শনিবার, ১৭ অক্টোবর, ২০২০

টান

 #টান



বাড়িতে একা যেসব নিঃসঙ্গ - নির্বান্ধব বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের নানান অসহায়তার কথা আমরা প্রতিদিন খবরের কাগজে পড়ি , সুরজিতবাবু তেমনই একজন । উনি আর ওনার স্ত্রী ছাড়া বাড়িতে তৃতীয় কোনও প্রাণী নেই । সুরজিতবাবুর ছেলে অনেকদিন থেকে গুজরাতের স্থায়ী বাসিন্দা , কালেভদ্রে কলকাতায় আসে । এই বয়সেও সুরজিতবাবুর আত্মসম্মানবোধ প্রবল , কেউ আলগা সহানুভূতি দেখাতে আসলে বিরক্ত হন । কেউ ছেলের নামে কটু কথা বললেও তাঁর গায়ে লাগে , যদিও নিজেই বুঝতে পারেন ছেলের কাছে তাঁর বাবা-মায়ের গুরুত্ব কমে গেছে অনেকখানি । সে এখন ব্যস্ত মানুষ , কাজের মানুষ । কিন্তু ব্যস্ততা তো একদিন সুরজিতবাবুর জীবনেও ছিল , ব্যস্ততা সামলেও সংসারের প্রতি কর্তব্যে তিনি তো কোনও অবহেলা করেননি । এখন কী মানুষের জীবনে ব্যস্ততা অনেকটা বেড়ে গেছে ? হবেও বা । এইসব সাত-পাঁচ ভাবতে ভাবতেই বারান্দায় বসে সকালের চা-টা খাচ্ছিলেন দু'জনে । রাস্তা দিয়ে পরিচিত মানুষেরা যায় , কুশল সংবাদ বিনিময় হয় , ভালই লাগে । আর সুরজিতবাবুর স্ত্রী অপরাজিতা লক্ষ্য রাখেন সবজিওয়ালাদের ওপর । বাড়িতে বাজার করে রান্না করার লোক আছে , তবুও টুকটাক আনাজপাতি কেনেন , কোনও দরকার ছাড়াই রান্না করেন , নিঃসঙ্গতা কাটাতেই বোধহয় । এ পাড়ায় একটা মুসলিম সব্জিওয়ালা আসে , নাম আলি । ওর কাছে নানা রকমের তাজা শাক-সবজি সস্তায় পেয়ে যায় সবাই , তাই এই পাড়ায় ওর কদর বেশি । আলি সামনের বাড়ির সামনে দাঁড়িয়েছে , এরপর অপরাজিতার কাছে আসবে । হঠাৎ সুরজিত-অপরাজিতা দু'জনেই দেখলেন মোবাইলে একটা ফোন আসার পরেই আলি শশব্যস্ত হয়ে উঠল । নিজের ভ্যান , ভ্যানে রাখা সবজি ফেলে বড় রাস্তার দিকে দৌড়ল , আক্ষরিক অর্থেই । তারপর দেখলেন সামনের বাড়ির বিপুলবাবু , তাঁর স্ত্রী আর মেয়ে মিলে সব আনাজ নিজেদের বাড়ির ভিতর নিয়ে গেলেন আর ভ্যানটা লোহার গেটের সাথে একটা শিকল দিয়ে তালা দিয়ে রাখলেন , যাতে চুরি না হয়ে যায় কিছু । অপরাজিতা স্বামীকে উদ্দেশ্য করে বললেন
--- ব্যাপারটা কী হল কিছু বুঝলে ?
--- কোন ব্যাপার ? প্রশ্নটা বুঝেও স্ত্রীর সাথে একটু রসিকতা করতে ইচ্ছে হল সুরজিতবাবুর !
--- আলি আচমকা কোথায় দৌড়ে গেল ?
--- ওর বউটা পোয়াতি , পরশু বলছিল । সম্ভবত হাসপাতাল থেকে কেউ ফোন করেছিল । ভাল খবরই বোধহয় , নইলে সব ফেলে ওরকম পড়িমরি করে ছুটত না । আয়ুষ্মান জন্মানোর দিনটা মনে নেই ? অফিসে যেতে গিয়েও মাঝরাস্তা থেকে ফিরে এসেছিলাম । তোমার বড়দার কাছে ওর জন্মের খবরটা শুনে আনন্দে-উত্তেজনায় আমার হাত-পা কাঁপছিল । কী করব ভেবে উঠতে পারছিলাম না । সেই ছেলে এখন এত ব্যস্ত, যে ফোনে বাপের খবর নেওয়ার সময় পায় না ।
--- এই সক্কালবেলায় আমার ছেলেটাকে দুষো না তো । কাল বরং বিপুলবাবুর সঙ্গে কথা বলে নিশ্চিত হয়ে , তুমি একবাক্স সন্দেশ এনে দিয়ো , আলিকে দেবো । অন্যমনস্ক হওয়ার ভান করে অন্যদিকে তাকিয়ে কথাটা বললেন অপরাজিতা । সকালবেলার নরম আলোয় তখন তাঁর দু'চোখ ভরা টলটলে জল চিকচিক করছে ।






