রবিবার, ৪ অক্টোবর, ২০২০

মানবিক । মানবতার কিছু ছবি

 

শিয়ালদার তিন নম্বর প্ল্যাটফর্মে ঠাই নেওয়া বৃদ্ধার ডান পায়ের পাতার ক্ষতস্থানে পচন ধরেছে বলে মনে করছেন নেদারল্যান্ডস থেকে আগত যুবক আব্রাহাম যথাসাধ্য শুশ্রূষাও করেছেন পরামর্শ দিয়েছেন নিকটবর্তী কোনও হাসপাতালে যাওয়ার তাঁর অবশ্য জানার কথা নয় , এই স্টেশন থেকেই বেরিয়ে আছে রেলের বি আর সিং হাসপাতাল এবং নীল রতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ২১ - ০১- ২০২০ সকাল 'টা কুড়িতে মোবাইলে তোলা ছবি স্টেশন চত্বরে ছবি তোলা আইনত নিষিদ্ধ তৎসত্ত্বেও সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে এমন মানবিক , মর্মস্পর্শী ছবি সকলের সামনে তুলে ধরা উচিত বলে মনে হল  

www.httpssankhamanigoswami.xyz

www.httpssankhamanigoswami.xyz

www.httpssankhamanigoswami.xyz





মানবিকতা ছবি

মানবতার ছবি

বিশ্ব মানবতার ছবি


মানবতার কিছু ছবি






মন

 

মন



বাড়িতে আগাছা পরিষ্কার করত নেপাল ভাই , বাড়ি তালমা মোড়ের কাছে দুপুরবেলার খাওয়াটা আমাদের বাড়িতেই সারত মা যা- দিন , ভাতের সঙ্গে নেপাল ভাইয়ের দু'টো জিনিস লাগবেই ---- এক খাবলা নুন আর গোটা তিনেক ঝাল লঙ্কা , যে দু'টোর কোনওটাই আমাদের খাওয়া অভ্যেস নেই আমি অবাক হতাম , জিজ্ঞেস করতাম এগুলো এত বেশি খাও কেন ? দীর্ঘদিন লেগে থাকার পরে একদিন নেপাল ভাই রহস্যটা ফাঁস করল ---- "খাবারে স্বাদ পাইনা বলে " পরের প্রশ্ন , "কেন পাও না ?" নেপাল ভাই আবার চুপ এবার মা-কে জিজ্ঞেস করলাম মা বললেন , "নিত্যনতুন পদ খাওয়ার ক্ষমতা ওদের নেই বাবা তাই এভাবে খাওয়া অভ্যেস হয়ে গেছে " জীবনের পাঠ নেওয়ার শুরুর সময় সেটা কথাটা মনে ধরেছিল



বছর দু'তিন আগের কথা সন্ধেবেলা পাশ দিয়ে গান করতে করতে খালি রিক্সা নিয়ে যাচ্ছেন একজন নচিকেতার 'নীলাঞ্জনা' দায়িত্ব নিয়ে বলছি, ভদ্রলোক কোনও গানের অনুষ্ঠানে গেলে বিরাট সুনাম কুড়োবেন রাস্তাতেই ওনাকে দাঁড় করালাম গান শুনলাম প্রাণভরে যাওয়ার সময় বলে গেলেন , "আমি শুধু নচিকেতার গান গাই দাদা ওনাকে গান শোনানোর খুব ইচ্ছে আছে " উনি চলে যাওয়ার পরে মনে হল , ইশ , ওনার গান যদি রেকর্ড করে রাখতাম ! ওনার গলা যন্ত্রে ধরে না রাখতে পারি , মনে রেখে দিয়েছি



সেদিন চটি ঠিক করছি স্টেশনের সামনে মুচির সঙ্গে গল্পও চলছে পাশ দিয়ে হুউশ করে একটা রয়াল এনফিল্ড গেল স্বভাব অনুযায়ী আমি যথারীতি রাজকীয় যানটির চরিত্র বিশ্লেষণ শুরু করলাম একটা তথ্যে ভুল ধরিয়ে দিয়ে মুচি বললেন , দেশে তাঁর ছেলের কাছেও জিনিস একটা আছে ছেলে ব্যবসা করে ব্যবসায়িক যোগাযোগ কাজে লাগিয়ে দিল্লি থেকে আনিয়েছে , দাম কমও পড়েছে হাজার চারেক আমি মন্ত্রমুগ্ধের মত তিরিশ টাকা এগিয়ে দিতেই বললেন ---- "আমি দুই পাটি সেলাই করার জন্য টাকাটা চেয়েছিলাম দিন , ওই পাটিটা দিন ! এত অন্যমনস্ক হলে চলবে বাবু ?"



