রবিবার, ২৭ ডিসেম্বর, ২০২০

রাজযোটক

 

            বেশ কিছুদিন হল একটা বাঙালি ঘটকালির ওয়েবসাইটে নাম লিখিয়েছে অমিতাভ । এখনও পর্যন্ত পাত্রী জোটেনি , তাই অমিতাভ ভেতরে ভেতরে একটু অস্থির হয়ে আছে , একটু রেগে আছে । তবে উপকারও হয়েছে কিছু । বেশ কিছু ভ্রান্ত ধারণা ভেঙে গেছে । সমাজটা  যে অনেকটা পাল্টে গেছে সেটা বেশ বুঝতে পারছে অমিতাভ । যে বয়স পেরোলে চালসে ধরে , সে সেই বয়স পেরিয়ে এসেছে । তার স্কুল-কলেজের বান্ধবীরা একেকজন এখন পাক্কা গৃহিণী , টিনএজার ছেলেমেয়ের মা । কথায় বলে মেয়েরা কুড়িতেই বুড়ি । সেই ধারণাটা যে সামাজিক ভাবে একদম পাল্টে গেছে , সেটা বেশ বোঝা যায় এই সাইটে চোখ বোলালে । যাঁদের বয়স পঁয়ত্রিশের ওপরে এবং যাঁরা স্বাবলম্বী বা কিছু করেন না , তাঁদেরও যেন বিয়ে করার বিশেষ তাড়া নেই , পাত্রের বয়স চল্লিশের ওপর হলেও দিব্যি চলবে । বোঝা যায় পাত্রী এবং তাঁদের বাবা-মাদের চিন্তাধারা অনেক পাল্টেছে । পাত্রস্থ হওয়া বা করাতেই মোক্ষলাভ , এমনটা আর ভাবছেন না সকলে । অনেক পাত্রীই আবার নিজের চেয়ে বয়সে ছোট পাত্র চাইছেন , এটা অমিতাভের বিয়ে সম্পর্কে ধারণায় একটা বড়সড় ধাক্কা ! অনেক বাবা-মা আবার ঘরজামাই পাত্র চাইছেন , কিন্তু কেউ কী রাজি হবে ? নিশ্চয়ই হবে , এবং হচ্ছে আজকাল ! অমিতাভ ভেবেছিল তার জন্য এখনও পর্যন্ত কোনও পাত্রী আর বসে নেই , কিন্তু দেখল দিনকাল পাল্টেছে । অনেক দুই কুড়ি পাত্রী আছেন । তবে, বেশ ভাল লাগছে এটা দেখে যে গোত্র-রাশি-জাত নিয়ে অনেকেরই আর মাথাব্যথা নেই । এক ভদ্রমহিলার ছবি দেখেছে অমিতাভ যিনি পেশায় শিক্ষিকা । বাড়ি কলকাতায় , কর্মসূত্রে থাকেন বহরমপুরে । তিনি নিজের জন্য পাত্র চাইছেন এটা জানিয়ে যে তাঁর আগে কখনও বিয়ে হয়নি , কিন্তু তাঁর পুরনো সম্পর্কের চিহ্নস্বরূপ একটি তিন বছরের সন্তান আছে । অমিতাভ বুঝছে সমাজ মেনে নিতে , মানিয়ে নিতে শিখেছে অনেকখানি , নইলে ওই ভদ্রমহিলা প্রকাশ্যে এত কথা বলতে পারতেন না । অমিতাভ দেখেছে  অ্যাসিড আক্রান্ত পাত্রীরা নিজেদের ছবি দিতে দ্বিধা করছেন না । এমনকি পাত্রী হিসেবে ছবি আপলোড করেছেন সমকামীরাও । এগুলো পর্যবেক্ষণ করে ওর ভাল লেগেছে ।