শুক্রবার, ১৬ অক্টোবর, ২০২০

সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়

 সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়কে বেশ কয়েকবার খুব কাছ থেকে দেখার সৌভাগ্য হয়েছে । জলপাইগুড়িতে রবীন্দ্র ভবনে উনি এবং রোকেয়া রায় বেশ কয়েকবার কবিতা পড়তে এসেছেন , আর কলকাতায় তো দেখেছিই । ফেলুদার সম্পর্কে বলতে হলে , প্রথমেই বলতে হবে ওঁর গায়ের রঙের কথা । উনি আদতে ভীষণ ফর্সা মানুষ । দ্বিতীয়ত হাঁটার সময় হাতের চেটো থাকে শরীরের সঙ্গে সমান্তরালভাবে , আমাদের মত তেরচা করে নয় । তৃতীয় উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য ওঁর শারীরিক উচ্চতা । ছোটবেলা থেকে তিনজনের উচ্চতার গল্প পড়ে আসছি --- সত্যজিৎ রায় , উত্তমকুমার এবং সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় । উনি নিজেই একাধিক সাক্ষাৎকারে বলেছেন উত্তমকুমারের শারীরিক উচ্চতা ওনার থেকে কিছুটা বেশি ছিল । আর সত্যজিৎ রায়কে তো 'ওরিয়েন্ট লংম্যান' বলা হত ওঁর ব্যতিক্রমী দৈহিক উচ্চতার জন্য । নন্দনের সামনে একবার কায়দা করে ফেলুদার পাশে দাঁড়িয়ে দেখেছি , আমি ওনার কাঁধের কাছে । আমার উচ্চতা ৫' ৬" । এবার বুঝুন কতটা লম্বা । মজার ব্যাপার হল, যে তিনজনকে নিয়ে এতক্ষণ কথা বললাম , উচ্চতা শব্দটি তাঁদের প্রতিভার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য না দেহের ক্ষেত্রে , সেই কথাটা আলাদা করে ব্যাখ্যা করার প্রয়োজন হয় ! এই বিন্দুতে ওঁদের তিনজনের মধ্যে অদ্ভুত মিল ! আরও একটা মজার মিল আছে । পথের পাঁচালিতে অপুর বন্ধুর নাম পুলু । বাস্তবে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের ডাকনামও তাই ! আমার বাবার এক সহকর্মীর ক্লাসমেট ছিলেন ফেলুদা, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় । বাবার সেই সহকর্মী স্বর্গীয় রবীন মিশ্র , আমার বোচন জ্যেঠুর কাছে শুনেছি সৌমিত্রবাবু বাংলা সাম্মানিকের নামকরা ছাত্র ছিলেন । সহপাঠীরা সবাই ধরেই নিয়েছিলেন যে উনি অনিবার্যভাবে অধ্যাপকই হবেন । কিন্তু মানুষ ভাবে এক , হয় আরে এক । এম এ পড়ার সময়তেই উনি অডিশন দিয়ে আকাশবাণীতে ঘোষকের চাকরি পান এবং প্রথাগত পড়াশোনায় ইতি টানেন । এর পরের ইতিহাস কমবেশি আমাদের সকলেরই জানা ।

