অতুলনীয়া
সব গোলাপের পাপড়িতে তোমার নাম থাকবে
আর সব কাঁটা তোমার ছোঁয়ায় ফুল হয়ে যাবে
তোমাকে দেখলে ঘাতক ফুলকে আদর করবে
আর তোমার জন্য আগুন রঙে আকাশ আয়না হবে
তোমাকে দেখলে মাঠ ভরা ধান আলতো হাওয়ায় নাচবে
তুমি চাইলে মেঘ তোমায় বৃষ্টি দিয়ে যাবে
তোমার জন্য ঝরনার ধারে পর্ণকুটীর হবে
ঘুম পেলে , পাখিরা এসে ঘুম পাড়িয়ে যাবে
তুমি গাছের ডালে দোলনা বেঁধে শুধু দোল খাবে
আর মাটি তোমার কোমল পায়ে রঙ মাখিয়ে যাবে
তোমার জন্য নতুন ভাবে কবিতা লেখা হবে
তোমার তুলনা ? প্রিয়তমা তুমি অতুলনীয়া হবে । (29-06-1998)
স্বপ্ন
জ্যোৎস্নায় ভিজছে আমার ক্লান্ত হৃদয় বালুচরে শুয়ে
শহর থেকে অনেক দূরে , যেখানে সব কিছুই অকৃত্রিম চারপাশে
প্রকৃতি যেন দু'হাত বাড়িয়ে এগিয়ে আসছে , নিজেকে বিলিয়ে দিতে
এখন , পাশেই বয়ে যাওয়া পাহাড়ি নদীর কুল কুল শব্দ মিশে যাক
তোমার মুক্তো ঝরানো হাসির স্মৃতিতে
এই মুহূর্তে পালকের মত হালকা ভালবাসা ভেসে বেড়াক হাওয়ায় , থমকে থমকে
আর তার মাঝে , ভিজে মাটির গন্ধে
ঘুম আসুক আমার , তোমার কোলে । (১০ -০৭- ১৯৯৮)
স্তুতি
কৃষ্ণভামিনী মনমোহিনী চপল চরণে ধায়
তারই সাথে অলি সুরভি কাকলি কুহূতান ভেসে যায়
দোলে অঙ্গ বাজে মৃদঙ্গ নৃত্যের তালে ওঠে তরঙ্গ
চমকিত হয় বহিরঙ্গ , রঙ্গিনী তুমি লভো আসঙ্গ ! (২৫-০৯-১৯৯৮)
অসুখের দিন
ভালবাসি বেশি করে অসুখের দিনে
মগজে ভর্তি বিকট স্বপ্ন , চেতনার ওপার থেকেও
একটা হাত চেনা লাগে, অসুখের দিনে ।
চোখ খুললেই মিষ্টি হাসি
গভীর ক্ষতে আরাম দেয় --- অসুখের দিনে
চোখের কোণে পিঁচুটি , আর বিশ্রস্ত চূর্ণ চুলে ভরা আমাকে
একজন ভালবাসতে পারে অসুখের দিনে
শুকনো জিভ আর ফাটা ঠোঁটে তোমার অভাব
বড় বেশি করে অনুভূত হয় , অ-সুখের দিনে ।(১৭-০২-২০০১)
অব্যক্ত
অনেকগুলো বছর চলে গেছে পিছনে
ফুল থেকে যেভাবে পাপড়ি ঝরে পড়ে
তুমি তো আসোনি
এই ফাঁকে আমি চিতার আগুনে সেঁকে নিয়েছি মন
তপ্ত লৌহশলাকায় অন্ধ করেছি কামনার চোখ
তারপর তোমায় হন্যে হয়ে খুঁজেছি জনারণ্যে ,
ভিড় ঠেলে সামনে তুমি তো আসোনি
বৃষ্টিরাতের লাল আকাশে আমি দু'টো চোখ দেখেছি
শান্তি আর আশ্রয় পেতে আমারই অজান্তে
স্বপ্নভেজা ইচ্ছেরা সব ডুব দিয়েছে তাতে
তবু তো এতগুলো বছর , তবু তো এতগুলো বসন্ত
চিরঘুমের আগে তবু , তুমি কি আসবে না ? (০৭-১০-২০০১)
দুঃখ
সব হাসি নিভে গেলে পরে
মেঘেরা দুঃখের দেশে উৎসব করে ।
দহনবেলা
তাকিয়ে আছি অথচ চোখ দু'টো যেন বন্ধ
আর মৃদুমন্দ হাওয়া , আর হাসনুহানার গন্ধ ।
পথিক
যতদূর চোখ যায় , হেঁটে যাব আমি তত দূর
এ জীবনে আমার সাকিন দিকশূন্যপুর
বাতাসে কান পেতে যারা পাখিদের শিস শোনে
আমার আত্মীয়-বন্ধুরা সব ওখানে
এলোমেলো ভেবে যাব , মন যেমন চায়
ইটের পাঁজরেও তো চারাগাছ জন্মায়
এইটুকু বুঝি শুধু পল-অণুপল
শব্দ সাজানোটাই আজ শেষ সম্বল । (০২-০৬-২০১৬)
মুক্তমনা
কসাই ছুরিতে দিচ্ছে শান
লেখক তুমি সাবধান !
