মঙ্গলবার, ২৪ নভেম্বর, ২০২০

তিলোত্তমা

           মেয়েদের অনেকগুলো জীবন । বাপের বাড়ির জীবন - শ্বশুরবাড়ির জীবন, বিয়ের আগের জীবন-বিয়ের পরের জীবন , চল্লিশের আগের জীবন এবং চল্লিশের পরের জীবন । নিজেকে দেখতে সুন্দর লাগুক , সবাই ফিরে ফিরে দেখুক , কে না চায় । মেয়েরাও চায় , ছেলেরাও চায় । কিন্তু মেয়েদের চাওয়াটা বিয়ের পরে, ব্যতিক্রম ছাড়া পাল্টে যায় সন্তান ধারণ করতে গিয়ে । এ নিয়ে মেয়েদের মধ্যে একটা নিরাপত্তাহীনতা কাজ করে । তাকে কী আর আগের মত সুন্দর লাগছে , এখনও কী ছেলেরা তাকে দেখে মুগ্ধ হয় --- এই কথাটা চল্লিশ এবং তদূর্ধ্বরা মনে মনে বারবার যাচাই করে নেন । এই প্রক্রিয়ার সাথে আত্মবিশ্বাসের একটা ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক আছে । আমি রূপে তোমায় ভোলাবো না , ভালবাসায় ভোলাব --- কথাটা শুনতে ভাল , বাস্তবে নয় । আজকাল কাজটা তুলনামূলক ভাবে সহজ হয়ে গেছে । ফেসবুকে , ইন্সটাগ্রামে , হোয়াটসঅ্যাপে ছবি আপলোড করলেই হল । তারপর শুধু দেখার অপেক্ষা কত জনে 'লাইক' করে , কত জনে ভালবাসার রক্তিম চিহ্ন এঁকে দেয় ! তিলোত্তমাও কোনও ব্যতিক্রমী চরিত্রের মেয়ে নয় । স্কুলে পড়ার সময় থেকে বিয়ের আগে অবধি অনেক ছেলে তাকে প্রেমের প্রস্তাব দিয়েছে । ডাকসাইটে সুন্দরী , বিদুষী , রূপচর্চায় পারদর্শী তিলোত্তমা সেইসব প্রস্তাব ফুঁৎকারে উড়িয়ে অদ্ভুত আনন্দ পেয়েছে । তিলোত্তমা এখনও সাজতে ভালবাসে । তার বিশ্বাস , নিজেকে সুন্দর রাখলে মন ভাল থাকে । তিলোত্তমা এখন এক ষোড়শীর জননী , তৎসত্ত্বেও শারীরচর্চা এবং ডায়েটিং করে পঁচিশ বছর আগের খুকি-খুকি , কচি-কচি ভাবটা অনেকটা ধরে রাখতে পেরেছে । বাড়ির সবচেয়ে প্রিয় আসবাব , পূর্ণদৈর্ঘ্যের আয়নাটার সামনে ঘরের দরজা বন্ধ করে দাঁড়ালে , তিলোত্তমা সেটা নিজেই ভাল বোঝে । তিলোত্তমা এখন হাওড়ার একটা গার্লস কলেজে পড়ায় , আর অবসরে সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজের প্রচুর ছবি দেয় , প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের পোশাকে , বিভিন্ন ভঙ্গিমায় । অচেনা , অল্প চেনা তো বটেই , পুরনো বন্ধুরাও ওর রূপের তারিফ করে । দু'দিন আগে টপ আর হট প্যান্ট পরে , একটু সাজুগুজু করে, ছবি আপলোড করার পরে ওর পরিচিত মহলে ঝড় বয়ে গেছে । অধিকাংশই যে বাঁকা হাসি হেসেছে , সেটা তিলোত্তমা জানে এবং থোড়াই কেয়ার করে । কলেজে দু'টো ক্লাসের ফাঁকে , টিচার্স রুমে বসে ও ফেসবুক মেসেঞ্জার চেক করছিল । পরপর স্তুতি , দু'একটা কুপ্রস্তাব পেরিয়ে এসে একটা মেসেজে হঠাৎ চোখ আটকে গেল তিলোত্তমার । পাঠিয়েছে অনিমেষ বসু । কোন অনিমেষ ? তিলোত্তমার ফ্রেন্ডলিস্টে অনেকগুলো অনিমেষ আছে । অন্যগুলোর মত মার্ক অ্যাজ রেড করতে গিয়েও থমকে গেল তিলোত্তমা । মেসেজটা খুলল । আর তারপরেই মনটা ভাল হয়ে গেল ওর । যাদবপুরে তুলনামূলক সাহিত্য নিয়ে পড়ার সময় অনি ওর ব্যাচমেট ছিল । একটু ব্যথা কেসও হয়েছিল । তারপর বহুদিন যোগাযোগ নেই । সেই অনি বাংলা হরফে সুন্দর করে লিখেছে --- আমার যৌবনের বৃন্দাবন কলকাতায় তো আমার সঙ্গে থাকলি না , অন্তত বার্ধক্যের বারানসী জলপাইগুড়িতে আমার কাছাকাছি থাকিস । আমি ধুপগুড়ি কলেজে পড়াই এখন । লেখার শেষে দু'টো দাঁত বের করা হাসির ইমোজি । 

