বৃহস্পতিবার, ৫ নভেম্বর, ২০২০

বাতিল

 

বাতিল

 

      অর্পণ ইংরেজি মাধ্যমে পড়া ছেলে । ভাল ছাত্র ছিল ও , পড়ার চাপেই কিছু মানসিক সমস্যা , বলা ভাল মানসিক জড়তা দেখা যায় ওর । কথায় বলে বিপদ কখনও একা আসে না । অল্প দিনের ব্যবধানে অর্পণের বাবা – মা দু’জনেই গত হলেন । দেখার মত ছিল এক দিদি । সেও সন্তান প্রসব করতে গিয়ে মারা গেছে মাস দুয়েক আগে । দুনিয়ার নিয়ম মেনেই অর্পণের ঠাঁইনাড়া হতে সময় লাগেনি । না খেতে পেয়েই মরত , যদি না পাড়ার সাইকেল সারাইওয়ালা ওকে নিজের দোকানের কাজে ডেকে নিতেন ।

        টোটো এসে দাঁড়িয়েছে একটা দোকানের সামনে , চাকায় পাম্প দিতে হবে । কিছু লোক প্রয়োজনের থেকে বেশি অপ্রিয় সত্যি কথা বলে ; টোটো চালকও তেমনি । উপযাচক হয়ে বলল --- “কাকা , অসহায় ছেলেটাকে দিয়ে ফালতু খাটিয়ে নিচ্ছো । দু’চাকার কাজ শিখে ও কি করে খেতে পারবে এই বাজারে ?” এইসব লোকের সাথে কথা বাড়ানোর মানে হয়না , তবুও কাকা বললেন --- “দু’বেলা দু’মুঠো খাওয়ার ব্যবস্থা তো করতে পারবে , শিয়াল – কুকুরের মত তো এঁটো খুঁটে খেয়ে বাঁচতে হবেনা । সেটুকুই বা কম কী বল !”

         চড়া রোদ উঠেছে আজ । ফ্রি – হুইল খোলার যন্ত্রটা অর্পণকে আনতে বললেন কাকা । চোখের সামনে থাকা জিনিসটা অর্পণ কিছুতেই খুঁজে না পাওয়াতে আর মেজাজ সামলাতে পাড়লেন না প্রবীণ মানুষটি । মুখ দিয়ে বেরিয়ে গেল --- “তোর দ্বারা কিস্যু হবে না । তোর মরে যাওয়াই ভাল ।“

         আবারও বোঝা গেল , যারা বাতিলের খাতায় চলে যায় , সমাজের কাছে তাদের কোনও দাম নেই । করোনাকালে আরওই বেশি করে নেই ।

                                -------------------------

https://sankhamanigoswami.blogspot.com/2020/11/pub-9792609886530610_30.html





বাঙালির ভ্রমণ

 

                        বাঙালির ভ্রমণ

 

             বাঙালি ঘুরতে ভালবাসে । ঘোরাতেও ভালবাসে অবশ্য । মাস পয়লায় মাইনে না পেয়ে ঘুরতে হলে মুখ ব্যাজার নয়ত কোম্পানি বা সরকারের গুষ্ঠির ষষ্ঠীপুজো করা । আর হোম ডেলিভারির টাকা , মুদির দোকানের খাতায় বাকি থাকা টাকার বেলায় আজ নয় কাল , কাল নয় পরশু । পাড়ায় চাঁদা দেওয়ার বেলায় পকেটখালির জমিদার আর বেড়াতে গিয়ে খরচা দেদার । সারা বছর বাঙালি ভ্রমণ-সাহিত্য পড়বে , ভ্রমণ বিষয়ক লেখার পাতা উল্টাবে আর বেড়াতে গিয়ে ছানাপোনার সাধারণ জ্ঞানের প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে ল্যাজেগোবরে হবে , নয়ত পূর্ণ আত্মবিশ্বাসে ভুলভাল বকবে ।

              কিছু বাঙালি বেড়ানোর প্ল্যান করলে আগে খোঁজ নেবে কোথায় ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের অতিথিশালা আছে । পাঁচ মাস আগে থেকে ঠিক অনুমতি ম্যানেজ করবে । ঠিক সময়ে গিয়ে, চিঠি নিয়ে সেই আশ্রমে হাজির হবে সপরিবারে । আশ্রমের বাইরে প্রচুর ফুর্তি করবে , খাবেদাবে , কেনাকাটা করবে , খরচ করবে খোলা হাতে । আর বিদায় নেওয়ার বেলায় যা ডোনেশন দেবে , তাতে একবেলায় হোটেলে দু’জনের ভাত খাওয়ার খরচও ওঠে না ! ঘুরতে বেরিয়ে বাঙালিরা ট্রেনে যাতায়াতের সময় রাত আড়াইটেয় চা খাবে আর বাথরুমে গিয়ে সিগারেট টানবে । কন্ডাক্টেড ট্যুরে ঘুরতে বেরিয়ে বাসে সামনের দিকেই বসবে জানলার পাশে , কোনও আপস করবে না । দার্জিলিং বেড়াতে গেলেও কে জানে কেন শুদ্ধ হিন্দিতে কথা বলবে ! যেমন – “আপনাদের এখানে কী ভাত, মানে রাইস পাওয়া যাতা হ্যায় ?” যেখানেই বেড়াতে যাক বাঙালি , খড়ের গাদায় সূচ খোঁজার মত করে বাংলা খবরের কাগজ খুঁজবে , আর সেটা হাতে পেলেই --- আহা , কী আনন্দ ! পেট পাতলা বলে খ্যাত বং-দের বেড়াতে গেলে পেট ছাড়বেই জানা কথা । সেই কারণেই বাঙালিরা নিজেদের সাথে মুঠো মুঠো এন্টেরোকুইনল আর অ্যান্টাসিড ট্যাবলেট রাখবে । আর হ্যাঁ , টিসু পেপার সঙ্গে নেবেই ! দক্ষিণ এবং বাম হস্তের কাজ সারাদিন পরপর চলতেই থাকবে কিনা !