বুঝতে শুরু করেছি , জীবনদার কাছে নাড়া বাঁধলে অনেক কিছু শেখা যায়

https://sankhamanigoswami.blogspot.com/2020/10/pub-9792609886530610_50.html


বাস্তব জীবনের কিছু গল্প

ভুল থেকে শিক্ষা


জীবন সুন্দর উক্তি


জীবন ও বাস্তবতা


জীবনের কিছু ভুল








 

ব্যথা । স্কুল জীবনের প্রথম প্রেমের গল্প

 

১৯৯৮ সাল ব্যথায় আধমরা অবস্থা বন্ধুর দিদি সেটা জানতেন আমাদের একটু নিভৃতে থাকার সুযোগ করে দিয়ে, বন্ধুকে নিয়ে কী একটা অজুহাতে বাড়ি থেকে বেরিয়ে গেলেন গোটা বাড়িতে তখন শুধুমাত্র দু'টি প্রাণী তাঁর হাতে একটা ছবির অ্যালবাম ছিল দেখা হয়ে যাওয়ার পর সেটা নিঃশব্দে আমার হাতে চালান করলেন আমার অনেক কথা বলার ছিল , কিন্তু বলতে পারলাম না ছবি দেখতে থাকলাম কিছুক্ষণ পর, সব বুঝে গেছি টাইপের হাসি হেসে তিনি বললেন -- "শঙ্খ , এই নিয়ে তিনবার হল দেখলি অ্যালবামটা !" আমি চেষ্টা করে হেসে রুমাল দিয়ে কপালটা মুছলাম শুধু । 'অন্তহীন' ছবিটা দেখেছেন ? এক জায়গায় রাহুল বোস আর রাধিকা আপ্তেকে অন্য ঘরে পাঠিয়ে , অপর্ণা সেনকে রাহুল অভিনীত চরিত্রটি সম্বন্ধে বলেন --- "আরে ধুর , ওর বাবা সি পি আই করত ! ও কিস্যু করতে পারবেনা !" --- আমার অবস্থাটাও একেবারে ওরকম ছিল ! 



পুরনো গিটার নিয়ে বসে কোথায় যেন অঞ্জন দত্ত গাইছেন ---

আমার আকাশকুসুম স্বপ্ন দেখার খেলা থামেনি , শুধু তুমি চলে যাবে , আমি স্বপ্নেও ভাবিনি...