        ঠোঁটে স্মিত হাসি ধরে রেখে আরেকবার আয়নার সামনে এসে দাঁড়ালেন তিলোত্তমা মিত্র । এখনও তাঁকে বিগতযৌবনা বলা যায় না তাহলে !  







সেলুন

 ---- কাকা , টিউবের আলোটা এখন ঠিক আছে না ? কাল রাতে চোকটা ঠিক করলাম তো । এর চেয়ে আর কত ভাল আলো দেবে বলো , এইটার বয়স কম হল নাকি ? তাও সাত-আট বছর তো হবেই । দোকান খোলার সময়কার , তাই না কাকা ?

খোকনের এক নাগাড়ে প্রশ্নের উত্তরে রামলোচন শুধু বললেন --- হুম । তারপর হাতে খানিকটা শেভিং ফোম ঢেলে এগিয়ে গেলেন পরাশরবাবুর দিকে । উনি এই দোকানের নিয়মিত খদ্দের । ব্যাঙ্কে কাজ করেন , আর দু'দিন বাদে বাদে দাঁড়ি শেভ করান এবং গোঁফ ছাঁটান । ব্যস্ত মানুষ , দাঁড়ি কাটতে কাটতেও একাধিক ফোন আসে , রামলোচনকে হাত থামিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে হয় । এবার টিউবটা পাল্টাতেই হবে , ভাবতে ভাবতে পরাশরের গালে ফোম লাগাচ্ছিল সে । পরাশর চোখ বন্ধ করে আরাম করছিলেন , কিংবা কিছু চিন্তা করছিলেন । কারণ হঠাৎ হাত তুলে রামলোচনকে বললেন --- থামো , দু'মিনিট দাঁড়াও , একটা ফোন করে নিই । গালে ফোম লাগানো , তাই পরাশর সেভ করা নাম্বারটা ডায়াল করে , লাউডস্পিকার মোডটা অন করলেন। কয়েক সেকেন্ড রিং হওয়ার পরে ওপাশ থেকে কেউ ফোনটা ধরল 

---- হ্যালো 

---- হ্যাঁ শশাঙ্ক , আমি পরাশর বলছি । আমার ডেস্ক খুলে দেখো , কাল একটা কার লোন অ্যাপ্রুভ করেছি । ছ'লাখ সাতচল্লিশ হাজারের । ওটা বার করো । আর কাস্টমারের সি আই এফটা খুলে দেখতো , আগে কোনও লোন আছে কিনা , ক্লোজ করেছে কিনা ? আমার যেন মনে হচ্ছে একটা টু হুইলারের লোন ছিল । দেখো ভাল করে । তারপর আমাকে জানাও । নির্দেশটা দিয়ে পরাশর রামলোচনকে আবার কাজ শুরু করতে ইশারা করলেন । ক্ষুরের ব্লেড পাল্টাতে পাল্টাতে রামলোচন জিজ্ঞেস করল 

---- আজ আপনার ছুটি ?

