বুধবার, ১১ নভেম্বর, ২০২০

চুক্তি

বিয়ে মানে কী ? ভাল থাকার সামাজিক চুক্তি , ভাল রাখারও । শুধু প্রেম আর চারটে দেওয়াল দিয়ে কী সংসার হয় ? হয়না । আবার সব রকম স্বাচ্ছন্দ্য থাকা সত্ত্বেও প্রেমহীন সম্পর্ক কম নেই । সার্কাস হোক বা জীবন , কিংবা জীবন নামক সার্কাসে সবচেয়ে বেশি যেটা দরকার, সেটা হল ভারসাম্য । নিজের অভিজ্ঞতা থেকে দু'টো ঘটনা বলি । এক পাড়াতুতো দিদি , এক পাড়াতুতো দাদার প্রেমে পড়ল । তখন আমি প্রাইমারিতে পড়ি । একদিন সেই দিদি রঁদিভুতে বেরিয়েছে , আমি শেষ বিকেলে বাড়ি ফেরার পথে । সেই দিদির বাবা হঠাৎ আমাকে বললেন , দিদিকে ডেকে নিয়ে আসতে । কোথায় ওরা প্রেম করছিল জানতাম , ডেকে নিয়ে এলাম । দিদি তাঁর বাবার সামনে এসে দাঁড়াতেই, এক বিরাশি সিক্কার চড় আছড়ে পড়ল তাঁর গালে , আমার সামনেই , রাস্তার ওপরে । শেষে বাবা এসে থামানোতে, দিদির বাবার হুঁশ ফিরল । বেকার ছেলের সাথে প্রেম ! এত সাহস ! এত পিরিতি ! আর কেন কে জানে , বোধহয় পৃথিবীর সব জায়গাতেই, পরিচিত ছেলে কিংবা মেয়েদের প্রেম করতে দেখলে কিছু পরিচিত লোক দায়িত্বসহকারে সেই খবর অভিভাবকদের জানানোর জন্য , এবং আপডেট দিতে থাকার জন্য , মনে মনে হাঁকপাঁক করতে থাকে । সেই দিদির ক্ষেত্রেও তাইই হয়েছিল নিশ্চয়ই ! নইলে চট করে অত বড় মেয়ের গায়ে হাত দেওয়ার মত মানুষ ওই ভদ্রলোক ছিলেন না । কিন্তু যা হয় , তাই হল । দিদিটি ধনুর্ভঙ্গ পণ করে বসল, সেই দাদাকেই বিয়ে করবে । করল । দাদার তখন ষ্টেশনারী গুডসের একটা ছোট্ট দোকান । সিকি শতাব্দী পরে সেই দোকান পাঁচ গুণ বড় হয়েছে । ওঁদের ছেলে এখন ভোটাধিকারপ্রাপ্ত নাগরিক । এককথায়, অসম পারিবারিক, আর্থিক, সামাজিক অবস্থানে যে সম্পর্কটা শুরু হয়েছিল , সেটা টিকে গেছে । যতদূর জানি , ওঁরা সত্যিই খুব ভাল আছে । আমিও তাইই চাই ।

আরেক দাদার গল্প বলি । ব্যাঙ্কে কাজ করতেন আর পর্বতারোহণ করতেন । আর অবসর সময়ে ফ্রিল্যান্স ফটোগ্রাফার হিসেবে পত্র-পত্রিকায় ছবি দিতেন । আনন্দবাজার সংস্থার বিভিন্ন কাগজে , পত্রিকায় ওঁর ছবি বেরিয়েছে । আমি ছবি তোলার প্রাথমিক বিষয়গুলো জেনেছি ওঁর কাছ থেকে , ছবি ডেভেলপ করার যন্ত্র দেখেছি আবার স্লিপিং ব্যাগ - আইস এক্সও দেখেছি ওঁর কাছে । যাইহোক , এমন মানুষ যে ঝুঁকি নিতে ভালবাসবেন , সেটা বলাই বাহুল্য । সেই দাদা একটা দুঃসাহসিক কাজ করলেন । বিয়ের পর একদিন ব্যাঙ্কের নিশ্চিন্তের চাকরিটা দিলেন ছেড়ে । গেল গেল রব উঠল । অকারণে নয় , আপাতদৃষ্টিতে এমন সিদ্ধান্ত যে আত্মঘাতী হওয়ার নামান্তর । দাদা কিন্তু হাল ছাড়লেন না । ছবি তোলার নেশাটাকেই পেশা করলেন । তারপর জীবন গিয়াছে চলে কুড়ি বছরের পার । সেই দাদা সংসারটা ভালই চালিয়ে নিচ্ছেন এখনও , তিন কুড়ি বয়সেও । ওঁর নিজের কথায় --- "এই চলার পথে আমি জিরো দেখেছি , কিন্তু ও তো(বৌদি) আমাকে ছেড়ে চলে যায়নি ।" কথাটা দারুণ লেগেছিল, মনে... ... ... ... রেখে দিয়েছি ! আবার স্ত্রীর আর্থিক চাহিদা মেটাতে জেরবার হয়ে , এবং লাগাতার গঞ্জনায় আমার দুই বন্ধু , খুব কাছের বন্ধু , আত্মঘাতী হয়েছে । এঁদের মধ্যে একজন হাইস্কুল টিচার ছিল , পোস্ট গ্র্যাজুয়েট স্কেলে মাইনে পেত । অবসরে লিটল ম্যাগাজিন বের করত , আমিও লিখেছি সেখানে । দু'জনেই চরম সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে ফেসবুকে এবং পরিচিত মহলে কিছু কথা বলেছিল , তাই এতসব জেনেছি । নইলে পারিবারিক কথা সাগ্রহে সংগ্রহ করবার রুচি আমার নেই । তাই সব দেখে শুনে আমার মনে হয় , বিয়ে নামক সারা জীবনের চুক্তিটা কার ক্ষেত্রে, কখন , কীভাবে ইতিবাচক ভূমিকা নেবে , সেটা আগাম বলা খুউব কঠিন , কার্যত অসম্ভব । লাগলে তুক , না লাগলে তাক ! কিছুটা আন্দাজ করা যায় বড়জোর !





ফিচার প্রতিবেদন


ফিচার সংবাদ

ফিচার নিউজ


ফিচার পাতা

ফিচার লেখা


news feature article


news feature story


news feature example





কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Don't forget to like, comment, share and subscribe to my Blog. Thank you.

কেরালার বৃহত্তম জিপলাইন adventure sport

  ### কেরালার বৃহত্তম জিপলাইন ভারতের দক্ষিণাঞ্চলের রাজ্য কেরালা, যার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও বৈচিত্র্যময় পরিবেশ পর্যটকদের আকর্ষণ করে, সেখানে এ...