https://sankhamanigoswami.blogspot.com/2020/10/pub-9792609886530610_22.html







প্রথম প্রেমের গল্প


প্রথম দেখা প্রেমের গল্প

প্রথম প্রেমের কষ্টের গল্প

স্কুল জীবনের প্রথম প্রেমের গল্প


বর্ষার তিস্তা

            “আনবে কটকি জুতো , মটকিতে ঘি এনো , জলপাইগুড়ি থেকে এনো কই জিয়োনো । “ এই ভরা বর্ষায় পাহাড়ি নদীতে মাছ ধরা দেখা ক্ষেত্র বিশেষে অবিস্মরণীয় হয়ে ওঠে । যাঁরা প্রাচীন বৈকুণ্ঠপুর , অধুনা জলপাইগুড়ি শহরে থাকেন বা যাতায়াত করেন তাঁরা নিশ্চয়ই এমন দৃশ্য দেখে থাকবেন । বোধহয় সময়টা এই সহস্রাব্দের শুরুর দিকে । শহরের কাছে তিস্তা ব্রিজে মাঝেমধ্যেই চলে যেতাম সাইকেল নিয়ে । আমাদের বাড়ি ছিল জলপাইগুড়ি শহরে , শিল্পসমিতি পাড়ায় । সেখান থেকে তিস্তা ব্রিজ মেরেকেটে দু’-তিন কিমি হবে । বর্ষাকালে এমনই একদিন দুর্ধর্ষ এক দৃশ্য দেখলাম । একেবারে লাইভ স্টান্টবাজি ! রুটিরুজির তাগিদে মানুষকে অনেকসময় এমন সব চূড়ান্ত বিপজ্জনক কাজ করতে হয় যা নিজের চোখে না দেখলে বিশ্বাস করা কঠিন । ব্রিজের ওপারে ময়নাগুড়ি , এপারে জলপাইগুড়ি । ব্রিজের মাঝ বরাবর, জলপাইগুড়ি শহরের দিকটাতে দেখি , ব্রিজের রেলিঙয়ের সাথে তিনটে কাছি বাঁধা শক্ত করে । কাছিগুলো নেমে গেছে বর্ষায় উত্তাল পাহাড়ি নদীটিতে । সামনে গিয়ে ফুটপাতে সাইকেল স্ট্যান্ড করে , নীচে তাকিয়ে যা দেখলাম , তাতে বুকের রক্ত হিম হয়ে গেল ! দেখি দু’টো কাছি একটা কলা গাছের ভেলার দু’প্রান্তে বাঁধা । আরেকটা কাছি একটা লোকের কোমরে বাঁধা । লোকটা ওই অবস্থায় খরস্রোতা তিস্তা নদীতে , ওই ভেলার উপরে দাঁড়িয়ে জাল ছুঁড়ে মাছ ধরছে । সহজেই অনুমেয়, কী অকল্পনীয় শারীরিক ভারসাম্য বজায় রাখা দরকার কাজটা করতে । যা মাছ উঠছে তা একটা লোহার বালতিতে ভরে, নীচ থেকে বালতিতে বাঁধা দড়ি ধরে একটু নাড়াচ্ছে আর উপরে তাকাচ্ছে লোকটা । ওটাই সঙ্কেত । সঙ্গে সঙ্গে ব্রিজের ওপর দাঁড়ানো একটা বুড়ো মত লোক, কুয়োর বালতি তোলার কায়দায় সেটা টেনে তুলছে ব্রিজের উপরে । তারপর একটা বিরাট জল ভরা অ্যালুমিনিয়ামের হাঁড়ির মধ্যে মাছগুলো ঢেলে দিচ্ছে । নীচে স্রোতের গর্জন আর উপরে হাঁড়ির ভেতরে মাছের খলবল করার শব্দে বেশ একটা বর্ষার সিম্ফনি তৈরি হচ্ছে । আমাদের পাতে যে বোরলি বা সোনালি বোয়াল পড়ে , তা ধরতে যে এভাবে জীবন বাজি রাখতে হয় , তা আমি আগে জানতাম না । বন্ধুদের কাছে শুনি, এখনও এভাবে মাছ ধরা হয় তিস্তায় । যে লোকটা ভেলার উপর দাঁড়িয়ে ছিল, তাঁকে কিন্তু একবারও বেসামাল হতে দেখিনি সেদিন । আলাপ করে জেনেছিলাম ওই যুবক, বৃদ্ধের ছেলে । দু’- তিন জন আগ্রহী ক্রেতা সঙ্গে সঙ্গে মাছ কিনে নিচ্ছেন চড়া দাম দিয়ে , এ দৃশ্যও একইসাথে দেখেছি । সে তো গেল মাছের দাম । জীবনের ঝুঁকির হিসেব কীভাবে হয়, কে জানে ।     

              আরেকবার, আমি আর এক বন্ধু তিস্তা ব্রিজের ধারে স্পারের ওপর বসে আড্ডা দিচ্ছি বিকেলের দিকে । সামনে দিয়ে বড় বড় গাছের গুঁড়ি , ডাল , কচুরিপানা ভেসে যাচ্ছে অবিরত । সব কিছুরই গায়ে পলি লেপটে আছে । আর এই পলি মিশ্রিত ঠাণ্ডা জলের খুব মিষ্টি একটা গন্ধে ম ম করছে চারদিক । সাথে ভেজা বাতাস । হঠাৎ দেখি দুরন্ত তিস্তায় একটা ছাই রঙা পুরুষের দেহ মুখ ডোবা অবস্থায় হুউউউশ করে ভেসে চলে গেল ঠিক আমাদের সামনে দিয়ে । গায়ে জামা – প্যান্ট লেপটে আছে পলিমাখা অবস্থায় । কী করণীয়, তা-ই ভেবে আচমকা খুব উত্তেজিত হয়ে উঠেছিলাম । বন্ধুটি সেদিন কোনওমতে আমাকে নিরস্ত করতে পেরেছিল ।

