষ্যেতরের মধ্যে তাহলে আর ফারাক রইল কোথায় ? তালিবানরা মেয়েদের যৌনদাসী বানিয়ে রাখে বলে সবাই চিন্তিত , কিন্তু এ দেশে , আমাদের চারপাশেই বা কী ঘটছে ? গোটা ঘটনাটা আমার চোখে ব্যভিচারের নামান্তর ।  নীতি পুলিশ হওয়ার কোনও ইচ্ছে আমার নেই , কিন্তু বাণিজ্যিক কোম্পানির প্রচারের স্বার্থে আত্মসম্মান বিসর্জন দেওয়াটা কি ঠিক ? করোনাকালে এবং লকডাউন চলাকালীন রাজ্যে বেকারত্বের হার বেড়েছে বলে খবর । চিত্রতারকাদেরও যে সংসার চালাতে খুবই কষ্ট হচ্ছে তা-ও সহজেই অনুমেয় । তবুও আইকনরা রোজগারের এমন পন্থা অবলম্বন করলে কেমন যেন কিন্তু কিন্তু লাগে । 


www.httpssankhamanigoswami.xyz



nusrat jahan

nusrat jahan news

nusrat jahan husband


nusrat jahan husband name

nusrat jahan spouse


nusrat jahan age


nusrat jahan news today

nusrat jahan marriage



বুধবার, ২৫ আগস্ট, ২০২১

রিসেপশন । রম্যরচনা

 রিসেপশন



           এক প্রাইভেট হাসপাতালের রিসেপশন এক বৃদ্ধাকে ডিসচার্জ করে দেওয়া হয়েছে ছেলে মাকে নিতে এসেছেন বাইরে গাড়ি দাঁড়িয়ে বার দুই কাউন্টারে জিজ্ঞেস করলেন , আর কি কোনও কাগজপত্র নেওয়ার আছে ? রিসেপশন সুন্দরী বললেন , না স্যর , সবই আপনাকে দিয়ে দেওয়া হয়েছে তবু ভদ্রলোক বসলেন আমার বাঁ পাশে আমার ডানপাশ থেকে ওনার মা বললেন , চল , একবারে গাড়িতেই উঠে বসি ভদ্রলোক দাঁত-মুখ খিঁচিয়ে উঠলেন আগেই মনে হয়েছিল , এবার গন্ধে বুঝলাম , দুই হাতে-ঘাড়ে ট্যাটু করা ভদ্রলোক আকণ্ঠ পান করে এসেছেন ওনার মা একটু থম মেরে বসে আস্তে আস্তে একাই বেরিয়ে বাইরে গাড়িতে উঠে বসলেন প্রবল গরম , রিসেপশনে পুরোমাত্রায় সি চলছে ভদ্রলোক কিছুক্ষণ ঢুলতে ঢুলতে মিনিট পনেরো পরে গভীর নিদ্রায় তলিয়ে গেলেন ওনাকে ড্রাইভার ডাকতে এলো , ডাকতে ডাকতে , ডাকতে ডাকতে স্বাভাবিকভাবেই সাড়া পেলনা প্রথমে রিসেপশনে গুঞ্জন , যেন জীবনে কেউ মাতাল দেখেনি ! তারপর ডাক পড়ল নিরাপত্তা কর্মীদের ভদ্রলোকের তখন শরীর ছেড়ে দিয়েছে জাগাও পথিককে , সে ঘুমে অচেতন ! এরপর সুপারভাইজার এলেন , সব শুনে পাক্কা পেশাদারের মত বললেন , ট্রলি ডাকো , ভর্তি করে নাও ড্রাইভার আমতা আমতা করে কী যেন বলতে বলতে ওনার পিছনে দৌড়ল আমার ফোনে ঠিক তখনই একটা মেসেজ ঢুকল ফোনে মেসেজ অ্যালার্ট টিউন বাজছে --- কতই রঙ্গ দেখি দুনিয়ায় , ভাইরে ... !