এ দেশেও কোনও মুক্তমনা
খ্যাপাদের হাতে ছাড় পাবেনা
স্তব্ধ হবে অন্য স্বর
খ্যাপামি অতি ভয়ঙ্কর
আমরা ছিলাম , আমরা আছি
তোমরা মরো , আমরা বাঁচি ।
উড়তা পঞ্জাব
চাটুকার - হঠাৎ রাজা জ্যাঠামশাই আজ
নিত্যনতুন খেল দেখাবেন গজেন্দ্র - পহ্লাজ
কার গলাতে মুক্তোর মালা একদম বেমানান
সেটুকুনি খবরও কি দিল্লিশ্বর পান ?
সংসারী
আড্ডা থেকে পালাই পালাই , বাড়ির দিকে মন
বন্ধুরা সব নিয়মমতো সংসারী এখন !
বর্ষা
কালকের দিনটা আবার এমনি সাজিয়ে দিস
গায়ে বৃষ্টি আর মাথায় , মেঘের উষ্ণীষ ।
প্রেম
গজদন্ত আর চিবুক ভোরের স্বপ্নে আসে
হৃদয় আমার অস্থির হতে বড্ড ভালবাসে !
সহাবস্থান
কালকে রাতে ঘুমের মাঝে হঠাৎ হাতে সুড়সুড়ি
জেগেই দেখি , তেঁতুলে বিছের ইতস্তত ঘোরাঘুরি
দু'জনে মিলে সন্ধি হল , আমিও থাকি - তুইও থাক
আমার মাথা বালিশেতেই , ও বরং দূরেই যাক !
মাঝরাত
মন আমার আনচান, চোখের পাতা তোমায় কামনা করে
নিদ্রার সাথে দেখা হবে , আজকে স্বয়ম্বরে
তার গল্পই একটু করে লিখি আমি রোজ
গভীর স্বপ্নে শুধুই তার আলিঙ্গনের খোঁজ !
সম্প্রীতি
ভালবাসা গুছিয়ে নাও, বেরাদরি বাড়াও আরও
কাল থাকবে আদাব আর, ফেরত আসবে নমস্কারও
মসজিদের পাশ দিয়ে, গড়িয়ে যাবে রথের চাকা
রামের কপালে চন্দন আর, রহিমের চোখ সুর্মা আঁকা
এমন কোনও শক্তি আছে, যে আমাদের করবে জবাই
আমি আর কালাম যদি, পুজোর প্রসাদ ভাগ করে খাই ?
আসলে সবাই মিলেমিশে থাকতে চাই একসাথে
কবেই জানি তফাৎ নেই , দোয়া আর প্রার্থনাতে ।
ফেসবুক
চারিদিকে এত হইচই
এত্তো লেখা, পাঠক কই ?
এক বন্ধু বলল এসে
পড়েই যাব ভালবেসে ।
অ্যাক্রস্টিক
রাত জমেছে অনেকটাই
পড়তে চাইছি বলেই নদী
তীরে তোমার এসে দাঁড়াই ।
জলছবি
মেঘের পরে বৃষ্টি আসে, বৃষ্টির পরে মেঘ
শীতল জলেতে উপশমে কত, তপ্ত ক্ষত - আবেগ
জানলার কাচে বারি বিন্দুতে পৃথিবী আবছা হয়
ভেজা ভেজা পথ, আলো ঠিকরে, আজ বড় মায়াময় ।
ভূমিকম্প
ধরণী কি হবেই দ্বিধা
স্থির থাকতে অসুবিধা ?