হ্যাঁ । বাড়ির কতগুলো কাজ আছে , তাই ছুটি নিয়েছি । পরাশর উত্তর শেষ করার আগেই তাঁর ফোন বেজে উঠল । টানা পাঁচ মিনিট চুপ করে , পরপর ইতিবাচক ভঙ্গীতে ঘাড় নেড়ে যাওয়ার পর পরাশরের মুখে হাসি ফুটল । 

--- আরে টু হুইলারের লোন নেওয়ার সময় আমিই ছিলাম তো , আমার মনে আছে । ব্যাঙ্কের লোক হয়ে যদি এসব করে , কাকে আর কী বলব বলো ? একটা লোন ক্লোজ না করে , আরেকটার জন্য অ্যাপ্লাই করেছে ! ঠিক আছে শোন , লোনটা বাতিল করো , বড় সাহেবকে জানাও আর পার্টিকে খবর দাও । 

ফোনটা ছেড়ে হাসি হাসি মুখে রামলোচনের দিকে তাকালেন পরাশর 

---- আচ্ছা রামলোচন, যে সব বাবুরা মোটা মাসমাইনের চাকরি করে , সেই সব অফিসের বাইরে প্রতিদিন কাবুলিওয়ালাদের ভিড় হয় কেন বলতো ?

রামলোচন চেষ্টা করে কিছু না বোঝার হাসি হাসল । এ কথার উত্তর দেওয়া তাকে মানায় না । 

পরাশর আবার বললেন --- যাবৎ জীবেৎ সুখং জীবেৎ , ঋণং কৃত্বা ঘৃতং পিবেৎ --- বুঝেছো । রামলোচন আবার গুটখা খাওয়া দাঁত বের করে হাসল । সব কথার উত্তর দিতে নেই । মাথার চুল পাকিয়ে, দশ বছর দোকান চালিয়ে , এটুকু সে শিখেছে ।      








রবিবার, ২২ নভেম্বর, ২০২০

বাস্তবানুগ ?

 



            সত্যজিৎ রায়ের 'গণশত্রু' ছবির দৃশ্য । ছোটমুখে বড় কথা হবে , কিন্তু ছবির এই অংশটা আমার ভীষণ দুর্বল মনে হয় । ছবিতে এই দু'জন সহোদর । বড় ভাই সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় আর ছোট ধৃতিমান চট্টোপাধ্যায় । দু'জনেই একই শহরের কৃতী মানুষ । কিন্তু বড় ভাই আদর্শবাদী , আপসহীন মানুষ । আর ছোটভাই জীবনে চলার পথে নীতি-আদর্শের তোয়াক্কা করেন না । 'ঘরে-বাইরে' উপন্যাসে রবীন্দ্রনাথ লিখেছিলেন , পৃথিবীতে কিছু মানুষ আছে , যাঁদের স্বভাব জেতা । ছোটভাই ঠিক সেই ধরণের মানুষ । গল্প যে শহরকে ঘিরে আবর্তিত হয় , তিনি সেই শহরের পুরপিতা । শহরের সবচেয়ে জনপ্রিয় মন্দিরের পরিচালন সমিতির হোতা । সেই মন্দিরের চরণামৃতের জলে জীবাণু ধরে ফেলেন বিজ্ঞানমনস্ক , পেশায় শহরের নামকরা ডাক্তার বড়ভাই । অবিলম্বে মন্দির এবং চরণামৃতের তথা জলের উৎস বন্ধ করার এবং তা পরীক্ষা করে প্রয়োজনীয় মেরামত করার পক্ষে সওয়াল করে , উপযুক্ত তথ্য-প্রমাণসহ প্রবন্ধ লিখে পাঠান শহরের জনপ্রিয় দৈনিকে । পুরপিতা ভাই , শেষ মুহূর্তে কাগজের সম্পাদকের ওপর চাপ সৃষ্টি করে , সেই প্রবন্ধের প্রকাশ আটকে দেন । দাদার কাছে এই কাজের কারণ ব্যাখ্যা করে ধর্মের দোহাই দেন , মানুষের ভাবাবেগে আঘাত লাগার কথা বলেন । কিন্তু অচিরেই বেরিয়ে আসে প্রবন্ধ প্রকাশের বিরুদ্ধে আসল কারণটি --- মন্দিরের প্রণামী বাবদ আয় বন্ধ হয়ে যাওয়া । মানুষের জীবন বাঁচানো আগে , না মন্দির আগে , এই প্রশ্নে দুই ভাইয়ে সংঘাত বাধে । বিবাদ গড়ায় শহরের সবচেয়ে বড় দুর্গা মণ্ডপে আয়োজিত বিতর্কসভায় । সেই বিতর্ক সভারই দৃশ্য এটি । গল্পটা সবার জানা । তবু বললাম , এই দৃশ্যটি আমার ভাল না লাগার কারণ ব্যাখ্যা করার মুখবন্ধ হিসেবে । 