               মাধ্যমিকের পরে আরেক বর্ষায় এক বিকেলে আমরা তিন বন্ধু মিলে শহরেই ডি. এফ. ও. – র বাংলোর উল্টোদিকের তিস্তার স্পারে বসে আড্ডা মারছি । তখন বর্ষার সবে শুরু । নদী ফুলে – ফেঁপে ওঠেনি । অনেকটা চর তখনও জেগে আছে নদীর বুকে । স্পারের কাছে হাঁটু ডোবা জল । সেটা পেরিয়ে চরে পৌঁছতে হবে । ততদিনে নদীর বুকে কুয়োর মত গর্তের কথা শুনেছি , চোরাবালির কথা শুনেছি , কিন্তু দেখিনি । কী খেয়াল হল , আমরা হঠাৎ ঠিক করলাম , সামনের ওই চরটাতে গিয়ে খানিক নাচানাচি করে আসব ! শুভস্য শীঘ্রম ভেবে নেমে পড়লাম । চটি হাতে নিয়ে , হাঁটু পর্যন্ত প্যান্ট তুলে, অল্প স্রোত উপেক্ষা করে পৌঁছে গেলাম চরে । পূর্বপরিকল্পনামাফিক সব হল । সূর্য ঢলতে শুরু করতেই খেয়াল হল , ফিরতে হবে । এই প্রথম মনে হল চরটা যেন একটু ছোট হয়ে এসেছে । উপেক্ষা করে জলে নামলাম । কনকনে ঠাণ্ডা জলে শরীরে শিহরণ খেলে গেল । জলের তাপমাত্রা পাল্টে যাওয়াতে বিপদের আঁচ পেলাম । কিন্তু, আমরা যে নতুন যৌবনের দূত ! কাজেই সেটাকেও থোড়াই কেয়ার করে এগোলাম । একটু দূরে যাওয়ার পরেই বুঝলাম আস্তে আস্তে জলস্তর বাড়ছে । হাঁটু পেরিয়ে জল এখন কোমর সমান । কোমরের ওপরে, স্রোতের নদীতে, জল উঠে গেলে আর ভারসাম্য বজায় রাখা যায় না , কে যেন বলেছিল , মনে পড়ল । স্পার আর খুব বেশি দূরে নয় । আমাদের সাইকেলগুলোও আবছা দেখা যাচ্ছে স্পারের মাথায় । কিন্তু ওই অব্দি পৌঁছতে পারব তো ? বাড়ি ফেরা হবে তো ! হৃৎপিণ্ড তখন গলার কাছে উঠে এসেছে , বলাই বাহুল্য ! কোমর ছাপিয়ে জল উঠছে বুকের দিকে । এক বন্ধু কাঠ কাঠ গলায় বলল – “তিন জনে হাত ধরে এগোলে , চট করে কেউ ভেসে যাব না ।“ তা-ই করা হল । মনে মনে তখন ইষ্টনাম জপ করছি ! হঠাৎ মিরাকল ! জল বাড়া থামল । বরাতজোরে সে যাত্রায় আমরা প্রাণে বেঁচে গেলাম । পরদিন কাগজে দেখলাম , পাহাড়ের দিকে ভারী বৃষ্টি হওয়ার জন্য , জলস্তর অতিরিক্ত বেড়ে যাওয়ায় , গজলডোবায় তিস্তা ব্যারেজ থেকে জল ছাড়া হয়েছিল । হঠকারিতার পরিণাম প্রাণঘাতী হতে পারত সেদিন । হয়নি যে, সে আমাদের সৌভাগ্য । তবে , সেদিন স্পারে উঠে বোল্ডারের উপর ভেজা শরীরে চিৎপাত হয়ে শুয়ে , কিছুক্ষণ পর, আমরা তিন বন্ধু পরস্পরের দিকে তাকিয়ে অট্টহাসিতে ফেটে পড়েছিলাম , মনে আছে !


https://sankhamanigoswami.blogspot.com/2020/10/pub-

9792609886530610_7.html

 