https://sankhamanigoswami.blogspot.com/2020/10/pub-9792609886530610_44.html




Soumitra Chatterjee

Indian film actor

https://g.co/kgs/TFGm2U


সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের জীবনী


সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের বিখ্যাত উক্তি


soumitra chatterjee

poulami bose


বৃহস্পতিবার, ১৫ অক্টোবর, ২০২০

অচেনা


দূরপাল্লার ট্রেনে চলেছি একটা কাজে । আশপাশে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে বসে বেশ কয়েকজন । আমার ঠিক সামনে বসে এক বৃদ্ধ ও বৃদ্ধা । ওঁদের নিজেদের মধ্যে সাংসারিক কথাবার্তা শুনে বোঝা গেল ওঁরা স্বামী-স্ত্রী । দু'জনেই একটা অন্য প্রজন্মের মানুষ । ভদ্রলোক ধুতি-পাঞ্জাবি পরে । ভদ্রমহিলা শাড়ি পড়েছেন আটপৌরেভাবে , আঁচলে চাবির গোছা , মাথায় ঘোমটা আর বড় করে কপালে সিঁদুরের টিপ । স্বামীকে সম্বোধন করছেন আপনি-আপনি করে । এই প্রজন্মের মানুষেরা এখন ক্রমহ্রাসমান , তাই ওঁদের লক্ষ্য করছি বেশ মন দিয়ে । করোনা-কালে এখনও দূরপাল্লার সব ট্রেন চালু হয়নি , এটা স্পেশ্যাল ট্রেন । করোনা-ভীতিতেই বোধহয় যাত্রীও কম । আমারও নেহাত না গেলেই নয় , নইলে আগ বাড়িয়ে যূপকাষ্ঠে আর কে-ই বা গলা দিতে চায় !
একটু পরে চেকার এলেন । আমার নেটে বুক করা টিকিটের প্রিন্ট আউট দেখালাম । ভোটার কার্ডে একবার চোখ বুলিয়ে চেকার সম্মতিসূচকভাবে মাথা নাড়লেন । এই কুপেতে সবারই টিকিট দেখানো হয়ে গেছে , এবার ওই বয়স্ক মানুষ দু'টির পালা । চেকার বৃদ্ধের দিকে ঘুরে দাঁড়িয়ে বললেন
-- "টিকিট ?"
-- "নেই ।" সপ্রতিভভাবে উত্তর দিলেন বৃদ্ধ ।
--- "আপনার টিকিট ?" চেকার এবার বৃদ্ধার সামনে ।
বৃদ্ধা কী করবেন , কী বলবেন , বুঝতে না পেরে বৃদ্ধের দিকে তাকিয়ে রইলেন ।
--- "আপনি ওনার সঙ্গে আছেন ?" বৃদ্ধাকে আবার জিজ্ঞেস করলেন চেকার । বৃদ্ধা ঘাড় নেড়ে হ্যাঁ বললেন ।
চেকার এবার দু'জনকে ফাইন করে, রসিদ লিখতে লিখতে ওঁদের নাম জিজ্ঞেস করলেন । বৃদ্ধ নিজের নাম বললেন ।
--- "আর ওনার নাম ?" বৃদ্ধার দিকে ইঙ্গিত করে জানতে চাইলেন চেকার ।
--- "জানিনা ।"
--- "মানে ! উনি তো আপনার সঙ্গেই আছেন । আপনার স্ত্রী , তাইতো ?"
---- "না । ওনাকে আমি চিনি না ।"
এই উত্তরে চেকার তো হতভম্ব হলেনই , আমরাও অবাক হয়ে গেলাম । এই কয়েক ঘণ্টার রাস্তা পেরিয়ে এসে, এটুকু সবার কাছে পরিষ্কার যে এঁরা স্বামী-স্ত্রী । আর সেখানে কিনা ভদ্রলোক , ভদ্রমহিলাকে চিনতেই পারছেন না ! এমনটাও হয় !
বাকি যাত্রীদের সাথে কথা বলে নিশ্চিত হওয়ার পর , চেকার ওই সম্পন্ন গৃহস্থটিকে তীব্র ভাষায় তিরস্কার করে বললেন
--- "শুধু টিকিটের দাম দিতে হবে বলে, এই বয়সে এসে সবার সামনে স্ত্রীকে অস্বীকার করলেন ! ছোটরা কী শিখবে ?"
আমাদের মুখে সত্যিই কথা সরছিল না ।