            সত্যজিৎ রায়কে আমরা বাস্তবানুগ ছবি নির্মাতা হিসেবে শ্রদ্ধা করি । কিন্তু ছবির এই অংশটি কী খুব বাস্তবসম্মত ? শহরের পুরপিতা , তাঁর প্রথিতযশা, ডাক্তার দাদার সঙ্গে দুর্গা মণ্ডপে দাঁড়িয়ে মাইক্রোফোন কেড়ে নিয়ে তর্ক করবেন সর্বসমক্ষে? তাঁর বক্তব্য রাখা বন্ধ করে দেবেন গায়ের জোরে ? বাস্তবের রাজনীতিকেরা এত বোকা নন আমাদের দেশেও । একটা দুগ্ধপোষ্য শিশুও বোঝে এভাবে কণ্ঠরোধ করতে গেলে বিপক্ষেরই সুবিধা হয় । যেমনটা আমরা দেখি এই ছবিতে । কিন্তু চিত্রনাট্যের অঙ্ক মেলাবার জন্য সত্যজিৎ রায় অবাস্তব দৃশ্যের অবতারণা করবেন কেন ? তিনি তো মিস্টার পারফেকশনিস্ট । বুদ্ধি তাঁর শানিয়ে নেওয়া , কিছুই দৃষ্টি এড়ায় না । তাহলে এত মোটা দাগের দৃশ্য কেন তাঁর ছবিতে ?

             সত্যজিৎ রায় যদি বেঁচে থাকতেন , অবশ্যই আমি তাঁকে নিজের বক্তব্য জানিয়ে চিঠি লিখে উত্তরের অপেক্ষায় উন্মুখ হয়ে বসে থাকতাম । তিনি যেমন মানুষ ছিলেন , আমার ধারণা , প্রশ্নগুলোর মুখোমুখি হলে তিনি খুশিই হতেন ।  


Ganashatru


https://g.co/kgs/Co8rWx



ফিচার প্রতিবেদন


ফিচার সংবাদ

ফিচার নিউজ


ফিচার পাতা

ফিচার লেখা


news feature article


news feature story


news feature example



শনিবার, ২১ নভেম্বর, ২০২০

শীতের সকাল

কুয়াশা মাখা শীতের সকাল 
গরম ভাত , মুসুর ডাল 
লেপের ওম , ধূমায়িত কাপ 
হাতে হাত ঘষে নেওয়া উত্তাপ ।








বাংলা কবিতার ছন্দ

বাংলা কবিতা রোমান্টিক

বাংলা কবিতা

বাংলা কবিতা ক্যাপশন

বাংলা কবিতার লাইন



বাংলা কবিতা প্রেমের

কাশফুলে ছুটির আবেগ , দোলে ছুটি, ছুটি ছুটি ঢেউ...

