সোমবার, ১১ মে, ২০২০

ব্যাখ্যাতীত


আমার এক বন্ধু ১৯৯৮ সালে আত্মহত্যা করেছিল যেদিন ঘটনাটা ঘটে , তার আগের দিন সন্ধে থেকে রাত সাড়ে দশটা অবধি আমাদের বাড়িতে জমিয়ে আড্ডা দিল মায়ের সাথে গল্প করলো মা খেয়ে যেতে বললেন , খেলোনা চলে গেলো জলপাইগুড়িতে  রাত সাড়ে দশটা মানে তখন অনেক রাত কারও বাড়িতে গেলে কেউ খুব দরকার না থাকলে সাধারণত অত দেরী করত না যাইহোক , খেয়েদেয়ে শুয়ে পড়লাম তারপর হঠাৎ পরদিন অন্ধকার কাটতে না কাটতে মাথার কাছের ল্যান্ড ফোনটা বেজে উঠলো ওই সহপাঠীর বাবা কাঁপা কাঁপা গলায় জানালেন , বাড়িতে নেই , পাড়ায় নেই , কোথাও নেই ওকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না দেরী না করে সাইকেলটা নিয়ে বেরিয়ে পড়লাম যাওয়ার পথে আরও কয়েকজন সহপাঠীকে ডেকে নিলাম সকাল 'টা পর্যন্ত গোটা শহর চষে ফেলেও ওর কোনও খোঁজ পাওয়া গেলোনা অগত্যা কোতোয়ালিতে গিয়ে মিসিং ডায়েরি করা হল তারপর আমরা ফিরে আসছি , এমন সময় সদর গার্লসের সামনের ব্রিজে ওর চটি জোড়া দেখলাম , আগের দিন ওটা পরেই আমাদের বাড়িতে এসেছিল আবার ছুটলাম থানায় এটা জানাতে মনে আছে কোতোয়ালির ভারপ্রাপ্ত আধিকারিকের ঘরে দল বেঁধে ঢুকে আমরা নির্দেশ দেওয়ার সুরে বলেছিলাম ,---“ডুবুরি নামানোর ব্যবস্থা করুন !” সেই আধিকারিক আমাদের কিছু একটা বোঝাতে যেতেই এক সহপাঠী চিৎকার করে টেবিলের কাচের ওপর চাপড় মেরে বলেছিল ,---- “আপনি বলুন ডুবুরি নামাবেন কি না ।“ সেই নেপালি ভদ্রলোক অত্যন্ত সহৃদয় ছিলেন বলতে হবে হাজতে না ঢুকিয়ে আমাদের আবেগটাকে সম্মান দিয়ে চেয়ার ছেড়ে উঠতে উঠতে শান্ত স্বরে শুধু বলেছিলেন , ----“ ঠিক আছে , চলো দেখি কোথায় চটি দেখেছো ।“
     মূলত এই মানুষটির আন্তরিক চেষ্টায় আড়াই দিন পর তিস্তা উদ্যানের সামনের সেতুটির কাছে ওর ফুলে ঢোল হয়ে যাওয়া , বিকৃত 'বডি' পাওয়া গেল ময়না তদন্তের রিপোর্ট অনুযায়ী , আমাদের বাড়ি থেকে বেরোনো আর ওর করলা নদীতে ডুবে মৃত্যুর সময়ের পার্থক্য সাড়ে তিন ঘণ্টা অথচ আমি কিচ্ছু বুঝিনি , বিন্দুমাত্র আভাস পাইনি ওর মনে কী চলছে এখনও বারবার ওর শেষ কথাগুলো মনে করার চেষ্টা করি তাতে মনে হয় সেদিন একটা কথাই কানে লেগেছিল একটু ---- “সব কাছের লোক , কাছের হয়না ।“ 

আমি শ্মশানে যাইনি যার সাথে এফ ডি আই স্কুলের দোতলার হল ঘরের সামনে , সিঁড়িতে বসে টিফিন ভাগ করে খেতাম , তাঁর ওই চেহারাটা আর দেখতে চাইনি একই সঙ্গে পুরস্কার আর তিরস্কার জোটার এমন মর্মান্তিক অভিজ্ঞতা যেন কারও না হয় প্রসঙ্গত , এই ঘটনার সপ্তাহখানেক আগে সদর হাসপাতালে ওর অ্যাপেনডিক্স অপারেশন হয়েছিল এবং তখনও সেলাই কাটা হয়নি ঘটনার দিনও ওদের বাড়ির সদর দরজার তালা বন্ধই ছিল মানেটা দাঁড়ায় পাঁচিল টপকে বের হয়েছিল ওই অবস্থায় সেটা কীভাবে সম্ভব , সেটাও আমার কাছে এখনও একটা বড় প্রশ্ন  

পুনশ্চ আমাদের আরও একজন সহপাঠী বছর দুয়েক আগে কোচবিহারের রাস্তায় গাড়ি দুর্ঘটনায় মারা গেছে সেদিন অন্য এক সহপাঠী কোনও একটা কাজে গিয়ে ওই রাস্তাতেই বাসে ফিরছিল   (আমরা সবাই- স্কুলে এক ক্লাস , এক সেকশন , অধিকাংশ সময়ে এক বেঞ্চও ) আসার পথে বাসের জানলা দিয়ে দেখে একটা গাড়ির সামনের দিকটা বিচ্ছিরিভাবে দুমড়ে মুচড়ে গেছে শোনে ,একজন ঘটনাস্থলেই মৃত ভাগ্যের কী নির্মম পরিহাসজলপাইগুড়িতে ফিরে আসার কিছুক্ষণ পরে জানতে পারে , ওই দুর্ঘটনাগ্রস্ত গাড়িটিতে আমাদেরই আরেক সহপাঠী ছিল , সে - মারা গেছে
কী বলব একে ? নিয়তি ? জানিনা ভালো থাকিস তোরা প্রণাম নিস  



Extrasensory perception

https://g.co/kgs/qaEhwi


বুদ্ধিতে যার ব্যাখ্যা চলে না


extra sensory perception in bengali


extrasensory meaning in bengali

telepathy meaning in bengali

esp






কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Don't forget to like, comment, share and subscribe to my Blog. Thank you.

কেরালার বৃহত্তম জিপলাইন adventure sport

  ### কেরালার বৃহত্তম জিপলাইন ভারতের দক্ষিণাঞ্চলের রাজ্য কেরালা, যার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও বৈচিত্র্যময় পরিবেশ পর্যটকদের আকর্ষণ করে, সেখানে এ...