picture courtesy: gettyimages




দুর্গা প্রতিমার চক্ষুদান । FINAL MAKE-UP OF GODDESS DURGA AND HER CHILDR...




durga puja in kolkata,durga puja in kolkata 2021,durga puja in kolkata reaction,durga puja in kolkata 2020,durga puja in kolkata 2019,durga puja in kolkata status,durga puja celebration in kolkata,durga puja crowd in kolkata,biggest durga puja in kolkata,durga puja pandal in kolkata,durga puja aarti in kolkata,durga puja in west bengal,durga puja ban in west bengal,durga puja west bengal festival

বুধবার, ১৪ অক্টোবর, ২০২০

এক ঝাঁক শুঁয়োপোকা বড় নয় , সবই খোকা ! CANKERWORM / CATERPILLAR. VERTICAL ...





"sankhamani goswami",barrackpore,jalpaiguri,জীবনে,বিজ্ঞান,eshona,abp,news,to be,butterfly,caterpillar to,caterpillar,animal,planet,for kids,nature,journaling,for,beginners,biology,letters,lancet,national,geographic,animals,kids,discovery,channel,india,science,journals,elementary,students,group of,caterpillars,moving,netflix,education,life,cankerworm,shuyo,poka,theke,projapoti,steps,watching,tree,gachh,cycle,of,house,garden,জীবন্ত,শুঁয়োপোকা,থেকে,প্রজাপতি,vlog,শিউলি,গাছের,কাণ্ড,এক,ঝাঁক

