বাতিল
অর্পণ ইংরেজি মাধ্যমে পড়া ছেলে । ভাল ছাত্র
ছিল ও , পড়ার চাপেই কিছু মানসিক সমস্যা , বলা ভাল মানসিক জড়তা দেখা যায় ওর । কথায় বলে
বিপদ কখনও একা আসে না । অল্প দিনের ব্যবধানে অর্পণের বাবা – মা দু’জনেই গত হলেন । দেখার
মত ছিল এক দিদি । সেও সন্তান প্রসব করতে গিয়ে মারা গেছে মাস দুয়েক আগে । দুনিয়ার নিয়ম
মেনেই অর্পণের ঠাঁইনাড়া হতে সময় লাগেনি । না খেতে পেয়েই মরত , যদি না পাড়ার সাইকেল
সারাইওয়ালা ওকে নিজের দোকানের কাজে ডেকে নিতেন ।
টোটো এসে দাঁড়িয়েছে একটা দোকানের সামনে ,
চাকায় পাম্প দিতে হবে । কিছু লোক প্রয়োজনের থেকে বেশি অপ্রিয় সত্যি কথা বলে ; টোটো
চালকও তেমনি । উপযাচক হয়ে বলল --- “কাকা , অসহায় ছেলেটাকে দিয়ে ফালতু খাটিয়ে নিচ্ছো
। দু’চাকার কাজ শিখে ও কি করে খেতে পারবে এই বাজারে ?” এইসব লোকের সাথে কথা বাড়ানোর
মানে হয়না , তবুও কাকা বললেন --- “দু’বেলা দু’মুঠো খাওয়ার ব্যবস্থা তো করতে পারবে
, শিয়াল – কুকুরের মত তো এঁটো খুঁটে খেয়ে বাঁচতে হবেনা । সেটুকুই বা কম কী বল !”
চড়া রোদ উঠেছে আজ । ফ্রি – হুইল খোলার যন্ত্রটা
অর্পণকে আনতে বললেন কাকা । চোখের সামনে থাকা জিনিসটা অর্পণ কিছুতেই খুঁজে না পাওয়াতে
আর মেজাজ সামলাতে পাড়লেন না প্রবীণ মানুষটি । মুখ দিয়ে বেরিয়ে গেল --- “তোর দ্বারা
কিস্যু হবে না । তোর মরে যাওয়াই ভাল ।“
আবারও বোঝা গেল , যারা বাতিলের খাতায় চলে
যায় , সমাজের কাছে তাদের কোনও দাম নেই । করোনাকালে আরওই বেশি করে নেই ।
-------------------------
https://sankhamanigoswami.blogspot.com/2020/11/pub-9792609886530610_30.html

কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Don't forget to like, comment, share and subscribe to my Blog. Thank you.