            বেড়াতে বেরিয়ে ডিজিটাল ক্যামেরা ও মোবাইলে স্ফীতোদর বাঙালি বাবু ও বিবি পটাপট ছবি তুলবেন আনাড়ি হাতে , যেগুলির অধিকাংশেরই ভাগ্যে অনতিবিলম্বে ডিলিট প্রাপ্তি ঘটবে । কোন মহাপুরুষ যেন এই জাতটাকে শিখিয়ে গিয়েছিলেন যে , ঘুরতে বেরিয়ে মন খারাপ (প্রকাশ) করতে নেই , সেই থেকে বেড়ানোর অ্যালবামে সব বাঙালি প্রাণপণে হাসিমুখ । তিনটে ব্যাগ নিয়ে বেরোলে বাড়ি ফিরবে আরও তিনটে ভর্তি করে । তিন মাস আগে টিকিট কাটলেও অধিকাংশই কাটবে এজেন্টদের কাছ থেকে , লাইনে দাঁড়াবে না কষ্ট করে । দক্ষিণ ভারত গেলে পাউরুটি খেতে গেলেও বাঙালি বলবে – এঃ , বড্ড নারকেল তেলের গন্ধ ! পুরীতে গিয়ে চিংড়ির মালাইকারি চেটেপুটে খেয়ে বলবে , নারকেলটা দু’দিন আগে বাটা , খুঁত ধরতে হবে না ! প্রাকৃতিক দৃশ্য দেখে মোহিত হলে , রবি ঠাকুরের গান গাইবে গুনে গুনে ঠিক দু’লাইন , কারণ তারপর আর মনে নেই !

             বাঙালি ঘুরতে গেলেই অন্যের সাথে গায়ে পড়ে আলাপ জমাবে , টিপে টিপে টুথপেস্ট বের করার মত হাঁড়ির খবর জানবে । জানাবে কম কিংবা বানিয়ে বানিয়ে , ফুলিয়ে-ফাঁপিয়ে নিজেদের কথা বলবে । তারপর হঠাৎ কোনও বিপদে পড়লে , সদ্য পরিচিত মানুষটিকে ছেড়ে সবার আগে মানে মানে কেটে পড়বে । ঢেঁকি স্বর্গে গেলেও ধান ভানে আর বাঙালি ঘুরতে গেলেও রাজনীতি চর্চা আর পদে পদে রাজনীতি করার বদভ্যাস ছাড়তে পারে না । এ রাজ্যের বাইরের রাজনীতি সম্পর্কে আগ্রহ আর জ্ঞানগম্যি দু’টোই কম , আর আন্তর্জাতিক হওয়ার তো প্রশ্নই নেই । ফলে বি জে পি হলে তৃণমূলের মুণ্ডপাত , না হলে উল্টোটা ! যে লোক এমনিতে অফিসে বেলা বারোটায় ঢুকে তিনটেতেই টা টা গুডবাই , সেও ঘুরতে বেরিয়ে ওয়ার্ক কালচার নিয়ে লম্বা-চওড়া বক্তৃতা দেবে । আর দু’মিনিট পরপর ছবি-সহ স্ট্যাটাস আপডেট দেবে ফেসবুকে --- ফিলিং ওয়ান্ডারফুল অ্যাট অমুক প্লেস উইথ থাউজেন্ড আদার্স !