খাদ্য-বিলাস

 চর্ব্য-চোষ্য-লেহ্য-পেয়

চলুন খাই অপরিমেয়

জিরো ফিগার অসহনীয় 

ওবেসিটি বরং শ্রেয় । 

https://sankhamanigoswami.blogspot.com/2020/10/pub-9792609886530610_78.html






খাদ্য বিলাসিতা নিয়ে কবিতা

বাংলা কবিতা রোমান্টিক

বাংলা কবিতা

বাংলা কবিতা ক্যাপশন

বাংলা কবিতার লাইন



বাংলা কবিতা প্রেমের










সোমবার, ১২ অক্টোবর, ২০২০

হীরের_আংটি_সবার_জন্য

 কলকাতা শহরতলিতে স্পেশ্যাল ই এম ইউ লোকালে জোর করে ওঠা নিয়ে ঝামেলা হচ্ছে । খবর হচ্ছে । বেশিরভাগ ঝামেলার খবরই শিয়ালদহ দক্ষিণ শাখার । যাঁরা নিয়মিত এখন স্পেশ্যাল ট্রেনে যান , তাঁদের সংক্রমণের ভয় , আর এক শ্রেণির মানুষের কর্মস্থলে দেরী হওয়ার ভয় এবং তার চেয়েও বেশি যাতায়াতের খরচ বেড়ে যাওয়ার ভয় । দুই পক্ষই নিরুপায় । আরও বেশি অসহায় বোধহয় রেল । তাঁদের তো শ্যাম রাখি , না কুল রাখি অবস্থা । শৃঙ্খলা বজায় রাখতে অনিচ্ছা সত্ত্বেও নিরুপায় মানুষগুলির উপর লাঠি চালাতে হচ্ছে । যাঁদের উপর লাঠি চলছে , যাঁরা মূলত অবরোধ করছেন , এমনিতে তাঁরা খুব অল্প সংখ্যকই আমাদের পাশে বসেন , বেশিরভাগই বসেন ট্রেনের মেঝেতে । ভুল করে সিটে বসে পড়লে বাবুরা হয় স্পষ্ট করে বলেন , নয়ত এমন মুখভঙ্গি করেন, যে সিটে না বসলেই ভাল হয় । অথচ এই শ্রেণির যাতায়াতের কথা ভেবেই কিন্তু ট্রেনে যাতায়াতের খরচ, এ দেশে মাত্রাতিরিক্ত কম । এই সত্যটাই স্পষ্ট হচ্ছে লোকাল ট্রেনে জোর করে উঠতে যাওয়ার খবরে । এক রসিক পাঠক আনন্দবাজার পত্রিকার দেওয়াল লিখনে লিখেছিলেন --- গরিব লোকের জন্য ন্যানো / বড়লোকেরা চড়ছে কেন ? এই খবরে আমার সেই ছড়াটা মনে পড়ছে । নিশ্চিত ভাবে জানিনা , তবে যারা বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন , অবরোধ করছেন , তাঁদের মনের কথা বোধহয় কতকটা এরকমই । আমার সীমিত অভিজ্ঞতা থেকে কলকাতার লোকাল ট্রেনের যাত্রীদের তিন ভাগে ভাগ করতে পারি --- শিয়ালদা মেন লাইনের যাত্রী , বনগাঁ লাইনের যাত্রী এবং শিয়ালদা দক্ষিণ শাখার যাত্রী । কারওর প্রতি বিন্দুমাত্র অশ্রদ্ধা , অবজ্ঞা প্রকাশ না করেই বলছি , এঁদের মধ্যে সবচেয়ে ভদ্র মেন লাইনের যাত্রীরা । লাইন করে উঠবেন(পারলে) , লাইন করে দাঁড়াবেন , এবং লাইন করে নামবেন, এমনটাতেই এঁরা যাতায়াতে অভস্ত । আর দক্ষিণ শাখার যাত্রীদের মাথায় মূলত দু'টো কথা থাকে -- উঠতে হবে এবং নামতে হবে , তা সে যে করেই হোক । কেউ ভুল বুঝবেন না , এটা ব্যঙ্গোক্তি নয় । যা মনে হয়েছে , তা-ই লিখছি । কারণটা বোধহয় আর্থ-সামাজিক অবস্থান । আমার এই ব্যক্তিগত পর্যবেক্ষণ নিয়ে অনেকের সাথে কথা বলতে গিয়ে দেখেছি , নিজেদের অতীত ভুলে অনেকে উন্নাসিকের মত বলেন --- ওদিকটা তো ছিল মূলত উদ্বাস্তু কলোনি , তাই ওদের এমন বেয়াড়া স্বভাব । আমার মনে হয়না এই ব্যাখ্যা ঠিক । উদ্বাস্তুরা সবদিকেই ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছেন , এভাবে বিশেষ একটি শাখার যাত্রীদের আলাদা করা যায় না । তিনটি শাখার যাত্রীদের আচরণের পার্থক্যের কারণটা বোধহয় মানুষের স্বভাবজনিত । যে স্বভাবের কারণে মানুষ মেট্রো রেলের প্ল্যাটফর্মে পানের পিক ফেলে না , লোকাল ট্রেনের প্ল্যাটফর্মের দেওয়ালে ফেলে । এখন ট্রেনে উঠতে না পেরে বেশিরভাগ অবরোধের খবর দক্ষিণ শাখা থেকেই আসছে বটে , তবে আমার বিশ্বাস সামাজিক কারণেই শুধুমাত্র একদিকে এই সমস্যা আটকে থাকবে না । বরং যত দিন যাবে , দিকে দিকে এই সমস্যা দেখা দেবে । পেট বড় বালাই । শৃঙ্খলা রক্ষার তাগিদ অনেক পরে আসে । ভুঁড়ি ঠাণ্ডা তো মুড়ি ঠাণ্ডা ।

https://sankhamanigoswami.blogspot.com/2020/10/pub-9792609886530610_6.html





ফিচার প্রতিবেদন


ফিচার সংবাদ

ফিচার নিউজ


ফিচার পাতা

ফিচার লেখা


news feature article


news feature story


news feature example



শনিবার, ১০ অক্টোবর, ২০২০

চা ফুল

 

