পরিসংখ্যান বলছে আবাসন শিল্পের বাজারে মন্দা চলছে , কিন্তু তা বলে তো কোথাও নির্মাণকাজ থেমে থাকতে দেখা যাচ্ছেনা। আমরা যেখানে থাকি, সেই ব্যারাকপুর শহরের ছবিটাও এর ব্যতিক্রম নয়। তার মধ্যেই দু' একটিতে নির্মাণ সামগ্রী হিসেবে চিরাচরিত মাটির ইটের বদলে ফ্লাই অ্যাশ ব্রিক বা ফ্যাব ব্যবহার হতে দেখলে তো একটু খোঁজ - খবর নিতেই হয় । ফ্লাই অ্যাশ ইট , মাটি পুড়িয়ে তৈরি ইটের চেয়ে অনেক হাল্কা এবং পোক্ত । আমরা এতদিন ব্যবহার করতাম প্রধানত এঁটেল মাটি পুড়িয়ে তৈরি ইট । ফ্লাই অ্যাশ --- হল উচ্চমানের পোড়া কয়লা বা কয়লার ছাই । আমরা সবাই কমবেশি বাড়িতে কোলবলের ছাই ব্যবহৃত হতে দেখেছি গৃহস্থালির নানা কাজে । অনেক সময় এঁটেল মাটির সাথেও এই কোলবলের ছাই মিশিয়ে ইট তৈরি হত এবং এখনও হয় । ফ্যাব - এ উন্নতমানের কয়লা পোড়ার বা ছাইয়ের সাথে আরও বেশ কিছু উপাদান মেশানো হয় । যেমন ------ কুচি পাথর , সিমেন্ট , জল , কলিচুন , অ্যালুমিনিয়াম পাউডার এবং জিপসাম । এই পদ্ধতিতে তৈরি ইটে জ্বালানি সাশ্রয় হয় , পারদ - দূষণ কমে এবং সামগ্রিকভাবে ইটের নির্মাণ খরচ কুড়ি শতাংশ কমে যায় । সাধারণ ইট থেকে ফ্লাই অ্যাশ ব্রিক অন্তত চল্লিশ শতাংশ হাল্কা অথচ সমতুল মজবুত । ফ্যাবের ব্যবহারে বাড়ির মোট ভর অনেক কমে যায় , ফলে বাড়ির কাঠামোর ওপর চাপ কমে এবং ভূমিকম্পের মত প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের হাত থেকে কাঠামোটিকে বাঁচাতে কয়েক যোজন এগিয়ে থাকে । সাধারণত চলতি ফ্যাবের এক- একটির ওজন আড়াই কেজির মত । দ্বিতীয়ত , দৈর্ঘ্য - প্রস্থ - উচ্চতায় সাধারণ ইটের চাইতে অনেকটা বড় হওয়ায় অনেক কম সংখ্যক ইট লাগে , ফলে খরচ কমে । তৃতীয়ত , ফ্যাবের আগুন প্রতিরোধী ক্ষমতা অনেক বেশি । চতুর্থত , এই ইট তুলনামূলকভাবে অনেক কম ভঙ্গুর । তাই পরিবহণ এবং নির্মাণ চলাকালীন কাঁচামাল অপেক্ষাকৃত কম নষ্ট হয় । পঞ্চমত , এই ইট ব্যবহারে প্লাস্টার খরচ কমে যায় প্রায় পঞ্চাশ শতাংশ । ষষ্ঠত , এতে দেওয়ালে নোনা ধরা বা ড্যাম্প পড়ার সম্ভাবনাও অনেক কম । এ ছাড়াও এই ইট ব্যবহারের আগে মাটির ইটের মত দীর্ঘক্ষণ জলে চুবিয়ে রাখার প্রয়োজন হয়না , ব্যবহারের আগে সামান্য ভিজিয়ে নিলেই চলে । তবে এই ইট গাঁথার সময় ফাঁক - ফোকরগুলিতে খোয়া বা মার্বেল টুকরো ব্যবহার করলে বাড়ির গঠন আরও মজবুত হয় ।
তাপ শোষণ ক্ষমতা না থাকায় উষ্ণ আবহাওয়ার অঞ্চলের জন্যেই এই ইট বেশি উপযুক্ত । তাই এখনও তুলনামূলক ভাবে এর ব্যবহার কম , তবে বিশ্ব উষ্ণায়ন যে হারে লাফিয়ে বাড়ছে , তাতে অদূর ভবিষ্যতে এই ইটের কদর এবং চাহিদা যে ক্রমশ বাড়বে তা নিঃসংশয়ে বলা যায় ।
এখন ব্যারাকপুরে নতুন নতুন যে বহুতলগুলি তৈরি হচ্ছে , সেগুলিতে শুধুমাত্র ফ্লাই অ্যাশ ব্রিক ব্যবহৃত হতেই দেখা যাচ্ছে ।
(তথ্যসূত্র --- ফ্লাই অ্যাশ ব্রিক , উইকিপিডিয়া)
ফ্লাই অ্যাশ ইট
ফ্লাই অ্যাশ
fly ash bricks
fly ash bricks price
fly ash bricks price in Kolkata
fly ash bricks vs red bricks
fly ash bricks size
fly ash bricks price in Hooghly


কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Don't forget to like, comment, share and subscribe to my Blog. Thank you.