Teesta River

River in Asia


ফিচার প্রতিবেদন


ফিচার সংবাদ

ফিচার নিউজ


ফিচার পাতা

ফিচার লেখা


news feature article


news feature story


news feature example

অন্য রূপে

              বিখ্যাত মানুষদের একটু অন্যভাবে আবিষ্কারের মধ্যে একটা আলাদা মজা থাকে ২০০৫ সাল এক প্রৌঢ় প্রতিদিন শিয়ালদা দক্ষিণ শাখায় বিকেল সাড়ে পাঁচটা নাগাদ আমাদের সঙ্গে লোকাল ট্রেনে ওঠেন , একদম ফুটবোর্ডের ওপর দাঁড়ান ট্রেন চলতে শুরু করলে শুধু দরজার মাঝখানের হাতলটা বন্ধুর গলার মত জড়িয়ে ধরেন তাঁর অর্ধেক শরীর বেরিয়ে থাকে ট্রেনের বাইরে , মোবাইলে মুহুর্মুহু ফোন আসে , ঝুলতে ঝুলতেই, বুক পকেট থেকে বাঁ হাত দিয়ে ফোন ধরেন এবং ঢাকুরিয়া আসলে নেমে যান প্রতিদিন কলকাতায় লোকাল ট্রেনের দরজায় এভাবে ঝুলে যাতায়াতের প্রবণতা বয়স্ক মানুষদের ক্ষেত্রে একটু কম দেখা যায় , তাই ওনার এই তরুণ মনটাকে , মনে মনে বাহবা দিতাম আমি সাধারণত ট্রেনের শেষ কামরায় উঠতাম , উনিও তাই একদিন আমার কাছ থেকে জলও চেয়ে খেলেন টুকটাক কথাবার্তা হত তারপর একদিন টিভি দেখতে বসে দেখি, এক খবরের চ্যানেলে আলোচকদের প্যানেলে উনি বসে ! এই পুজোর মরসুমেই সঞ্চালক দর্শকদের সাথে পরিচয় করিয়ে দিয়ে ভদ্রলোকের নাম বললেন --- বিশিষ্ট পুরাণবিদ নৃসিংহপ্রসাদ ভাদুড়ী আমি !

               মানে, এত বড় পণ্ডিত মানুষদের মধ্যে একটু রাশভারী ব্যাপার থাকে , কিন্তু আমরা যে দিনের পর দিন নিজের চোখে দেখেছি মানুষটা কী রোমাঞ্চপ্রিয় , মানুষটা কতটা ঝুঁকি নিতে ভালবাসেন , রোজ । এই ধরণের মানুষেরা সাধারণত অন্যদের ট্রেনের ফুটবোর্ডে দাঁড়াতে বারণ করবেন , এবং নিজে কক্ষনও দাঁড়াবেন না , এঁদের কাছে যেতে মানুষের ভয় লাগবে , --- এটাই স্বাভাবিক , এই ছবিটাই পরিচিত । নৃসিংহপ্রসাদ ভাদুড়ী তাঁদের মধ্যে উজ্জ্বল ব্যতিক্রম ।  