          দেশ(কিংবা বিদেশ) দেখতে বেরিয়ে বাড়ির চৌকাঠের বাইরে পা রাখলেই কেন কে জানে বাঙালিবাবুরা নিজেদের হঠাৎ-রাজা ভাবতে শুরু করেন এবং চান প্রতি মুহূর্তেই আশপাশের লোকেরা যেন তাঁর সাথে করজোড়ে হেঁ হেঁ করে কথা বলেন । যেন বাবুটি সাক্ষাৎ পরিব্রাজক হিউ-এন-সাং-এর ব্রাদার-ইন-ল ! তবু এমনটাই চলছে , চলবে । কারণ ‘দুনিয়ার বাঙালি এক হও’ মঞ্চ যদি একদিন সকালে আচমকা ঘোষণা করে , যে এই করোনা-কালে ঘুরে-বেড়িয়ে পয়সা উড়িয়ে ক্ষতি বই লাভ নেই কোনও , কাল থেকে ভ্রমণ-বনধ --- তা হলে দেশ-বিদেশের পর্যটন ব্যবসা আরও কতটা মার খাবে , তা আগাম বলার জন্য নস্ট্রাডামুস হওয়ার কোনও প্রয়োজন নেই ।

https://sankhamanigoswami.blogspot.com/2020/11/pub-9792609886530610.html








নিশীথে

                     অফিস থেকে বেরোতে আজ বড্ড দেরী হয়ে গেছে রাপ্তীর । মেন লাইনে এই সময়ে , এত রাতে লেডিজ কম্পার্ট্মেন্ট প্রায় ফাঁকা হয়ে যায় । সেক্টর ফাইভ থেকে যখন বেরোল , তখন ভেবেছিল শেষ ট্রেনটাও বোধহয় মিস হয়ে যাবে । ক্যাব ড্রাইভারের সৌজন্যে তা হয়নি । ভদ্রলোক প্রায় ফাঁকা রাস্তায় যেন পক্ষীরাজ ঘোড়া ছুটিয়েছিলেন । কিন্তু পড়িমরি করে , ঘেমেনেয়ে কামরায় একটু থিতু হয়ে বসার পর, যখন ট্রেন চলতে শুরু করল , তখন রাপ্তী বুঝল জেনারেল কম্পার্ট্মেন্টে ওঠাই উচিত ছিল । কামরায় মাত্র দু’জন মহিলা তাকে নিয়ে । সন্ধে থেকে ঝিরিঝিরি বৃষ্টি হচ্ছে আজ । দমকা ভেজা হাওয়ায় হঠাৎ রাপ্তীর সারা শরীর জুড়ে এক অজানা ভয়ে, শিহরণ খেলে গেল । ভয় কাটাতে কামরার আরেক প্রান্তে বসে থাকা সেই বিবাহিত , প্রায় সমবয়সী মেয়েটির কাছে গিয়ে বসে ,তার সাথে আলাপ জুড়ল রাপ্তী । কথায় কথায় জানা গেল , ওদের দু’জনেরই গন্তব্য একই --- শ্যামনগর । মেয়েটিকে খুব অস্থির লাগছিল । কিসের ভয়ে যেন ভীষণ সন্ত্রস্ত । একথা সেকথার পরে রাপ্তী তাকে সরাসরি জিজ্ঞেসই করে ফেলল , কী কারণে তার এত দুশ্চিন্তা । খুব ব্যক্তিগত কিছু না হলে , যদি কোনও সাহায্য করা যায় । হাজার হোক একই শহরের বাসিন্দা দু’জন ।

           জানা গেল, মেয়েটি কলকাতা হাইকোর্টের এক উকিলবাবুর ফার্মে সেক্রেটারি হিসেবে কাজ করে । উকিলবাবু অতি সজ্জন মানুষ । কিন্তু তবু সন্দেহবাতিকগ্রস্ত স্বামী বাড়ি ফেরার সময়ের সামান্য এদিকওদিক হলেই অকথ্য শারীরিক ও মানসিক অত্যাচার করে । এক বড় মক্কেলের জরুরি মামলার ডিকটেশন নিতে গিয়ে আজ বেরোতে বেরোতে অনেক দেরী হয়ে গেছে । মেয়েটি ভয়ে কাঁটা হয়ে আছে , বাড়ি ঢুকলে কী হবে, সেই কথা ভেবে । হঠাৎ রাপ্তীর হাত দু’টো চেপে ধরে , কতকটা অপ্রত্যাশিতভাবেই মেয়েটি অনুরোধ করল যে , যদি একটু কষ্ট করে রাপ্তী বাড়ি পর্যন্ত তাকে সঙ্গ দেয় এবং তার স্বামীকে জানায় যে , দু’জন একসাথে এসেছে , তবে খুব উপকার হয় । খুব সহজ প্রস্তাব নয় এই সময়ে । শ্যামনগরে আজকাল অলিগলিতেও বহিরাগতদের দৌরাত্ম্য বাড়ছে , একা বাড়ি ফিরতে গিয়ে বিপদ হতেই পারে । তবু কেন যেন রাপ্তী কিছুতেই মেয়েটির অনুরোধে সাড়া না দিয়ে পারল না । স্বাগত এইসময়ে বাড়িতেই থাকে । মেয়েটির বাড়ি থেকে বেরিয়ে ফোনে ওকে ডেকে নেবে বরং , মনে মনে ঠিক করল রাপ্তী । সৌভাগ্যক্রমে স্টেশন থেকে বেরিয়েই একটা রিক্সা পাওয়া গেল । খানিক বেশি ভাড়া চাইল অবশ্য । তা হোক , যেতে রাজি , এই ঢের । এতক্ষণে বলা হয়নি , মেয়েটির নাম তিয়াশা । রিক্সাওয়ালার গাঁইগুঁইতে দিব্যি বোঝা গেল , তিয়াশা যে ঠিকানায় যাবে বলল , তা স্টেশন থেকে বেশ দূরে । রাপ্তী ওদিকটাতে কোনওদিন গিয়েছে কিনা , মনে করতে পারল না ।  রিক্সা যতই ওর বাড়ির দিকে এগোতে লাগল , আতঙ্কের ছাপ ততই স্পষ্ট হয়ে ফুটে উঠতে লাগল তিয়াশার চোখেমুখে । ওর হাত-পা মড়ার মত ঠাণ্ডা । পাশে বসে রাপ্তী খুব ভাল করে টের পেল তিয়াশা কাঁপছে । কষ্ট হল খুউব । স্বাগতর সাথে বিষয়টা নিয়ে কথা বলতে হবে । প্রয়োজনে থানা-পুলিশও করতে হবে । এভাবে চলতে থাকলে তো একদিন না একদিন মরেই যাবে মেয়েটা ।