            ট্রিপল টি --- টি , টিম্বার আর টোব্যাকো জলপাইগুড়ি জেলা তথা সমগ্র উত্তরবঙ্গের ব্যবসায়িক সমৃদ্ধির অভিজ্ঞান ছিল একসময় । সে রাম নেই , সেই অযোধ্যাও আর নেই । নেই নগদের বদলে পারিশ্রমিক এবং বিনিময় মূল্য হিসেবে টি-টোকেনের ব্যবহার । এখন টিমটিম করে ধুঁকতে ধুঁকতে কয়েকটি চা বাগান টিকে আছে শুধু । তারই মধ্যে একটি, জলপাইগুড়ি শহরের উপকণ্ঠে করলা ভ্যালি চা বাগানে ঘুরতে গিয়ে যে অভিজ্ঞতা হল , তাতে উইলিয়াম শেক্সপীয়রের ‘হ্যামলেট’ নাটকের সেই জগদ্বিখ্যাত উক্তিটি মনে পড়ছিল --- “There are more things in heaven and earth, Horatio, than are dreamt of in your philosophy.” “দুনিয়ায় কত আছে দেখবার / কত কী জানার , কত কী শেখার” ভেবে, অনেকটা গুগাবাবার মতই পৌঁছে গিয়েছিলাম করলা ভ্যালিতে । যতদূর দু’চোখ যায় , পাহাড়ের কোলে ততদূরই শুধু ঢেউ খেলানো চা গাছের সবুজ পাতার সমারোহের নয়নাভিরাম দৃশ্য তো খুব পরিচিত , খুব চেনা । চা গাছের বিজ্ঞানসম্মত নাম ক্যামেলিয়া সিনেনসিস । ‘ক্যামেলিয়া’ শব্দটি এসেছে জীববিজ্ঞানী জোসেফ ক্যামেলের নাম থেকে । যদিও চা গাছ আবিষ্কারের কৃতিত্ব তাঁর নয় । আর ‘সিনেনসিস’ কথাটার মানে, যা চিন থেকে এসেছে । করোনা-কালে পাঠক এবার ভেবে দেখতে পারেন , চা খাওয়া বাদ দেবেন কিনা ! উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন টি-এস্টেটগুলি দার্জিলিং , জলপাইগুড়ি , কোচবিহার , কিসানগঞ্জ এবং উত্তর দিনাজপুরে ছড়িয়ে রয়েছে । শিলিগুড়ি চা-নিলাম কেন্দ্রের তথ্য অনুযায়ী দার্জিলিঙের পাহাড়ি এলাকা , তরাই , ডুয়ার্সে অন্তত সাড়ে চারশো চা-বাগান রয়েছে । উত্তরবঙ্গের পাহাড়ি এলাকাকে তাই চা-বাগানের দেশ বললেও অত্যুক্তি হয়না । নবীনতম চা বাগান বলতে যে চিনচুলা চা বাগান , রায়মাটাং চা বাগান এবং কালচিনি চা বাগানের নাম আসবে , সেগুলিও বয়সের দিক থেকে বাহাত্তুরে । উত্তরবঙ্গের সবচেয়ে বড় চা-বাগান সামসিং টি-এস্টেট (১২৫৬.৬০হেক্টর) । ইতিহাস বলে উত্তরবঙ্গে চা চাষ শুরু হয় অন্তত দেড়শ বছর আগে , পরাধীন ভারতে । ১৮৪০ সাল নাগাদ দার্জিলিং এবং সন্নিহিত এলাকায় চা চাষের প্রমাণ পাওয়া যায় । ছোট চা-বাগানগুলি সমতলে ছড়িয়ে রয়েছে , করলা ভ্যালি তার অন্যতম । পরিসংখ্যান অনুযায়ী এই ধরণের ছোট চা-বাগানের সংখ্যা উত্তরবঙ্গে প্রায় ত্রিশ হাজার । সাধারণত এক একর জমিতে ছ’হাজার চারা লাগানো যায় , যা থেকে উৎপাদিত চা পাতার পরিমাণ দশ হাজার কেজির মত । স্বাদে ও গন্ধে দার্জিলিং চায়ের খ্যাতি ভুবনবিদিত । চা উৎপাদনের নিরিখেও সবচেয়ে এগিয়ে ডুয়ার্স অঞ্চল ।