               হাসপাতালের রিসেপশন হল এমন একটা জায়গা যেখানে সুস্থ লোকেদের কিছু করার থাকেনা , কিন্তু অনেকক্ষণ থাকতে হয় । আরেকদিন এক হাসপাতালের রিসেপশনে বসে আছি , সামনে এক মধ্যবয়স্ক ভদ্রলোক এবং তাঁর স্ত্রী আমার দিকে পিছন ফিরে বসে । দু’জনের দু’দিকে মুখ , কথা হচ্ছে না । কিছুক্ষণ পরে পরেই ভদ্রলোক ভদ্রমহিলার দিকে তাকাচ্ছেন , আর কনিষ্ঠা থুড়ি কেনি আঙুলটা স্ত্রীর বাঁহাতে ছোঁয়াচ্ছেন । স্ত্রী রাগতভাবে তাকিয়ে বুড়ো আঙুলটা দিয়ে ওনার কেনি আঙুলটাকে ঠেলে সরিয়ে দিচ্ছেন । এ জীবনে নীরব ভালবাসার ভাষা তেমনভাবে শেখা হয়ে ওঠেনি । অনেক ভেবে মনে পড়ল ছোটবেলায় থুতনির নীচে বুড়ো আঙুল ঘষে যার ওপর রাগ হত, তাকে আড়ি করতাম । আর প্রেমিক-প্রেমিকারা যে নিজেদের কনিষ্ঠা আঙুল জড়িয়ে পাশাপাশি হাঁটে সে তো দেখিই । আমি ওনাদের সাইন লাঙ্গোয়েজ এইটুকুই ডি-কোড করতে পেরেছি ।

            তৃতীয় ঘটনাটা কলকাতার শিশুমঙ্গল হাসপাতালের । চারটে থেকে ছ’টা ভিজিটিং আওয়ার চলছে । আমাদের সামনের বেডের ভদ্রলোকের পেটের পাশের দিকে একটা ফুটো দিয়ে নল ঢোকানো , সেখান দিয়ে পেটের ভিতরের ফ্লুইড জমা হচ্ছে একটা প্লাস্টিকের ব্যাগে , ঠিক ক্যাথিটারের মত । ভদ্রলোকের স্ত্রী ওনাকে দেখতে এসেছেন । কথা থামিয়ে ভদ্রলোক হঠাৎ বলে উঠলেন – এনেছো । স্ত্রী ঘাড় নাড়লেন । ভদ্রলোক বললেন – দাও । তারপর ওঁর স্ত্রীর ভ্যানিটি ব্যাগ থেকে যেটা বেরোল , তা দেখে আমাদের চক্ষু চড়কগাছ । তেল চুপচুপে ঠোঙায় চারটে শিঙাড়া ! ভদ্রমহিলা ওয়ার্ডের দরজায় গিয়ে দাঁড়ালেন, নার্সরা কেউ টহল দিতে আসছেন কিনা খেয়াল রাখতে । আমরা বুভুক্ষুর মত ভদ্রলোকের শিঙাড়া খাওয়া দেখে হাসব না কাঁদবো বুঝতে পারছিলাম না । আমার তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা , বিকাশ রায় অভিনীত ‘আরোগ্য নিকেতন’ ছবিটির একটি মজাদার অথচ মর্মস্পর্শী দৃশ্য মনে পড়ছিল । মশায়বাবার চিকিৎসাধীন এক রোগীর জটিল পেটের ব্যামো কিন্তু ভীষণ খাওয়ার লোভ । মশায় বারবার করে তাকে বলে দিয়েছেন ওষুধ-পথ্যের বাইরে কিচ্ছু না খেতে । শেষে দেখেন তাঁরই বাড়িতে পুজো উপলক্ষে যে ভিয়েন বসেছে , তার পাশে , একটু আড়ালে গিয়ে গাণ্ডেপিণ্ডে গিলছে সেই রোগী । মশায় তাকে দেখতে পেয়ে ভীষণ রেগে বলে ওঠেন --- তোর এত লোভ , বারবার বারণ করা সত্ত্বেও তুই আমার কথা শুনলি না ! তোর মৃত্যু কেউ আটকাতে পারবেনা । স্থানীয় লোকে বিশ্বাস করতো , মশায়ের নিদান কখনও মিথ্যে হয়না । সেদিন এতটা না হলেও কোনও ডাক্তারবাবু নিশ্চয়ই ওই ভদ্রলোককে শিঙাড়া খেতে দেখলে বলতেন—মিছিমিছি একটা বেড আটকে রাখছেন কেন ? বাড়ি চলে যান । আর মনে মনে হয়ত বলতেন , আপনার রিজার্ভেশন কনফার্মড ! 


www.httpssankhamanigoswami.xyz










কেরালার বৃহত্তম জিপলাইন adventure sport

  ### কেরালার বৃহত্তম জিপলাইন ভারতের দক্ষিণাঞ্চলের রাজ্য কেরালা, যার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও বৈচিত্র্যময় পরিবেশ পর্যটকদের আকর্ষণ করে, সেখানে এ...