             ওই যে দূরে একটা বাড়ির বারান্দায় হলুদ আলো জ্বলছে । তিয়াশার নির্দেশমত রিক্সা সে দিকে আরও একটু এগোতেই, একটি পুরুষ মানুষের অবয়ব অন্ধকারে আবছা ফুটে উঠল । পাশে তাকিয়ে রাপ্তী দেখল তিয়াশার মুখ রক্তশূন্য হয়ে গেছে । তিয়াশার স্বামী কিন্তু আশ্চর্য নরম সুরে রাপ্তীর সাথে কথা বললেন , ধন্যবাদ জানালেন বারবার । সৌজন্যের কোনও খামতি নেই কোথাও । চেহারা-ব্যবহারে , শিক্ষা ও পরিশীলিত রুচির ছাপ পড়ে ফেলা যায় । তবে কি ট্রেনে আসতে আসতে তিয়াশা যা বলল , সবটাই মিথ্যে ? কে জানে ! চেহারা দেখে মানুষ বোঝা দায় আজকাল ।

            ওদের বাড়ি থেকে বেরিয়ে কিছুটা এগিয়ে এসে স্বাগতকে ফোন করার জন্য সাইড ব্যাগে হাত দিতেই একটা আর্ত চিৎকার ভেসে এল ওদের বাড়ি থেকে । প্রচণ্ড যন্ত্রণায় কেউ কাঁদছে । গলাটা চিনতে অসুবিধে হলনা । হঠাৎ ভীষণ ভয় পেল রাপ্তী । গা ছমছম করে উঠল ওর । স্বাগতকে বাইক নিয়ে তাড়াতাড়ি আসতে বলে, অনেকটা আলো আছে এমন একফালি জায়গা খুঁজে দাঁড়িয়ে পড়ল রাস্তায় । জনবিরল রাস্তায় হঠাৎ হঠাৎ কুকুরের ডাকে চমকে চমকে উঠতে লাগল ও । বারবার কানে বাজতে লাগল তিয়াশার কান্নাভেজা গলার আওয়াজ । নাহ , আর দেরী নয় । ও কালকেই স্বাগতকে নিয়ে আবার আসবে এই বাড়িতে । এভাবে একজন মানুষকে তিলে তিলে মরতে দেওয়া যায়না । দূরে বাইকে স্বাগতকে আসতে দেখে, ধড়ে প্রাণ ফিরে পেল রাপ্তী ।

           পরদিন সকালে আবার ওরা ফিরে আসল তিয়াশার পাড়ায় । আসার আগে স্বাগত এক উকিল বন্ধুর সাথে পুরো ব্যাপারটা নিয়ে আগাম কথা বলে এসেছে । গোলমাল বুঝলে আইনি সাহায্য নিতে দেরী করা চলবে না আর । ঝলমলে রোদ উঠেছে আজ । পাড়ায় ঢুকে কিছুতেই তিয়াশাদের বাড়িটা খুঁজে পাচ্ছিল না ওরা । অথচ রাস্তা চিনতে কোনও ভুল হয়নি । ওই তো একটু ফাঁকা জায়গায় , সামনের ওই মাঠের একপাশে --- ওখানেই তো দেখেছিল বাড়িটা । একটা আস্ত বাড়ি ভোজবাজির মত উবে গেল নাকি ! দিশেহারা হয়ে ওরা একজন স্থানীয় বয়স্ক মানুষকে ওদের ব্যাপারে জিজ্ঞেস করে যা শুনল , তাতে দিনের আলোতেও গলা শুকিয়ে কাঠ হয়ে গেল দু’জনের । হ্যাঁ, ওখানেই বাড়ি ছিল ওদের । দাম্পত্য কলহ লেগেই থাকত । পারিবারিক ব্যাপার বলে , সব দেখে-শুনে-বুঝেও ওদের ব্যাপারে কোনও প্রতিবেশী বা আত্মীয়-পরিজন নাক গলাতেন না বিশেষ । তিয়াশার স্বামী শিক্ষক , তাঁর রাজনৈতিক প্রতিপত্তিও যথেষ্ট । সে ব্যাপারটা ভদ্রলোক পরিচিত মহলে বেশ জাহিরও করতেন । রোজ রাতে মদ্য পান করা এবং কারণে-অকারণে স্ত্রীকে নির্যাতনের ব্যাপারটাতে আশপাশের মানুষেরা একরকম অভ্যস্তই হয়ে গিয়েছিলেন বলা চলে । যেচে এই ধরণের দাম্পত্য-ঝামেলায় আজকাল আর কে-ই বা জড়াতে চায় । স্ত্রীকে জড়িয়ে যে কোনও কাউকে সন্দেহ করার অভ্যেসটা, মাত্রাতিরিক্ত পর্যায়ে পৌঁছেছিল তিয়াশার স্বামীর । তাই পরিচিতজনেরাও ইদানীং ওঁদের যতটা সম্ভব এড়িয়েই চলতেন দুর্নামের ভয়ে ।