 

sankhamanigoswami.blogspot.com


sankhamanigoswami.blogspot.com



sankhamanigoswami.blogspot.com




কাশফুলের ছবি

কাশফুল

কাশফুল নিয়ে ক্যাপশন



ব্যারাকপুর মেলা ২০২০


"এখানে আমার চেয়ে বয়সে বড় কেউ আছেন কি ? যদি থাকেন , তবে তিনি আমার প্রণাম নেবেন ।"  – একথা বলেই ব্যারাকপুর মেলা ২০২০ – এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মঞ্চে বক্তব্যে ইতি টানলেন বর্ষীয়ান অভিনেত্রী , আম বাঙালির কাছে চারুলতা , মাধবী মুখোপাধ্যায় । মেলা শুরু হয়েছে ৪ জানুয়ারি , চলবে ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত । স্টেশন সংলগ্ন দেবশ্রী সিনেমা হল প্রাঙ্গণে ব্যারাকপুর পুরসভা আয়োজিত এই মেলার উদ্বোধন করেছেন পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার মুখ্য সচেতক নির্মল ঘোষ । মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন ব্যারাকপুর পুরসভার পুরপ্রধান উত্তম দাস , ব্যারাকপুর তথা উত্তর চব্বিশ পরগণা গবেষক কানাইপদ রায় , জাতীয় শিক্ষক তুষার সামন্ত , অধ্যাপক – গবেষক অপূর্বকুমার দে প্রমুখ । প্রতিদিন মেলা চলবে বেলা দুটো থেকে রাত ন’টা পর্যন্ত । মেলায় স্বনির্ভর গোষ্ঠীর একাধিক স্টল আছে , আছেন গ্রাম থেকে আসা হস্তশিল্পীরাও । খাবারের স্টলের মধ্যে আছে চন্দননগরের জলভরা ও অন্যান্য মিষ্টির দোকান । এছাড়াও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান , সেমিনার ও মৎস্য প্রদর্শনী চলবে প্রতিদিন । জনসচেতনতা বৃদ্ধি করতে মেলা চলাকালীন মাইকে লাগাতার প্রচার চলছে প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগ ব্যবহারের বিরুদ্ধে ।
 




















শুধোল ,

আমাদের গেছে যে দিন ,

একেবারেই কি গেছে ?

কিছুই কি নেই বাকি ?

একটুকু রইলেম চুপ করে ,

তারপর বললেম ,

রাতের সব তারাই আছে

দিনের আলোর গভীরে ।“

(হঠাৎ দেখা , রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর)

 

চারুলতা ২০২০ । ৪ জানুয়ারি ব্যারাকপুর মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মাধবী মুখোপাধ্যায় । মেলার উদ্বোধন করেছেন বিধানসভার মুখ্য সচেতক নির্মল ঘোষ ।




 













পটচিত্র শিল্প,হস্তশিল্প তৈরির প্রশিক্ষণ,হস্তশিল্প মেলা ২০২১,হস্তশিল্প প্রোডাক্ট,হস্তশিল্প মেলা,হস্তশিল্প তৈরি,হস্তশিল্প,পাটজাত হস্তশিল্প,বাংলাদেশের হস্তশিল্প,handicrafts with waste material,handicrafts with paper,handicrafts at home,handicrafts of india,handicrafts with newspaper,handicrafts with wool,handicrafts with cardboard,handicrafts of rajasthan,handicrafts for kids,wall hanging handicrafts and handlooms,handicrafts with woolen thread







বুধবার, ১৮ নভেম্বর, ২০২০

এয়ার ফ্রায়ার

 তেলেভাজা ভালবাসি 

কোনও বাধা মানিনা 

এয়ারেতে ফ্রাই হয় 

কীভাবে , তা জানিনা ;

কী জানি কি দিনকাল 

কিসে ভাজা হয় সব 

জিম-খানা থেকে আসে 

হেলথ-ফ্রিকদের রব ! 