https://sankhamanigoswami.blogspot.com/2020/10/pub-9792609886530610_7.html


courtesy : wikipedia.org


Nrisingha Prasad Bhaduri

Indian historian


https://g.co/kgs/o9PGh9


নৃসিংহপ্রসাদ ভাদুড়ী

নৃসিংহপ্রসাদ ভাদুড়ী বই

নৃসিংহপ্রসাদ ভাদুড়ী মহাভারত


পানিহাটির চিড়া উৎসব



সম্প্রতি , বি জে পি নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয় জানিয়েছেন  যে , খাদ্যাভ্যাসে পোহা বা চিঁড়ে দেখে বাংলাদেশী অনুপ্রবেশকারী চিনে ফেলেছেন তিনি । বঙ্গের জাতীয় ইতিহাস সাধারণ মানুষের খুব প্রিয় এই খাদ্যটিকে কিন্তু কখনও হতশ্রদ্ধা করেনি । বরং এর সাথে জড়িয়ে আছে বৈষ্ণবদের প্রিয় বাৎসরিক পার্বণ । ১৫১৬ সালের(১৪৩৮ শকাব্দ) সেই দিনটি ছিল জ্যৈষ্ঠ মাসের শুক্ল ত্রয়োদশী তিথি । গঙ্গা নদীপথে সেদিনের পেনেটি এবং আজকের সোদপুর বা পানিহাটিতে এসে নদীর ধারেই একটি বটগাছের তলায় বসেছেন চৈতন্যদেবের অন্যতম সহচর নিত্যানন্দ । সেই খবর পেয়ে ছুটে এলেন সপ্তগ্রামের রাজকুমার রঘুনাথ দাস । আবেগে বিহ্বল হয়ে পড়লেন তাঁর সামনে । বারবার অধ্যাত্মবোধের অভাবের কথা বলে নিজেকে হীন প্রতিপন্ন করতে থাকলেন । রঘুনাথকে নিবৃত্ত করতে নিত্যানন্দ তাঁকে এক মধুর দণ্ড দিলেন । নির্দেশ দিলেন উপস্থিত অগণিত ভক্তকে চিঁড়ে – দই খাওয়াতে । গুরুর আদেশ শিরোধার্য করে রঘুনাথের উদ্যোগে এক এলাহি আয়োজন হল । ঘাটে স্থান সঙ্কুলান না হওয়ায় অনেক ভক্ত প্রসাদ হাতে নেমে পড়লেন গঙ্গা নদীতেই । সমাজের সমস্ত শ্রেণির মানুষের এই স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ দেখে পরম তৃপ্ত নিত্যানন্দ রঘুনাথ দাসকে নির্দেশ দিলেন এই উৎসব চালিয়ে যেতে । সেই শুরু । তারপর পাঁচশো বছরেরও বেশি সময় ধরে , প্রতি বছর হয়ে চলেছে ‘পানিহাটি চিঁড়া উৎসব’ বা ‘দণ্ড মহোৎসব’ । বৈষ্ণবেরা বিশ্বাস করেন , স্বয়ং চৈতন্যদেব যোগ দিয়েছিলেন এই উৎসবে । কথাপ্রসঙ্গে চৈতন্যদেব রঘুনাথকে ‘মর্কট বৈরাগী’ হতে নিষেধ করেছিলেন । নিত্যানন্দ ও চৈতন্যদেব পরস্পরকে চিঁড়ে – দই মাখা দলা খাইয়ে দিয়েছিলেন । এই উৎসব হয় প্রতিবছর জুন মাসে মহোৎসবতলা ঘাটে । প্রসাদের উপকরণ নির্বাচনের বিষয়টিও সুচিন্তিতএই উৎসব গ্রীষ্মকালে হয় । তাই যাতে সবার পেট ঠাণ্ডা থাকে , সে কথা মনে রেখেই যে এই দু’টি সহজলভ্য খাদ্যবস্তু বেছে নেওয়া হয়েছিল তা বুঝতে অসুবিধে হয় না । আর কথাতেই তো আছে , ভুঁড়ি ঠাণ্ডা , তো মুড়ি(মাথা) ঠাণ্ডা ! প্রথম চিড়া – দই উৎসবের মতই প্রতিবছর এই দিনে দু’টি মালসা ভোগ হয় । একটিতে থাকে কলা ও মিষ্টি দই দিয়ে মাখা চিঁড়ে । অন্যটিতে ক্ষীর , চাঁপা কলা , কর্পূর  ও ঘন দুধ দিয়ে মাখা চিঁড়ে । এর ওপর দিয়ে সাজিয়ে দেওয়া হয় সন্দেশ , মালপোয়া , কালো জাম এবং গুঞ্জা ফুলের মালা । কারণ চিঁড়ে – দই উৎসবের দিন চৈতন্যদেব , রঘুনাথ দাসের গলায় নিজের হাতে গুঞ্জা ফুলের মালা পরিয়ে দিয়েছিলেন বলে জনশ্রুতি । সনাতন গোস্বামীর পরলোক গমনের পর থেকে রঘুনাথ শুধু ঘোল খেয়ে থাকতেন , রূপ গোস্বামী গত হওয়ার পর তা – ও ছেড়ে দিয়ে প্রায়োপবেশনের পথ বেছে নেন । এই আত্মত্যাগ মনে রেখে উৎসবে কলা পাতার পাত্রে ঘোল নিবেদন করা হয় । ভোগের শেষ পাতে থাকে টক লেবু , মধু , আদা এবং মৌরি । ‘চৈতন্য চরিতামৃত’ – তে মহাপ্রভুর অন্ত্যলীলা বর্ণনায় ষষ্ঠ পরিচ্ছেদে আছে ---   