সব আবার উঠল দুলে
যেমন শিশু , মায়ের কোলে
এবার নাকি মায়ানমার
কলকাতাও পায়নি ছাড় !
নার্সিসাস
আমাকে দেখুন - আমাকে দেখুন দশ দিকে কলরব
নিজস্বীতে মজে আছি সদা, তাবড় বীরপুঙ্গব
প্রতিবিম্বতে ডুবে থাকা অতি, ক্ষতিকর কিছু নয়
যদি না থাকে কেবলই নিজেকে হারিয়ে ফেলার ভয় ।
অমৃত
দাবদাহে তপ্ত দিনে, বারিবিন্দু মম
নেমে এসো ওষ্ঠে আজ, স্বেদ-বিন্দুসম
এ জীবন মন্থনে যে , বিষ তৈরি হয় ,
সেই সব ক্লেদ ধুয়ে ফেলে দিতে জল বড় নির্দয় ।
হোলি
পলাশ ফুল, আবীর আর তোমায় ভালবেসে
মানসভ্রমণে যাব কাল, জলপরীর দেশে
কালকে আবার আগুন রঙে আকাশ আয়না হবে
কথায়-সুরে- প্রগলভতায় বসন্তোৎসবে
স্বেদবিন্দু মুছিয়ে দেওয়া আলতো হাওয়ার রেশ
মেখে নিয়ে পরস্পরে তাকাবো নির্নিমেষ
তিস্তা নদীর তীরে যদি রাত বেড়ে যায়
একসাথে বসে জ্যোৎস্না মাখব দোলপূর্ণিমায় ।
কাজী নজরুল ইসলাম
কালোত্তীর্ণ কবেই তাঁর
জীবনযাপন লেখার ধার
নত নয় , উচ্চ শির
জন্ম দিলেন বিদ্রোহীর
রুদ্ররূপেও ছন্দোবদ্ধ
লক্ষ্যে , সুর --- সম্প্রীতির
ইঙ্গিত নয় , যেন চাবুক
সপাটে শব্দ দোলায় বুক
লালচে হওয়া পুবের কোণের
মন্ত্রে বলে , আশা থাকুক ।
( এই ধরণের কবিতাকে অ্যাক্রস্টিক বলে । এটি এক ধরণের ছন্দোবদ্ধ ধাঁধা । এই প্রকারের কবিতায় প্রতিটি লাইনের প্রথম অক্ষরগুলি পরপর যোগ করলে , একটা নাম বা অর্থ তৈরি হয় । এক্ষেত্রে , যেমন বিদ্রোহী কবির নামটি ফুটে উঠেছে । ইংরেজিতে লুই ক্যারল এই ধরণের কবিতা লেখার জন্য প্রসিদ্ধ । বাংলায় কবিতার এই ধারাটিতে মাইলফলক তৈরি করে গেছেন মাইকেল মধুসূদন দত্ত । )
সে
মন যদি দেয় সায়
বেহিসেবী হওয়াই যায়
যেমন নদী স্রোতস্বিনী
তেমন যদি কারেও চিনি ।
শুভরাত্রি
এখন ঘুমাব আমি, ছাদের দিকে চোখ
স্বপ্নেরা সব লাইন ধরে, ভোরের দিকে চলে
এবার মগজ ঘিরে, রাতপাহারা হোক
নতুন দিন ডাকছে আমায় , আসি তাহলে ?
এ দাবদাহে
পুষ্ট দেহ, হৃষ্ট চিত্ত
নব্য বঙ্গ মধ্যবিত্ত
লোডশেডিঙয়ের জ্বালায় নিত্য
উত্তেজনায় ঝরান পিত্ত ।
যার পকেট যত স্থূল
ততগুলি ঘর বাতানুকূল
প্রতি পরিবারে না বলা রুল
গিন্নি যেন থাকেন কুল !