ছড়া


ছড়া কবিতা

ছড়া বাচ্চাদের বাংলা


ছড়া কাকে বলে


সোমবার, ১৬ নভেম্বর, ২০২০

সুযোগ

               শান্তনু বসু নিপাট ভদ্রলোক গোছের মানুষ । একটা কাগজের অফিসে কাজ করে , অ্যাকাডেমিতে নাটক দেখতে যায় আর অনেকগুলো পূজাবার্ষিকী পড়ে । বয়স ছত্রিশ , এখনও বিয়ে করেনি । কিন্তু করার ইচ্ছে আছে ষোলো আনা । শান্তনু আসলে দুধুভাতু টাইপের লোক । যারা মনে মনে ভাবে অনেককিছু , কিন্তু শেষ পর্যন্ত করে উঠতে পারে না , শান্তনু তাদের দলে । শখ আছে , কিন্তু সাহস নেই । অফিসের অবিবাহিতা কলিগ পারমিতার সঙ্গে দিব্যি বন্ধুত্ব , শান্তনুর খুবই ইচ্ছে করে বিয়ের কথাটা পাড়তে, কিন্তু সাহসে কুলোয় না । যদি পত্রপাঠ প্রস্তাব নাকচ করে দেয় ! তাহলে আমও যাবে , ছালাও যাবে । বিয়েটাও হবেনা , সান্নিধ্যটাও হয়ত চিরকালের মত হাতছাড়া হবে , নয়ত আর আগের মত থাকবে না । শান্তনুর বন্ধুরা বেশিরভাগই বিয়ে করে ফেলেছে আর ওকে করার জন্য নিয়মিত খোঁচাচ্ছে । কিন্তু বন্ধুদের সাথে শান্তনুর স্বভাবে একটা মূলগত তফাৎ আছে । আড্ডায় বন্ধুদের স্ত্রীদের নিয়ে সরস আলোচনা কিংবা দেখাসাক্ষাৎ হলে তাঁদের সঙ্গে ফ্লার্ট করা শান্তনুর না পসন্দ , কোথায় যেন একটা বাধে । ওর এই মার্কামারা ভালোমানুষি নিয়ে বন্ধুরা হাসাহাসি করে , ও গা করে না । আর হ্যাঁ , শান্তনুর একটুআধটু লেখালিখি করার অভ্যেসও আছে । দু'একটা গল্প পত্রপত্রিকায় ছাপাও হয়েছে । আজকাল নেটে ওয়েব সিরিজ দেখতে বসো , কিংবা পূজাবার্ষিকী পড়তে বসো , সব জায়গাতেই অধিকাংশ গল্পে রগরগে কনটেন্টের ছড়াছড়ি । কিছুটা তার প্রভাবেই হয়ত , কল্পনাবিলাসী শান্তনু বসুর মাথায় দু'তিন দিন ধরে একটা প্রশ্ন  ঘুরছে । ব্যোমকেশ , সত্যবতী আর অজিত এক বাড়িতে থাকে । ব্যোমকেশ বিভিন্ন কেস সল্ভ করতে বেরিয়ে যায় , কখনও বা কয়েকদিনের জন্য উধাও হয়ে যায় , বন্ধুর ভরসায় বৌকে বাড়িতে রেখে । কেন ? এতটা আস্থা কেন বন্ধুর উপর ? অজিত কী একেবারে তার মতই হাঁদারাম গড়গড়ি ? বৌঠানের প্রতি কোনও দুর্বলতা তৈরি হয়না কখনও ? সত্যবতীও কী একেবারে পতিঅন্তপ্রাণ ? রবীন্দ্রনাথ অব্দি 'নষ্টনীড়' উপন্যাসে একাকীত্বে ভোগা বৌদির , দেওরের প্রতি অনুরক্ত হওয়ার কথা ভাবতে পারলেন সেই যুগে বসে , আর শরদিন্দু এতগুলো ব্যোমকেশ কাহিনী , অবৈধ সম্পর্ক নিয়ে গল্প লেখার পরেও , এই সহজ সম্ভাবনাটা নিয়ে নাড়াঘাঁটা করলেন না কেন ? বিষয়টা শান্তনুকে বেশ ভাবাচ্ছে । ওদের সন্ধের ঠেকে অনেক বন্ধুকেই তো বলতে শুনেছে , অমুকের বউকে দারুণ লাগে । এমনকি বন্ধুর জন্য প্রেমের প্রস্তাব বয়ে নিয়ে গিয়ে , নিজের কেস ফাইল করে আসার ঘটনাও ওদের বন্ধুদের বৃত্তেই ঘটেছে । তাহলে অজিত-সত্যবতী নয় কেন ? 

