মেট্রোর এ সি রেকের এই দরজার পাশে দাঁড়ানোর জায়গাটা খুব পছন্দের অনসূয়ার । পার্ক স্ট্রিটের আগে এদিককার দরজাটা খুলবে না , আর শুভ্র আর ও নামবে রবীন্দ্র সদনে । দু'জনে আঙুলে আঙুল ছুঁইয়ে বেশ ঘনিষ্ঠভাবে দাঁড়িয়েই গল্প করছিল । মানুষের ষষ্ঠ ইন্দ্রিয় সময় বিশেষে খুব প্রখর হয়ে ওঠে । সেই কারণেই কি না কে জানে , অনসূয়ার চোখ হঠাৎ চলে গেল বিদ্যুৎবেগে ছুটে চলা মেট্রোর কাচের দরজার বাইরে অন্ধকারের দিকে । আর তারপরেই যা চোখে পড়ল , তাতে হৃদপিণ্ডটা এক লাফে যেন গলার কাছে উঠে এল । মেট্রোর অন্ধকার টানেলে লাইন ধরে উল্টোদিকে হাঁটছে জামা-প্যান্ট পরা একটা লোক । জামা গুঁজে পরা , হাতে চামড়ার ব্যাগ , মুখ মাটির দিকে । অনসূয়া প্রচণ্ড ভয় পেয়ে শুভ্রর দিকে তাকাতেই দেখল , তারও চোখ লোকটার দিকে । শুভ্রর হাত এখন বরফের মত ঠাণ্ডা । সে শুকনো গলায় কোনওমতে অনসূয়াকে বলল -- "চাঁদনি চক আসলে নেমে মোটর ম্যানকে বলবো ।" ওদের আর সেদিন অ্যাকাডেমিতে নাটক দেখা হল না । দু'জনেই বাড়ি ফিরে গেল ।
পরদিন বহুল প্রচারিত বাংলা দৈনিকের পাঁচের পাতায় ছোট্ট করে একটা খবর বেরোল এই মর্মে --- "সেন্ট্রাল আর চাঁদনি চক মেট্রো স্টেশনের মাঝে , রেল লাইন ধরে এক ব্যক্তিকে উল্টোদিক বরাবর হাঁটতে দেখে মেট্রো কর্তৃপক্ষকে জানান দুই যাত্রী । ট্রেন চলাচল বন্ধ রেখে দুই প্রান্ত থেকেই খোঁজাখুঁজি শুরু হয় , কিন্তু কারও দেখা মেলেনি ।"
একমাত্র অনসূয়া আর শুভ্র জানে তারা ভুল দেখেনি ।
https://sankhamanigoswami.blogspot.com/2020/04/pub-9792609886530610_57.html

কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Don't forget to like, comment, share and subscribe to my Blog. Thank you.