                     “শুনি প্রভু কহে , চোরা দিলি দরশন ।

                      আয় আয় আজি তোর করিব দণ্ডন ।। “

 

সে দণ্ড ছিল সমবেত ভক্তদের মধ্যে চিঁড়ে – দই ফলাহার বিতরণ । সকলে ওই দিন শ্রীচৈতন্যের মহিমাকীর্তন করেছিলেন । কৃষ্ণদাস কবিরাজ লিখেছেন ---

                       “এই তো কহিল নিত্যানন্দের বিহার ।

                       চিড়া দধি মহোৎসব খ্যাত নাম যার ।।“

এছাড়াও , ‘চৈতন্য ভাগবত’ , ‘গেজেটিয়ার অব ইন্ডিয়া – ওয়েস্ট বেঙ্গল – টুয়েন্টি ফোর পরগনাজ’ , জয়ানন্দ বিরচিত ‘চৈতন্যমঙ্গল’ প্রভৃতি আকর গ্রন্থে এই উৎসবের সবিস্তার উল্লেখ পাওয়া যায় ।

শ্রীরামকৃষ্ণ পরমহংস , স্বামী বিবেকানন্দ , গিরীশ চন্দ্র ঘোষ , শ্রী মহেন্দ্রনাথ গুপ্ত (শ্রীম) প্রমুখ অনুগামীদের নিয়ে নিয়মিত এই উৎসবে অংশগ্রহণ করতেন । তিনি শেষবার এসেছিলেন ১৮৮৫ সালে । পরের বছর তিনি পরলোকগত হন । ‘রামকৃষ্ণ কথামৃত’ এবং ‘রামকৃষ্ণ লীলাপ্রসঙ্গ’ – এ এই ইতিহাসের সাক্ষ্য পাওয়া যায় ।

১৯৩৯ সালে এই ঘাটে এসেছেন মোহনদাস করমচন্দ গান্ধীও । সেই ছবি আছে এই ঘাটে । ছবিতে তাঁর পিছনে বিধানচন্দ্র রায় এবং শরৎচন্দ্র পণ্ডিত (দাদাঠাকুর)- কে দেখা যায় ।

এই ঘাট সংলগ্ন একটি  মন্দিরে চৈতন্যদেবের পদচিহ্ন সংরক্ষিত আছে ।

এককথায়, হিন্দুদের অন্যতম প্রিয় এই তীর্থক্ষেত্রের সঙ্গে জড়িয়ে আছে চিঁড়ে নামক খাদ্যবস্তুটি । এই ইতিহাস মনে রাখলে উগ্র হিন্দুত্বের গড্ডলিকা প্রবাহে গা ভাসাবার আর কোনও উপায় থাকে না ।

এই ঘাটটি পানিহাটি – কোন্নগর ফেরিঘাটের ঠিক পাশে । বি টি রোড ধরে আসলে পিয়ারলেস নগরের কাছে । অটো বা টোটোতে যেতে মিনিট দশেক সময় লাগে । সোদপুর স্টেশন থেকেও এই ঘাটে অটো যাতায়াত করে ।

                                                        ( ঋণ ঃ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ও পানিহাটি পুরসভা ) 

https://sankhamanigoswami.blogspot.com/2020/10/pub-9792609886530610_89.html




https://images.app.goo.gl/4ZhA3AVdrJyKmAVa9
https://images.app.goo.gl/M2M9W1nw6kJMQhjB6


https://images.app.goo.gl/jnRzDTwHW37r1Lm28



পানিহাটি দন্ড মহোৎসব ২০২১



পানিহাটি চিড়া মহোৎসব

Panihati festival

Dahi chida

Panihati Chida dahi Utsava 2021

Panihati festival pastime

Panihati Chida dahi utsava

Panihati Cida dahi utsava

Panihati danda Mahotsav


ফিচার প্রতিবেদন


ফিচার সংবাদ

ফিচার নিউজ


ফিচার পাতা

ফিচার লেখা


news feature article


news feature story


news feature example



কেরালার বৃহত্তম জিপলাইন adventure sport

  ### কেরালার বৃহত্তম জিপলাইন ভারতের দক্ষিণাঞ্চলের রাজ্য কেরালা, যার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও বৈচিত্র্যময় পরিবেশ পর্যটকদের আকর্ষণ করে, সেখানে এ...