        এর ফল যা হওয়ার তা-ই হল একদিন । ঘটে গেল এক মর্মান্তিক দুর্ঘটনা । নেশাগ্রস্ত অবস্থায় ওই মানুষটি তিয়াশার গায়ে আগুন লাগিয়ে দিয়েছিলেন বলেই স্থানীয় মানুষের দাবি । দাউ দাউ করে জ্বলতে জ্বলতে , মৃত্যুযন্ত্রণায় ‘বাঁচাও-বাঁচাও’ বলে চিৎকার করতে করতে তিয়াশা কোনওমতে সে রাতে বাড়ির বাইরে বেরিয়ে আসতেই, ওকে প্রাণে বাঁচাতে ছুটে যান পাড়ার কয়েকজন । কিন্তু দুর্ভাগ্য , হাসপাতালে নিয়ে গেলেও শেষ পর্যন্ত ওকে আর বাঁচানো যায়নি । তিয়াশার শরীরের বেশিরভাগটাই পুড়ে গেছিল বলে জানিয়েছিলেন ডাক্তারবাবুরা । এদিকে , স্ত্রীর এই পরিণতিতে , গণপিটুনির ভয়ে তিয়াশার স্বামীও বাথরুমের দরজা এঁটে অ্যাসিড খেয়ে আত্মঘাতী হন । আসবাবপত্রে আগুন লেগে বাড়িটাও পুড়ে গিয়েছিল একেবারে । এই ঘটনার পর থেকে প্রতি বছরই ওই বিশেষ দিনটিতে , সেদিনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি হয় । এমন অভিজ্ঞতা আরও কয়েকজনের হয়েছে ।

         তাহলে গতকাল , অমাবস্যার রাতে , ট্রেনে যার পাশে বসে এতটা পথ এল রাপ্তী --- সে কে ? তিয়াশা কি কিছু বোঝাতে চেয়েছিল তাকে ? এটা কী রাপ্তীর প্রতি তিয়াশার একটা অব্যক্ত বার্তা , যে এমনটা তোমার জীবনেও ঘটতে পারে , নাকি অন্যকিছু ? আর ভাবতে পারল না রাপ্তী ।

         জ্ঞান হারিয়ে রাপ্তীর শরীরটা কাটা কলা গাছের মত সশব্দে মাটিতে লুটিয়ে পড়ার আগেই স্বাগতর দু’টো বলিষ্ঠ হাত শেষ মুহূর্তে ওকে ধরে ফেলল ।

                                     -------------------

https://sankhamanigoswami.blogspot.com/2020/04/pub-9792609886530610_57.html

https://sankhamanigoswami.blogspot.com/2020/10/pub-9792609886530610_15.html





ভয়ংকর ভূতের গল্প বাংলায়


ভূতের গল্প বাংলাতে



ভয়ানক ভূতের গল্প



ভয়ংকর ভূতের গল্প


সত্য ভূতের গল্প

ভূতের গল্প বাংলায়


ভয়ঙ্কর ভূতের গল্প

সত্য ভূতের গল্প

ভয়ঙ্কর ভূতের গল্প বলো

ভয়াবহ ভূতের গল্প

একটি ভূতের গল্প

একটা ভূতের গল্প বলো

একটি ভূতের গল্প শোনাও

ভূতের গল্প pdf



টেলিপ্যাথি

 

                           টেলিপ্যাথি

 

 