             কথায় বলে , যেখানে বাঘের ভয় , সেখানে সন্ধে হয় । শান্তনু যখন এই অলস ভাবনায় মেতে ছিল , তখন ভাগ্যদেবী নিশ্চয়ই অলক্ষ্যে হেসেছিলেন ! নইলে এমনটা হবে কেন ? অনীক নতুন বিয়ে করেছে কিছুদিন হল । অনীকের বৌ , নবনীতার জন্মদিনে , ওদের বাড়িতে আজ শান্তনুর নেমন্তন্ন সন্ধেবেলায় । অফিস সেরে , একটা গিফট কিনে , সন্ধে নামতেই শান্তনু পৌঁছে গেল অনীকের বাড়িতে । আর কী দুর্ভাগ্য , কলিং বেলটা টেপার ঠিক আগে ঝুপ করে লোডশেডিং হল । শান্তনু একবার গলা খ্যাঁকারি দিয়ে লোহার গেটটা ধরে নাড়াতেই নবপরিণীতা নবনীতা বেরিয়ে এল । অভ্যর্থনা জানিয়ে গেট খুলে দিয়ে ঘরে বসতে বলল । তখনও ঘরে একটা ইমারজেন্সি লাইট কিংবা মোমবাতিও জ্বালানো হয়নি । শান্তনুর অস্বস্তি কিছুটা কমিয়ে মিনিট দুয়েক পরে নবনীতা একটা বড় মোম জ্বালিয়ে ঘরে ঢুকল । নবনীতা বুদ্ধিমতী , নিজেই গল্প করা শুরু করল । পরিবেশটা সবে শান্তনু একটু উপভোগ করতে শুরু করেছে , এমন সময়ে অনাহূত অতিথির মত অনীকের ফোন এলো শান্তনুর মোবাইলে 

--- তুই এসে গেছিস ?

--- হ্যাঁ , তোদের বাড়িতেই বসে আছি , নবনীতার সঙ্গে গল্প করছি । 

--- লোডশেডিঙে বাড়িতে বসে কী করবি ? শোন , আমি পাড়ার মোড়ে আছি , চলে আয় । 

শান্তনুর এই মুহূর্তে পাড়ার মোড়ে যাওয়ার একেবারেই ইচ্ছে ছিল না , কিন্তু অনীক যদি আবার উল্টোপাল্টা কিছু ভাবে , এই ভেবে শান্তনু ওদের বাড়ি থেকে বেরিয়ে এল । কিছুক্ষণ পরে , পাড়ার মোড়ে দাঁড়িয়ে অনীকের সাথে বিস্বাদ চা খাওয়ার সময়ে , ওর মুখে বেশ একটা নিশ্চিন্তির ভাব লক্ষ্য করল । শান্তনু মর্মে মর্মে উপলব্ধি করল , যে গল্পে বাস্তবের সব বিবাহিত পুরুষ ব্যোমকেশ বক্সী , সেই গল্পে অজিতদের কোনও চান্স নেই ! 

                                   ------------------------------------------------      






কেরালার বৃহত্তম জিপলাইন adventure sport

  ### কেরালার বৃহত্তম জিপলাইন ভারতের দক্ষিণাঞ্চলের রাজ্য কেরালা, যার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও বৈচিত্র্যময় পরিবেশ পর্যটকদের আকর্ষণ করে, সেখানে এ...