সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়কে বেশ কয়েকবার খুব কাছ থেকে দেখার সৌভাগ্য হয়েছে । জলপাইগুড়িতে রবীন্দ্র ভবনে উনি এবং রোকেয়া রায় বেশ কয়েকবার কবিতা পড়তে এসেছেন , আর কলকাতায় তো দেখেছিই । ফেলুদার সম্পর্কে বলতে হলে , প্রথমেই বলতে হবে ওঁর গায়ের রঙের কথা । উনি আদতে ভীষণ ফর্সা মানুষ । দ্বিতীয়ত হাঁটার সময় হাতের চেটো থাকে শরীরের সঙ্গে সমান্তরালভাবে , আমাদের মত তেরচা করে নয় । তৃতীয় উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য ওঁর শারীরিক উচ্চতা । ছোটবেলা থেকে তিনজনের উচ্চতার গল্প পড়ে আসছি --- সত্যজিৎ রায় , উত্তমকুমার এবং সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় । উনি নিজেই একাধিক সাক্ষাৎকারে বলেছেন উত্তমকুমারের শারীরিক উচ্চতা ওনার থেকে কিছুটা বেশি ছিল । আর সত্যজিৎ রায়কে তো 'ওরিয়েন্ট লংম্যান' বলা হত ওঁর ব্যতিক্রমী দৈহিক উচ্চতার জন্য । নন্দনের সামনে একবার কায়দা করে ফেলুদার পাশে দাঁড়িয়ে দেখেছি , আমি ওনার কাঁধের কাছে । আমার উচ্চতা ৫' ৬" । এবার বুঝুন কতটা লম্বা । মজার ব্যাপার হল, যে তিনজনকে নিয়ে এতক্ষণ কথা বললাম , উচ্চতা শব্দটি তাঁদের প্রতিভার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য না দেহের ক্ষেত্রে , সেই কথাটা আলাদা করে ব্যাখ্যা করার প্রয়োজন হয় ! এই বিন্দুতে ওঁদের তিনজনের মধ্যে অদ্ভুত মিল ! আরও একটা মজার মিল আছে । পথের পাঁচালিতে অপুর বন্ধুর নাম পুলু । বাস্তবে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের ডাকনামও তাই ! আমার বাবার এক সহকর্মীর ক্লাসমেট ছিলেন ফেলুদা, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় । বাবার সেই সহকর্মী স্বর্গীয় রবীন মিশ্র , আমার বোচন জ্যেঠুর কাছে শুনেছি সৌমিত্রবাবু বাংলা সাম্মানিকের নামকরা ছাত্র ছিলেন । সহপাঠীরা সবাই ধরেই নিয়েছিলেন যে উনি অনিবার্যভাবে অধ্যাপকই হবেন । কিন্তু মানুষ ভাবে এক , হয় আরে এক । এম এ পড়ার সময়তেই উনি অডিশন দিয়ে আকাশবাণীতে ঘোষকের চাকরি পান এবং প্রথাগত পড়াশোনায় ইতি টানেন । এর পরের ইতিহাস কমবেশি আমাদের সকলেরই জানা ।
https://sankhamanigoswami.blogspot.com/2020/10/pub-9792609886530610_44.html

কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Don't forget to like, comment, share and subscribe to my Blog. Thank you.