         ষষ্ঠ ইন্দ্রিয় ব্যবহার করে পরিস্থিতি বুঝে মেয়েরা যে সিদ্ধান্ত নিতে শিখে যায় , অভিজ্ঞতা দিয়ে সেটা বিলক্ষণ বুঝেছে অর্ঘ্য । কচি বয়সের প্রেমিকা পাপাইকে কী একটা বলতে বাড়ির বাইরে ডেকেছিল অর্ঘ্য । সন্ধে নেমে এসেছে , দরকারি কথাটা বলার পরেও এটাসেটা বলে পাপাইকে কথায় আটকে রাখছিল অর্ঘ্য , শুধুমাত্র আলো- অন্ধকারে পাপাইয়ের সাথে কথা বলতে ভাল লাগছিল বলেই । পাপাই কী বুঝল কে জানে , হঠাৎ বলে উঠল --- “আমি তো একটা মেয়ে । এইভাবে ভর সন্ধেবেলা পাড়ার মোড়ে দাঁড়িয়ে কথা বলাটা ভাল দেখায় না । তোর কথা যদি শেষ হয়ে গিয়ে থাকে , তবে এবার আমি বাড়িতে ঢুকব ।“

        অফিসের কাজে সেবার ঝটিকা সফরে যেতে হয়েছে দার্জিলিঙে । যেদিন যাওয়া , সেদিনই শিলিগুড়িতে ফেরা । বন্ধুরা পইপই করে বলেছিল অন্ধকার নেমে আসার আগে রওনা দিতে । কাজের চাপে সেই সন্ধেই হল । একটা শেয়ারের ট্রেকারে উঠল অর্ঘ্য । কোনওমতে চাপাচাপি করে ছ’জন বসার ব্যবস্থা । অর্ঘ্যর জায়গা হল ড্রাইভারের পাশে । শেষ মুহূর্তে এক সুবেশ – সুন্দরী ভদ্রমহিলা উঠে বসলেন ঠিক অর্ঘ্যর পাশে । বাকিদের সাথে কথাবার্তায় বোঝা গেল ভদ্রমহিলা নিত্যযাত্রী । সুন্দরীদের এমন সান্নিধ্য অর্ঘ্য উপভোগই করে , কিন্তু ঠাসাঠাসি করে বসায় কেমন যেন একটা অস্বস্তি হচ্ছিল । ভদ্রমহিলা বেশ কয়েকটা চিপসের প্যাকেট নিয়ে উঠেছিলেন । টুক টুক করে খেতে খেতে কথা বলছিলেন বাকিদের সাথে । অর্ঘ্যর চোখ স্থির গাড়ির জোরালো হেডলাইট পড়া পাহাড়ি পাকদণ্ডী রাস্তার দিকে । আচমকা ভদ্রমহিলা চিপসের প্যাকেটটা বাড়িয়ে দিলেন --- “নিন না ।“

--- “না না, ঠিক আছে ।“

--- “নিন ।“ জোরাজুরিতে শেষ পর্যন্ত কয়েকটা চিপস খেতেই হল । কার্সিয়াং পার হওয়ার পর একটা পেট্রোল পাম্পে গাড়ি থামল । ভদ্রমহিলা অর্ঘ্যর সাথেই দাঁড়িয়ে আলাপ সারছিলেন । গাড়িতে উঠবার সময় পিছনের একজন সামনে আসতে চাইল , ড্রাইভারের পাশে । অর্ঘ্যর কোনও সমস্যা নেই তাতে , কিন্তু সেই তরুণী দৃঢ়ভাবে আপত্তি করলেন । সুকনার কাছে মহিলা নেমে গেলেন । তারপর থেকে শিলিগুড়ি পৌঁছনো পর্যন্ত অবাক হয়ে অর্ঘ্য দেখল , এতক্ষণ যারা ‘দিদি – দিদি’ করে কথা বলছিল , তারাই বাছাই করা বিশেষণে রসালো আলোচনায় মেতে উঠল । 

        সেবার ইউনিভার্সিটির ও এ টি-তে ‘সংস্কৃতি’ চলছে । সিগারেট খেতে নতুন বিল্ডিঙয়ের কাছে অন্ধকার মত একটা জায়গা দেখে এগিয়ে গেল অর্ঘ্য । হালকা হওয়াও দরকার । কাজটা সেরে সিগারেট ধরাতে গিয়ে লাইটারের আলোয় দেখল সুনেত্রাকে । ওর দিকেই তাকিয়ে আছে , হাতছানি দিয়ে ডাকছে । কাছে যেতেই অর্ঘ্য টের পেল সুনেত্রা মদ খেয়েছে । সুনেত্রা আধুনিকা , সুন্দরী , বিদুষী । ইউনিভার্সিটির বহু ছেলের মনে ওর জন্য ব্যথা আছে । অর্ঘ্যরও কী নেই ? অন্ধকারে চোখ সয়ে যাওয়াতে অর্ঘ্য আবিষ্কার করল সুনেত্রা আজ লিপগ্লস দিয়েছে । কতক্ষণ এভাবে তাকিয়েছিল , মনে নেই অর্ঘ্যর । হঠাৎ সুনেত্রা দ্রুত পায়ে এগিয়ে এসে দু’হাত দিয়ে অর্ঘ্যর ঘাড় টেনে ধরল , ঠোঁটে মিশিয়ে দিল ঠোঁট । স্বর্গীয় সুখে ডুবে যেতে যেতে অর্ঘ্যর মনে হল , মেয়েরা সব টের পায় কী করে !