               কিন্তু ভেতরে যে অদম্য পুরুষ সত্তাটি রয়েছে , সেটি ঘুণ পোকার কুরে কুরে খাওয়ার মত অমিতাভকে সমানে খেপিয়ে চলেছে । কারণটা আর কিছুই নয় , অমিতাভর প্রস্তাবকে অনেক পছন্দের পাত্রী বাতিল করেছে । কেউ ভদ্রতা বজায় রেখে , কেউ একেবারে মাছি তাড়াবার ভঙ্গীতে । এটা অমিতাভর একেবারে সহ্য হচ্ছে না । সত্যজিৎ রায়ের 'গুপী গায়েন বাঘা বায়েন' ছবির ক্লাইম্যাক্সে গুপীর বিয়ে পছন্দের রাজকন্যার সাথে ঠিক হয়ে যেতে দেখে , যেমনভাবে বাঘা ফুঁসে উঠেছিল এই বলে যে ---- "কেন , আমি কম কীসে ?" --- সেই প্রশ্নটা অমিতাভরও পাত্রীদের খোলাখুলি জিজ্ঞেস করতে ইচ্ছে করে খুব , কিন্তু পারেনা । গুপীর মত পত্রপাঠ কেউ জবাব দেয়নি বটে --- "এই অ্যাত্তোখানি !" --- কিন্তু অমিতাভর কেন যেন মনে হয় পাত্রীরা নীরবে সেই কথাটাই বলতে চায় , এবং এটাই ওর একেবারে অসহ্য লাগে । তাই অমিতাভ রাগের চোটে বিবাহোন্মুখ পাত্রীদের কিছু খামতি খুঁজে বের করেছে । যেমন এক , মদ্যপান করেন কিনা , সেই প্রশ্নের জবাবে অনেক পাত্রীই লিখেছেন --- "সোশ্যালি ইয়েস ।"  সোশ্যালি ইয়েস ! কোন সোসাইটির কথা বলতে চাইছেন ওঁরা ? মদ খেয়ে রাস্তায় আছড়ে পড়লে, যে সোসাইটি ফিরেও তাকাবে না , সেই সোসাইটি ? সোসাইটি ! মাই ফুট ! কিছুদিন আগে কাগজে একটা খবর পড়েছিল অমিতাভ এবং স্তম্ভিত হয়ে গিয়েছিল । সম্ভবত খবরটা তাকে আমৃত্যু তাড়া করবে । কলকাতার রাজপথে একজন যুবক গাড়ির চাকায় পিষ্ট হয়ে প্রাণ হারিয়েছিলেন , রাজধানী শহরে প্রতিদিনই অনেকে এভাবে প্রাণ হারান । ওসব কেউ ধর্তব্যের মধ্যে আনেনা । দুর্ঘটনার খবরটা অমিতাভর দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিল খবরের আসল অংশটা পড়ে । ভদ্রলোক শুধু গাড়িতে পিষ্ট হননি , তার প্রাণ বেরিয়ে যাওয়ার পর, একের পর এক গাড়ি অবলীলায় চলে গেছে তাঁর দেহাবশেষের ওপর দিয়ে , যেমন ছুঁচো, মেঠো ইঁদুর , কুকুর , বেড়ালের দেহের ওপর দিয়ে যায় । কেউ থামেনি । একসময় ওঁর শরীরের অবশেষ বলেও আর কিছু রাস্তায় পড়ে থাকেনি রক্ত ছাড়া । তবু এক মুহূর্তের জন্যও সদাব্যস্ত কলকাতা শহর ওঁকে চিঁড়েচ্যাপটা করে দিতে দ্বিধাবোধ করেনি । মৃতের মায়ের আকুল প্রশ্ন ছিল --- "কেউ কি একবারও একটা আস্ত মানুষকে রাস্তায় পড়ে থাকতে দেখলেন না , একবারও ভাবলেন না , আগামীকাল তাঁরও ওই হাল হতে পারে ?" এই প্রশ্নের কী উত্তর দেবে সো কলড সোসাইটি , যেখানে কারও কারও মদ্যপান --- ইয়েস ! 


                   আরও একটা দিক অমিতাভকে ভাবিয়েছে । ভালভাবে প্রতিষ্ঠিত , স্বাবলম্বী , সরকারি বা বেসরকারি মোটা মাইনের চাকুরে পাত্রীরা তো বটেই , এমনকি যারা উপার্জন করেন না তাঁরাও অনেকে চান পাত্রের আয় যেন ছয় লাখ থেকে শুরু হয় , তারপর যত ওঠা যায় , ততটাই উঠতে চান প্রায় সকলে । ছয় লাখ ! মানে, মাসে নগদে পঞ্চাশ হাজার ! পশ্চিমবঙ্গের ক'টা লোক রোজগার করে মামণি ? পয়সা কী গাছে ফলে ? নাকি, অনেক ছেলেরা যেমন তোমাদের শুধু সন্তান উৎপাদনের যন্ত্র মনে করে , পাল্টা তোমরাও তেমনি ছেলেদের কলুর বলদ নয়ত টাকা উৎপাদনের যন্ত্র মনে করো ? সংসারে টাকা উৎপাদন আর ব্যয় ছাড়া তাদের আর কোনও জীবন নেই ? থাকতেও নেই ? টাকার ট্যাঁকে ছেলেরা পোরা , খুচরো ছেলে খরচ হয় ? 

                   অমিতাভ সঠিক পাত্রীর সন্ধানে আছে । আপনাদের জানাশোনা কেউ থাকলে জানাবেন , নইলে সে পাড়ার ল্যাম্পপোস্টে পাত্রীর জন্য বিজ্ঞাপন দেবে ! কী বললেন ? অবাস্তব ? আজ্ঞে না , এমনটাও দেখা যাচ্ছে অতিমারির বাজারে । একসময় আপনাদের সামনে সচিত্র প্রমাণ উপস্থিত করা যাবে 'খন ! 

https://sankhamanigoswami.blogspot.com/2020/10/pub-9792609886530610_65.html 



পাত্রী চাই সরাসরি 2021

হিন্দু পাত্র চাই সরাসরি

পাত্র পাত্রী চাই আনন্দবাজার






হিন্দু পাত্রী চাই 2020

পাত্র চাই বিজ্ঞাপন 2020

        

হঠাৎ বিয়ে ভালোবাসার গল্প

রোমান্টিক প্রেমের গল্প ১৮+

রোমান্টিক ভালোবাসার গল্প

বিয়ের পর ভালোবাসার গল্প






রোমান্টিক গল্পের লিংক

খুনসুটি ভালবাসার গল্প

প্রতিশোধের বিয়ে

রোমান্টিক স্ট্যাটাস       


ভালোবাসার গল্প ২০২০

আবেগি ভালোবাসার গল্প

ভালোবাসার গল্প কাহিনী

খুব কষ্টের ভালোবাসার গল্প





ভালোবাসার গল্প 2020

রোমান্টিক ভালোবাসার গল্প

ভালোবাসার গল্প ছবি

বিয়ের পর ভালোবাসার গল্প


আপনারা কী রাজযোটক!



কেরালার বৃহত্তম জিপলাইন adventure sport

  ### কেরালার বৃহত্তম জিপলাইন ভারতের দক্ষিণাঞ্চলের রাজ্য কেরালা, যার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও বৈচিত্র্যময় পরিবেশ পর্যটকদের আকর্ষণ করে, সেখানে এ...