বাসে-ট্রেনে-পথে অফিসে হায়
তেতে ওঠা মন বিষ ওগরায়
জল-শরবতে শান্তি চায়
ক্লান্ত দেহ, ভিজে গায়ে ।
দিনগত পাপক্ষয়
যাঁরা ভাবেন , ঠিক নয়
বাড়ি ফিরে যারা মেঝেতে শুই
তাদের গল্প এইটুকুই ।
পুজো
শিউলি ফুলের গন্ধ আর কাশের দোলা দেখে
হাতের কাছে এসেই গেল, খুশির আতর মেখে
বাজার বড় ব্যস্ত এখন, ঢাকের ভীষণ দর
মনের সাথে মনের যোগের সেরা অবসর ।
চতুরঙ্গ
আসলে খেলে ছক , আমরা ক্রীড়নক
চৌষট্টি খোপ , প্রতিটাই টোপ ।
মহাভারত২০২১
ধর্মরূপী বক ঃ কোনটি ভদ্রজনোচিত কাজ ?
যুধিষ্ঠির ঃ আজ্ঞে , sabotage !
দোল
নিয়ম থেকে ছুটি নিয়ে রঙে আর রঙ্গে
আজ বঙ্গজনে নাম লেখালেন ছদ্মরূপী সঙ্ঘে !
হেথায়-সেথায় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছো বন্ধু যত
মিষ্টান্নেই ভরিয়ে নিও , মনের জ্বালা , ক্ষত ।
এলোমেলো
বাউল বাতাস হয়ে যদি আছড়ে পড়ি বুকে
শুকনো পাতার শব্দ হোয়ও , চঞ্চলতার সুখে
তোমায় পেয়ে শান্তি পেত তৃষ্ণার্ত নদী
ভিজে বালির ওপর রাঙা পা রাখতে যদি ।
নামহীন
সারা রাত বৃষ্টি ভেজা, সদ্য ফোটা ফুল
হাতটি ধরে ভাললাগা , শেখায় নির্ভুল ।
(২)
যদিও আমি অঙ্কে কাঁচা
কিন্তু বুঝি সরলরেখা , এবং বুঝি এটাই বাঁচা ।
(৩)
রাত্রি অনেক গভীর হয়ে এলে
একা আঁধারে নিশির ডাক শুনি
আধেক জীবন সদ্য গিয়েছে চলে
বাকি আধখানা শুরু হবে এক্ষুণি ।
(৪)
আমার যখন রাগ হয় খুব , মনে হয় কিছু করি
একলা আমি , একলা বসে , একলা কলম ধরি ।
বিরুষ্কা১১-০১-২০২১
দুই থেকে তিন
বিরাটের দিন
এবারে অসি বধ
ঠেকানো কঠিন !
( প্রসঙ্গ : অস্ট্রেলিয়া সফরে গিয়ে বর্ণবিদ্বেষী মন্তব্য ও জঘন্য স্লেজিং-এর শিকার ভারতীয় ক্রিকেট টিম । প্রতিবাদে কিছুক্ষণ খেলা বন্ধ রাখেন তাঁরা । দুর্দান্ত খেলোয়াড়ি মনোভাব দেখিয়ে টিম ইন্ডিয়ার পাশে ছিলেন অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক । স্ত্রী অনুষ্কা শর্মা অন্তঃসত্ত্বা থাকায় টিমের সঙ্গে যাননি বিরাট কোহলি । এদিন তাঁদের একটি কন্যা সন্তান ভূমিষ্ঠ হয়েছে । আশা করা যাচ্ছে শীঘ্রই অস্ট্রেলিয়ায় গিয়ে দলের সাথে যোগ দেবেন বিরাট । সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা ১১-০১-২০২১)
শীত ২০২১
শীত মানে প্রকৃতি শিশির-স্নাতা
ডাল থেকে ঝোল , সব পদে ধনেপাতা ।
পাঞ্জা
https://sankhamanigoswami.blogspot.com/2020/12/pub-9792609886530610_26.html
বাংলা কবিতা রোমান্টিক
বাংলা কবিতা ক্যাপশন
বাংলা কবিতা সমূহ
বাংলা কবিতা প্রেমের
কবিতা বাংলা
প্রেমের কবিতা
ভালোবাসার কবিতা