                                    ------------------







জরুরি বিভাগ

 

জরুরি বিভাগ

 

        আমি রাপ্তী । মেডিক্যাল কলেজের জরুরি বিভাগে আজ আমার এক মাস পূর্ণ হল । আমাদের কাজে হাতেকলমে শেখাটাই আসল । আর সেই কাজ করতে গিয়ে বিচিত্র সব অভিজ্ঞতাও হয় আমাদের । ধারাবাহিকভাবে সবগুলো নিয়ে লিখতে গেলে উপন্যাস হয়ে যাবে । তাই আপাতত আজকের কথা বলি । দু’টো কেস মনে স্থায়ী দাগ কেটে যাওয়ার মত । ট্রলিতে নাইটি পরা , মোটা মত এক সধবা মধ্যবয়স্ক মহিলাকে রেখে , একটা লোক তাঁর পাশে দাঁড়িয়েছিল । দু’বার এসে হাতে টিকিট নিয়ে আমাকে দেখার জন্য বলেছে । সময় পাইনি । সকালবেলার দিকটা বড্ড চাপ থাকে । দম ফেলার ফুরসত পাওয়া যায় না । অন্য এক সংকটজনক রোগীর কাছে ছিলাম । একটু পরে লোকটা আমার পিছু নিয়ে আবার সেখানে এল । ততক্ষণে সে ট্রলিটা নিয়ে আমাদের কিউবিকলের কাছে রেখেছে । সম্ভবত অন্য জুনিয়র ডাক্তারদেরকেও ডেকেছে , পায়নি । সবাই রোগীর চাপে অসম্ভব ব্যস্ত । আমরা না চাইলেও একটু অপেক্ষা করতেই হয় , কিছু করার থাকেনা । এবার কাজ শেষ করে ভদ্রমহিলাকে দেখার জন্য এগোলাম । দূর থেকে দেখছি ওনার হাঁপ ধরেছে । অ্যাপ্রনের পকেট থেকে পালস অক্সিমিটারটা বের করে ওনার সামনে গিয়ে দাঁড়াতেই মহিলা ডুকরে কেঁদে উঠলেন হঠাৎ করে । কাতরাতে কাতরাতে ডান পায়ের দিকে তর্জনী নির্দেশ করে বললেন --- “আর পারছিনা দিদি , আর সহ্য করতে পারছিনা ।“ মহিলার গোড়ালির কাছটায় একটা আধময়লা ন্যাকড়া আলতোভাবে জড়ানো । তার চারপাশটা পেকে, ফুলে উঠেছে । ন্যাকড়াটা খুলতেই আমার অন্নপ্রাশনের ভাত মুখে উঠে আসার জোগাড় । ওই জায়গাটায় হাতের তালুর মাপের একটা গোল গর্ত , তারমধ্যে কিলবিল করছে অসংখ্য জ্যান্ত পোকা , আমরা যাকে ‘ম্যাগট’ বলি ডাক্তারি পরিভাষায় । ডাক্তারদের লজ্জা – ঘেন্না – ভয় বিসর্জন দিতে হয় । স্যরেরা বারবার আমাদের এই কথাটা মনে করিয়ে দেন । তবু কয়েক মুহূর্তের জন্য, বমি এসে যাওয়ায় কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে পড়েছিলাম । তারপর মুখ দিয়ে নিজের অজান্তেই বেরিয়ে গেল --- “এই অবস্থায় ফেলে রেখেছেন ! জায়গাটা পচে গেছে , এটুকু বোঝেন না ?“ মহিলার পাশে থাকা লোকটি , তাঁর স্বামী বলে পরিচয় দিয়ে , নানা অজুহাত দিচ্ছিল , অবান্তর কথা বলে চলছিল । আর অসহনীয় যন্ত্রণায় কাঁদতে থাকা মহিলাকে দেখে আমি ভাবছিলাম , মানুষ এত সহ্যশক্তি পায় কোথা থেকে ! সার্জারি বিভাগের এক দাদাকে ডেকে দেখালাম । তিনি অবস্থা দেখে আঁতকে উঠে সঙ্গে সঙ্গে টিকিটে সার্জারি বিভাগে রেফার করে দিলেন । কোন দিক দিয়ে , কীভাবে যেতে হবে , তা-ও বলে দিলেন । তারপর লোকটিকে শুধু বললেন ---- “তাড়াতাড়ি যাও , আর দেরী করোনা । গ্যাংগ্রিন স্টার্ট করেছে । এরপর হাঁটু পর্যন্ত বাদ দিতে হবে ।“ ভাবতে কষ্ট হচ্ছিল , এই লোকটিই মহিলার স্বামী , এর নামেই মহিলা সিঁদুর পড়েন ।