            এই ইতিহাস ও প্রাকৃতিক শোভা কমবেশি আমাদের সকলেরই জানা এবং চেনা । কিন্তু যেটা ততটা চেনা নয় , তা হল চা গাছের ফুল । নভেম্বর মাস থেকে শুরু করে গোটা শীতকালটা ডুয়ার্স , বিশেষত পাহাড়ি অঞ্চলগুলি সূর্যমুখী ফুলে ছেয়ে থাকে । মনে হয় যেন আগুন লেগেছে  পাহাড়ে , পাকদণ্ডী পথের দু’পাশে । এই সময়ে করলা ভ্যালি চা বাগানে গিয়ে দেখলাম , গোটা চা বাগান ফুলে ফুলে ছেয়ে রয়েছে । প্রজাপতি এসে বসেছে চা ফুলের ওপরে । উপর থেকে চা গাছগুলি দেখলে কিচ্ছুটি বোঝার উপায় নেই । কিন্তু একটু ভাল করে ঠাহর করলেই দেখা যায় , চা গাছগুলির একটু নীচের দিকে , ঠাসবুনট সবুজ চা পাতা আর লিকলিকে ডালপালার ফাঁক দিয়ে উঁকি দিচ্ছে ফুলগুলি । সবুজে সবুজ চা বাগানের পটভূমিতে , সাদা পাপড়ি আর হলুদ পরাগরেণুর ফুলগুলির রূপ যেন ঠিকরে বেরোচ্ছে ।   

            আমার অবাক হওয়ার পালা তখনও কিছুটা বাকি ছিল । দেখছিলাম স্থানীয় বেশ কয়েকজন আদিবাসী মহিলা আর ছোট ছোট মেয়েরা প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগ ভর্তি করে ফুল সংগ্রহ করছেন বাগানে ঢুকে গিয়ে । কৌতূহলী হয়ে জিজ্ঞেস করলাম  --- ফুলগুলি কী কাজে লাগবে ? উত্তরে ওঁরা জানালেন , অত্যন্ত সুস্বাদু এই ফুল দিয়ে রান্নার সময়ে নানা রকম পদ তৈরি হবে । সরলভাবে চা ফুলের একটা ছোট ক্যারিব্যাগ আমার দিকে এগিয়ে দিয়ে বললেন --- “বাড়িতে নিয়ে যান , খেয়ে দেখবেন ।“ এ কথা বলেই , নিজেদের মধ্যে হাসাহাসি করতে করতে আবার কাজে মন দিলেন । আর আমি ভাবলাম , ক-ত অজানা রে !

            চা-ফুল খেয়েছেন কখনও ? না খেয়ে থাকলে , ফুল কাপ চা আপনি এখনও খাননি !   









চা গাছের ফুল



চা ফুল

ফুলের চা

গোলাপ ফুল চা

অপরাজিতা ফুলের চা

জবা ফুলের চা









সোনালি_ডানার_চিল

 #সোনালি_ডানার_চিল


শোনো বন্ধুগণ , শোনো দিয়া মন
আমার কীর্তির কথা , করিব বর্ণন ।।

ব্যাপারটা বিশ বছর আগের , তাই পাঠক দোষ ধরবেন না । সেবার প্রসন্নদেব মহিলা মহাবিদ্যালয়ে রূপঙ্কর আসছেন সোশ্যালে গাইতে । আমরা দল বেঁধে গান শুনতে যাব এ সি কলেজ থেকে । কার্ড জোগাড় করতে খুব একটা বেগ পেতে হল না । তো নির্দিষ্ট দিনে রূপঙ্কর এলেন , দুর্দান্ত গাইলেন । নিয়ম মেনে কলেজ সোশ্যালে, অনুষ্ঠান যত শেষের দিকে গড়াতে থাকে , একটু উদ্দীপক গান বেশি হয় । তেমন একটা গান হচ্ছে , সবাই উঠে দাঁড়িয়েছে । আমার কেন যেন মনে হল , শেষটা বড্ড নিরামিষ হচ্ছে ! তাই , আমার পাশে যে বন্ধু বসেছিল , তার চেয়ারটা আস্তে করে সরিয়ে নিলাম ! তারপর দূরে সরে গিয়ে , পি ডি কলেজের বিল্ডিঙের একতলার বারান্দার একটা থামের আড়ালে লুকিয়ে দেখতে লাগলাম কী হয় ! বন্ধুটি গান শেষ হওয়ার পরে , পিছনে না তাকিয়েই বসতে গেল এবং খুউব ভুল করল ! যেমনটা চেয়েছিলাম ঠিক তেমনভাবে জবরদস্ত আছাড় খেল ! এই দৃশ্যের সঙ্গে আবহের মত বেজে উঠল , কাচ ভেঙে পড়ার মত বহু রমণীর একসঙ্গে হেসে ওঠার শব্দ ! জান বাঁচাতে পিঠটান দিলাম । পরে বন্ধুরা বলেছে , ও নাকি কোনওমতে উঠে দাঁড়িয়ে ভয়ঙ্কর রকমের খেপে গিয়ে গর্জে উঠেছিল --- "শঙ্খ কোথায় ? ওকে খুন করব ।" স্বাভাবিকভাবেই নিহত হওয়ার জন্য আমি ওখানে দাঁড়িয়েছিলাম না ! সেদিন এমন খেপেছিল ও , যে আমাদের বাড়িতেও এসেছিল , কিন্তু পায়নি । সত্যিই তখনও ফিরিনি । ভাই পরে গোটা ঘটনাটা শুনে ,ওর মুখের চেহারা বর্ণনা করেছিল !

নাহ , খুন হইনি বলা বাহুল্য । তবে মাসখানেক কথা বন্ধ রেখেছিল । আজকেও এই লেখায় ওর নাম দিতেই পারি । কিন্তু সমস্যা হচ্ছে যে , বন্ধুটি এখন বিবাহিত এবং স্বামী-স্ত্রী দু'জনেই আমার বন্ধুর তালিকায় । আর বয়সটাও কুড়ি বছর বেড়ে গেছে । সবদিক বিবেচনা করে তাই নাম দেওয়া বা ট্যাগ করা থেকে বিরত থাকলাম !

এখন এই ঘটনাগুলির দিকে ফিরে তাকালে আমাদের স্নাতক স্তরে পাঠ্য একটি কবিতার লাইন মনে পড়ে শুধু ----

"এ কথা জানিতে তুমি ভারত ঈশ্বর শাজাহান
কালস্রোতে ভেসে যায় , জীবন-যৌবন-ধন-মান ।"

জীবন কিছু কিছু ব্যাপারে শাজাহান বাদশার প্রতি যতখানি নির্মম , হরপদ কেরানির প্রতিও ততটাই ।







ফিচার প্রতিবেদন


ফিচার সংবাদ

ফিচার নিউজ


ফিচার পাতা

ফিচার লেখা


news feature article


news feature story


news feature example


কেরালার বৃহত্তম জিপলাইন adventure sport

  ### কেরালার বৃহত্তম জিপলাইন ভারতের দক্ষিণাঞ্চলের রাজ্য কেরালা, যার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও বৈচিত্র্যময় পরিবেশ পর্যটকদের আকর্ষণ করে, সেখানে এ...