          দ্বিতীয় ঘটনাটা একইসাথে ভীষণ করুণ এবং কিছুটা মজারও , আমাদের পেশার অভ্যস্ত চোখে । একটা বুড়ো মত লোক আমার আশপাশে ঘুরছিল , টিকিট আর একটা ই. সি. জি. রিপোর্ট নিয়ে । ই. সি. জি. গ্রাফটা দু’হাত দিয়ে টান করতে করতে , সেদিকেই চোখ রেখে অভ্যেসবশত জিজ্ঞেস করলাম --- “রোগী কে ?” এরপর দু’টো ব্যাপার একসঙ্গে ঘটলো । গ্রাফের শুরুতেই আমার চোখ আটকে গেল । ম্যাসিভ হার্ট অ্যাটাক হয়েছে । আর একই সঙ্গে বুড়ো মত লোকটা বলল --- “আমিই রোগী , দিদি ।“ নিজেকে যতটা সম্ভব সংযত করে বললাম --- “বাবা , তোমার হার্ট অ্যাটাক হয়েছে । ঘুরে বেড়িও না । চলো, শোও গিয়ে তাড়াতাড়ি ।“ বুড়োবুড়ি একাই এসেছে , সঙ্গে ট্রলি ঠেলার মতও কেউ নেই । ওনাকে কার্ডিওলজিতে রেফার করা হল । জানিনা , এত বড় এলাকা ঠিকঠাক চিনে কতক্ষণে পৌঁছল , অথবা পৌঁছল না । দিনলিপিতে লিখতে বাধা নেই , সাধারণ মানুষের জীবন বড় সস্তা এদেশে ।

                                ----------------------

https://sankhamanigoswami.blogspot.com/2020/11/pub-9792609886530610_32.html







চুম্বক

 

চুম্বক

 

“শুধু নিউজ প্রিন্ট নয় ,অনেক কিছুই রিসাইকেল হয় বুঝলি !” চায়ে একটা লম্বা চুমুক দিয়ে বলল শুভাশিস । আমি বললাম – “কী রকম ?”

--- “এই যে ধর, যে লোকটা পটল তুলল , তার সাথে যে জিনিসগুলো শ্মশানে যায় , যেমন বালিশ – চাদর- গামছা ইত্যাদি , সেগুলো শ্মশানে গেলেই আলাদা করে রাখে একজন , দেখেছিস তো ?”

--- “দেখেছি । সেগুলো রিসাইকেল হয়ে আমাদের মত অনেক লোকের ঘরে ফিরে আসে, সেটাই বলতে চাইছিস তো ?”

--- “না , সেটা বলতে চাইছিনা । কাল একটা নতুন জীবিকা দেখলাম , যেটা এই তালিকায় সর্বশেষ সংযোজন ।“ চায়ের কাপটা টেবিলে নামিয়ে রাখতে রাখতে বলল শুভাশিস । আমি আসল কথাটা শোনার জন্য উন্মুখ হয়ে জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলাম ।

--- “পরশু মহালয়া ছিল, খেয়াল আছে ?”

--- “আছে , তর্পণ করলাম তো ।“

--- “হুম । গতকাল অন্নপূর্ণা ঘাটে গেছিলাম সকালে । এমনিই , ঘুরতে । তো দেখি , একটা বাচ্চা ছেলে কোমর জলে একটা নাইলন দড়ি ধরে জলের মধ্যে হাঁটাহাঁটি করছে । দড়িটা জলে ডুবে রয়েছে । চোখ আটকে গেল । ঘাটের একেবারে শেষ সিঁড়িতে গিয়ে দাঁড়িয়ে পড়লাম ওর উদ্দেশ্যটা কী বোঝার জন্য । কিছুক্ষণ পরে দেখলাম, দড়ি দিয়ে বাঁধা কালো মত কী একটা জিনিস টেনে তুলল । বুঝলাম ওটা চুম্বক ।“

--- “বাকিটা আমি বলি ? পরশু তর্পণ করতে বহু লোক এসেছিল অন্নপূর্ণা ঘাটে । তর্পণ করতে গিয়ে বহু লোক সংস্কার মেনে পয়সা ফেলে গঙ্গায় । কোনও কোনও কুসংস্কারাচ্ছন্ন লোক আংটি –দুলও ফেলে । ছেলেটা জলে চুম্বক ফেলে পয়সা ধরছিল !”

--- “একেবারে । কথায় বলে , কলকাতার বাতাসে টাকা-পয়সা ওড়ে , শুধু ধরতে জানা চাই । পরিস্থিতির চাপে ওইটুকু ছেলেটা , এই অল্প বয়সেই চুম্বক দিয়ে পয়সা টেনে নিতে শিখে গেছে । পয়সাও ঘুরছে , বুঝলি ! হাত বদলাচ্ছে শুধু ।“

আমি চুপ করেই রইলাম । এভাবে তো ভেবে দেখিনি কখনও ।

https://sankhamanigoswami.blogspot.com/2020/11/pub-9792609886530610_1.html







কেরালার বৃহত্তম জিপলাইন adventure sport

  ### কেরালার বৃহত্তম জিপলাইন ভারতের দক্ষিণাঞ্চলের রাজ্য কেরালা, যার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও বৈচিত্র্যময় পরিবেশ পর্যটকদের আকর্ষণ করে, সেখানে এ...